Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

অর্থব্যবস্থায় চীনের দাপট বাড়বে: দ্য ইকোনমিস্ট (২০২০)

Share on Facebook

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাপট। করোনাভাইরাসজনিত মহামারির পর এই চিত্র পাল্টে যেতে পারে, এমন আভাস দিচ্ছে ব্রিটিশ সাময়িকী ‘দ্য ইকোনমিস্ট’। আর্থিক খাতসহ সামগ্রিকভাবেই মার্কিন নেতৃত্ব প্রশ্নের মুখে পড়েছে বলে তারা মনে করছে।

এক ভিডিও সংবাদ বিশ্লেষণে ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ এই সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে। ভিডিও সংবাদে যাঁদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, তাঁরা জানান, কোভিড-১৯-এর পর দেখা গেল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘরের সমস্যা সামাল দিতেই হিমশিম খাচ্ছে, বৈশ্বিক নেতৃত্ব দেওয়া তো দূরের কথা। সেই জায়গাটা নেওয়ার চেষ্টা করছে চীন। যদিও এই প্রক্রিয়া কোভিড-১৯-এর প্রকোপের আগেই শুরু হয়েছে। তবে ব্যাপারটা এমন নয় যে চীন রাতারাতি ‘ওয়াল স্ট্রিটের’ মতো কিছু একটা করে ফেলবে। এই সংকট চীনের জন্য একটি সুযোগ নিয়ে হাজির হয়েছে, তারা বিশ্বকে দেখাতে পারে বাস্তবে কী করতে পারে। দীর্ঘ মেয়াদে তারা হয়তো ক্ষমতার ভারসাম্য নিজেদের দিকে টেনে নিয়ে আসবে।

যত যা-ই হোক, বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাজার আসনে। পুঁজির প্রবাহে তার নিয়ন্ত্রণ নিরঙ্কুশ। বৈশ্বিক অর্থনীতির এক-চতুর্থাংশই তার নিয়ন্ত্রণে। বিশ্বের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ মার্কিন ডলারে সংরক্ষিত। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও ডলার ব্যবহৃত হয়। বিশ্বের সরবরাহ ব্যবস্থার ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে মার্কিন ডলার ব্যবহৃত হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই এতে যুক্তরাষ্ট্রের বল বৃদ্ধি হয়। ব্যাপারটা হলো, অর্থপ্রবাহের নিয়ন্ত্রণ যার হাতে থাকে, অর্থনীতির সিংহভাগ তার নিয়ন্ত্রণেই থাকে। বিশ্বের অনেক কিছুর নিয়ন্ত্রণও তাদের হাতে থাকে।

চীন সেই ভরকেন্দ্র নিজের দিকে আনতে চায়। ২০১৭ সালের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেন, বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থায় সংস্কারের তাগিদ আন্তর্জাতিক মহল অনেক দিন ধরেই তুলছে। ব্যাপারটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে চীনের ব্যাংকিং খাত অনেক বড় হয়ে উঠেছে। গত ১০ বছরে দেশটির ব্যাংকিং খাত ফুলে–ফেঁপে উঠেছে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং খাত তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল। ইউরোপীয় ব্যাংকগুলো গত ১০ বছরে সম্পদ হারিয়েছে। ফলে চীনের ব্যাংকিং খাতের সম্পদ এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় ব্যাংকগুলোর চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু চীনা ব্যাংকগুলোর ব্যবসা মূলত চীনের মধ্যেই। আন্তর্জাতিক ঋণের বাজারে চীনা ব্যাংকগুলোর ভাগ মাত্র ৭ শতাংশ। বিপুল সম্পদ থাকা সত্ত্বেও চীনা ব্যাংকগুলো প্রভাব বিস্তারের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছে।

ভিডিও বিশ্লেষণে জানানো হয়েছে, চীনা ব্যাংকগুলো এখন অন্যান্য দেশে যেতে শুরু করেছে। যেসব চীনা কোম্পানি বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ায় ঢুকেছে, তাদের ঋণ দিচ্ছে। পাশাপাশি নিজের মুদ্রাকে আরও গুরুত্ব দিচ্ছে চীন। অনেক কোম্পানিকে তারা চীনা মুদ্রা ব্যবহারে সম্মত করেছে। বিশ্বের বৃহত্তম লৌহ খনি কোম্পানি রিও টিনটো গত বছর প্রথম চীনা মুদ্রা ইউয়ানে চুক্তি করেছে।

এর মধ্যেই শুরু হলো কোভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাব। ভাইরাসের প্রকোপ প্রথম শুরু হয় চীনে। সবার আগে তা নিয়ন্ত্রণেও নিয়ে আসে চীন। এরপর তারা যেমন ভাইরাসসম্পর্কিত জ্ঞান অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করেছে, তেমনি বিপুল পরিমাণ চিকিৎসাসামগ্রী রপ্তানি করেছে। এই ক্ষেত্রে তারা বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে, যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রোগ সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। যাদের কাছে চীনা ঋণ আছে, তাদের আপাতত ঋণের কিস্তি পরিশোধ থেকে রেহাই দিয়েছে তারা। অন্যদিকে টিকা উৎপাদনেও অনেক দূর এগিয়েছে তারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য ও কার্যকলাপ চীনের জন্য সুযোগ এনেছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব ছাড়ার পথে ছিল, এই রোগ সেই প্রক্রিয়া আরও জোরদার করবে বলেই ধারণা করছেন তাঁরা।

ভিডিও বিশ্লেষণে আরও জানানো হয়েছে, এই বছর উদীয়মান দেশের সরকারি বন্ডের মূল্য যেখানে কমেছে, চীনা বন্ডের মূল্য সেখানে বেড়েছে। বোঝা যাচ্ছে, বিনিয়োগকারীরা চীনা অর্থনীতিতে আরও বেশি আস্থা রাখছেন; অর্থাৎ, এটা রাতারাতি ধসে যাবে না। চীনের বন্ড বাজার বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম। কোভিড-১৯ আসার পর প্রমাণিত হলো, এই বন্ড বাজার যেকোনো সংকট মোকাবিলা করতে পারে, যদিও উদীয়মান দেশের বন্ড বাজারের সেই সক্ষমতা সাধারণত থাকে না।

বিশ্বে টাকা স্থানান্তরের সবচেয়ে বড় মাধ্যম সুইফট। এটি এক ধরনের বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যম। বেলজিয়ামভিত্তিক সুইফটের ভূরাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ হওয়ার কথা। কিন্তু এই স্থানান্তর হয় ডলারের মাধ্যমে, নিউইয়র্ক হয়ে। এর বদৌলতে অর্থপ্রবাহের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অপরিসীম প্রভাব। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে চেপে ধরে। যেমন, আশঙ্কা করা হয়, ক্রিমিয়া দখলের পর রাশিয়াকে এই ব্যবস্থা ব্যবহার করতে দেয় না যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৮ সালে পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরানি ব্যাংকগুলোকেও এই ব্যবস্থা ব্যবহার করতে দেয় না যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের ওপর অবরোধ কার্যকর করে এই প্রক্রিয়ায়। আবার সুইফট যদি যুক্তরাষ্ট্রের কথা শুনতে না চায়, তাহলে তার ওপরও নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেয় তারা।

এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই চীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব ভেঙে ফেলতে পারবে না। তবে চীনা কোম্পানিগুলো ভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। ভিসা ও মাস্টারকার্ডের মতো মার্কিন প্ল্যাটফর্ম যাতে ব্যবহার করতে না হয়, সে জন্য চীনা প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো ডিজিটাল ওয়ালেট তৈরি করছে। সেখানে রক্ষিত ই-টাকা দিয়ে সবই করা যাচ্ছে। সে জন্য ব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। এর মাধ্যমে চীনের সমান্তরাল ডিজিটাল ইকো–সিস্টেম তৈরি করছে। চীনারা গত বছর ৪৯ লাখ কোটি ডলার লেনদেন করেছে এই মোবাইল মাধ্যমে। এই মোবাইল অর্থ স্থানান্তরের চীনা কোম্পানি টেনসেন্ট ও অ্যান্ট ফিন্যান্সিয়াল এত বড় হয়ে গেছে যে চীনা সরকারও তাদের ভয় পায়। এরা এখন বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে, বিনিয়োগ করছে। বাংলাদেশের এমএফএস কোম্পানি বিকাশেও বিনিয়োগ করেছে অ্যান্ট ফিন্যান্সিয়ালের আলিবাবা। আলি পে এখন ৫৬টি দেশে গৃহীত হয়। কোভিড-১৯-এর কারণে তারা আরও বিস্তৃত হচ্ছে।

কিন্তু বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, চীনের সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে, বিশ্বের অধিকাংশ দেশ তার উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দিহান। চীনা সরকার প্রথম দিকে কোভিড–১৯-এর প্রাদুর্ভাব ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তার স্বচ্ছতা প্রশ্নের মুখে। কিন্তু আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থায় স্বচ্ছতা খুবই জরুরি। সবাই জানতে চায়, কোথাকার টাকা কোথায় যাচ্ছে।

পরিষ্কারভাবেই বিশ্বে মার্কিন ও চীন প্রভাবিত দুটি আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে উঠতে যাচ্ছে। তাদের যে পরস্পরের পরিপূরক হতে হবে তা নয়, তবে তাদের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক থাকতে হবে। তা না হলে অর্থ স্থানান্তর কঠিন ও ব্যয়বহুল হবে। শেষমেশ মানুষ এতে ভুগবে।

সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ : মে ২৪, ২০২০

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ