Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

অহিংস দিবস ও মহাত্মা গান্ধী

Share on Facebook

লেখক: ফনিন্দ্র সরকার।

১৮৬৯ সালের ২ অক্টোবর মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ভারতের গুজরাট প্রদেশের পারবন্দর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পরবর্তীকালে মহাত্মা গান্ধী হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন। অহিংস মতবাদে বিশ্বাসী একজন সাধারণ মানুষ অসাধারণ এক আন্দোলনের সূচনা করে বিশ্ববাসীর হৃদয়মন্দিরে স্থান করে নিয়েছিলেন। মানবজাতিকে নৈতিক আহ্বান জানিয়ে মহাত্মা গান্ধী শুদ্ধতম শক্তির পথ দেখিয়ে গেছেন। অসাম্প্রদায়িক মনমানসিকতা, অকৃত্রিম মানবপ্রেম মহাত্মা গান্ধীর চরিত্রভূষণ ছিল। সত্যাগ্রহ আন্দোলনের অপরাধে তাকে ১৩ বার কারাবরণ করতে হয়েছে। ১৯২২ সালে তৎকালীন একটি পত্রিকায় ব্রিটিশবিরোধী এক নিবন্ধ লেখার জন্য ছয় বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হয় তাকে। তিনি বিশ্বাস ও আস্থায় ছিলেন অবিচল। ছিলেন প্রচণ্ড আধ্যাত্মিক শক্তিধর একজন মানুষ। তার জন্মদিনকে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ২০০৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অহিংস দিবসের প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকৃত হয়। সেই থেকে ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনটি আন্তর্জাতিভাবেই গৌরব বহন করে আসছে অহিংস দিবস হিসেবে।

মহাত্মা গান্ধী জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই মহাত্মা হননি। এ জন্য অবিরাম সাধনা করতে হয়েছে। নির্মোহ সেই সাধনায় ছিল বীরত্ব। অগ্রজ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গান্ধীজির সব কাজ সমর্থন করেননি, তবে তিনিই তাকে মহাত্মা উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। মোহনদাস করমচাঁদ হয়ে উঠলেন মহাত্মা গান্ধী। মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন, ‘কেবল একজন মহাত্মাই পারে আরেক মহাত্মার উদ্বেগ-আশঙ্কা অনুভব করতে। মহাত্মা গান্ধী শুধু ভারতবর্ষেরই মহাত্মা নন, তিনি সমগ্র পৃথিবীর মহাত্মা হিসেবে সম্মানিত। গান্ধীজির জীবনে অনেক বিস্ময়কর দৃষ্টান্তের মধ্যে একটি হচ্ছে, সত্যাগ্রহ আন্দোলনের সময় উত্তর প্রদেশের বালিয়া নামক একটি গ্রামে ব্রিটিশ পুলিশ ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল। নারীদের সঙ্গে অসদ্ব্যবহার করেছিল। কেউ প্রতিবাদ করেনি। গান্ধীজি সংবাদটি পেয়ে অনুসন্ধানকারী দল পাঠিয়েছিলেন। গ্রামবাসী বলেছিলেন ‘গান্ধীজি আমাদের অহিংসনীতি শিখিয়েছেন। তাই আমরা চুপ ছিলাম। অনুসন্ধানকারী দল ফিরে এসে গান্ধীজিকে বিষয়টি জানালে তিনি (গান্ধীজি) খুব লজ্জিত হয়ে পড়েন। পরে তিনি সশরীরে ওই গ্রামে গিয়ে বলেন, ‘তোমরা তোমাদের মা-বোনের মর্যাদা রক্ষা করতে পারলে না, অহিংসার নামে তোমরা ভীরুর মতো থেকে প্রতিবাদ করলে না, আমি তোমাদের এমন অহিংস হতে বলিনি। আমি সাহসী অহিংসা প্রচার করে থাকি। ভীরু-কাপুরুষের নয়। জীবনে আত্মমর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকতে হলে মন্দের প্রতিবাদ করতেই হবে।’ তিনি শান্তির সপক্ষে সবাইকে এক কাতারে দাঁড়াতে আহ্বান করতেন।

গুজরাটের ভবনগরের সামাল দাস নামক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ম্যাট্রিকুলেশন ডিগ্রি নিয়ে ১৮৮৮ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি ব্যারিস্টারি পড়তে যান বিলেতে। ২২ বছরে ব্যারিস্টারি পাস করেন। ব্রিটিশ-ভারতীয় আইনজীবী হিসেবে প্রথমে তার অহিংস নীতি-আদর্শ প্রয়োগ করেন দক্ষিণ আফ্রিকায় নিপীড়িত ভারতীয় সম্প্রদায়ের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে। পরবর্তী সময়ে ভারতে ফিরে এসে দুস্থ কৃষক মুটে-মজুরদের নিয়ে বৈষম্যমূলক কর আদায় ব্যবস্থা, বর্ণবৈষম্য ও কর্মবৈষম্যের বিরুদ্ধে অহিংস আন্দোলন গড়ে তোলেন। ভারতবাসীর দারিদ্র্য দূরীকরণ, নারী স্বাধীনতা বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণ জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা ও অর্থনৈতিক সাম্য প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে জোরদার করেন। ১৯৩০ সালে গান্ধীজি লবণ করের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে প্রায় চারশ কিলোমিটার দীর্ঘ ডান্ডি লবণ কুচকাওয়াজে নেতৃত্ব দেন। ওই আন্দোলন ১৯৪২ সালের ইংরেজ শাসকদের প্রত্যক্ষ ভারত ছাড় আন্দোলনের সূত্র হিসেবে বিবেচিত হয়।

১৯৪৬ সালে ব্রিটিশ কূটচাল প্রসূত দাঙ্গা সংঘটিত হয়। হিন্দু-মুসলিম সে দাঙ্গায় অনেক মানুষ প্রাণ হারায়। দাঙ্গার আগুন ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। বর্তমান বাংলাদেশের নোয়াখালীতে এর ভয়াবহতার কথা জেনে গান্ধীজি ছুটে আসেন। তার প্রজ্ঞায় বন্ধ হয় দাঙ্গা। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ও ১৫ আগস্ট যথাক্রমে পাকিস্তান-ভারত নামে দ্বিজাতি তত্ত্বের আলোকে ভারত ভেঙে দুটি দেশের অভ্যুদয় ঘটে। স্বাধীনতা লাভের ছয় মাসের মধ্যে অর্থাৎ ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি তাকে হত্যা করে উগ্র ধর্মান্ধ এক যুবক। গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি তাকে।

সূত্রঃ সমকাল।
তারিখঃ অক্টোবর ০২, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ