Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন-আফগানিস্তানে উগ্রবাদ নিয়ে মোদি যখন উদ্বিগ্ন (২০২১)

Share on Facebook

লেখক: মো. তৌহিদ হোসেন।

১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে অনুষ্ঠিত হলো সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) ২১তম শীর্ষ সম্মেলন। সংস্থাটির ২০ বছর পূর্তি হলো এ বছরই। শীর্ষ সম্মেলনটি ছিল নিয়মিত বার্ষিক অনুষ্ঠান। তবে এক মাস আগে আফগানিস্তানে তালেবানের দখল প্রতিষ্ঠার পরিপ্রেক্ষিতে এই সম্মেলনের ফোকাস অনেকটাই ছিল আফগানিস্তান পরিস্থিতি ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার ওপর এর প্রভাব নিয়ে।

এসসিওর যাত্রা শুরু বিংশ শতাব্দীর শেষ পাদে ‘সাংহাই ফাইভ’ নামে। সদস্য ছিল চীন, রাশিয়া এবং তিনটি মধ্য এশীয় দেশ তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান ও কাজাখস্তান। পরে এতে উজবেকিস্তান যোগ দেয় এবং ২০০১ সালের ১৫ জুন ছয়জন সদস্য নিয়ে সাংহাই
কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন গঠিত হয়। ২০১৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান এতে যোগ দেয় এবং ১৭ সেপ্টেম্বর সদ্য সমাপ্ত শীর্ষ সম্মেলনে ইরানকে সদস্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়। ইরানের সদস্যপদ লাভের পর আফগানিস্তানের অবস্থান হয়েছে এসসিও সদস্যদের দ্বারা পরিবেষ্টিত দেশ হিসেবে। এসসিওর লক্ষ্য মধ্য এশিয়া অঞ্চলের নিরাপত্তা বিধান, যার মূল হুমকি হিসেবে বিবেচনা করা হয় সন্ত্রাসবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ ও উগ্রবাদকে।

তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাহমনের আতিথেয়তায় অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনে কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান ও উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী সশরীর উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন নতুন সদস্য ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসিও। অবজারভার বা ডায়ালগ পার্টনারের কিছু দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এসেছিলেন অতিথি হিসেবে। তবে সবচেয়ে বড় ও শক্তিধর তিনটি দেশ চীন, রাশিয়া ও ভারতের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানেরা এতে অংশ নিয়েছেন ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে, নিজ নিজ রাজধানী থেকে।

শীর্ষ সম্মেলন অন্তে প্রকাশিত যৌথ ঘোষণায় এসসিও সদস্যরা এমন একটি আফগানিস্তান দেখতে চায়, যেখানে সন্ত্রাসবাদ, যুদ্ধ ও মাদক থাকবে না। তারা বিশ্বাস করে যে এসসিও অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষা ও সুদৃঢ়করণের জন্য আফগান পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান প্রয়োজন। আফগান শরণার্থীরা যাতে নিরাপদে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে সহায়তা প্রদানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সদস্যরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ দমনে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং সম্মিলিত সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চীন তার বক্তব্যে একটি খোলামেলা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, বাস্তবসম্মত অভ্যন্তরীণ ও বিদেশ নীতি গ্রহণ এবং সব সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে সম্পর্ক ত্যাগ করতে আফগানিস্তানের প্রতি আহ্বান জানায়।

মধ্যপন্থী ইসলামের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন নরেন্দ্র মোদি। মধ্যপন্থী হিন্দুত্বের কী হাল ভারতে বা বিশ্বে? গোরক্ষার নামে ভারতে অহরহ আক্রমণের সম্মুখীন হচ্ছে অনেক মুসলমান। তাদের সুরক্ষা বা আক্রমণকারীদের শাস্তির বিধানের কথা শোনা যায় না ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ভারতে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বক্তব্য দেন ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে। আফগান ভূমি যেন সন্ত্রাসবাদ রপ্তানিতে ব্যবহৃত হতে না পারে, এ ব্যাপারে তিনি সতর্ক করে দেন। আফগানিস্তানে অস্থিতিশীল পরিবেশের পরিপ্রেক্ষিতে এসসিওভুক্ত দেশগুলোকে তিনি এ ব্যাপারে একটি সর্বজনীন নীতি প্রণয়নের আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, আফগানিস্তানের ঘটনাপ্রবাহ তার প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তার করবে।

এ ছাড়া তাঁর বক্তব্যে আরও তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কথাও উঠে এসেছে—

১। আফগানিস্তান যদি অস্থিতিশীল ও মৌলবাদীদের কবজায় থাকে, তবে সেখানে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদী মতাদর্শ উৎসাহিত হবে;

২। আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পরিবর্তন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা প্রবর্তন করেনি। নারী, সংখ্যালঘুসহ সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ;

৩। মধ্য এশিয়ায় মধ্যপন্থী ইসলামের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি সদস্যদেশগুলোকে ধর্মীয় চরমপন্থা ও উগ্রবাদের বিস্তার দমনে কাজ করার এবং যুক্তিবাদী চিন্তাকে উৎসাহিত করার আহ্বান জানান।

মোদির বক্তব্যে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে যে উদ্বেগ উঠে এসেছে, তা বাস্তব এবং বিশ্বের অধিকাংশ দেশ এর সঙ্গে একমত। এমনকি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীও আফগানিস্তানের অস্থিরতা নিয়ে তাঁর উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন এবং তা দ্রুত নিরসনের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, ওপরে যে তিনটি সমস্যা তালিকাভুক্ত হয়েছে, নরেন্দ্র মোদির ভারতের ক্ষেত্রেও তা অনেকটা প্রযোজ্য।

অধিকাংশ সমাজেই সুপ্ত সাম্প্রদায়িকতার অস্তিত্ব আছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই তার প্রচ্ছন্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হওয়া ভারত তার ব্যতিক্রম হবে, তা প্রত্যাশিত নয়। স্বাধীনতার পর ভারতে এমন বছর খুব কমই গেছে, যখন একটিও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়নি। বস্তুত, অধিকাংশ বছরেই একাধিক দাঙ্গা হয়েছে। বলা বাহুল্য, দাঙ্গায় বেশির ভাগ বলি হয়েছে ভারতীয় মুসলমানরা। এরপরও ভারতীয় সমাজ ও রাজনীতিতে বিশাল মুসলমান সংখ্যালঘুদের একটি সরব অবস্থান ছিল। গত ৪০ বছরে আরএসএস, বিজেপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প এমন সাফল্যের সঙ্গে ছড়িয়েছে যে এই অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এই পরিবর্তন ঘটেছে ধীরে, কিন্তু দৃঢ় পদক্ষেপে। একবিংশ শতাব্দীর শুরুতেও অবস্থা এতটা খারাপ ছিল না। নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে সংঘটিত ভয়াবহ মুসলিমবিরোধী দাঙ্গা দমনে তাঁর ইচ্ছাকৃত নিষ্ক্রিয়তার কারণে তাঁরই দলের প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ি তাঁকে কঠোর ভাষায় ভর্ৎসনা করেছিলেন। সেই যুগ এখন বাসি হয়ে গেছে।

পিউ রিসার্চের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ৬৪ শতাংশ হিন্দু মনে করেন, প্রকৃত ভারতীয় হতে হলে হিন্দু হওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি হিন্দিভাষী হওয়াও গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন ৫৯ শতাংশ হিন্দু। বৈচিত্র্যের মাঝে সৌন্দর্যের প্রতি বিশ্বাস শিথিল হয়ে আসছে। বিগত যে দুটি নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মোদির বিজেপি সরকার গঠন করেছে, তাতে বিজেপির লোকসভা সদস্য তালিকায় ২০ কোটি মুসলমানের একজনও প্রতিনিধি নেই। অন্তর্ভুক্তিমূলক ভারতের অবসান ঘটেছে মোদির জমানায়।

গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশক থেকে বিজেপির উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে হিন্দু রাষ্ট্রের পথে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, মোদির শাসনামলে তা বিপুলভাবে বেগবান হয়েছে। বাবরি মসজিদ মামলার রায়, নাগরিকপঞ্জি, নাগরিকত্ব আইন, কাশ্মীরের মর্যাদা পরিবর্তন—সবই এ পাতালযাত্রার অনুষঙ্গ। শান্তি, স্থিতিশীলতা, অগ্রগতির জন্য এই যাত্রার লাগাম টানতে হবে।

মধ্যপন্থী ইসলামের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন নরেন্দ্র মোদি। মধ্যপন্থী হিন্দুত্বের কী হাল ভারতে বা বিশ্বে? গোরক্ষার নামে ভারতে অহরহ আক্রমণের সম্মুখীন হচ্ছে অনেক মুসলমান। তাদের সুরক্ষা বা আক্রমণকারীদের শাস্তির বিধানের কথা শোনা যায় না ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ভারতে। ‘ডিস্ম্যান্টলিং গ্লোবাল হিন্দুত্ব’ শিরোনামে হার্ভার্ড, স্ট্যানফোর্ড, প্রিন্সটনসহ বিশ্বের ৫৩টি বিশ্ববিদ্যালয় ১০ সেপ্টেম্বর থেকে একটি ‘একাডেমিক কনফারেন্স’-এর আয়োজন করে। এই অনলাইন সভার উদ্দেশ্য ছিল, হিন্দুত্ব বা উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদ এবং ভারতীয় সংখ্যালঘুদের ওপর এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা। কিন্তু ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন হিন্দু গ্রুপ একে হিন্দুবিরোধী হিসেবে অভিযোগ করেছে। এর আয়োজক ও অংশগ্রহণকারী গবেষক বা বিশেষজ্ঞরা হিন্দুত্ববাদীদের আক্রমণের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১০ লাখের বেশি ই-মেইল এসেছে, যাতে অংশগ্রহণকারীদের শারীরিক আক্রমণ, হত্যা, যৌন নিপীড়নের হুমকি দেওয়া হয়েছে। হুমকির মুখে অনুষ্ঠানটি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন অনেকে। একটি ই-মেইলের ভাষা ছিল এ রকম, ‘এই সভা যদি অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে আমি হয়ে যাব ওসামা বিন লাদেন এবং সব বক্তাকে হত্যা করব। আমাকে তখন দোষ দিয়ো না।’ তালেবান, আইএসের গন্ধ কি পাওয়া যাচ্ছে? মৌলবাদ, উগ্রবাদ শুধু আফগানিস্তান বা মুসলমানদের সমস্যা নয়।

গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশক থেকে বিজেপির উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে হিন্দু রাষ্ট্রের পথে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, মোদির শাসনামলে তা বিপুলভাবে বেগবান হয়েছে। বাবরি মসজিদ মামলার রায়, নাগরিকপঞ্জি, নাগরিকত্ব আইন, কাশ্মীরের মর্যাদা পরিবর্তন—সবই এ পাতালযাত্রার অনুষঙ্গ। শান্তি, স্থিতিশীলতা, অগ্রগতির জন্য এই যাত্রার লাগাম টানতে হবে। আফগানিস্তানে কী হয়, সেটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে উগ্রবাদ নিয়ন্ত্রণে নিজের ঘরেও অনেক কিছু করার আছে ভারতের।

মো. তৌহিদ হোসেন সাবেক পররাষ্ট্রসচিব

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ২২, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ