Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

আর কত দূরে প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান !(২০২১)

Share on Facebook

করোনা মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এক বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ আছে। আমরা যারা শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত আছি, আমাদের দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষা দেওয়া। এর সঙ্গে বাড়তি হিসেবে থাকে গল্প বলা, অভিজ্ঞতার কথা বলা, জীবন সম্পর্কে ধারণা দেওয়া, কাউন্সেলিং করা ও আত্মবিশ্বাসের ভিত মজবুত করা। আরও থাকে নতুন বছরে বর্ষবরণ, বনভোজন, শিক্ষা সফর, নবীনবরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানের কত কী আয়োজনের পরিকল্পনা।

করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে দুটি করে পয়লা বৈশাখ, বনভোজন, শিক্ষা সফর, ফাল্গুন, নবীনবরণ চলে গেল। শুধু কি তা–ই? আজ শিক্ষার্থীরা ভুলতে বসেছে তাদের প্রিয় ক্যাম্পাসের কথা। তারা যে ক্যাম্পাস রেখে গিয়েছিল, সেই ক্যাম্পাস চিনতে হয়তো অনেকেরই কষ্ট হবে। ধূসর ক্যাম্পাস সেজেছে আজ নতুন বৃক্ষরাজি, ঘাস ও ফুল দিয়ে। চেয়ার-টেবিল হয়ে গেছে জরাজীর্ণ, ধুলির আস্তর জমেছে সেগুলোতে। আবাসিক হলে যাঁরা থাকতেন, তাঁদের অতি কষ্টে অর্জিত প্রিয় রুম আজ হয়ে গেছে অচেনা।

অন্য দিকে প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা আজ ভুলে গেছে পাঠশালার কথা, পড়াশোনার কথা ও শিক্ষকদের কথা। কারণ, তাদের জন্য ভার্চ্যুয়াল শিক্ষা কার্যক্রম নেই। আমার সন্দেহ আছে, কয়জন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর রাখছেন, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভার্চ্যুয়াল শিক্ষা কার্যক্রম চালু থাকলেও অনেক শিক্ষার্থী যুক্ত থাকতে পারছে না স্মার্টফোন, ইন্টারনেট ও অর্থসংকটের কারণে। আবার অনেকে থাকছে নেটওয়ার্কের বাইরে। আবাসিক হলে যাঁরা থাকতেন, তাঁদের কাছ থেকে শুনেছি, তাঁরা শুধু ব্যাগপ্যাক নিয়েই বাড়ি চলে গেছেন। নেই বই-খাতা। অনেকেরই বই কেনার সামর্থ্য না থাকায় লাইব্রেরিতে পড়তেন।

আমি ভার্চ্যুয়াল শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত থেকে বুঝতে পেরেছি, শিক্ষার্থীরা এ মাধ্যমকে মোটেই পছন্দ করছে না। এখন না পারছে ছাড়তে, না পারছে গিলতে। শুনেছি অনেক শিক্ষার্থীর স্মার্টফোনের মাধ্যমে প্রতিদিন তিন-চার ঘণ্টা হেডফোন দিয়ে ক্লাস করায় শ্রবণে সমস্যা দেখা দিচ্ছে, স্মৃতিশক্তি লোপ পাচ্ছে, ঘুম কম হচ্ছে এবং আচরণে নেতিবাচক পরিবর্তন আসছে। নিম্ন তরঙ্গশক্তিবিশিষ্ট রেডিয়েশনের প্রভাবে এরকম হতে পারে।

এবার আসা যাক পরীক্ষা প্রসঙ্গে। পিএসসি, জেএসসি ও বার্ষিক পরীক্ষা হলো না। এইচএসসি অটোপাস হলো। অনেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আমি শুনেছি, তারা এ অটোপাস চায় না। তারা পরীক্ষা দিতে চায়। তাদের কথা হচ্ছে, তারা পরীক্ষা না দিতে পারলে তারা লেখার চর্চা ভুলে যাবে। ভবিষ্যতে সব পরীক্ষায় তারা খুব খারাপ করবে। বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় তারা পিছিয়ে পড়বে।

আজ শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত দিশেহারা। এক দিকে শিক্ষাজীবনের অনিশ্চয়তা, অন্য দিকে জীবন-জীবিকার প্রশ্ন। অনেক শিক্ষার্থীই প্রাইভেট পড়িয়ে নিজে চলত এবং পরিবারকে চালাত। ফলে অনেকে মানসিক ভারসাম্য হারাচ্ছে, আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। কেউ–বা অর্থসংকটে জীবন বাঁচার তাগিদে দিনমজুরি করছে, রিকশা চালাচ্ছে এবং যা পায়, তা–ই করছে। আবার অনেকে ভয় পাচ্ছে, তারা কি পারবে আগের মতো সবার সঙ্গে মিশতে কিংবা মিথস্ক্রিয়া করতে?

আবার অনেকে মনে করছে, শিক্ষকেরা তো ভালোই আছেন। অনেক বেসরকারি স্কুল-কলেজের উদ্যোক্তারা প্রতিষ্ঠান না চালাতে পেরে সহায়-সম্বলহীন হয়ে পথে বসেছেন। হাজারো শিক্ষকের চাকরি চলে গেছে। অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অর্ধেক শিক্ষক ছাঁটাই করে বাকি অর্ধেক শিক্ষকদের অর্ধেক বেতন দিয়ে কোনো রকমে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছেন। শুধু বলা যায়, অর্থের দিক দিয়ে বিবেচনা করলে সরকারি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ভালো আছেন। কিন্তু এটা কি সত্যিকার অর্থে ভালো থাকা বোঝায়? শিক্ষার্থী ছাড়া শিক্ষকদের কি মূল্য আছে? আমরা আজ চেষ্টা করছি ভার্চ্যুয়াল শিক্ষা কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্নভাবে চালিয়ে যেতে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি গবেষণার কাজে সম্পৃক্ত রাখতে। এটা ভালো কাজও দিচ্ছে। এখন আমরা নামকরা জার্নালে প্রচুর নিবন্ধ প্রকাশ করতে পারছি। শিক্ষার্থীদের মনোবলও ভালো থাকছে।

বড় আশায় আমরা বুক বেঁধে ছিলাম, গত ৩০ মার্চ স্কুল-কলেজ খুলে যাবে। আগামী মে মাসে বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে। কিন্তু আবার করোনার তীব্র ছোবলে সবকিছু ওলট–পালট হয়ে গেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা তো মে মাস থেকে শুরু হওয়ার কথা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর জন্য করোনার টিকা নিশ্চিত করে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করলে আবারও আরেকটি শিক্ষা বছর এভাবে চলে যাবে। আবারও অটোপাস হবে। বিশ্বের তুলনায় আমরাই সবচেয়ে পিছিয়ে থাকব শিক্ষা কার্যক্রমে। তাহলে আবার কবে মুখর হবে আমাদের প্রিয় ক্যাম্পাস। কবে পাব আমরা স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম?

লেখক: ড. মো: শফিকুল ইসলাম অধ্যাপক, নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। গবেষক ও লেখক।
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: এপ্রিল ২৮, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ