Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ইউক্রেন আবারো শক্তিশালী রাষ্ট্র হতে পারাটা কঠিন (২০২৩)

Share on Facebook

লেখক:জন পি রুহেল।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হলে ইউরোপ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকটে পড়ে। এরই মধ্যে কয়েক লাখ শরণার্থী দেশে ফিরলেও ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিবন্ধনকৃত ইউক্রেনীয় শরণার্থীর সংখ্যা ৭৯ লাখ আর রাশিয়ার আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীর সংখ্যা ২৯ লাখ। রাশিয়া ছাড়াও পোল্যান্ড (১৫ লাখ), জার্মানি (১০ লাখ) ও চেক প্রজাতন্ত্রও (৫ লাখ) বড় আকারের শরণার্থীর চাপ নিজেদের কাঁধে নিয়েছে। ইতালি, স্পেন, রোমানিয়া, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য ১ লাখের বেশি ইউক্রেনীয়কে আশ্রয় দিয়েছে।

এসব শরণার্থী খুব শিগগিরই দেশে ফিরবেন, বাস্তবে এ ধরনের কারণ দেখা যাচ্ছে না। গত জুন মাসে উইলসন সেন্টার পরিচালিত এক জরিপের ফলাফল থেকে জানা যাচ্ছে, ২৪ শতাংশ ইউক্রেনীয় শরণার্থী দেশে ফিরতে ইচ্ছুক, কিন্তু তাঁরা একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত থাকতে চান; ৪৮ শতাংশ যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরই ফিরতে চান এবং ৮ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা কখনোই আর ইউক্রেনে ফিরতে চান না। ডিসেম্বর মাসে জার্মান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত এক জরিপ থেকে জানা যাচ্ছে, দেশটিতে আশ্রয় নেওয়া ৩৭ শতাংশ ইউক্রেনীয় সেখানেই স্থায়ীভাবে থেকে যেতে চান অথবা কমপক্ষে কয়েক বছর সেখানে বাস করতে চান। গত মার্চ মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের সুরক্ষার ব্যাপারে যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তাতে তাঁরা আগামী তিন বছর ইইউ দেশগুলোতে বসবাস, কাজ ও পড়াশোনার সুযোগ পাবেন।

১৯৬০-এর দশকে অভিবাসী শ্রমজীবীদের মতো অনেক ইউক্রেনীয় শরণার্থী এখন আশ্রয় নেওয়া দেশগুলোতে কাজ শুরু করেছেন। ঘটনাক্রমে তাঁরা এসব দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পাবেন। রাশিয়ার সাম্প্রতিক আগ্রাসনের আগে থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়নে লাখ লাখ ইউক্রেনীয় বসবাস করে আসছেন। ২০২০ সালের তথ্য অনুসারে, পোল্যান্ডে ১৪ লাখ ও ইতালিতে আড়াই লাখ ইউক্রেনীয় বাস করতেন।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে যুদ্ধ শুরুর পর দেশজুড়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হওয়ায় প্রবাসী ইউক্রেনীয়দের দেশে ফেরার হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। দেশের বেশির ভাগ মানুষ তীব্র বিদ্যুৎ ও পানির সংকটে ভুগছে। ২০২২ সালে ইউক্রেনের অর্থনীতি ৩০ শতাংশ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। ইউক্রেন এখন ইউরোপের সবচেয়ে গরিব দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশ করতেও তাদের অনেক বছর বছর লেগে যাবে। ২০১৪ সাল থেকে দনবাস অঞ্চলের অস্থিতিশীলতা এবং এক বছর ধরে চলা সংঘাত থেকে প্রতীয়মান যে ইউক্রেনে শান্তির আশা সুদূরপরাহত।

নরওয়ের রিফিউজি কাউন্সিল জানিয়েছে, গত কয়েক মাসে বসবাসের অনুপযোগী ইউক্রেনে কিছু শরণার্থী ফিরলেও তার চেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। আরেকটি বিষয় হলো, পুরুষদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের বাধ্যবাধকতা থাকায় ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের ৯০ শতাংশের বেশি হলো নারী ও শিশু। যেসব পুরুষ ইউক্রেনে রয়ে গেছেন, তাঁরা বিদেশে তাঁদের পরিবার-স্বজনদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার চেষ্টা করছেন। ফলে যেসব পুরুষ সেনাবাহিনীর নিয়োগ এড়িয়ে পালিয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছেন, দেশে ফিরলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে কি না, সেই শঙ্কাও তাঁদের মধ্যে রয়েছে।
জনমিতিক-সংকট

ইউক্রেনকে ঘিরে থাকা পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের অপেক্ষাকৃত গরিব দেশ। ভবিষ্যতে দেশগুলো শরণার্থী নেওয়া কমিয়ে দিতে পারে। তখন ইউক্রেনীয় শরণার্থীরা আরও পশ্চিমে অবস্থিত ইউরোপীয় দেশগুলোতে আশ্রয় পাওয়ার সন্ধানে যাবেন। যুদ্ধ ও সংঘাতের কারণে লাখ লাখ মানুষ এভাবে ইউক্রেন ছেড়ে আসায় ১৯৯০-এর দশক থেকেই দেশটি ভয়াবহ জনমিতিক-সংকটে রয়েছে। জন্মহার কমে যাওয়া, মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়া, বয়স্ক নাগরিক বেড়ে যাওয়া ও উচ্চ হারে অভিবাসী হওয়ায় ১৯৯১ সালে ইউক্রেনের জনসংখ্যা যেখানে ৫ কোটি ২০ লাখ ছিল, এখন সেখানে তা ৪ কোটি ২০ লাখ।

রাশিয়াসহ পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো একই ধরনের দুর্দশার মুখে পড়লেও ইউক্রেনের জনসংখ্যা অনেক উচ্চ হারে কমে গেছে। নিম্ন মজুরি, উচ্চ বেকারত্বের কারণে দেশটির অভিবাসীরা সেখানে ফিরতে চান না। আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি ইউক্রেনকে যুক্ত করে নেয়, তাহলে ভবিষ্যতে ইইউয়ে আরও বেশি সংখ্যক অভিবাসী যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে। উপরন্তু, যুদ্ধে অনেক বেশি সংখ্যক তরুণ হতাহত হওয়ায় আরও কয়েক দশক ইউক্রেনকে জনমিতি-সংকট মোকাবিলা করে যেতেই হবে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, চলমান সংঘাতের কারণে ইউক্রেনের জনসংখ্যা যে অবস্থায় এসে পৌঁছেছে, তা থেকে নিকট ভবিষ্যতে উত্তরণ হবে না। শতাব্দীজুড়েই দেশটিতে জনসংখ্যার বড় ধরনের ঘাটতি থেকে যাবে।

কম জনসংখ্যার ইউক্রেনকে আরও জনশূন্য করে দিয়ে দুর্বল করে দেওয়াটাই ক্রেমলিনের কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ। গত মার্চ মাসে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ ধরনের অশুভ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘ইউক্রেন যদি তাদের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখে, হলে ভবিষ্যতে ইউক্রেন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন তৈরি হবে।’ ইউক্রেনকে জনশূন্য করার ক্ষেত্রে রাশিয়া সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। ২০১৪ সাল থেকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির জন্য সামরিক অভিযান পরিচালনা করে ইউক্রেন থেকে লাখ লাখ মানুষকে রাশিয়ায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করেছে ক্রেমলিন। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আগ্রাসন শুরুর রাশিয়ায় আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীর স্রোত থেকে এটা প্রতীয়মান যে এটিকে ক্রেমলিন নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছে। গত মে মাসে প্রেসিডেন্ট পুতিন যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলগুলো থেকে অভিভাবক হারানো ইউক্রেনীয় শিশুদের রাশিয়ানরা যাতে দত্তক নিতে পারেন, এ লক্ষ্যে একটি ফরমান জারি করেন।

ইউরোপে আশ্রয় নেওয়া অনেক ইউক্রেনীয় আর কখনোই দেশে ফিরবেন না। রাশিয়াতেও যাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরাও ফিরবেন না। জনসংখ্যার বিশাল ঘাটতির কারণে সেসব খালি জায়গা পূরণ করে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র গঠন করা ইউক্রেন সরকারের জন্য কঠিন এক বিষয় হয়ে উঠবে। যুদ্ধ যত দিন দীর্ঘায়িত হবে, পরিস্থিতি ততই খারাপ হতে থাকবে।

****জন পি রুহেল ওয়াশিংটনে বসবাসরত অস্ট্রেলিয়ান-আমেরিকান সংবাদকর্মী
এশিয়া টাইমস থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনুবাদ মনোজ দে।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:জানুয়ারী ১৫, ২০২৩

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ