ইউক্রেনে হামলা চলছে রাশিয়ার। হামলা ক্রমে ভয়ানক হচ্ছে। দিনকে দিন পরিস্থিতিও খারাপের দিকে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে গত সোমবার নরওয়েতে শুরু হয়েছে ন্যাটোর সামরিক মহড়া। ৩০ হাজার সেনা অংশ নিচ্ছে এ মহড়ায়। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার ২৮টি দেশ ‘কোল্ড রেসপন্স ২০২২’ নামের এ মহড়ায় অংশ নিয়েছে।
আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে ৩০ হাজার সেনা, ২০০টি বিমান ও ৫০টি যুদ্ধজাহাজ নিয়ে শুরু হয়েছে ন্যাটোর মহড়া। এ মহড়া নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। এ মহড়ার মধ্য দিয়েই রাশিয়ার প্রতি ন্যাটো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে কি না, উঠছে সে প্রশ্ন? তবে এমন সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন সামরিক জোটের শীর্ষ কর্মকর্তারা। কোল্ড রেসপন্সের দায়িত্বে থাকা একজন জেনারেল ইংভে ওডলো একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেছেন, ‘এটি একটি প্রতিরক্ষামূলক অনুশীলনমাত্র। কোনো আক্রমণের উদ্দেশ্যে এ সামরিক মহড়া নয়।’
ন্যাটোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ মহড়ার পরিকল্পনা অনেক আগেই নেওয়া হয়েছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগেই নেওয়া হয় এ সিদ্ধান্ত। নরওয়ে কীভাবে তার মাটিতে মিত্রদেশগুলোর শক্তি বৃদ্ধি করবে, সেটা পরীক্ষা করে দেখতে এ মহড়ার আয়োজন। এর মাধ্যমে কোনোও রকম আক্রমণাত্মক বার্তা দেওয়া হচ্ছে না। আগামী ১ এপ্রিল পর্যন্ত এ মহড়া চলবে। রাশিয়ার সঙ্গে নরওয়ের প্রায় ২০০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা আছে।
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে ৩০ হাজার সেনা, ২০০টি বিমান ও ৫০টি যুদ্ধজাহাজ নিয়ে নরওয়েতে শুরু হয়েছে ন্যাটোর সামরিক মহড়া
ইউক্রেন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যদেশ নয়, কিন্তু জোটটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে চায় দেশটি। আর সদস্য হলে রাশিয়া সীমান্তে ন্যাটোর সৈন্য সমাবেশ হবে, আর এতে নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে রাশিয়া। রাশিয়া বারবার এ কথা বলে আসছে। আর চলমান যুদ্ধের অন্যতম কারণও ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্য হওয়ার আগ্রহ। রাশিয়ার হামলার মুখে এত দিন পর্যন্ত অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সহায়তা করা ছাড়া এখনো রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে সরাসরি সেনা নামাতে রাজি হয়নি আমেরিকা ও ন্যাটো।
এদিকে ইউক্রেনে রুশ হামলা আজ ২১তম দিনে গড়িয়েছে। এদিন স্থানীয় সময় দিবাগত রাত তিনটার পরপরই দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লিভিভে সম্ভাব্য বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সাইরেন বাজানো হয়। শহরটি পোল্যান্ড সীমান্ত থেকে ১৫ মাইল দূরে। দুদিন আগে এ শহরের উপকণ্ঠে একটি সামরিক ঘাঁটিতে রুশ বাহিনীর ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ইউক্রেনের ৩৫ সেনা নিহত হন। রাশিয়া দাবি করে, হামলায় বিদেশি ভাড়াটে যোদ্ধারা নিহত হয়েছেন।
রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের ৫০০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি
রাশিয়ার হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যুদ্ধপরবর্তী ইউক্রেন পুনর্গঠনে এ ব্যয় রাশিয়াকেই পরিশোধ করতে হবে। এক টুইটে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শিমহাল এ কথা জানিছেন। মঙ্গলবার চেক রিপাবলিক, পোল্যান্ড ও স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এমন মন্তব্য করেন। খবর বিবিসির।
তবে ঠিক কীভাবে রাশিয়ার কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করবেন, সে বিষয়ে কিছু বলেননি শিমহাল, যদি ইউক্রেন এই যুদ্ধে জয়ীও হয়। অবশ্য বিদেশে থাকা রুশ সম্পত্তি জব্দের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। মিত্রদের কাছ থেকে ইউক্রেন আর্থিক সহায়তা চাইবে বলেও জানান তিনি।
রুশ হামলায় বিমানবন্দর, পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র, সড়ক যোগাযোগসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবাসিক বহুতল ভবনেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে বেসামরিক স্থাপনায় হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া।
বিজ্ঞাপন
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকি, চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী পেত্র ফিয়ালা ও স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানেজ জানসা মঙ্গলবার কিয়েভ সফরে যান। ইউক্রেনে রুশ হামলার পর কোনো দেশের নেতার এটাই ছিল প্রথম ইউক্রেন সফর।
এই সফরকালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন এই তিন নেতা। পরে তাঁরা সংবাদ সম্মেলন করে ইউক্রেনের পাশে থাকার ঘোষণা দেন।
এদিকে ইউক্রেনে রুশ হামলা আজ বুধবার ২১তম দিনে গড়িয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল দিবাগত রাত তিনটার পরপরই দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লিভিভে সম্ভাব্য বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সাইরেন বাজানো হয়। শহরটি পোল্যান্ড সীমান্ত থেকে ১৫ মাইল দূরে।
সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ মার্চ ১৬, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,