এ যেন ঘরওয়াপসি। এক সময়ে টাটার ডানায় ভর করেই শুরু হয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ান। আজ ৬৭ বছর পর যেন নিজের বাসাতেই ফিরল সে। ফের টাটার হাতেই গেল এয়ার ইন্ডিয়ার মালিকানা। ১৮ হাজার কোটি টাকার দরপত্র জমা দিয়েছিল টাটা গোষ্ঠী।
স্বাধীনতার আগের কথা। ১৯২৯ সালে ভারতের প্রথম লাইসেন্সপ্রাপ্ত পাইলট হন জেআরডি টাটা। ১৯৩২ সালে জেআরডি টাটার হাত ধরে টাটা এভিয়েশন সার্ভিসেস শুরু হয়। প্রথম উড়ানটির পাইলট ছিলেন তিনি নিজেই। প্রথম বিমানটি ছিল একটি ছোট্ট সিঙ্গেল ইঞ্জিনের ডি হ্যাভিল্যান্ড পুস মথ। করাচির ড্রিগ রোড এরোড্রোম থেকে এয়ার মেইল বহন করে বোম্বাইয়ের জুহু এয়ারড্রমে এবং পরে মাদ্রাজে (বর্তমানে চেন্নাই) আসেন তিনি।
স্বাধীনতার পর ১৯৪৮ সালে তার নাম বদলে হয় এয়ার ইন্ডিয়া। এর কয়েক বছর পরেই এয়ার ইন্ডিয়ার মালিকানা যায় কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। ১৯৫৩ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থায় পরিণত হয় এয়ার ইন্ডিয়া।
এয়ার ইন্ডিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত্বকরণের সময়ে আবেগতাড়িত জেআরডি টাটা বলেছিলেন, ‘এটি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় নৈতিক ও মানসিক আঘাত ছিল। এক সন্তানহারা অভিভাবকের মতো লাগছে নিজেকে।’ আর তা হবে নাই বা কেন, নিজের হাতেই তো সেই সন্তানকে উড়তে শিখিয়েছিলেন তিনি।
‘আজ জেআরডি টাটা বেঁচে থাকলে খুবই খুশি হতেন,’ টুইটারে লিখেছেন টাটা গোষ্ঠীর বর্তমান প্রধান রতন টাটা। টাটার এয়ার ইন্ডিয়ায় নিলামে জয়ের খবর তিনি শেয়ার করেন। তিনি একথাও মনে করিয়ে দেন যে এয়ার ইন্ডিয়াকে ফের সঠিক পথে ফেরানো বেশ কঠিন একটি চ্যালেঞ্জ।
‘ওয়েলকাম ব্যাক এয়ার ইন্ডিয়া,’ লিখে টুইট করেন রতন টাটা।
সরকার এয়ার ইন্ডিয়ায় তার সম্পূর্ণ অংশীদারিত্ব বিক্রি করছে। অসামরিক বিমান পরিষেবা ক্ষেত্রে টাটা গ্রুপ নতুন নয়। এয়ারএশিয়া ইন্ডিয়াতে প্রায় ৮৪% এবং ভিস্তারায় ৫১% শেয়ার আছে টাটা গ্রুপের। ফলে এয়ার ইন্ডিয়া যে বেশ অভিজ্ঞ হাতেই যাচ্ছে, তা বলা যায়।
বিলগ্নিকরণ দফতরের সচিব এদিন বলেন, হস্তান্তরের পর মোট ৪৬,২৬২ কোটি টাকার ঋণ থাকবে এয়ার ইন্ডিয়ার। এই ঋণ এআইএএইচএল(Air India Assets Holding Limited (AIAHL)-এর নামে হবে। চলতি বছর অগস্টের শেষে মোট ঋণ ছিল ৬৫,৫৬২ কোটি টাকা।
সূত্রঃ বাংলা হিন্দুস্থান টাইমস।
তারিখঃ অক্টোবর ০৮, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,