Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

কে হাসবেন শেষ হাসি – নোবেল সাহিত্য পুরস্কার ২০২১

Share on Facebook

লেখক: মারুফ ইসলাম।

একটু ব্যতিক্রমীভাবে উদ্​যাপিত হতে যাচ্ছে এবারের নোবেল পুরস্কার। জমকালো কোনো অনুষ্ঠান নয়, বরং পুরস্কৃতদের নিজ নিজ দেশের ঠিকানাতেই পৌঁছে যাবে পদক ও সনদ। ২৩ সেপ্টেম্বর রয়টার্সের এক খবরে এমনটাই জানিয়েছে নোবেল ফাউন্ডেশন। নেপথ্য কারণ অবশ্যই করোনা মহামারি। কোভিড সংক্রমণের ভয়েই নোবেল কমিটির এই ভিন্নধর্মী উদ্​যাপন।

কেবল উদ্​যাপনে ভিন্নতা নেই বাজিকরদের কাজেকর্মে। তাঁরা আগের মতোই বাজি খেলায় নেমেছেন—কে পেতে যাচ্ছেন এ বছরের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার! জমে উঠেছে বাজির ওয়েবসাইটগুলো। দিন তো বেশি বাকি নেই। দুয়ারে ঘটাং ঘটাং করে কড়া নাড়ছে দিনক্ষণ। এই তো ৭ অক্টোবর ঘোষিত হবে বহুল প্রতীক্ষিত সেই নাম।

কিন্তু কোন নাম? বাজি সেটা নিয়েই। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় বাজি খেলার সাইটগুলোর মধ্যে রয়েছে লেডব্রোকস, বোভাডা, প্যাডি পাওয়ার, ট্রিপল এইট স্পোর্ট ও বেটফেয়ার। এসব সাইটে ঘুরেফিরে আসছে কানাডার দুই কবি অ্যান কার্সন ও মার্গারেট অ্যাটউড, জাপানি ঔপন্যাসিক হারুকি মুরাকামি আর কেনিয়ার লেখক নগুগি ওয়া থিয়াঙ্গার নাম।

বাজিকরদের আরেকটি জনপ্রিয় সাইট বেটজিলিয়ন। এই সাইটেও বাজিকরদের সবচেয়ে পছন্দের লেখকের নাম অ্যান কার্সন। এরপর ইঁদুরদৌড়ে এগিয়ে আছেন মার্গারেট অ্যাটউড। এবং তারপরের অবস্থানটি হারুকি মুরাকামির।

অন্যদিকে টুয়েন্টি টু বেট ওয়েবসাইটে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে এক নম্বরে আছেন জনপ্রিয় মার্কিন থ্রিলার লেখক স্টিফেন কিং। গেল ২৮ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টা পর্যন্ত তিনি পেয়েছেন ৫১ ভোট। ১৭ ভোট পেয়ে দুই নম্বরে আছেন স্পেনের ঔপন্যাসিক জাভিয়ার মারিয়াস। ১১ ভোট নিয়ে তিন নম্বর অবস্থানে আছেন একই সঙ্গে দুই লেখক—নগুগি ওয়া থিয়াং ও মার্গারেট অ্যাটউড।

বাজির সাইটগুলোতেই যে শুধু আলোচনা হচ্ছে এমন নয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতেও চলছে তুমুল বাগ্​বিতণ্ডা। রেডিট নামে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি আলোচনামূলক প্ল্যাটফর্ম (ডিসকাশন ওয়েবসাইট) রয়েছে। এখানে বেশ কয়েক দিন ধরে জমে উঠেছে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারবিষয়ক আলাপ-আলোচনা। জিম ফ্যান নামে একজন চীনা বাজিকর তাঁর রেডিট অ্যাকাউন্টে ‘জন ফস এবার সাহিত্যে নোবেল জিতবেন’ বলে পোস্ট করেছেন। নরওয়ের ঔপন্যাসিক জন ফসের পক্ষে বাজি ধরার পেছনে বেশ কটি কারণও উল্লেখ করেছেন এই বাজিকর। তাঁর মতে, গত বছর পুরস্কার পেয়েছেন লুইস গ্লিক। তিনি একজন মার্কিন কবি। উত্তর আমেরিকায় তাঁর নিবাস। সুতরাং এ বছর মার্কিন মুলুকের কেউ পুরস্কার পাচ্ছেন না, এটা নিশ্চিত। একই কারণে তিনি থমাস পিনচন ও মেলিসা ম্যাককার্থির নামেও বাজি ধরতে নারাজ। কারণ, তাঁরা দুজনেই মার্কিন লেখক।

তাহলে মার্গারেট অ্যাটউডকে বিবেচনায় রাখা যায়? বাজিকর জিম ফ্যান বলেন, না, যায় না। কারণ, অ্যাটউড কানাডার কবি। কানাডা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঠিক বগলঘেঁষা একটি দেশ। একে উত্তর আমেরিকা বলাই যায়। সুতরাং ভৌগোলিক বিবেচনায় অ্যাটউডও খারিজ। এ ছাড়া আরও একটি ব্যাপার খুব জোরালোভাবে আছে অ্যাটউডের বিপক্ষে। সেটি হলো, নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসে পর পর দুই বছর দুজন নারী কখনোই পুরস্কার পাননি। গত বছর যেহেতু একজন নারী সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন, সুতরাং এ বছর কোনো নারী লেখকের পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনা কম।

নোবেল সাহিত্য পুরস্কার নিয়ে তুমুল হইচই চলছে ফেসবুক–টুইটারেও। লুইস পানিনি নামের একজন লেখক টুইটারে লিখেছেন, এবারের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারটি লুদমিলা উলতস্কায়াকে দেওয়া উচিত। রাশিয়ান এই লেখকের গদ্যশৈলী অপূর্ব। তাঁর লেখা ধ্রুপদি সাহিত্যের সঙ্গে তুলনীয়। তিনি যেভাবে চরিত্রের মনস্তাত্ত্বিক বিষয়–আশয় ফুটিয়ে তোলেন, আগে কেউ সেভাবে পারেননি। তাঁর লেখার সঙ্গে পূর্বসূরিদের লেখার কোনো মিল নেই।

আবার কেউ কেউ মজা করে পপতারকা লেডি গাগাকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার জন্য নাম প্রস্তাব করছেন। কারণও আছে অবশ্য। গেল বছর একটি প্রবন্ধের বই লিখেছেন তিনি। প্যান ম্যাকমিলান থেকে বেরোনো বইটির নাম চ্যানেল কাইন্ডনেস।

সংগীতশিল্পীদের নোবেল পাওয়ার ইতিহাস যে একদম নেই তা নয়। ২০১৬ সালে সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন কিংবদন্তি সংগীত তারকা বব ডিলান। তবে ডিলানের সঙ্গে তুলনা করে লেডি গাগার জন্য সাহিত্য পুরস্কার দাবি করা হচ্ছে, এমন ভাবার কোনোই কারণ নেই। মানুষ নিছক মজা হিসেবেই গাগার নাম উচ্চারণ করছেন। যেমন টেলর কেস কাভস নামের এক ব্যক্তি টুইটারে লিখেছেন, কোভিডের বিরুদ্ধে অকুতোভয় লড়াকু, একাডেমি পুরস্কারজয়ী, জাতীয় ধনকুবের, জনহিতকর গায়িকা, মুক্ত বিশ্বের নেত্রী লেডি গাগাকে এবার সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হোক। তিনি চ্যানেল কাইন্ডনেস নামে একটি বই লিখে বিশ্বসাহিত্যে অসামান্য অবদান রেখেছেন।

এ ছাড়া টুইটারে ঘুরেফিরে আসছে ফরাসি ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার মারিসি কঁদে এবং চীনের ঔপন্যাসিক ও সাহিত্য সমালোচক কেন জুয়ের নাম।

শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি কে হাসবেন, কার হাতে উঠবে নোবেল পদক, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কারণ, সাহিত্যের নোবেল বিষয়ে কোনো ভবিষ্যদ্বাণী খাটে না। বেশির ভাগ সময় দেখা যায়, যাঁর নাম স্বপ্নেও কেউ ভাবেননি, তাঁকেই টেলিফোন করে নোবেল জয়ের খবর দিচ্ছে নোবেল কমিটি। তারপরও মানুষ কল্পনা করতে ভালোবাসে। পছন্দ করে ভাগ্য নিয়ে জুয়া খেলতে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। জুয়াড়িরা তো বটেই, বোদ্ধা, সমালোচক, পণ্ডিতেরাও পূর্বানুমান করার চেষ্টা করছেন যে কার মাথায় উঠবে বিজয়ের মুকুট।

এসব বিষয় এবার নিশ্চয় বিবেচনায় রেখেছে সুইডিশ একাডেমি। কারণ, এর আগে ২০১৯ সালের বিজয়ীকে খুব একটা ভালোভাবে গ্রহণ করেনি বিশ্ববাসী। নগুগি ওয়া থিয়াঙ্গা, সালমান রুশদি, হারুকি মুরাকামি বা জ্যামাইকা কিনকেডকে বাদ দিয়ে কিনা পিটার হ্যান্ডকে বিজয়ী ঘোষণা করল! ব্যাপারটি সুইডিশ একাডেমির বিশ্বাসযোগ্যতা ও নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল।

ধারণা করা হচ্ছে, এ বছর সাহিত্যের নোবেলজয়ীকে খুব দক্ষতার সঙ্গে নির্বাচন করা হবে। নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, নোবেল বিজয়ীদের নির্বাচন এখন বিভিন্ন মহলের বিশেষজ্ঞদের সাহায্যে করা হয়। এটি আর সুইডিশ একাডেমির একক সিদ্ধান্তের মধ্যে নেই। সারা বিশ্বের সাহিত্যবোদ্ধারা যাঁকে ‘সাহিত্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে অসামান্য কাজ’ করেছেন বলে স্বীকৃতি দেবেন, তাঁর হাতেই উঠবে নোবেল পদক।

বোদ্ধাদের চোখে এবারের নোবেল সাহিত্য পুরস্কার পাওয়ার সবচেয়ে বড় দাবিদার অ্যান কার্সন ও মার্গারেট অ্যাটউড। মার্গারেটের দ্য টেস্টামেন্টস, প্রিকুয়েল ও দ্য হ্যান্ডমেইডস টেল—এসব বই বিশ্বের নারীবাদকে এগিয়ে নিয়েছে। এই বইয়ের মাধ্যমে তিনি মানবজাতির জন্য অসাধারণ দিকনির্দেশনা রেখে যাচ্ছেন, তাতে সন্দেহ নেই। তাই মার্গারেট অ্যাটউড যদি ২০২১ সালের নোবেল সাহিত্য পুরস্কার পান, তাহলে সুইডিশ একাডেমিই ধন্য হবে বলে মনে করেন সাহিত্যবোদ্ধারা।

অন্যদিকে অ্যান কার্সনও কম যোগ্য নন। তিনি ইতিমধ্যেই ল্যানান সাহিত্য পুরস্কার, গুগেনহাইম অ্যাওয়ার্ড, ম্যাক আর্থার ফেলোশিপ ও প্রিন্সেস অব আস্তুরিয়াস পুরস্কার পেয়েছেন। এত এত সম্মানজনক পুরস্কার যাঁর ঝুলিতে, তিনি কেন নোবেল পাবেন না, এমন প্রশ্নও উঠেছে।

অ্যান কার্সনের লেখার ধরন অন্যদের থেকে আলাদা। তিনি যা বলতে চান, তা সারাসরি বলেন, কোনো রাখঢাক রাখেন না তাঁর গদ্যে। মেন ইন দ্য অব আওয়ার্স–এ লেখকের সবচেয়ে আলোচিত বই। তা ছাড়া ক্যানাকুলা ডি আনা ও দ্য বিউটি অব দ্য হাজবেন্ড—বই দুটিও ভীষণ পাঠকপ্রিয়। এর বাইরে সফোক্লিসের ইলেকট্রাসহ ১০টি গ্রিক ট্র্যাজেডি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন তিনি। কে জানে, অ্যান কার্সনের ভাগ্যে এবার শিকে এবার ছিঁড়তেও পারে।

তবে প্রতিবছর যাঁর নামে বাজি ধরছেন বিশ্বের তাবত জুয়াড়ি, সেই হারুকি মুরাকামির নাম যদি হঠাৎ ঘোষণা করে বসে সুইডিশ একাডেমি, তাতেও বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। মুরাকামির আ ওয়াইল্ড শিপ চেজ, হার্ড বয়েলড ওয়ান্ডারল্যান্ড, দ্য অ্যান্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড ও কিলিং কম্যান্ডেটর যাঁরা পড়েছেন, তাঁরা হয়তো এই বলে অক্ষেপ করবেন যে এই সুলেখক কেন এত দিনেও নোবেল পাননি। মুরাকামি ইতিমধ্যে ড্যানিশ হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন সাহিত্য পুরস্কার, জে কে রাউলিং পুরস্কার ও জেরুজালেম পুরস্কার পেয়েছেন। এসব কারণে বাজিকর ও বোদ্ধা উভয় শ্রেণির আস্থা বেড়েছে তাঁর ওপর। যদিও পুরস্কার খুব একটা পছন্দ করেন না মুরাকামি। এক সাক্ষাৎকারে জাপানি এই জীবিত কিংবদন্তি বলেছেন, সারা পৃথিবীতে আমার বই মিলিয়ন মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়। পৃথিবীর মানুষের এই ভালোবাসাই আমার সবচেয়ে বড় পুরস্কার। অন্য কোনো পুরস্কার আমার না পেলেও চলে।

দেখা যাক, শেষ হাসি কে হাসেন। ফয়সালা হবে ৭ অক্টোবর।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ অক্টোবর ০১, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ