Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

জনস্রোতে শেখ হাসিনা সেই ১৯৮১ সালের ১৭ মে

Share on Facebook

লেখক: মালেকা বেগম

ব্রাসেলসে রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভয়াবহ দুঃসংবাদটি পেলেন শেখ হাসিনা। প্রবাসে ছয় বছর দুঃসহ সময় কাটিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরেন তিনি। মালেকা বেগমের লেখায় এসেছে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনে ঢাকা বিমানবন্দরে আবেগঘন ক্ষণের বর্ণনা।

সেদিন রোববার ১৯৮১, ১৭ মে রাজপথে নেমেছিল মানুষের ঢল। পথের দুই ধারে মানুষের মিছিল, পথে ট্রাক, গাড়ি, হোন্ডার সারিবদ্ধ শোভাযাত্রা। পথের মানুষ আগেই জানে, শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন পর ঢাকায় আসছেন। বলাবলি চলছিল, ভালোই হয়েছে, রোববার অবসরের দিন, সময়টাও ভালো, বিকেলে শেরেবাংলার জনসভায় যাওয়া যাবে। রিকশাযাত্রীদের কথোপকথনে রিকশাওয়ালাও যোগ দেন, ‘দেইখ্যা আসেন কুর্মিটোলা এয়ারপোর্ট, শেখের বেটির লাগি কাতারে কাতারে মানুষ জমছে সকাল থাইক্যা। শেখ মুজিবুর যেই দিন ফিরছিল যুদ্ধের পর, এমুন মানুষ সেই দিনও হয় নাই।’

সত্যি তাই। কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে পথে দেখেছি, দুই ধারের বাড়ির কার্নিশে, ছাদে, দোকানে, ফুটপাতে মানুষ নির্নিমেষ চেয়ে ছিল ট্রাকগাড়ির শোভাযাত্রার দিকে। বিমানবন্দর এত দূর শহরাঞ্চল থেকে যে মানুষ ট্রাকগাড়ির শরণাপন্ন না হয়ে পারেনি। পথের মোড়ে মোড়ে জনতার স্বতঃস্ফূর্ত আহাজারি, ‘কী দ্যাখতে আইল শেখের মাইয়া, মা নাই, বাপ নাই, ভাইও নাই। আহারে, ক্যামুনে জানি জাগব ওর পরানে।’ কেঁদেছেন অনেকেই। অনেকের চোখে আগুনের হলকা, কণ্ঠে স্লোগানের মর্মবিদারি ভাষা।

বিমানবন্দরের কাছাকাছি অপেক্ষমাণ জনতার কোঁচড়ে মুড়ি-চিড়ার স্পষ্ট আভাস দেখা যাচ্ছিল। দূর থেকে যাত্রা করে এঁরা এসেছেন। অসুস্থ, রুগ্ণ, কিশোর-যুবক বাদ যাননি। সবার চোখ রানওয়ের দিকে। আসমানের অবস্থা দুই দিন ধরেই খারাপ যাচ্ছে। কী জানি কেমন যাবে আজকের দিন। কালো মেঘ জমছে। বিমানবন্দর ছেয়ে গেছে গাড়ি আর মানুষে। ভিআইপি লাউঞ্জে ঢোকার গেট, গেটের ওপর ছাদ, লোকে লোকারণ্য। মানুষের চিৎকার, কথা, ঠেলাধাক্কা—সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে শেখ হাসিনার আগমনবার্তা।

ফুলের ঝাঁকা হাতে এক স্বেচ্ছাসেবক নিরাপত্তারক্ষীর ব্যূহ ভেদ করে ভেতরে ঢুকতে না পারায় উত্তেজিত, অথচ এত বড় কাজটির জন্য রোমাঞ্চিতও বটে। শেষে ফুলের ঝাঁকাটি লোকের হাতে হাতে গেটের ওপারে চলে গেল। সেখানে নেতারা অপেক্ষমাণ শেখ হাসিনার বিমান অবতরণের জন্য সাংবাদিক, আলোকচিত্রশিল্পীরা দুর্লভ কথা আর মুহূর্তটিকে কাগজ-কলম-ক্যামেরায় বন্দী করবেন বলে। এর মধ্যে বাংলাদেশ বিমানের ফকার দেখেই পুলিশ, আনসারের প্রতিরোধ ভিঙিয়ে জনতা বানের পানির মতো ঢুকে গেল রানওয়েতে। বারকয়েক এমনি আসা-যাওয়ার মধ্যে শেখ হাসিনা এসে নামলেন জনসমুদ্রে। কান্না–হাসির দোল-দোলানো এ কোন মিলনোন্মুখ দৃশ্য।

শতসহস্র কণ্ঠের অভিবাদন নিতে নিতে, হলুদ ফুলের মালা গলায়, দুই হাত উত্তোলিত করে, বন্ধু-স্বজন পরিবেষ্টিত হয়ে শেখ হাসিনা যখন চলে গেলেন বিমানবন্দর ছেড়ে, তখন জনতার পদভারে প্রকম্পিত সমগ্র এলাকাজুড়ে এল হর্ষধ্বনি। হাসিনার অশ্রু ঝরতে না ঝরতেই তাঁর প্রতি সমবেদনায় বাংলার প্রান্তরজুড়ে নেমে এল অঝোর বারিধারা।

সচিত্র সন্ধানী, ২৪ মে ১৯৮১

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ২৮, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ