Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

জনাব নূরুল হুদা, আমরা কিন্তু ঠিকই বিব্রত (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:শওকত হোসেন।

আজ সোমবার নূরুল হুদার নেতৃত্বের নির্বাচন কমিশনের শেষ দিন। শেষ দিনে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, গত পাঁচ বছরের নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে তাঁরা মোটেও বিব্রত নন।

সংবাদ সম্মেলনে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘আজকের পর সমাজে আপনাদের পরিবার-পরিজন, আত্মীয়স্বজন নানা সোসাইটিতে নানা মানুষের সঙ্গে আপনাদের দেখা হবে। আপনারা কোনো কারণে নিজেদের মধ্যে বিব্রতবোধ করবেন কি না, যে নির্বাচনব্যবস্থার যে অবস্থা আমরা দেখছিলাম…’ এর জবাবে বিদায়ী সিইসি জোর দিয়ে দুবার বলেছেন, ‘মোটেই না। মোটেই না।’ এ বিষয়ে সাংবাদিকদের দেওয়া তাঁর যুক্তি হচ্ছে, ‘নির্বাচনে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করে নির্বাচনের আইনকানুন এবং নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির কোনো অভাব রাখিনি। সে রকম নির্বাচন আমরা এখানে করার চেষ্টা করেছি। সুতরাং, সেখানে আমরা বিব্রত নই, কোনো দুর্বলতা নেই।’

প্রথমেই বিদায়ী সিইসির এই বক্তব্যে পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। তাঁর বিব্রত হওয়ার কোনো কারণই নেই। কারণ, যে কাজটি তিনি করতে এসেছিলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছিলেন, সেই কাজ যথেষ্ট যোগ্যতা ও দক্ষতার সঙ্গেই করেছেন। তাঁর প্রতি নিয়োগকর্তার যে নির্দেশনা ছিল, সেটিই সঠিকভাবে পালন করেছেন। তাঁর সময়ে নির্বাচন হয়েছে, অন্তত কাগজ-কলম তা-ই বলে। সুতরাং, তিনি যে মোটেই বিব্রত নন, সেটাই ঠিক।

হুদা কমিশনে অন্যতম সদস্য মাহবুব তালুকদার। শেষ দিনে তিনি তাঁর প্রথা মেনে একা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আজ তিনি সেখানে বলেছেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে যে ওই নির্বাচনে গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্রের লাশ পড়ে আছে। এই লাশ সৎকারের দায়িত্ব কে নেবে? কথাটা রূপকার্থে বলা হলেও, এটাই সত্য। নির্বাচনের নামে সারা দেশে এমন অরাজকতা কখনো কাঙ্ক্ষিত ছিল না। তৃণমূল পর্যায়ে এই নির্বাচন দ্বন্দ্ব-সংঘাতের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে দিয়েছে। অন্যদিকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পদে আসীন হওয়াকে নির্বাচন বলা যায় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।’
একই কমিশনের একজন সদস্যের এ ধরনের বক্তব্যে অবশ্য কে এম নূরুল হুদার বিব্রত হওয়ার দরকারই নেই। কারণ, সাধারণ মানুষের কথাবার্তা, বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা, দেশ-বিদেশের আলোচনায় যখন যাঁর কিছুই যায়-আসে না, তখন মাহবুব তালুকদারের কথাবার্তায় গুরুত্ব দেওয়ার দরকারই নেই।

তা ছাড়া ছোটবেলায় কামিনী রায়ের সেই কবিতা থেকে ভাবসম্প্রসারণ মুখস্থ করেননি, এমন কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাবে না। এই তালিকায় নিশ্চয়ই সিইসি কে এম নূরুল হুদাও আছেন। কবিতাটি হলো, ‘আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী পরে,/ সকলের তরে সকলে আমরা,/ প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।’ কবি এর অন্তর্নিহিত অর্থ যা-ই বলুন না কেন, সাদাচোখে বলা যায়, নিজেকে নিয়ে বিব্রত হওয়া কবিরও বারণ আছে।

তবে আমরা কিন্তু বিব্রত। আমরা মানে সাধারণ মানুষ, যাঁদের একটা করে জাতীয় পরিচয়পত্র আছে, যাকে আমরা ভোটার কার্ডও বলি। এই কার্ডের অনেক ব্যবহার, খালি ভোটেই ব্যবহার নেই বলা চলে। নির্বাচনের সঙ্গে যে ভোটের একটা সম্পর্ক আছে, বিষয়টি ভুলে যাওয়ার জন্য আমরা বিব্রত। রাতে ভোট করার খ্যাতি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় আমরা বিব্রত। এ রকম একটি নির্বাচন কমিশন নিয়েই আসলে বিব্রত। এই কমিশন নিয়ে সাধারণ মানুষের যে মনোভাব, তাতেও আমরা সবাই বিব্রত। তাঁদের কোনো বক্তব্যই যে কেউ গুরুত্বের সঙ্গে নেয় না, সেটিও কি কম বিব্রতকর? গত ৫ বছরে যত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন, আধুনিক মানবসভ্যতার ইতিহাসে এই রেকর্ড অন্য কোনো দেশের আছে কি না, তা নিয়ে গবেষণা হতে পারে। তবে এ রকম নজির নেই বলেই ধারণা করা যায়। এই রেকর্ড অর্জনও তো বিব্রতকর। সব মিলিয়ে এ রকম এক নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে, এটাই কি কম বিব্রতকর?

সর্বশেষে একটা গল্প বলি। বনে নির্বাচন। শিয়াল পণ্ডিত নির্বাচন কমিশনার। ভোটাভুটি শেষ হওয়ার ৭২ ঘণ্টা পর শিয়াল ফলাফল ঘোষণা করতে মঞ্চে উঠেছে। সেই সময় কোত্থেকে এক গন্ডার ছুটে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, ‘পণ্ডিত মশায়, আমাকে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। ভোট দিতে দেয়নি।’
শিয়াল বলল, ‘এ কথা আজ বলছ কেন?’

গন্ডার বলল, ‘আমাকে যে বের করে দেওয়া হয়েছিল, এটা মাত্রই বুঝলাম।’
হুদা কমিশনের কথাবার্তা শুনলে মনে হয়, দেশের সব ভোটার গন্ডারের মতোই, তাঁরা কিছু বুঝতে পারেন না। সুতরাং, যা ইচ্ছা তা-ই বলা বা করা যায়।
হুদা কমিশন যে সাধারণ মানুষকে এ রকম করে ভাবে, এতেও আমরা বিব্রত।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ ফেব্রুয়ারী ১৪, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ