Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

জিল দেল্যুজ এবং তার লেখা।

Share on Facebook

আমি কি লিখবো এইটা জানার জন্য যদি অপেক্ষা করে থাকি, কি বলতেছি এইটা বোঝার জন্য যদি অপেক্ষা করে থাকি, তাহলে সতিকার অর্থে আমাকে সবসময় অপেক্ষাই করতে হবে; আর এইসবকিছুর পর যখন আমি কিছু বলবো, সেইটা আর কৌতূহলোদ্দীপক মনোজ্ঞ কোনো ব্যাপার হবে না। আমি যদি ঝুঁকি না নিয়ে সবকিছুর মীমাংসা করি, আর তারপর যদি পাণ্ডিত্যপূর্ণ কথামালায় চারপাশের বাতাস সরগরম করি এমনসব বিষয়গুলা নিয়ে, যেইগুলা সম্পর্কে আমার বেশি ধারণাও নাই, সেইটা হবে আরেকটা অ-কৌতূহলোদ্দীপক অনাকর্ষণীয় ব্যাপার। আমি শুধু জানা আর না-জানার মধ্যবর্তী এই সীমারেখার কথা বলতে চাই যেই সীমারেখায় এসেই কাউকে কোনোকিছু বলার ব্যাপারে মীমাংসায় আসতে হয়।…

…উপযুক্ত শব্দের অভাবে আমি নিজেকে খুলে রেখেছি প্রতিধ্বনির কাছে, অনুরণিত শব্দের কাছে। উদাহরণ? খুব সহজ একটা উদাহরণ দেয়ার চেষ্টা করি: চিত্রশিল্পীদের ভেতর যার কাজ আমার খুবই ভাল লাগে সে হচ্ছে ডুলান্যে (Robert Delaunay); কেন? একটা সূত্রের মধ্যে ফালানোর চেষ্টা করি চলো; ডুলান্যে কি করে? সে একটা চমৎকার ব্যাপার লক্ষ্য করলো, আর আমি যখন এই লক্ষ্য বা পর্যবেক্ষণ করার কথাটা বলছি, এটা আমাদেরকে গোড়ার সেই প্রশ্নটায় আবার নিয়ে যায় তাই না? একটা ভাব কিংবা একটা চিন্তা ধারণ করার ব্যাপারটা আসলে ঠিক কেমন? ডুলান্যে’র চিন্তা কি ছিলো? সে ভেবেছিলো যে আলো নিজে থেকেই নকশা বানাতে পারে, ‘আলোর নকশা’ বলে একটা ব্যাপার আছে… এটা একটা নতুন ব্যাপার, নব্যতার প্রবর্তক, যদিও ওর আগেই কেউ হয়তোবা এসব নিয়ে চিন্তাভাবনা করেছে… ডুলান্যে চেয়েছিলো এমনসব ছবি আঁকতে যে ছবিগুলো আলো থেকে রূপ নিয়েছে, আলোর নকশা। সে চেয়েছিলো আলোর এই নকশার ছবি আঁকতে, আলো বস্তুর সাথে মিলিত হলে যে অবয়বের তৈরী হয় ডুলান্যে সেটা আঁকতে চায়নি। এইভাবে ডুলান্যে সব বস্ত থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করেছে, ফলশ্রুতিতে সে কোন বস্ত ছাড়াই ছবি আঁকতে সক্ষম হোলো। মনে আছে, ডুলান্যে’র কিছু সুন্দর সুন্দর কথা আমি পড়েছিলাম; ও বলতো, ও যখন কিউবিজমকে শক্তপোক্তভাবে মূল্যায়ন করে, ওর মনে হয় যে সেজান (পল সেজান) বস্তকে টুকরো টুকরো করে ভেঙে ফেলতে সমর্থ হয়েছিলো, ফলের বাটি ভেঙে ফেলেছিলো, আর কিউবিষ্টরা পরে তাদের সমস্ত সময় নিয়ে সেগুলো আঠা দিয়ে জোড়া লাগানোর চেষ্টা করেছে। তাই বস্তুকে বাদ দিতে, বর্জন করতে, ডুলান্যে জ্যামিতিক আর শক্তপোক্ত সব চিত্রকর্মের বিকল্পরূপে নিয়ে এলো এক ভেজালছাড়া আলোর খেলা। এটা একটা ঘটনা বটে, এক জীবন্ত চিত্রময় ঘটনা, এক ডুলান্যে-ঘটনা।…

আমি ফুকো’রে পছন্দ আর শ্রদ্ধা দুইই করি। আমি ওরে নিয়ে একটা প্রবন্ধ লিখছিলাম। সেও আমারে নিয়ে লিখছিলো, আর ওর সেই লেখা থেকে তুমি একটা উক্তি বের করে আনছো যেখানে ফুকো বলছিলো যে “হয়তো একদিন এই শতাব্দীকে বলা হবে দেল্যুজিয়ান।” তুমি কইতে চাও যে আমরা একজন আরেকজনের সঙ্গে তেলাতেলি করতেছি এইভাবে, নাকি? তোমার মাথায় এইটা একবারও আসছে কিনা সন্দেহ যে আমি ফুকোরে আসলেই শ্রদ্ধা করতে পারি, অথবা, ওর এই ছোট্ট উক্তিটা আসলে একটা রসিকতা যেইটা আমার মতন লোকদের কাছে একটা হাসির খোরাক, কিন্তু বাদবাকি সবাইরে এইটা ভয়ঙ্কর পাগলা বানায় দিবে আরকি।…

… আমি যা লিখেছি সেগুলো নিয়ে কিছু ব্যাখ্যার অবকাশ আছে এখানে। আমি এমন এক সর্বশেষ প্রজন্মের অংশ, দর্শনের ইতিহাস যাদের মুগুরপেটা করে মরো মরো অবস্থা বানিয়ে ছেড়েছে। দর্শনের ভেতর এর নিজের ইতিহাসগুলো চাপা অবস্থায় থাকে; অবদমিত এই ইতিহাস, দর্শনের নিজস্ব এক ইডিপাস-কমপ্লেক্স; সেই কথাগুলো যেমন, “ওস্তাদ, তুমি নিজে কী ভাবো সেটা নিয়ে গুরুত্ব নিয়ে বলার আগে তোমারে এইসব এইসব জিনিস পড়তে হইবো, এইটার উপর এই জিনিসটা পড়তে হইবো, ঐটার ওপর ঐ জিনিসটা পড়তে হইবো”। আমার প্রজন্মের অনেকেই এই গোলকধাঁধা থেকে বের হয়ে আসতে পারে নাই; কেউ কেউ পেরেছে নিজস্ব কোনো তরিকা আবিষ্কার করে, নিজের জন্য কোনো নতুন নিয়ম বানিয়ে, স্বকীয় কোনো স্বরের মাধ্যমে। আমি নিজেও দর্শনের এই ইতিহাস নিয়ে অনেকদিন “সাধনা” করেছি, এইসব এইসব লেখকের লেখা ওইসব ওইসব বই পড়েছি। কিন্তু এগুলো করার সময় আমি নিজেকে বাঁচায়ে রাখতে পেরেছি বিভিন্ন উপায়ে, যার মধ্যে প্রথমত আছে সেইসব লেখকদের উপর মনোযোগের পাল্লা ভারী করে, যারা দর্শনের ইতিহাসের যুক্তিবাদী সনাতনী ধারাগুলোকে চ্যালেঞ্জ করেছিলো (আর আমি অবশ্যই লুক্রেতিউস, হিউম, স্পিনোজা আর নীৎসে’র মধ্যে এক গোপণ সম্পর্ক দেখতে পাই; আর আমার এই দেখার উৎপত্তিটা মূলতঃ তাদের নেতিবাচক ভাবের সমালোচনা, হর্ষ আর আনন্দের চাষবাস, অভ্যন্তরীণ ব্যাপারস্যাপারগুলোরে ঘৃণা করার চেষ্টা, শক্তি এবং সম্পর্কের বাহ্যিক রূপায়ন, ক্ষমতাকে অভিযুক্ত করার তাগিদ, এবং এরকম আরও অনেক বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণ করার ফলে ঘটেছে)। সবচেয়ে তীব্রভাবে ঘৃণা করেছি হেগেলবাদ আর দ্বান্দ্বিকতা। কান্টের উপর আমার বইটা আলাদা, আমি নিজেই বেশ পছন্দ করি ওইটা; বইটা আমি লিখেছিলাম একজন শত্রুকে নিয়ে যেখানে তার তরিকাগুলো কীভাবে কাজ করে সেটা তুলে দেখানোর একটা প্রয়াস ছিলো…। …কিন্তু আমার মনে হয় আমি এইসবের সাথে পাল্লা দিয়ে তখন টিকে থাকতে পেরেছি দর্শনের ইতিহাসটাকে পিছন থেকে লাগানোর মতন একটা ব্যাপার ভাইবা, অথবা (যদিও অর্থটা আসলে একই দাঁড়ায়) একটা অনবদ্য নির্মল গর্ভধারণের মত কিছু একটা চিন্তা করে। আমি নিজেকে কল্পনা করতাম একজন লেখককে ধইরা পিছন থেকে লাগায়ে বাচ্চা পয়দা করার মধ্যে, যেই বাচ্চাটা তার নিজের সন্তান হবে ঠিকই, কিন্তু অস্বাভাবিক একটা রাক্ষস হবে, দানব হবে। বাচ্চাটার লেখকের নিজের সন্তান হওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ লেখককে অবশ্যই সেই কথাগুলো বলতে হবে যেইটা আমি তারে দিয়া বলাইতে চাই। কিন্তু বাচ্চাটারেও শেষ পর্যন্ত একটা রাক্ষসই হইতে হবে কারণ এইটার জন্ম তো হইছে কতরকম নড়াচড়া, পিছলানো, খুইলা পড়ে যাওয়া, গোপণ গোপণে কত কিছু বাইর হয়ে যাওয়া ইত্যাদি কর্মকাণ্ডের ফলশ্রুতিতে যেইগুলা আমারে সত্যিকার অর্থে অনেক আনন্দ দেয়।…

…একমাত্র নীৎসে ছিলো সেই লোক যে আমাকে এইসব থেকে মুক্ত করে নিয়ে গেছে, যদিও ওকে পড়তে আমার একটু দেরী হয়ে গেছিলো। ওর সাথে ঘটনাটা আসলে অন্যরকম দাঁড়ায়। ও উলটা তোমার পিছন দিয়া সব জিনিসপত্র ঢুকাবে। ও তোমারে সবকিছুর একটা বিকৃত স্বাদ দিবে, যেইটা মার্ক্স কিংবা ফ্রয়েড কাউরে দিতে পারে নাই; জিনিসটা হচ্ছে খুব সাধারণ ব্যাপারগুলোকে নিজস্ব অনুভূতিতে, তীব্রতায়, অভিজ্ঞতায়, এক্সপেরিমেন্টে নিজের মতন করে বলতে পারা। নিজের নামে কথা বলা, নিজের কথা বলা – এইগুলা একটা অদ্ভুত ব্যবসা আর কি, কারণ এই কর্ম করতে গিয়ে নিজেরে কোন ব্যক্তি, সত্তা, অহং কিংবা কোনো বিষয়বস্ত ভাবার মতন কোনো ব্যাপার এখানে একেবারেই নাই। বরং ব্যাপারটাকে এইভাবে ভাবা যায় যে, একজন নিজেকে খুঁজে পায় তখনই, যখন সে নানাবিধ রূঢ় আর কঠোর চর্চার ভিতর দিয়ে গিয়ে নিজেকে নিজস্ব ব্যক্তিসত্তা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে; নিজের ভিতরে ঘুরে বেড়ানো নানারকম ‘আমি’র রঙঢঙের কাছে নিজেকে খুলে ধরতে পারে; তাদের প্রত্যেকের ভিতর দিয়ে বয়ে চলা যত তীব্র তীক্ষ্ণ অনুভূতির সামনে নিজেকে দাঁড় করিয়ে দিতে পারে। বহুবিধ এই সত্তাগুলোর বহুমুখী তীব্র-ভাবের সামনে সচেতনভাবে প্রস্তুত রেখে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার এই পন্থা দর্শনের ইতিহাসের তথাকথিত অ-ব্যক্তিকরণ পন্থার থেকে পুরাই উলটো একটা ব্যাপার; প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসা দিয়ে ঘটে এটা, দর্শনের ইতিহাসের কাছে পরাধীনতা বা বশ্যতা স্বীকার করে নয়।…মানুষে যা বলে, সেগুলা তার অজ্ঞতার এবং অপরিপক্বতার গভীরতা থেকে বাইর হয়।

সূত্র: সংগৃহিত।
তারিখ: অক্টোবর ২৪, ২০২০

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ