Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

পুতিনের যুদ্ধ ইউরেশিয়ায় চীনের আধিপত্যের সুযোগ করে দিচ্ছে (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:স্টেফান উলফ।

সব সন্দেহের অবসান ঘটিয়ে বিষয়টি এখন প্রকাশ্যে চলে এল। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন’ চীন। এ বিবৃতি যে মঞ্চ থেকে এসেছে, সেটি নানা কারণেই বড় বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে। কেননা, সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলন থেকেই এ বিবৃতি এসেছে।

প্রশ্ন হলো, চীনের এই উদ্বেগ পুতিন স্বীকার করে নিলেন, এর তাৎপর্যটা আসলে কী? গত কয়েক সপ্তাহে ইউক্রেনে বড় ধরনের সামরিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনে নিজেদের দখলে নেওয়া আট হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা খুইয়েছে তাঁর সেনাবাহিনী। এর অর্থ হচ্ছে, ঘনিষ্ঠতম মিত্রদের ওপর রাশিয়ার প্রভাব কমেছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়া থেকে ছাড়কৃত দামে তেল ও গ্যাস কিনছে চীন। কিন্তু ইউরোপের সঙ্গে স্থলপথে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চীনের প্রধান পথটি বন্ধ হয়ে গেছে। চীন স্থলপথে কাজাখস্তান ও রাশিয়া হয়ে ইউরোপে পণ্য পাঠায়। বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে এবং বৈশ্বিক মন্দার মতো একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতির দেশ চীনের জন্য অবশ্যই উদ্বিগ্ন হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে।

বেইজিং পশ্চিমাদের চাপ অগ্রাহ্য করে মস্কো থেকে জ্বালানি আমদানি করছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় এটা প্রশংসনীয় সিদ্ধান্ত। কিন্তু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চীন চায়, বৈশ্বিক অর্থনীতি যেন সব সময় স্থিতিশীল থাকে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বিশ্ব অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে পাল্টে দিয়েছে। এর প্রভাব গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী।

মস্কোর দিক থেকে চীনের এ উদ্বেগকে স্বীকার করে নেওয়ার কারণ হলো, চীনের প্রতি পুতিনের ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা এবং সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে ক্রেমলিনের অস্বস্তি। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া এখন মরিয়া হয়ে প্রযুক্তির সন্ধান করছে। এ ক্ষেত্রে হাতে গোনা যে কয়েকটি দেশ রাশিয়াকে সহায়তা করতে পারে তার মধ্যে চীন অন্যতম। রাশিয়ার ওপর দ্বিতীয় ধাপের আরোপ করা জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা যুক্তিসংগত কারণে বেশি কার্যকর হয়েছে। এ ক্ষেত্রে চীন হাতে গোনা কয়েকটি দেশের একটি, যারা দীর্ঘ মেয়াদে রাশিয়ার তেল ও গ্যাস কিনতে পারে।

রাশিয়া এখন ইউক্রেনের দিকে পুরো দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেছে। পুতিন এটিকে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সভ্যতার সংঘাত হিসেবে দেখছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার প্রভাববলয়ে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ তৈরি হয়েছে চীনের।

বাস্তবতা হচ্ছে, সি চিন পিং এখন রাষ্ট্রনায়কোচিত ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন এবং বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য চীনের তৎপরতার কথা তুলে ধরছেন। অন্যদিকে বিশ্বে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির একটি কারণ যে রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন, সেটা স্বীকার করে নেওয়ার মাধ্যমে সি চিন পিংয়ের উদ্বেগকে স্বীকার করে নিচ্ছে মস্কো। বিষয়টি অবশ্যই পুতিনের জন্য অবমাননাকর।

বেইজিংয়ের উদ্বেগকে স্বীকার করে নেওয়ার এ ঘটনা চীন ও রাশিয়ার মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য বদলের একটি লক্ষণ। আর অন্য যেকোনো স্থানের চেয়ে মধ্য এশিয়ার ক্ষেত্রে সেটা অনিবার্য হয়ে উঠেছে।

এসসিওর উত্থান

উজবেকিস্তানের সমরখন্দে সাংহাই কো-অপারেশন সম্মেলনের (এসসিও) পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে সি চিন পিং ও পুতিনের মধ্যে। ২০০১ সালে সংস্থাটির যাত্রা শুরু হয়েছিল চীনের সাংহাই শহর থেকে। এটি অর্থনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতা সংস্থা।

প্রথম দিকে এসসিওতে চীন ছাড়াও কাজাখস্তান, কিরগিজ রিপাবলিক, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান ও রাশিয়া ছিল। মধ্য এশিয়ায় সাবেক সোভিয়েত আমলের সব কটি দেশই এতে যুক্ত হয়েছিল। ব্যতিক্রম ছিল শুধু তুর্কমিনিস্তান। মধ্য এশিয়ার এই দেশগুলো দুই বড় শক্তি চীন ও রাশিয়ার মধ্যে প্রতিযোগিতার মধ্যে অবস্থান করছিল। পরবর্তী সময়ে সংস্থাটির সম্প্রসারণ হয়েছে। ভারত ও পাকিস্তান এসসিওতে অন্তর্ভুক্ত হয় ২০১৭ সালে। এ বছরের সম্মেলনে ইরান অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বেলারুশও এবার পূর্ণ সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছে। এর বাইরে দুটি পর্যবেক্ষক সদস্য হলো আফগানিস্তান ও মঙ্গোলিয়া। এ ছাড়া ছয়টি ‘সংলাপ অংশীদার’ হলো আজারবাইজান, আর্মেনিয়া, কম্বোডিয়া, নেপাল, তুরস্ক ও শ্রীলঙ্কা।

পশ্চিমা অস্ত্রে সজ্জিত ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর কাছে লজ্জাজনকভাবে পিছু হটার কারণে সাংহাই কো-অপারেশন সংস্থায় রাশিয়ার অবস্থান উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হয়েছে। রাশিয়ার এ দুর্বলতা অনিবার্যভাবেই নিজ স্বার্থ উদ্ধারের ক্ষেত্রে চীনের জন্য একটি সুযোগ। বিশেষ করে ইউরেশিয়ায় চীনের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় এসসিওকে শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চায় বেইজিং।

এই বিবেচনায় সমরখন্দে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতের ঠিক এক দিন আগে সি চিন পিংয়ের কাজাখস্তান সফর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এ সফরের মাধ্যমে চীন এমন একটি দেশকে শক্তভাবে সমর্থন দিল যে দেশটি রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে। চীনের পণ্য ইউরোপে পরিবহনের ক্ষেত্রে ট্রানজিট দেশ কাজাখস্তান।

যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে কাজাখস্তান। রাশিয়া সোভিয়েত আমলের দেশগুলোকে আবার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় কি না, সেই ভয়ও রয়েছে কাজাখস্তানের। আবার উত্তর কাজাখস্তানে রাশিয়ান জাতিগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ।

মধ্য এশিয়ার সঙ্গে দক্ষিণ ককেশাসেও অনিবার্যভাবে প্রভাব কমেছে রাশিয়ার। আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান আবার যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে। দেশ দুটি এখন এসসিওর সংলাপের অংশীদার। ২০২০ সালে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় দেশ দুটির মধ্যে শান্তি চুক্তি হয় আর রাশিয়ার শান্তিরক্ষীরা সেখানকার শান্তি স্থাপনের দায়িত্বে রয়েছেন। এরপরও দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে উঠেছে।

এসসিওর সদস্যদেশ কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। দেশ দুটি রাশিয়ার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। গত কয়েক দিনে প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

সি চিন পিং কেন ইউক্রেন নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন’

রাশিয়ার দুর্বল হয়ে যাওয়া চীনের জন্যও সমস্যা সৃষ্টি করছে। সামরিক বিবেচনায় এ ধরনের দুর্বল মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে বৈশ্বিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় চীনের যে সংকল্প, সেখানে বাধা তৈরি করে। আবার বস্তুগত অর্থে, রাশিয়ার প্রভাবাধীন এলাকা মধ্য এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিঘ্ন হওয়ার অর্থ হচ্ছে, চীনের সম্পদ পাচার হয়ে যাওয়া। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতির সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চীনের অর্থনীতি। চীনে নতুন করে কোভিডের বিস্তার ঠেকাতে গিয়ে সেটা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ক্রমে পরাজয়ের বৃত্তে ঢুকে পড়ছে রাশিয়া। এর অর্থ হচ্ছে, চীন এত দিন ধরে স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের মডেলই সেরা বলে যে বয়ান দাঁড় করিয়েছে, তার মূলে বড় ধাক্কা। পুতিনের ইউক্রেন অভিযান যদি দ্রুত সাফল্য লাভ করত, তাহলে সেটা সি চিন পিংয়ের জন্য দরকারি হতো। কিন্তু এখন সেটা দায় হয়ে উঠেছে।

***এশিয়া টাইমস থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনুবাদ মনোজ দে
স্টেফান উলফ বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাবিষয়ক অধ্যাপক।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ: সেপ্টম্বর ১৮, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ