Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

বেলকুচির সুচিত্রা সেন

Share on Facebook

পর্দায় বসা আমারে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিলেন বেলকুচির সুচিত্রা সেন। কারণ, তাঁর অভিনয় হয় না। মনে হয়, সত্যিকারের চরিত্র তিনি, প্রেম করছেন সুদর্শন ওই যুবকের সঙ্গে! এতই গভীর সেই প্রেম যে ক্যামেরা, পরিচালক, আলোর উপস্থিতিতে যার কিচ্ছু যায় আসে না। এত এত মানুষের সামনে দিলখোলা প্রেমিকা সুচিত্রা, এক তারা, হারিয়ে যাওয়া তারাটির আজ ৯০তম জন্মদিন।

সিরাজগঞ্জের পাবনা তখনো বাংলাদেশের নয়, ব্রিটিশ ভারতের। ১৯৩১ সালের আজকের দিনে সেখানকার সেন ভাঙ্গাবাড়ি গ্রামে জন্মেছিলেন সুচিত্রা সেন। তখন তাঁর নাম ছিল রমা দাশগুপ্ত। বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত ছিলেন স্কুলের হেডমাস্টার, মা ইন্দিরা দেবী করতেন গিন্নিপনা। সুচিত্রা বাড়ির পাঁচ নম্বর সন্তান। আরও দুটো বোন ছিল তাঁর। বাংলার খ্যাতিমান পঞ্চকবির একজন রজনীকান্ত সেনের নাতনি ছিলেন তাঁরা।

সুচিত্রা পড়েছেন পাবনা শহরেই। ভাবা যায়! জেলা শহর পাবনায় এই মহানায়িকার পায়ের ছাপও রাখা আছে। সেখানে বিখ্যাত মানসিক হাসপাতাল আছে। সারা দেশের ব্যথা পাওয়া লোকেরা ওই শহরে গিয়ে আস্তানা করে বসে আছে! সিনেমায় নাম লেখানোর আগে ঠিক কত তরুণ সুচিত্রার প্রেমে পড়েছিলেন, সে তথ্য এখন খুঁজলেও মিলবে না। যদি পড়েও থাকেন, তাঁদের বুকে দাগা দিয়ে ১৯৪৭ সালে শিল্পপতির ছেলে দিবানাথ সেনের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যায় সুচিত্রার। এ দম্পতির মেয়ে মুনমুন সেন অভিনয় করেন, নাতনি রিয়া সেন ও রাইমা সেনও অভিনয় করেন।

অভিনেত্রী সুচিত্রাকে নিয়ে প্রায় সব কথা বলা হয়ে গেছে। তবু আজকের দিনে, তাঁর জন্মদিনে নতুন করে সেসব নিয়ে আলাপ করলে হয়তো তাঁকে ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে চতুর্থ-পঞ্চম প্রজন্মের কাছে। তাঁদেরও জানা প্রয়োজন যে এত সফল এক অভিনেত্রী হয়েও জীবনের প্রথম সিনেমাটি তাঁর মুক্তিই পায়নি! সে ১৯৫২ সালের কথা। ‘শেষ কোথায়’ নামের একটা ছবি দিয়ে সুচিত্রার হলো অভিষেক। কপাল এতই খারাপ যে ছবিটা কোনোদিন আর মুক্তিই পেল না। কিন্তু পরেরটা নিয়ে কথা আছে। উত্তম কুমারের সঙ্গে ‘সাড়ে ৭৪’ ছবিটা পুরো বাঙালির মাথা খারাপ করে দিল! আর উত্তম-সুচিত্রা বলে একটা ট্রেন্ড চালু হয়ে গেল, বাংলার রোমান্টিক জুটি হিসেবে। প্রায় ৩০টি ছবিতে জুটি হয়েছিলেন তাঁরা। আর সুচিত্রা সর্বমোট অভিনয় করেছেন ৬১টি ছবিতে।

কেউ যদি দেখতে বসেন, তবে অবশ্যই দেখতে হবে সুচিত্রা অভিনীত ‘দীপ জ্বেলে যাই’ (১৯৫৯), ‘সপ্তপদী’ (১৯৬১), ‘সাত পাকে বাঁধা’ (১৯৬৩), ‘উত্তর ফাল্গুনী’ (১৯৬৩), ‘আন্ধি’ (১৯৭৫) ছবিগুলো। ‘উত্তর ফাল্গুনী’ ছবিতে যৌনকর্মী পান্নাবাই ও তাঁর মেয়ে আইনজীবী সুপর্ণা দুটি চরিত্রেই অভিনয় করেছিলেন সুচিত্রা। ‘আন্ধি’ ছবিটি তো মুক্তির পর ২০ সপ্তাহ নিষিদ্ধ ছিল গুজরাটে। ধারণা করা হয়েছিল, তাঁর চরিত্রটি চিত্রিত হয়েছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ছায়া অবলম্বনে। পরে ১৯৭৭ সালে জনতা পার্টি ক্ষমতায় আসার পর সেই রাজ্যের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হয় ছবিটি। কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দেবদাস অবলম্বনে বলিউডে নির্মিত দেবদাস ছবিতে অভিনয় করেছিলেন সুচিত্রা। এটিই হিন্দি ভাষার প্রথম দেবদাস! আর এ চরিত্র করে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারও পেয়েছিলেন সুচিত্রা।

ভীষণ জনপ্রিয় আর ব্যস্ত অভিনেত্রী হয়ে উঠেছিলেন সুচিত্রা সেন। এমন ব্যস্ত যে স্বয়ং সত্যজিৎ রায়ও তাঁর শিডিউল পেতেন না। শিডিউল পাননি বলে তিনি ‘চৌধুরানী’ ছবিটি বানালেনই না! ১৯৬৩ সালে ‘সাত পাকে বাঁধা’ সিনেমার জন্য মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে সুচিত্রা সেন ‘সিলভার প্রাইজ ফর বেস্ট অ্যাকট্রেস’ পুরস্কার জিতে নেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী, যিনি এই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পুরস্কারটি পেয়েছিলেন। পরে ভারত সরকার ১৯৭২ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে।

টানা ২৫ বছর অভিনয়ের পর ১৯৭৮ সালে অবসরে যান সুচিত্রা সেন। সেই থেকে তিনি চলে যান লোকচক্ষুর আড়ালে। নেপথ্যে থেকেই রামকৃষ্ণ মিশনের মাধ্যমে মানবসেবা শুরু করেন। ২০০৫ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। সরাসরি গিয়ে নিতে হবে বলে পুরস্কারটি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তিনি। সুচিত্রা চেয়েছিলেন, তাঁর যে অপরূপ রূপ মানুষ দেখেছে, তাদের হৃদয়ে সেই ছবিই জ্বলজ্বলে থাকুক। ২০১২ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সর্বোচ্চ সম্মাননা বঙ্গবিভূষণে ভূষিত করা হয় তাঁকে।

২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি সকালে পরপারে পাড়ি জমান সুচিত্রা সেন। বহুকাল পর সেদিন গণমাধ্যমের ক্যামেরায় চোখের পাতা বুজে রাখা সুচিত্রাকে একঝলক দেখেছিল বিশ্ব।

সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: এপ্রিল ০৬, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ