Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ভারতে মুসলমানপ্রধান দলের ব্যর্থতা কেন বাড়ছে (২০২২)

Share on Facebook

লেখক: শুভজিৎ বাগচী কলকাতা।

ভারতের সংখ্যাগুরু হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় অংশ গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে হিন্দুত্ববাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) ক্রমাগত জিতিয়ে চলছে। এ অবস্থায় প্রধান সংখ্যালঘু মুসলমান সম্প্রদায় সেই সব মুসলিমপ্রধান দলকে একেবারেই ভোট দিচ্ছে না, যারা মুসলমান সমাজের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টিকে প্রধান অ্যাজেন্ডা করে ভোটে লড়ছে।

ভারতের উত্তর প্রদেশের নির্বাচনের ফলাফলে বিষয়টি আরও একবার প্রমাণিত হলো। গত বছর ঠিক এই সময়ে পশ্চিমবঙ্গেও মুসলমান সমাজ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দলকে ভোট দেয়নি। ভারতের প্রায় ২১ কোটি মুসলমান রয়েছে। তাদের মধ্যে সাত কোটি বা এক-তৃতীয়াংশ রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর প্রদেশে। এই দুই রাজ্যে মুসলমান সমাজ সংখ্যালঘু প্রধান দলকে ভোট না দেওয়ায় দলগুলোর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

উত্তর প্রদেশে মুসলমানপ্রধান এলাকায় ১০০ আসনে প্রার্থী দিয়েছিল অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম)। তারা কোনো আসন না পেলেও ভালো ভোট পাবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু এআইএমআইএম আশানুরূপ ভোট পায়নি। রাজ্যের ৯৯টি আসনে এআইএমআইএমের জামানত জব্দ হয়েছে। তারা এই আসনগুলোতে ১৬ দশমিক ৬ শতাংশের কম ভোট পেয়েছে। এআইএমআইএমের এই অবস্থাকে লজ্জাজনক বলা হচ্ছে। উত্তর প্রদেশে যেখানে ২০ শতাংশের বেশি মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছে, সেখানে এআইএমআইএম পেয়েছে শূন্য দশমিক ৪৯ শতাংশ ভোট। ২০১৭ সালে এআইএমআইএম যেখানে ৩৮ আসনে প্রার্থী দিয়ে পেয়েছিল শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ ভোট, সেখানে এবার তারা পেয়েছে শূন্য দশমিক ৪৯ শতাংশ ভোট। তবে যে রাজ্যে ১৫ কোটি ভোটার, যেখানকার মুসলমান জনসংখ্যা প্রায় ৪ কোটি, সেখানে ভোটপ্রাপ্তির এই হার নগণ্য।
বিজ্ঞাপন

গত বছরে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দল পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) ৩২ আসনে প্রার্থী দিয়ে মাত্র একটিতে জিতেছিল। তবে তাদের ফল অন্তত এআইএমআইএমের চেয়ে ভালো হয়েছিল। তারা ১ দশমিক ৩০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। আর অন্তত ১০টি আসনে জামানত বাঁচাতে পেরেছিল। পশ্চিমবঙ্গে এআইএমআইএম সাতটি আসনে প্রার্থী দিয়ে কোনো আসনই পায়নি।

বিষয়টি আশ্চর্যের। কারণ এআইএমআইএম আগের দুটি রাজ্য নির্বাচনে ভালো ফল করেছিল। ২০২০ সালে বিহারে ২০টি আসনে প্রার্থী দিয়ে তারা জিতেছিল পাঁচটি আসন। ২০১৯ সালে মহারাষ্ট্রে ৪৪টি আসনে প্রার্থী দিয়ে তারা জিতেছিল দুটি আসন। নিজেদের রাজ্য তেলেঙ্গানায় তারা ২০১৮ সালে পেয়েছিল সাতটি আসন। এই আসনপ্রাপ্তি থেকে ধরে নেওয়া হয়েছিল যে ভারতে ১০০ বছর পর মুসলমান সমাজের একটি দলের ফের উত্থান ঘটছে।

ঢাকায় ১৯০৬ সালে অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ গঠিত হয়। পরের ৫০ বছরে লীগ উপমহাদেশের মুসলমান সমাজের প্রধান দল হয়ে দাঁড়ায়। তারা পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় প্রধান ভূমিকা পালন করে।

বিশ শতকের গোড়ায় হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রচিন্তার বিপরীতে দাঁড়িয়ে মুসলিম লীগের উত্থান হয়েছিল। পর্যবেক্ষকেরা মনে করেছিলেন, একুশ শতকের গোড়ায় হিন্দুত্ববাদী নবজাগরণের সামনে দাঁড়িয়ে একইভাবে এআইএমআইএমের উত্থান হবে। কিন্তু তা হলো না। সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ যে রাজ্যে থাকে, সেই উত্তর প্রদেশে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ল এআইএমআইএম।

এর কারণ কী? এ প্রশ্নের উত্তরে রাজনীতি–সমাজ বিশ্লেষক ও প্রতীচি ইনস্টিটিউটের জাতীয় গবেষণা সমন্বয়ক সাবির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, স্বাধীনতার পর ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগের যে তকমা লাগল, সেটাকে সরাতে মুসলমান সমাজ প্রধানত কংগ্রেসের সঙ্গেই রয়ে গেল। যদিও দেশভাগের প্রশ্ন বিতর্কিত। এর জন্য সব পক্ষই দায়ী। কিন্তু এ যে নিজের আইডেন্টিটিভিত্তিক একটা রাজনীতি, সেটা থেকে মুসলমান সমাজ সরে এল এবং যে দল জিতবে বা জেতার অবস্থায় থাকবে, তাকেই সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের কথা বলা যেতে পারে, যেখানে আমরা ২০২১ সালে দেখলাম যে মুসলমানপ্রধান দলকে কিন্তু সংখ্যালঘু সমাজ সমর্থন করল না। যদি করত তাহলে আইএসএফ হয়তো ৩০টি আসন পেত। কিন্তু প্রশ্ন হলো, তাতে কি মুসলমান সমাজের লাভ হতো, তৃণমূল কংগ্রেস কি তখন মুসলমান সমাজের হয়ে যেটুকু কাজকর্ম করছে, তা করত? নাকি সমাজে সংঘাত আরও বাড়ত? এই প্রশ্ন মুসলমান সমাজ বরাবরই করে এবং তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়। উত্তর প্রদেশও তা–ই নিয়েছে। সেই কারণে যে দলের জেতার সম্ভাবনা কিছুটা হলেও ছিল, সেই সমাজবাদী পার্টিকেই হয়তো তারা ভোট দিয়েছে। অবশ্য ক্রমাগত যদি বিজেপি জিততে থাকে এবং ভারতের রাজনৈতিক মানচিত্র থেকে বিরোধী শক্তিগুলো প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, তবে ভারতে মুসলমান সমাজ ভবিষ্যতে কী করবে, সেটা একটা তাৎপর্যপূর্ণ প্রশ্ন যার বিশ্লেষণ প্রয়োজন।
বিজ্ঞাপন

সার্বিকভাবে দেখতে গেলে হিন্দুত্ববাদী দলের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে একটি বা একাধিক মুসলমানপ্রধান দলের উত্থান ভারতে সম্প্রদায়ভিত্তিক যে দ্বীমূলি (বাইনারি) মেরুকরণের রাজনীতির জন্ম দিত, তা ধর্মনিরপেক্ষ মধ্যপন্থার (centrist) রাজনীতিকে একেবারেই ধ্বংস করে দিত। এতে লাভ হতো প্রধানত বিজেপির, কারণ হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং তারা যদি শুধুই হিন্দুত্ববাদী দলকে ভোট দেয়, (মুসলমানেরা সংখ্যালঘু প্রধান দলকে ভোট দিচ্ছে এই যুক্তিতে) তাহলে বিজেপিকে হারানো কখনোই সম্ভব হতো না। কিন্তু সেই দ্বীমূলি রাজনীতির রাস্তায় ভারতের সংখ্যালঘুরা না হাঁটার ফলে, ভবিষ্যতে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির রাস্তা এখনো খোলা রইল বলে অনেকে মনে করছেন।

তবে এর পাশাপাশি এটাও মনে রাখা প্রয়োজন যে সম্পূর্ণ ভিন্ন ইতিহাস এবং রাজনীতির কারণে অন্তত দুটি মুসলমানপ্রধান দল ভারতে ভালো রকম ভোট এবং আসন পাচ্ছে এবং রাজ্যে ক্ষমতায়ও এসেছে। ২০২১ সালের আসাম নির্বাচনে অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট প্রায় ১০ শতাংশ ভোট এবং ১৬টি আসন পায়। এ ছাড়া কেরালায় ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন অব মুসলিম লীগ গত বছরে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট এবং ১৫টি আসন পায়।

কিন্তু বাকি দুই বড় রাজ্যে মুসলমান সমাজ সংখ্যালঘু প্রধান দলকে একেবারে সমর্থন না দেওয়ায় এই ধরনের দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিশ্লেষকেরা।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ মার্চ ১৪, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ