Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ভারত–পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি হামলা (২০২৫)

Share on Facebook

রয়টার্স।

কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পর দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা কমছে না। গতকাল বৃহস্পতিবারও দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার খবর পাওয়া গেছে। একে অপরের বিরুদ্ধে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অভিযোগ এনেছে ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লি। এ দিন রাতেই একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে।

দুই দেশের মধ্যে এ উত্তেজনার শুরু ২২ এপ্রিল। সে দিন পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এর দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়েছে ভারত। তবে তা নাকচ করেছে পাকিস্তান। এ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাকিস্তান ও দেশটির নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে অভিযান চালায় ভারত। ওই রাতেই দেশটির পাঁচটি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দাবি করে পাকিস্তান।

নিজেদের যুদ্ধবিমান হারানোর কথা যদিও স্বীকার করেনি ভারত। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দুই কর্মকর্তা গতকাল রয়টার্সকে জানিয়েছেন, চীনের তৈরি জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে মঙ্গলবার রাতে ভারতের দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান। সেগুলোর মধ্যে অন্তত একটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল যুদ্ধবিমান ছিল।

এরই মধ্যে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ শরিফ চৌধুরী গতকাল বলেন, করাচি, লাহোর, রাওয়ালপিন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় ভারতের ২৯ ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে। ড্রোনগুলো ইসরায়েলের তৈরি। এর মধ্যে একটি ড্রোন লাহোরের কাছে একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। এতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চার সদস্য আহত হন।

অন্যদিকে বুধবার রাতে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে পাকিস্তানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টা নস্যাৎ করে দেওয়ার দাবি করেছে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এর জবাবে গতকাল পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও রাডার লক্ষ্য করে হামলা চালায় ভারত। হামলায় লাহোরে একটি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে।

ভারতের অমৃতসর শহরের উপকণ্ঠে ফসলি জমিতে পড়ে আছে একটি ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ। নয়াদিল্লির দাবি, পাকিস্তানের ছোড়া একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে তারা। গতকাল ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে

পরে গতকাল রাতে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জম্মু অঞ্চলে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। রয়টার্সের এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের সময় চারপাশ আলোকিত হয়ে ওঠে। শহরটিতে শোনা যায় সাইরেনের শব্দ। এ সময় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে বিভিন্ন অঞ্চল। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এ হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

তবে পাকিস্তানই এ হামলা চালিয়েছে বলে সন্দেহ করছে ভারতের সামরিক বাহিনী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তান থেকে জম্মু অঞ্চলের সাতওয়ারি, সাম্বা, রণবীর সিং পুরা ও আরনিয়া এলাকা লক্ষ্য করে আটটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগে সেগুলোর সব কটি ধ্বংস করেছে ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা।

এদিকে পাকিস্তানের হামলায় গতকাল পর্যন্ত ভারতে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এ সময় আহত হয়েছেন প্রায় ৫৯ জন। অপরদিকে মঙ্গলবার রাতে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরুর পর পাকিস্তান ও দেশটির নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে ৩২ জন নিহত এবং ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ।

‘আমরা যুদ্ধ চাই না’
গতকাল রাতে জম্মুতে বিস্ফোরণের ঘটনার আগে বুধবার রাতে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পাকিস্তানি বাহিনী হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে নয়াদিল্লি। গতকাল এক বিবৃতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী বলেছে, এদিন রাতে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর কুপওয়ারা, বারামুলা, উরি ও আখনুর এলাকায় পাকিস্তানি সেনাচৌকি থেকে গুলি এবং কামানের গোলা বর্ষণ করা হয়।

এই উত্তেজনার মধ্যে ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে অবস্থিত পুঞ্চ জেলার বহু মানুষ তাঁদের ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। সেখানকার বাসিন্দা সুফরিন আখতার বিবিসিকে বলেন, তাঁর বাড়ির সামনে এসে একটি গোলা পড়ে। এরপর তিনি বাড়ি ছেড়ে চলে যান। হামলার শিকার আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘যা গড়েছিলাম, সব ধ্বংস হয়েছে। আমরা যুদ্ধ চাই না।’

পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যে গতকাল পাকিস্তানের করাচি, লাহোর ও ইসলামাবাদের বিমানবন্দরগুলোর কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হয়। ১০ মে পর্যন্ত ভারতের ২০টির বেশি বিমানবন্দরের কার্যক্রম গতকাল থেকে স্থগিত করা হয়েছে। এই বিমানবন্দরগুলোর বেশির ভাগই উত্তর ভারতে। এর আগে বুধবার ভারতের ৪০০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়।

এ ছাড়া পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সব হাসপাতালে গতকাল জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। আপত্কালীন পরিস্থিতির জন্য হাসপাতালগুলোর অর্ধেক বিছানা বরাদ্দ রেখেছে দেশটির সরকার। এ ছাড়া রাজধানী ইসলামাবাদের সব হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসাকর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মুস্তফা কামাল।

ভারত সরকারের প্রতি বিরোধীদের সমর্থন
পাকিস্তানের সঙ্গে চলমান এই সংঘাতে ভারত সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন দেশটির বিরোধী দলের নেতারা। গতকাল নয়াদিল্লিতে সর্বদলীয় বৈঠকে এমন প্রতিক্রিয়া জানান তাঁরা। বৈঠক শেষে ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু তথ্য প্রকাশ করেনি সরকার। যাই হোক, বিরোধী সব দল সরকারের সঙ্গে রয়েছে।

ইন্ডিয়া টু ডে ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানিয়েছে, ওই বৈঠকে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, পাকিস্তান ও দেশটির নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বিভিন্ন ‘সন্ত্রাসী শিবিরে’ হামলা চালিয়ে অন্তত ‘১০০ সন্ত্রাসীকে’ হত্যা করেছেন তাঁরা। তবে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে বিস্তারিত বলেননি তিনি। কারণ, এই অভিযান এখনো চলমান রয়েছে।

সর্বদলীয় এই বৈঠকের দিনই গতকাল নয়াদিল্লিতে ভারত ও ইরানের এক যৌথ কমিশনের বৈঠকে অংশ নেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘নয়াদিল্লি সংঘাত বাড়াতে চায় না। তবে আমাদের ওপর যদি সামরিক হামলা হয়, তাহলে কোনো সন্দেহ নেই যে তার কঠিন জবাব দেওয়া হবে।’ আর দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাত বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দায়িত্ব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের রয়েছে বলে মনে করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে তিনি বলেন, কারণ, এই সংঘাতের যে পরিণতি হতে পারে এবং অর্থনীতিতে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, তা শুধু পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, আন্তর্জাতিক সীমানাও অতিক্রম করে যাবে।

শেয়ারবাজারে অস্থিতিশীলতা
পেহেলগামে হামলার পর একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ নেয় ভারত ও পাকিস্তান। ১৯৬০ সালে হওয়া সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। এ ছাড়া পরস্পর ভিসা বাতিল, আকাশসীমা বন্ধ, বন্দর ব্যবহার বন্ধসহ নানা ব্যবস্থা নেয় দুই দেশ। এরই মধ্যে হামলার কারণে উত্তেজনা যে নতুন মাত্রা নিয়েছে, তার প্রভাব পড়েছে দুই দেশের শেয়ারবাজারেও।

গতকাল ভারতের শেয়ারসূচক ওঠানামা করেছে। দেশটির বাজার বন্ধের সময় প্রধান দুই সূচক সেনসেক্স ও নিফটির দর প্রায় আধা শতাংশ পতন হয়। ভারতের মুদ্রাবাজারেও চলছে অস্থিতিশীলতা। গতকাল মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির দামও ১ শতাংশের বেশি কমেছে। এতে বিগত তিন বছরের মধ্যে দেশটির মুদ্রার সবচেয়ে বড় পতন হলো।

চলমান উত্তেজনার কারণে ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক সংকটে থাকা পাকিস্তানের অবস্থা আরও শোচনীয় হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন বিশ্লেষকদের অনেকে। গতকাল বড় ধরনের পতনের পর দেশটির শেয়ারবাজারে লেনদেন স্থগিত হয়ে যায়। এদিন পাকিস্তানের কেএসই-১০০ সূচকে ৬ শতাংশের বেশি পতন হয় বলে বিবিসির খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংযত থাকার আহ্বান
চলমান এই উত্তেজনার মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবারও বলেছেন, সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত তিনি। আর শান্তি ও স্থিতিশীলতার বৃহৎ স্বার্থের কথা মাথায় রেখে পাকিস্তান ও ভারতকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে চীন।

গতকাল নয়াদিল্লি সফরে গিয়ে পাকিস্তান ও ভারতকে সংযত থাকার আহ্বান জানান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, এই অঞ্চলে উত্তেজনা যে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা কমাতে এগিয়ে আসবে ভারত ও পাকিস্তান।’ এ দিনই নয়াদিল্লিতে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদেল আল-জুবেইরের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন এস জয়শঙ্কর।

ভারত ও পাকিস্তান সংঘাতের প্রতি ইঙ্গিত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট করেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী পাকিস্তানি তরুণী মালালা ইউসুফজাই। তিনি লেখেন, ‘ঘৃণা ও সহিংসতা আমাদের অভিন্ন শত্রু। আমরা একে অপরের শত্রু নই। উত্তেজনা কমাতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ভারত ও পাকিস্তানের নেতাদের প্রতি আমি জোর আহ্বান জানাচ্ছি।’

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ: মে ০৯, ২০২৫

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ