Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ভালো থাকুন এবং মুঠোফোন-আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসুন।

Share on Facebook

লেখক: সুব্রত বোস।

নিরবচ্ছিন্ন তথ্যের প্রবাহ, বিনোদন আর যোগাযোগ একদম হাতের মুঠোয়। সম্ভব হচ্ছে হাতের ফোনটির জন্য। দিনের সবচেয়ে বেশি সময় আমাদের সান্নিধ্যে থাকছে ফোনটি। সাম্প্রতিক এক আমেরিকান গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক গড়ে চার ঘণ্টা একজন মানুষ মুঠোফোনে চোখ রাখছেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে, ঘুমাতে যাওয়ার আগে, এমনকি ঘুম থেকে জেগে, মধ্যরাতে ফোনে চোখ পড়ছে। দৈনিক গড়ে ৮৫ বার একজন মানুষ মুঠোফোনের সংস্পর্শে আসেন। সমস্যাটা এখানেই।

একাধিক সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, অতিমাত্রায় মুঠোফোন ব্যবহারের কারণে স্মরণশক্তি, মনোযোগ, মনোবল, সৃজনশীলতা, এমনকি আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও প্রভাবিত হচ্ছে। ওপরের সব কটি কাজ করতে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের সক্রিয় অংশগ্রহণ দরকার হয়। আমাদের মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট কার্যক্ষমতা আছে। কোনো বিষয়ে আমাদের মনোযোগের গভীরতা বা মাত্রা অনুযায়ী মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা সে বিষয়ে বরাদ্দ হয়। ধরুন, আপনি গভীর মনোযোগ দিয়ে একটা বই পড়ছেন। মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ সক্রিয় হয়ে উঠছে যা পড়ছেন তার অর্থ বোঝার জন্য, তা স্মৃতিতে জমা রাখার জন্য। হঠাৎ একই সময়ে আপনি আপনার মুঠোফোনে হয়তো একটা ভিডিও দেখা শুরু করলেন। অর্থাৎ আপনার মনোযোগ ভাগ হয়ে গেল। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাও। আমাদের মস্তিষ্ক অত্যন্ত শক্তিশালী হলেও একাধিক কাজ একই সঙ্গে সুচারুভাবে করতে পারে না।

গবেষকেরা বলছেন, মুঠোফোনে এই আসক্তির একটা বড় কারণ হলো ডোপামিন নামের রাসায়নিক যৌগ। ডোপামিনকে হ্যাপি কেমিক্যাল বলা হয়। ডোপামিন নিঃসরণের কারণেই আমাদের আনন্দানুভূতি হয়। নানা কারণেই ডোপামিনের নিঃসরণ হয়। মস্তিষ্ক এই কারণগুলো মনে রাখে। পরবর্তী সময়ে বারবার এই কাজগুলো করতে আমাদের উৎসাহিত করে। ডোপামিনের কারণেই আমাদের ভালো বা অনেক সময় ক্ষতিকর অভ্যাস গড়ে ওঠে।

চিন্তার ব্যাপার হলো, সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে, ফোনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে আমাদের শরীরে কর্টিসোলের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাটে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন, ফোন ব্যবহার না করলেও ফোনটা যদি আমাদের আশপাশে থাকে বা বেজে ওঠে, তাহলেও শরীরে কর্টিসোলের মাত্রা বেড়ে যায়।

কর্টিসোলকে বলা হয় স্ট্রেস হরমোন। আমাদের শরীরের অ্যালার্ম সিস্টেম বলতে পারেন। আমাদের কিডনির ওপরে ত্রিভুজাকৃতি অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি থেকে তৈরি হয়। মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস আর পিটুইটারি গ্রন্থি রক্তে কর্টিসোলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। কর্টিসোল অত্যন্ত উপকারী বিপত্তারিণী এক হরমোন। হঠাৎ কোনো বিপদে পড়লে, যেমন ধরুন আপনি হাঁটছেন, দেখলেন একটি বড়সড় ষাঁড় আপনার দিকে ধেয়ে আসছে। কর্টিসোল নিঃসরণের কারণেই সেখান থেকে দৌড়ে পালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। কর্টিসোল শুধু সিদ্ধান্ত নিতেই সহায়তা করে না, ওই স্থান থেকে ছুটে পালাতে হঠাৎ করে যে শক্তির দরকার হয়, স্বল্প সময়ের মধ্যেই সে শক্তির জোগান দেয়।

কর্টিসোল আর আমাদের মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ সম্মিলিতভাবে আমাদের মেজাজ, ভয় আর প্রেরণাকে নিয়ন্ত্রণ করে। রক্তচাপ, হৃৎকম্প, রক্তে শর্করার পরিমাণ, এমনকি জেগে থাকা আর ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণেও কর্টিসোলের ভূমিকা রয়েছে। মানসিক চাপ থেকেও কর্টিসোলের নিঃসরণ হয়। বুঝতেই পারছেন, স্বাভাবিক মাত্রার কর্টিসোল জীবন বাঁচায়। কিন্তু শরীরে অধিক মাত্রায় কর্টিসোল দীর্ঘ সময়ের জন্য মোটেও ভালো নয়।

গুগলের বিজ্ঞানীরা বলছেন, মুঠোফোনের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের অ্যাপস, ই-মেইল আর প্রতিনিয়ত খবরের সরবরাহ আমাদের মধ্যে মুঠোফোন ব্যবহারের জন্য একধরনের মানসিক চাপের সৃষ্টি করে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ইন্টারনেট অ্যান্ড টেকনোলজি অ্যাডিকশনের প্রধান প্রফেসর ডেভিড গ্রিনফিল্ড বলছেন, ‘মানসিক চাপ তৈরি হলে প্রকৃতিগতভাবেই সেই চাপ থেকে আমরা মুক্তি পেতে ফোন খুলছি। একটি চাপ কমাতে মুঠোফোন খুললে, মুঠোফোনে অপেক্ষা করছে আরেকটি উদ্বেগ। খবর দেখতে ফোন খুললেন, হঠাৎ মনে হলো ই-মেইলটা পড়ে দেখি। একটা ই-মেইলে হয়তো আপনার উদ্বেগ আরও বেড়ে গেল।’

মানসিক উদ্বেগের এই চক্র রক্তে কর্টিসোলের মাত্রা দীর্ঘ সময়ের জন্য বাড়িয়ে দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার বিজ্ঞানী রবার্ট ইলাস্টিক বলছেন, ‘অতিমাত্রার কর্টিসোলের সঙ্গে মানসিক অবসাদ, ওজন বেড়ে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ টু ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক আর স্মৃতিভ্রংশের মতো রোগের সম্পর্ক রয়েছে।’

প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স আমাদের মস্তিষ্কের সামনের দিকের এক অতি প্রয়োজনীয় অংশ। সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ আর যৌক্তিক চিন্তার জন্য এই অংশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকতে এই অংশের সক্রিয় থাকা অত্যন্ত জরুরি। রবার্টের মতে, ‘কর্টিসোলের পরিমাণ বেড়ে গেলে মস্তিষ্কের এই অংশের কাজ করার ক্ষমতা প্রভাবিত হয়। নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ কমে যায়। মানসিক চাপ কমানোর জন্য আমরা অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। যেমন ধরুন, গাড়ি চালাতে চালাতে টেক্সট করা বা ই-মেইল পড়া।’

আমেরিকার রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন, কর্টিসোলের পরিমাণ ঘুমের সঙ্গে সম্পর্কিত। কর্টিসোলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে দিনে সাত-আট ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। কিন্তু মুঠোফোনে আসক্তির কারণে অনেকেরই ঘুমের পরিমাণ কমে যাচ্ছে।

তবে আশার কথা হলো, বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমরা যদি অহেতুক ফোন দেখা কমিয়ে দিই, তাহলেই কর্টিসোলের মাত্রা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আর নিয়মিত কমিয়ে দেওয়া শুরু করলেই এটা অভ্যাসে পরিণত হয়।

সুব্রত বোস প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানির রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট

সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: আগষ্ট ১১, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ