Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ভোটার দিবস আছে, ভোটার আছে, শুধু কি ভোট নেই ! (২০২১ )

Share on Facebook

দেশে নাগরিকদের ভোটার হওয়ার নিশ্চয়তা থাকলেও সব নাগরিক যে তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন, সে নিশ্চয়তা দিতে পারছে না নির্বাচন কমিশন। আইন অনুযায়ী ভোটের গোপনীয়তাও রক্ষা করতে পারছে না সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠান। পাঁচ দফায় অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক পৌর নির্বাচনের পরিবেশ ও পরিস্থিতি বিশ্লেষণে এমন চিত্রই প্রকাশ পাচ্ছে। ভোটের গোপনীয়তা রক্ষা করতে না পারা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এই পরিস্থিতিতে আজ ২ মার্চ, মঙ্গলবার জাতীয় ভোটার দিবস পালন করছে নির্বাচন কমিশন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে ভোটার আছে, ভোটার দিবসও আছে; কিন্তু ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশটা নেই। সেটা নিশ্চিত করা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।

ভোটার দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘বয়স যদি আঠার হয়, ভোটার হতে দেরি নয়’। মূলত ভোটার হতে এবং ভোটাধিকার প্রয়োগে উৎসাহিত করতে এই দিবস পালনের আয়োজন করা হয়। প্রথমবার ২০১৯ সালে ভোটার দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘ভোটার হব, ভোট দেব’। গত বছরের প্রতিপাদ্য ছিল, ‘ভোটার হয়ে ভোট দেব, দেশ গড়ায় অংশ নেব’। এবার তৃতীয়বারের মতো জাতীয় ভোটার দিবস পালন করা হচ্ছে। ভোটের অধিকার নিশ্চিত না করে ভোটার দিবস পালন করাকে দৃষ্টিকটু বলছেন বিশ্লেষকেরা।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ এনে দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক সম্প্রতি দুই দফা রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনের কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলে অনেক অস্বাভাবিকতা ও অসংগতি দেখা গেছে। ২১৩টি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে, যা সম্ভব নয়। ৫৯০টি ভোটকেন্দ্রে শতভাগ বৈধ ভোট একটিমাত্র প্রতীকেই পড়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সই করা প্রাথমিক ফলাফলের সঙ্গে কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলেও অমিল পাওয়া গেছে। ৩২টি আসনে বৈধ ভোট বেড়েছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ও পেপার ব্যালটে ভোটের হারে ৩০ শতাংশ ব্যবধান ছিল; যা ফলাফলকে গুরুতরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

বস্তুত একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটার খরা দেখা দেয়। তবে গত ডিসেম্বর থেকে পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিত পৌরসভার ভোটে কাগজে–কলমে ভোটার উপস্থিতি বেড়েছে। নির্বাচন কমিশনের হিসাব বলছে, পাঁচ ধাপ মিলিয়ে মেয়র পদে ভোট পড়ার হার ৬৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ। যদিও কেন্দ্রে কেন্দ্রে নানা অনিয়ম আর সহিংসতা ছিল প্রতিটি ধাপের সঙ্গী। অনেক জায়গায় গোপন বুথে অবস্থান নিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকেরা। কোথাও কোথাও তাঁরাই নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে দিয়েছেন ভোটারের পক্ষে। লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে এক ভোটার বুথের ভেতরের এই অবৈধ অবস্থানকারীদের ‘ভোটের বুথে নৌকার ভূত’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে বিভিন্ন জায়গায় এই দলীয় কর্মীরা নিজেদের পরিচয় দিয়েছেন ভোটারের ‘সহযোগী’ বলে।

এসবের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি নির্বাচন কমিশন। প্রতি ধাপের নির্বাচনের পর প্রায় একই রকম সাফাই দিয়েছে কমিশন। অথচ কোথাও কোথাও পূর্বঘোষণা দিয়েই নির্বাচনে যাবতীয় অনিয়ম করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও একই রকম চিত্র দেখা গেছে। সেখানে অবশ্য ভোটের পরে বিএনপির প্রার্থী শাহদাত হোসেন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে সিইসিসহ নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশের নির্বাচনী কাঠামো গুঁড়িয়ে দিয়েছে। যদিও ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর কয়েকটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে প্রশংসা পেয়েছিল বর্তমান কমিশন; কিন্তু ধীরে ধীরে চিত্র পাল্টাতে থাকে। বিশেষ করে সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনে ভোটের আগের রাতেই ভোট দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে সরকারের বাইরে থাকা দলগুলো।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ভোটার দিবস পালনের উদ্যোগটি ভালো। যেহেতু এখন এর সঙ্গে নাগরিক পরিচয়ের বিষয় জড়িত, তাই ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহ আছে। কিন্তু বহুদিন ধরে দেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ, ভোটের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন আছে। নির্দিষ্ট করে বর্তমান কমিশন নয়, ২০১৪ সাল থেকে দেখলে দেখা যাবে, নির্বাচনের যথাযথ পরিবেশ তৈরি করা যায়নি।

এবারের পৌরসভা নির্বাচন কেমন হবে, ভোটের আগে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় পর্যায়ের বক্তব্যেই তার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। নির্বাচনী প্রচারে অনেক নেতার দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল (ছড়িয়ে পড়া) হয়েছিল। চুয়াডাঙ্গায় আওয়ামী লীগের এক নেতা প্রতিপক্ষকে ভয়ভীতি ও দলীয় কর্মীদের অনিয়ম করে ভোট দেওয়ার ‘কৌশল’ শিখিয়েছেন প্রকাশ্য জনসভায়। ঠাকুরগাঁওয়ে মহিলা আওয়ামী লীগের এক নেত্রী নির্বাচনী প্রচারে ভোটারদের হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, নৌকায় ভোট না দিলে ভোটকেন্দ্রে আসার দরকার নেই। প্রকাশ্যে নৌকায় ভোট দিতে বলেছিলেন কুষ্টিয়ার মিরপুর আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং বরগুনার পাথরঘাটায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা। লক্ষ্মীপুরের জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা রামগতিতে নির্বাচনী প্রচারণায় বলেছিলেন, ইভিএম এমন এক মেশিন, নৌকার বাইরে ভোট দিলে ধরে ফেলা যায়।

নির্বাচনের প্রচারে দেওয়া এসব বক্তব্যের প্রতিফলন দেখা গেছে ভোটের দিন। ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে পথে পথে ভোটারদের বাধা দিতে দেখা গেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ভোটারদের প্রকাশ্যে ভোট দিতে চাপ দেওয়া হয়েছিল। পাঁচ ধাপের ভোটেই কমবেশি এ ধরনের অনিয়ম হয়েছে। সব ধাপেই ছিল সংঘাত-সংঘর্ষ, জাল ভোট, ব্যালট ছিনতাই, প্রতিপক্ষের এজেন্টদের বের করে দেওয়া, পছন্দমতো ভোট দিতে না পারা, গোপন বুথে নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের অবস্থান নেওয়াসহ নানা অনিয়ম। ঠাকুরগাঁও পৌরসভার আর কে স্টেট উচ্চবিদ্যালয়ের কেন্দ্রসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বুথে অবস্থানকারীরা বলেছেন, তাঁরা ‘ভোটারদের সহযোগিতা’ করছেন। অনেক জায়গাতেই নির্বাচন কমিশন ভোটের গোপনীয়তা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

আইন অনুযায়ী, ভোট হবে গোপন ব্যালটে। ভোটের গোপনীয়তা রক্ষায় ব্যর্থতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কোনো রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, পোলিং কর্মকর্তা কিংবা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত কোনো প্রার্থী, নির্বাচনী এজেন্ট বা পোলিং এজেন্ট ভোটের গোপনীয়তা রক্ষা করতে কিংবা রক্ষায় সাহায্য করতে ব্যর্থ হলে ছয় মাস থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিধান আছে। পাঁচ ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে বিভিন্ন জায়গায় ভোটের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগ এলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার নজির দেখানো যাবে না।

পৌর নির্বাচনের উদাহরণ টেনে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলামের কাছে প্রথম আলোর প্রশ্ন ছিল, ইসি ভোটারদের ভোটাধিকার শতভাগ নিশ্চিত করতে, ভোটের গোপনীয়তা রক্ষা করতে পেরেছে কি না। জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কঠোর নির্দেশনা ছিল, কোনো ধরনের অব্যবস্থাপনা বরদাশত করা হবে না। কেউ যদি তা না করে থাকেন, তাহলে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। গণমাধ্যমে যেসব প্রতিবেদন এসেছে, ইসি সেগুলো নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতামত নিচ্ছে। বুথের ভেতর যাওয়া বা কোনো ধরনের গাফিলতি কিংবা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজনীতির মাঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি। পাঁচ ধাপের নির্বাচনে ১৮৫টি পৌরসভায় জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। বিপরীতে বিএনপি জয়ী হয়েছে মাত্র ১১টিতে। দুই দলের মধ্যে ভোটের ব্যবধানও বিস্তর। প্রদত্ত ভোটের প্রায় ৬০ ভাগ পড়েছে নৌকায়, আর বিএনপি পেয়েছে ২১ শতাংশ। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল আওয়ামী লীগ। সেবার বিএনপির সঙ্গে তাদের ভোটের ব্যবধান ছিল ১৬ শতাংশ। এর আগের নির্বাচনগুলোতে এই ব্যবধান ১০ শতাংশের নিচে ছিল।

এবারের পৌর নির্বাচনের অবস্থা দেখে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘পৌরসভা নির্বাচনের ফলাফল দেখে আমার ধারণা হচ্ছে, নির্বাচন নির্বাসনে যেতে চায়।…মনে প্রশ্ন জাগে, নির্বাচন কি এখন পূর্বে নির্ধারিত?’

জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, এখন কার্যত ভোটাধিকার নেই। নানাভাবে মানুষকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভোটার দিবস পালন লোকদেখানো আয়োজন। ভোটার দিবস তখনই তাৎপর্যপূর্ণ হবে, যখন প্রকৃত অর্থে সবার ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

সূত্র : প্রথম আলো
তারিখ: মার্চ ০২, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ