Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং ক্রসফায়ার-বিরতি (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:মনজুরুল ইসলাম।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং এর কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। গত বছরের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবসে নিষেধাজ্ঞাটি দেওয়া হয়। এ বছরের ১১ জানুয়ারি ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে আমরা জানতে পারলাম, ওই নিষেধাজ্ঞা-পরবর্তী এক মাসে বাংলাদেশে কোনো ‘ক্রসফায়ারের’ ঘটনা ঘটেনি বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তরফ থেকে তেমনটা দাবি করা হয়নি।

এর আগে কক্সবাজারে বহুল আলোচিত মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের পরও ‘ক্রসফায়ারের’ ক্ষেত্রে একই রকম বিরতি লক্ষ করা গেছে। এভাবে বিশেষ বিশেষ ঘটনা বা পরিস্থিতির পর এই ‘ক্রসফায়ার-বিরতি’ আমাদের মনে প্রশ্ন তৈরি করে, এটা কি কাকতালীয় না ইচ্ছাকৃত? একই সঙ্গে কিছু পুরোনো প্রশ্নও ঘুরেফিরে সামনে আসে, ক্রসফায়ার কি স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটে, না এটা ঘটানো হয়? সরকার চাইলে এটা স্থায়ীভাবে বন্ধ করা কি অসম্ভব? বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা, মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সরকার কি আদৌ আন্তরিক?

র‌্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ওই নিষেধাজ্ঞার পর তার ফলাফল বা প্রভাব কী হতে পারে, তা নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনা হয়েছে।

অনেকে অনেক রকম ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ, অনুমান-আশঙ্কা প্রকাশ করলেও প্রাথমিকভাবে সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিকে খুব বেশি পাত্তা দেওয়া হচ্ছিল না। কোনো কোনো মন্ত্রীর কথায় মনে হয়েছে, এ নিষেধাজ্ঞায় তাঁদের কিছুই যায় আসে না এবং এর কোনো গুরুত্ব নেই। তবে পরিস্থিতি অনুধাবন করে সরকার দ্রুতই তার অবস্থান পরিবর্তন করে। ২ জানুয়ারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সিলেটে এক অনুষ্ঠানে বলেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন।

এখানে একটা বিষয় লক্ষণীয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ শুধু যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো দেশ বা বিদেশি সংস্থাগুলোই করছে না, দেশীয় সংস্থাগুলোও একই রকম কথা বলছে। ২০২১ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর একাধিক মানবাধিকার সংগঠন সংবাদ সম্মেলন করে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সংবাদ সম্মেলনে ২০২১ সালকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বছর হিসেবে উল্লেখ করা হয় (প্রথম আলো, ১ জানুয়ারি ২০২২)। একই দিন অন্য একটি অনুষ্ঠানে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামাল খুবই তাৎপর্যপূর্ণভাবে বলেন, ‘আমরা তো কিছু না করেই ভয়ের মধ্যে আছি, একটা ভয়ের সংস্কৃতির মধ্যে বসবাস করছি ।’…কতজন মানুষ আছে, যারা শান্তিতে দিন কাটাতে পারছে। মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হলে ন্যায়বিচার পাবেন, এই বিশ্বাস কতজনের মধ্যে রয়েছে? (প্রথম আলো, ১ জানুয়ারি ২০২২)।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন এবারই প্রথম নয়, এর আগের বছরগুলোতেও ‘ক্রসফায়ারের’ নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, নিরাপত্তা হেফজাতে হত্যা-নির্যাতন, বেআইনিভাবে আটক—এ রকম বিষয়গুলো উল্লেখ করে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তাদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথা জানিয়েছে। কিন্তু মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো সত্যিকার অর্থে আমলে নেওয়া বা এগুলো নিয়ে বিচার বিভাগীয় কোনো তদন্তের বিষয়ে কোনো সময়ই সরকারের ইচ্ছা বা আগ্রহ দেখা যায়নি। এমনকি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরেও সরকারের মন্ত্রী, সরকারদলীয় নেতা ও সরকার সমর্থক বুদ্ধিজীবী-বিশ্লেষকেরা এটাকে অমূলক বা ভিত্তিহীন বলেছেন এবং কেউ কেউ এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও খুঁজে পেয়েছেন। তাঁরা এটা বুঝতে চাচ্ছেন না যে রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্ক যেহেতু রাজনৈতিক, সুতরাং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে অন্য কোনো দেশ যাতে আমাদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে বা গোপনে কোনো অন্যায় বা অতিরিক্ত সুবিধা নিতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করাই বরং সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু মানবাধিকার, আইনের শাসন, বাক্‌স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র যদি বেহাল অবস্থায় থাকে, তাহলে তুলনামূলক দুর্বল দেশের সরকারের পক্ষে সেই সুবিধা দেওয়া ছাড়া অন্য কোনো গত্যন্তর থাকে না।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর এক মাস ‘ক্রসফায়ার’ বন্ধ থাকলেও এ নিষেধাজ্ঞার সুদূরপ্রসারী প্রভাব বা ফলাফল কী হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি না হলে নিষেধাজ্ঞা আরও বাড়তে পারে, এমন আশঙ্কার কথাও জানিয়েছেন অনেকে। এ রকমটা হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি, রাষ্ট্র-রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োগকৃত লবিস্টদের মাধ্যমে সরকার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের চেষ্টা শুরু করেছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এভাবে কিছুদিন ‘ক্রসফায়ার-বিরতি’ দিয়ে এবং লবিস্টদের মাধ্যমে তদবির করে এই সমস্যার স্থায়ী কোনো সমাধান হবে না, বরং সরকারের উচিত ‘ক্রসফায়ার’সহ মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে তাদের শিথিলতা পরিহার এবং নীতিগত অবস্থান পরিবর্তন করা।

এ ক্ষেত্রে আরেকটি কথা বলতেই হচ্ছে, শুধু ‘ক্রসফায়ার’ নয়, কোনো রাষ্ট্রীয় বাহিনী তথা রাষ্ট্র কর্তৃক যেকোনো বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড বিচারিক প্রক্রিয়া এবং বিচার বিভাগের প্রতি অনাস্থা ও অবজ্ঞার প্রকাশ। এটা বিচার বিভাগের মান-মর্যাদার প্রতি হানিকরও। সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অনাচার বন্ধে উচ্চ আদালত সরব হলেও, ‘ক্রসফায়ারের’ মতো বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রায় ‘নীরব’ রয়েছে। আমরা চাই, বিচার বিভাগ বা আদালত কোনোভাবেই ‘নিস্পৃহ’ বা ‘নির্বিকার’ থাকবে না; অন্তত যে ক্ষেত্রে মানুষের জীবন ও দেশের ভবিষ্যতের প্রশ্ন জড়িয়ে আছে।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ জানুয়ারী ২২, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ