Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

রাশিয়াকে হটিয়ে তুরস্ক যেভাবে মধ্য এশিয়ায় একক প্রভাব গড়ছে (২০২৩)

Share on Facebook

লেখক:নিকোলা মিকোভিচ।

মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ ককেশাস দীর্ঘদিন ধরেই রাশিয়ার ভূরাজনৈতিক বলয়ে ছিল। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া যতই হোঁচট খাচ্ছে, তুরস্ক ততই কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ওই অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।

এটা কোনো গোপন বিষয় নয় যে আজারবাইজান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তানকে আঙ্কারা ‘তুর্কি বিশ্ব’ বলে মনে করে। তুরস্কের সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ গুল এটিকে একসময় ‘এক জাতি, ছয় রাষ্ট্র’ বলে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন। তাঁর উত্তরসূরি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান অবশ্য সাংস্কৃতিক বন্ধনকে তেমন গুরুত্ব না দিয়ে জ্বালানিকেই মূল কেন্দ্রে রেখেছেন।

তুর্কমেনিস্তানের সঙ্গে তুরস্কের মৈত্রী এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তুর্কি বলয়ের রাষ্ট্রগুলোর কোনো সংগঠনের সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও তুর্কমেনিস্তান আঙ্কারার মধ্য এশিয়া কৌশল বাস্তবায়নে মূল ভূমিকা পালন করবে। গত মাসেও এরদোয়ান বিষয়টিকে রাখঢাক না করেই বলেছিলেন, ‘আমি আশা করি, তুর্কমেনিস্তানের গ্যাস কাসপিয়ান সাগর হয়ে শিগগিরই তুরস্কে পৌঁছাবে।’

তুর্কমেনিস্তান বিশ্বের অন্যতম বিচ্ছিন্ন এলাকা হলেও প্রাকৃতিক গ্যাস মজুতের ক্ষেত্রে বিশ্বে চতুর্থ। রাশিয়া, ইরান ও কাতারের পরই দেশটির অবস্থান। চীন এখন তুর্কমেনিস্তানের গ্যাসের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। আঙ্কারার উদ্দেশ্য হলো সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত তুর্কমেনিস্তান থেকে জ্বালানি গ্যাস কিনে তুরস্ককে প্রাকৃতিক গ্যাসের আঞ্চলিক হাবে পরিণত করা।

সেটা কীভাবে হবে? রাশিয়া, আজারবাইজান, ইরান ও তুর্কমেনিস্তান থেকে বিপুল পরিমাণ গ্যাস আমদানি করে মজুত করবে তুরস্ক। সেই গ্যাস তারা ইউরোপে রপ্তানি করবে। নীতিগতভাবে তুরস্কের এই কৌশল সমর্থন দেবে ক্রেমলিন। কেননা নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনের মাধ্যমে রাশিয়া ইউরোপে আর খুব বেশি দিন গ্যাস সরবরাহ করতে পারবে না। এরপরও তুরস্কের জ্বালানিকৌশল রাশিয়ার বিরোধিতার মুখে পড়তে পারে।
উল্লেখ্য, সিনেটর আলেক্সান্দ্রা বাশকিন সম্প্রতি লিখেছেন, তুর্কমেনিস্তান থেকে আজারবাইন পর্যন্ত আন্তকাসপিয়ান পাইপলাইন নির্মাণ করতে সম্মতি দেবে না মস্কো।

ভবিষ্যতে সেটা আঙ্কারার সঙ্গে যুক্ত হবে কি না, সেই ভয় রয়েছে। বাশকিন তাঁর যুক্তিতে পরিবেশগত উদ্বেগের কথা বলেছেন, কিন্তু এর অন্তর্নিহিত ভূরাজনৈতিক উদ্বেগটাও পরিষ্কার। ক্রেমলিন যদি বাশকিনের এই চিন্তা ধারণও করে, তারপরও তুরস্ককে পাইপলাইন নির্মাণ করতে বাগড়া দিতে পারবে না। ইউক্রেন যুদ্ধে গাড্ডায় পড়ায় অন্য দেশকে, বিশেষ করে তুরস্ককে নির্দেশ দেওয়ার মতো ক্ষমতা এখন রাশিয়ার নেই।

ভিন্ন একটি পথ ভাবা যাক। ইউরোপে গ্যাস রপ্তানির জন্য তুর্কমেনিস্তান, কাজাখস্তান ও উজবেকিস্তানের ভেতর দিয়ে যাওয়া নিজেদের পাইপলাইন দিয়ে ইউরোপে গ্যাস রপ্তানির প্রস্তাব দিতে পারে মস্কো। কিন্তু বিশ্বে রাশিয়ার এখন যে একঘরে দশা এবং ভ্লাদিমির পুতিন যেভাবে তাঁর দেশকে একটি অচ্ছুত রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন, তাতে করে মধ্য এশিয়ার সাবেক সোভিয়েত দেশগুলো ব্যবসার ক্ষেত্রে ক্রেমলিনকে কোনো সাহায্য করবে বলে মনে হয় না।

যাহোক, মস্কো বদলা নেবে কি না, সেই ভয় উপেক্ষা করেই তুরস্ক তুর্কমেনিস্তানের সঙ্গে প্রাকৃতিক গ্যাসে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। ওই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর কাছ থেকে এরই মধ্যে বিপুল পরিমাণ গ্যাস আমদানি করছে তুরস্ক। আজারবাইজানের গ্যাসের প্রধান ক্রেতা আঙ্কারা। কিন্তু আজারবাইজানের মজুত গ্যাসের পরিমাণ সীমিত হওয়ায় তুর্কমেনিস্তানকেই নিজেদের ভূ-অর্থনৈতিক কৌশলের অপরিহার্য অংশ মনে করছে আঙ্কারা।

সোভিয়েত–উত্তরকালে তুরস্কের কৌশলের ক্ষেত্রে মূল বিবেচ্য বিষয় হলো জ্বালানি ও অর্থনৈতিক স্বার্থ। তবে তুর্কি জাতিকেন্দ্রিক একটা বিশ্বের প্রতি নিঃসন্দেহে গুরুত্ব দিয়ে আসছেন এরদোয়ান। প্যান–তুর্কিজম বা তুর্কি জাতির দেশগুলো একই ইতিহাস, সংস্কৃতি ও জাতিগত মেলবন্ধনে আবদ্ধ। প্যান-তুর্কিজম ধারণা ইউরেশিয়ায় তুরস্কের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে। অর্থাৎ এ ধারণা ওই অঞ্চলে রাশিয়া ও চীনের প্রভাব কমিয়ে নিজেদের প্রভাব বাড়ানোর ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে।

সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া মধ্য এশিয়ার দেশগুলোকে প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিল তুরস্ক। এর পর থেকে শিক্ষা ও আর্থিক খাতে নানা প্রকল্পের মাধ্যমে ও সামরিক সহায়তা বাড়িয়ে তুরস্ক ওই অঞ্চলে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। সড়ক নির্মাণ করে, মসজিদ ও বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে এবং জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বাড়িয়ে কিরগিজস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে তুরস্ক। মস্কো–নিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তা জোট সিএসটিও ও অর্থনৈতিক জোট ইএইইউর সদস্য কিরগিজস্তান। এরপরও দেশটিতে সাংস্কৃতিকভাবে নিজেদের প্রভাব তৈরি করতে হিমশিম খাচ্ছে মস্কো।

কাজাখস্তানও সিএসটিও এবং ইএইইউর মাধ্যমে রাশিয়ার মিত্রদেশ। তুরস্ক দেশটির হালকা শিল্পে নতুন করে দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে। যদিও মধ্য এশিয়ার তেলসমৃদ্ধ এই দেশের সঙ্গে তুরস্কের বাণিজ্য এখন পর্যন্ত মোটামুটি ধরনের। ২০২১ সালে দুই দেশের মধ্যে ৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়েছে। এর বিপরীতে রাশিয়ার সঙ্গে ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসেই কাজাখস্তানের বাণিজ্যের পরিমাণ সাড়ে ১১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

অতি সম্প্রতি কাজাখস্তান নিজেদের পররাষ্ট্রনীতি বহুমুখী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং রাশিয়ার সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে চলছে। এই শূন্যতাকে কাজে লাগিয়ে আঙ্কারা এখন চাইছে কাজাখস্তানের তেল ও বিরল ধাতু ইউরোপীয় ইউনিয়নে রপ্তানির ক্ষেত্রে ট্রানজিট দেশ হয়ে উঠতে। একই সঙ্গে মধ্য এশিয়ার সঙ্গে তুরস্কের একটি জ্বালানি করিডর গড়ে তুলতে চায় আঙ্কারা।

এ জন্য তুরস্ক ঠিক সময়টাই বেছে নিয়েছে। কাজাখস্তান শিগগিরই চীনের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে কাজাখস্তান ও তুরস্ককে করিডর করার একটি খসড়া চুক্তির চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে চলেছে। আন্তকাসপিয়ান আন্তর্জাতিক যোগাযোগের এই পথটি মিডল করিডর নামেই বেশি পরিচিত। রাশিয়াকে হটিয়ে এই প্রকল্পে তুরস্ক এখন গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট দেশ হয়ে উঠছে।

****নিকোলা মিকোভিচ সার্বীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক
এশিয়া টাইমস থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনুবাদ মনোজ দে।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:জানুয়ারী ০৪, ২০২৩

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ