Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

শতকোটিপতির জন্ম ও গরিবের মৃত্যুর যে মহামারি (২০২২)

Share on Facebook

লেখক: নাবিল আহমেদ।

নিষ্ঠুর মহামারির তৃতীয় বছরে আমরা প্রবেশ করেছি। এই ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেই আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ বিশ্ব নতুন করে সাজানোর আশা বাঁচিয়ে রেখেছি। মহামারি যখন প্রথম আঘাত হেনেছিল, সে সময় ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাইকে একত্র করেছিল ভয়। পরাক্রমী রাজনীতিকেরা জাতীয়তাবাদী স্বার্থপরতার নিন্দা করেছিলেন সে সময়। বহুজাতিকদের আচরণকে ‘নরকের লোভ’-এর সঙ্গে তুলনা করে তাঁরা তিরস্কার করেছিলেন। সব মানুষের জন্য টিকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন।

এই মহামারিতে নথিভুক্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৫৫ লাখ। কিন্তু প্রকৃত এ সংখ্যা ১ কোটি ৯০ লাখের কম নয়। এই মৃত্যুর পাহাড় আমাদের শোকস্তব্ধ করেছে, পাশাপাশি আমরা দেখছি লোভ কী করে অসমতা বাড়িয়েই চলেছে।

২০২২ সালে এসে আমরা দেখতে পাচ্ছি, করোনাকালে শতকোটিপতির সম্পদ বৃদ্ধি অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। মহামারির প্রতি ২৬ ঘণ্টায় একজন করে শতকোটিপতির জন্ম হয়েছে। বিশ্বের শীর্ষ ১০ অতিধনীর সম্পদ দ্বিগুণ বেড়েছে। প্রতি সেকেন্ডে তাঁদের সম্পদ বেড়েছে ১৫ হাজার ডলার করে। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারিতে বাকি ৯৯ শতাংশ মানুষের জীবনমান খারাপ হয়েছে।

আমাদের অস্বস্তির কারণ হচ্ছে এই অসমতা। বয়সের কারণে নয়, করোনায় কার মৃত্যু হচ্ছে, সেটা পরিমাপের শক্ত একটা মাপকাঠি এখন আয়বৈষম্য। ২০২১ সালে গরিব দেশগুলোতে করোনায় লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে টিকার ক্ষেত্রে ওষুধ কোম্পানিগুলোর একচেটিয়াকরণ ও ধনী দেশগুলোর মজুতকরণ। মহামারিতে শতকোটি মানুষের টিকার অধিকার অস্বীকারের মধ্য দিয়ে নতুন নতুন শতকোটিপতির জন্ম আমরা হতে দেখলাম।

অসমতা আমাদের সবার ক্ষতি করে। ‘টিকা-বর্ণবাদ’ জন্ম দিয়ে আমরা নতুন নতুন ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি করছি। একইভাবে আমরা অভিজাত শ্রেণির গুটিকয়ের কাছে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হারিয়েছি। বিষয়টা আর ধনীর বিপরীতে গরিব নেই, অতিধনীর বিপরীতে সবার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অক্সফামের হিসাব থেকে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বে অসমতার কারণে প্রতি চার সেকেন্ডে কমপক্ষে একজন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। সম্পদের প্রাচুর্য যখন বাড়ছে, তখনই এই অর্থনৈতিক সহিংসতার জন্ম হচ্ছে।

খোলা চোখে অনেকের মনে হতে পারে, ধনীরা ভালো করছে, তাই তাদের সম্পদ বাড়ছে। কিন্তু অক্সফামের ‘অসমতায় মৃত্যু’ প্রতিবেদনে ভিন্ন চিত্র পাওয়া যাচ্ছে। দৃষ্টান্ত হিসেবে বলা যায়, শতকোটিপতির সম্পদ মহামারি শুরুর পর যে পরিমাণ বেড়েছে, তা আগের ১৪ বছরে তাঁদের যে সম্পদ বেড়েছিল, তার থেকেও বেশি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, বিশ্বব্যাংক ও বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম—সব কটি সংস্থায় এই মহামারিতে দেশগুলোর মধ্যে অসমতা বাড়ার তথ্য দিচ্ছে।

অতিধনীদের জন্য বড় একটা মওকা হচ্ছে মহামারি। অর্থনীতি বাঁচাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিপুল অঙ্কের টাকা ছেড়েছে, কিন্তু শেয়ারবাজার স্ফীতির মাধ্যমে সেগুলো অতিধনীরা নিজেদের পকেটে পুরে নিয়েছে। এর মধ্যেই তাদের একচেটিয়া ক্ষমতা, ব্যক্তিমালিকানা, শ্রমিকের অধিকার খর্ব করা, করপোরেট করহার কমানো, শ্রমবাজার উদারকরণের মতো ব্যাপারগুলো পুরোদমেই চলেছে।

এর বিপরীতে, অসমতা আরও গভীর হওয়ায় শতকোটি মানুষকে ভুগতে হয়েছে। কিছু দেশে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে গরিব মানুষেরা ধনীদের চেয়ে চার গুণের বেশি মারা গেছে। ৩৪ লাখ কালো আমেরিকানের জীবনমান এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। মহামারি শুরুর আগে এ সংখ্যা ছিল ২১ লাখ। একটা প্রজন্মের প্রচেষ্টায় যে লিঙ্গসমতা তৈরি হয়েছিল, মহামারিতে সেটাও নষ্ট হয়েছে। অনেক নারী ঘরে লিঙ্গ সহিংসতা নামের দ্বিতীয় মহামারির শিকার হয়েছেন।

‘টিকা-বর্ণবাদ’ সব অসমতার ক্ষেত্রে জ্বালানি জুগিয়েছে। এখন আইএমএফ টিকার ব্যাপারে যে কঠোর নীতি চাপিয়ে দিয়েছে, তাতে ৮০টির বেশি দেশে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। আমরা ভুল সব কারণে ইতিহাস নির্মাণ করি। বিশ শতকের শুরুর দিকে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদে অসমতা যে চূড়ায় পৌঁছেছিল, এখন আবার সেই অবস্থায় পৌঁছেছে। উনিশ শতকের শেষভাগের গিল্ড যুগকে এরই মধ্যে সেটা ছাপিয়ে গেছে। এই ধরনের ব্যর্থতা থেকেই নতুনের জন্ম হয়। নয়া উদারবাদ এখন যেন উন্মাদের প্রলাপ। বর্তমান যুগের অভূতপূর্ব এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য অসাধারণ ও সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ দরকার।

অর্থনৈতিক অসমতা এবং লিঙ্গ ও বর্ণবৈষম্যকে পরাস্ত করার জন্য প্রতিটি সরকারের একুশ শতকীয় পরিকল্পনা থাকতে হবে। সামাজিক আন্দোলন সেটাই দাবি করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী এবং উপনিবেশের জাঁতাকল থেকে মুক্তির পর এই শিক্ষাটাই সামনে এসেছিল। মানুষের জীবন বাঁচাতে বাস্তব অর্থনীতিতে ট্রিলিয়ন ডলার ফিরিয়ে আনতে হবে। এটা সম্ভব। আর্জেন্টিনার দৃষ্টান্ত আমরা এখানে আনতে পারি। এই মহামারিতে অতিধনীরা যে পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছে, ‘সংহতি করের’ আওতায় তারা তা থেকে বড় একটা অংশ জনগণকে যাতে ফিরিয়ে দেয়, তার উদ্যোগ সরকারগুলোকে নিতে হবে।
বিজ্ঞাপন

এটা সূচনা। সম্পদের অসমতা একটা যৌক্তিক স্তরে নামিয়ে আনার জন্য পুঁজি ও সম্পদের ওপর আনুপাতিক হারে কর আরোপ করতে হবে।

আল-জাজিরা থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিত

● নাবিল আহমেদ অক্সফামের স্ট্র্যাটেজি ও কমিউনিকেশন প্রধান নির্বাহী

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ জানুয়ারী ১০, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ