Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়(২০২১)

Share on Facebook

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার কঠোর লক-ডাউনের কারণে। ১৯২১ সালের ১ জুলাই এই ভূখণ্ডের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। শত বছরে দেশের এই শীর্ষ বিদ্যাপীঠের গৌরবের দিক অনেক। কিন্তু সেই মহিমা শেষভাগে এসে অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে।

শুরুর দিকে জ্ঞানচর্চা, বিজ্ঞান ও সামাজিক গবেষণা, পাঠদানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল অগ্রণী। বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ, দার্শনিক, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিকদের বড় অংশ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন, পড়িয়েছেন। ১৯৫২ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এ দেশের সব গণ-আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক ভূমিকা ছিল অসামান্য।

এখন সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হলো, জ্ঞানচর্চা, গবেষণা ও পাঠদানের মানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যাশিত উন্নতি হয়নি। বরং অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়েছে। শিক্ষক ও ছাত্ররাজনীতি এখন দলীয় লেজুড়বৃত্তির দোষে দুষ্ট। বিভাগ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে, বিপরীতে মানের দিক দিয়ে অবনমন ঘটেছে। শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এসেছে বহুবার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষের সংকট প্রবল। আবাসনসংকট প্রবল। খাবারের মান নিম্ন। হল নিয়ন্ত্রণ করে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন। তাদের হাতে শিক্ষার্থীদের নিগৃহীত হওয়ার অভিযোগ বহু বছরের। কিন্তু সেগুলোর সমাধান নেই, উদ্যোগও তেমন একটা চোখে পড়ে না। অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার ব্যয় অনেক কম। সীমিত আয়ের ও গ্রামাঞ্চলের মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এই বিশ্ববিদ্যালয় বড় ভরসার জায়গা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তির আগের দিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জ্ঞানচর্চা ও গবেষণাকে জোরদার করার তাগিদ খুব গভীরভাবে অনুভব করছে। জ্ঞানচর্চার বৈশ্বিক মাত্রায় পৌঁছানোর জন্য আমাদের যে ঘাটতি আছে, সেটি অস্বীকার করার সুযোগ নেই।’ তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার আগে খুব ভালো মৌলিক ও প্রায়োগিক আন্তর্জাতিক মানের গবেষণার ফল প্রত্যাশা করাটা কঠিন বিষয়।’

শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে আপাতত বিশেষ কোনো অনুষ্ঠান নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজ শুধু অনলাইনে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে ভাষাসৈনিক আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ: ফিরে দেখা’ শীর্ষক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। অবশ্য শতবর্ষের মূল অনুষ্ঠান বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণভাবে আয়োজন করা হবে আগামী ১ নভেম্বর। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ অনুষ্ঠান হবে, যেখানে রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

১৯২১ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আলোচনা শুরু হয় বঙ্গভঙ্গ রদের পর। ঢাকা: স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী বইয়ে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন লিখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বঙ্গভঙ্গ রদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে। পূর্ববঙ্গে মুসলমান মধ্যশ্রেণি বা পেশাজীবী শ্রেণি গড়ে তুলেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পূর্ববঙ্গ, পূর্ব পাকিস্তান ও বর্তমান বাংলাদেশের প্রশাসন, স্বাধীন পেশাজীবী, রাজনীতিবিদ—অধিকাংশই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যখন যাত্রা শুরু করে, তখন অনুষদের সংখ্যা ছিল তিনটি—কলা, বিজ্ঞান ও আইন। বিভাগ ছিল ১২টি—সংস্কৃতি ও বাংলা, ইংরেজি, শিক্ষা, ইতিহাস, আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ, পার্সি ও উর্দু, দর্শন, অর্থনীতি ও রাজনীতি, রসায়ন, গণিত ও আইন। শুরুতে শিক্ষক ছিলেন ৬০ জন, শিক্ষার্থী ৮৭৭ জন।

এখন বিভাগ দাঁড়িয়েছে ৮৪টিতে। ইনস্টিটিউট হয়েছে ১৩টি। শিক্ষক এখন ১ হাজার ৯৯২ জন ও শিক্ষার্থী ৩৭ হাজার ১৮ জন। ৫৬টি গবেষণাকেন্দ্র হয়েছে। তবে তেমন কোনো গবেষণা না থাকার যুক্তি তুলে ধরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমালোচনা বেশি হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেবর বেশি বেড়েছে মূলত গত দুই দশকে। ২০০০ সালে বিভাগের সংখ্যা ছিল ৪৭, এখন তা ৮৪। এ সময়ে শিক্ষক বেড়ে হয়েছেন দ্বিগুণের বেশি। শিক্ষার্থী ছিলেন সাড়ে ২২ হাজার, যা ৩৭ হাজার ছাড়িয়েছে। এ সময়ে বিভিন্ন বিভাগে সান্ধ্য কোর্সসহ নানা ধরনের কোর্স খোলা হয়েছে, যা মূলত বাণিজ্যিক উদ্যোগ। শিক্ষকরাজনীতি, ছাত্ররাজনীতি, শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির প্রবণতাও মূলত শেষ তিন দশকের।

আইন অনুযায়ী ‘স্বায়ত্তশাসিত’ হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মূলত দলীয় রাজনীতির নিয়ন্ত্রণেই পরিচালিত হয়। উপাচার্য পদে নিয়োগ হয় সরকারের পছন্দে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে নিয়োগ হয় সরকারপন্থী শিক্ষক সংগঠনের অনুগতদের। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকায় প্রশাসনিক সব পদেই এখন নীল দলের শিক্ষকেরা। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকাকালে পদগুলোতে ছিলেন সাদা দলের শিক্ষকেরা। দল ভারী করতে গিয়ে অপ্রয়োজনে বিভাগ খোলা ও শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ প্রবল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কেউ কেউ মনে করেন, মানের দিক দিয়ে বাংলাদেশে সব ক্ষেত্রে যে অবনমন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার বাইরে নয়। তবে দেশে এখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই এগিয়ে। গবেষণাপত্রের সংখ্যায় ও বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিংয়ে দেশের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই সবার ওপরে থাকে। এর বিপরীত মত হলো, সব ক্ষেত্রে যখন অবনমন, তখন পথ দেখানোর ভূমিকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেই নিতে হবে। দেশের এখন দরকার শিক্ষার মান ও গবেষণায় উন্নতি। সেখানে এগিয়ে যেতে হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষক ও ইউজিসি অধ্যাপক হাসিনা খান, যিনি সম্প্রতি পাট থেকে নতুন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক তৈরির ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার করে সাড়া ফেলেছেন, তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুটা খুব ভালো ছিল, কিন্তু মাঝপথে আমরা হারিয়ে গেছি।’

এই অধ্যাপক মনে করেন, উঁচু মানের শিক্ষক-গবেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছেন। তবে গবেষণায় জোর দেওয়া জরুরি। শিক্ষার্থীদের পড়ানোর মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বকে কী দিচ্ছে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।

সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: জুলাই ০১, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ