Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

শামীমা নূর পাপিয়া (২০২০)

Share on Facebook

যুব মহিলা লীগের পদ বাগিয়ে অভিজাত এলাকায় জমজমাট নারী ব্যবসাসহ ভয়ঙ্কর সব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন (ফেব্রুয়ারী ২২, ২০২০) নরসিংদী জেলার কথিত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউ। মাত্র ৩০ বছরেরও কম বয়সের মধ্যেই বিশাল অর্থ বিত্তের মালিক বনে গেছেন এই নারী।

আলোচিত এই নারী নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক। তিনি নিজেকে কেন্দ্রীয় নেত্রী হিসেবেও পরিচয় দিতেন। এই পরিচয়ের আড়ালে ছিল তার অপরাধমূলক কাজকর্ম। রাজনৈতিক কর্মসূচিতে গিয়ে নেতাদের ফুল দিয়ে ছবি তুলে সেই ছবিও অপব্যবহার করতেন।

পাপিয়ার সব কর্মকাণ্ডের অন্যতম অংশীদার তার স্বামী মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমন।

সুমন ও পাপিয়ার উত্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, ২০০০ সালের দিকে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে যাত্রা শুরু সুমনের। পরবর্তীতে নরসিংদী শহর ছাত্রলীগের আহবায়ক নির্বাচিত হন। রাজনীতির পাশাপাশি শৈশব থেকেই চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন।

২০০১ সালে পৌরসভার কমিশনার মানিক মিয়াকে যাত্রা প্যান্ডেলে গিয়ে হত্যার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ওই হত্যাকাণ্ডের এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন তিনি। হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ওপর ভর করেই অপরাধ জগতে তাঁর উত্থান। এরই মধ্যে আট বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের পর পাপিয়াকে ২০১২ সালে বিয়ে করেন সুমন।

বিয়ের পরপরই ২০১৩ সালে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন এই দম্পত্তি। সেই হামলায় পাপিয়া গুলিবিদ্ধ হন। পরে তারা নরসিংদী ছেড়ে পাড়ি জমান ঢাকায়। সেখানে ঢাকার সাবেক এক সাংসদের সঙ্গে (সাবিনা আক্তার তুহিন) তাদের সখ্যতা গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে নিজস্ব কৌশলে পাপিয়াকে জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক বানান সুমন। কিন্তু নরসিংদীতে তাদের পদচারণা নেই বলতে গেলেই চলে।

সম্প্রতি নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগ দুই ধারায় বিভক্ত। এর এক পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম ও অন্য পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন ভূঞা। দলীয় কোন্দলের সুযোগে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদরের সাংসদ নজরুল ইসলামের বলয়ে যোগ দেন সুমন ও পাপিয়া।

নিজেদের জানান দিতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে মো. নজরুল ইসলামের পক্ষে সুমন ও পাপিয়ার নেতৃত্বে বিভিন্ন মিটিং মিছিলে বিশাল শোডাউন করেন। সর্বশেষ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত অ্যাডভোকেট আসাদোজ্জামানের স্মরণ সভায় বিশাল শোডাউন করেন। স্থানীয় রাজনীতিতে বর্তমানে তারা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদরের সাংসদ মো. নজরুল ইসলামের সমর্থক হিসেবে পরিচিত।

নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মতিন ভূঞা বলেন, একজন এমপি নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় দলীয় পদকে পুঁজি করে সুমন পাপিয়াদের মতো সন্ত্রাসী, অস্ত্রবাজদের নরসিংদীতে পুনরায় আমদানি করছেন। যা খুবই দুঃখজনক। ওই এমপি তাদের দায়িত্ব নিলেও আওয়ামী লীগ কোনো অপরাধীর দায় নেবে না।

নরসিংদী জেলা শহরের ভাগদী মারকাজ মসজিদ এলাকায় পাপিয়ার বাবা সাইফুল বারীর বাসা। সেখানে গিয়ে দেখা যায় একটি দোতালা পাকা বাড়ি তার বাবার। তার শ্বশুরবাড়ি ব্রাহ্মণদীতে চারতলা একটি বাড়ি আছে। রাজধানীর ফার্মগেট ইন্দিরা রোডে ‘রওশন ডমিনো রিলিভো’ বিলাসবহুল ভবনে তার ও তার স্বামীর নামে দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এ ছাড়া তার কালো ও সাদা রঙের দুটি হায়েস মাইক্রোবাস, একটি হ্যারিয়ার, একটি নোয়া ও একটি ভিজেল কার আছে। তার স্বামীর মালিকানায় থাইল্যান্ডে একটি বারও আছে বলে জানা গেছে। রাজধানীর এফডিসি গেটের সঙ্গে ‘কার এক্সচেঞ্জ’ নামে তার একটি গাড়ির শোরুম আছে বলে জানা গেছে।

নরসিংদীর শহরের ভাগদী এলাকায় কেএমসি কার ওয়াশ নামে একটি গাড়ির সার্ভিস সেন্টার রয়েছে তার স্বামী সুমনের। নরসিংদীতে রয়েছে সুমন ও তার স্ত্রী পাপিয়ার বিশাল কর্মীবাহিনী। মাঝেমধ্যেই তারা বিশাল শোডাউন দেন আওয়ামী লীগের মিছিল-মিটিংয়ে। পাপিয়ার স্বামী সুমন ঢাকায় সন্ত্রাসের পাশাপাশি অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গেও সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

পাঁচ তারকা হোটেলে নারী ও মাদক ব্যবসাই পাপিয়া ও তার স্বামীর আয়ের মূল উৎস। দেশের অভিজাত কিছু মানুষ ও বিদেশিরাই এর গ্রাহক। ইন্টারনেটে স্কট সার্ভিস খুলে বসে খদ্দেরদের কাছে তাদের চাহিদামতো সুন্দরী তরুণী পাঠাতেন। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষিত সুন্দরী তরুণীদের সংগ্রহ করতেন। একপর্যায়ে তাদেরকে ধণাঢ্য ব্যক্তিদের শয্যাসঙ্গী করতেন পাপিয়া। এ জন্য একাধিক অভিজাত হোটেলের রুম ভাড়া নিত নামে-বেনামে।

র‍্যাব জানায়, রাজধানীর গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে প্রেসিডেন্ট স্যুট নিজের নামে সব সময় বুকড করে নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছিলেন পাপিয়া। যিনি হোটেলটির বারে বিলবাবদ প্রতিদিন পরিশোধ করতেন প্রায় আড়াই লাখ টাকা।

বৈধ আয় অনুযায়ী পাপিয়ার বাৎসরিক আয় মাত্র ১৯ লাখ টাকা। অথচ হোটেল ওয়েস্টিনে শুধু গত তিন মাসেই বিল পরিশোধ করেছেন প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যিনি নারী সংক্রান্ত অপকর্ম ছাড়াও অস্ত্র-মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন তদবির বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত।

সুনির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই, তবুও স্বল্প সময়ে বিপুল সম্পত্তি ও অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া। রাজধানীর ফার্মগেটের ২৮ ইন্দিরা রোডে দুটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও ব্যক্তিগত গাড়ি, নরসিংদী শহরে দুটি ফ্ল্যাট এবং বাগদী এলাকায় দুই কোটি টাকা মূল্যের দুটি প্লটও রয়েছে তার।

তাদের আয়ের আরেকটি উৎস হচ্ছে নারীদের দিয়ে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজ করানো। তারা ঢাকার বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলে অবস্থান করে কম বয়সী মেয়েদের দিয়ে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজে বাধ্য করান। যাদের অধিকাংশই নরসিংদী এলাকা থেকে চাকরি দেয়ার কথা বলে এবং বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে আসা হয়। এসব অনৈতিক কাজে কেউ অস্বীকৃতি জানালে তাদের বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে মুখ খুলতেও ভয় পাচ্ছেন। পাপিয়ার জব্দ মোবাইল ফোন থেকে অশ্লীল ভিডিও মিলেছে।

জানা গেছে, প্রায় সব পাঁচ তারকা হোটেলেই ছিল পাপিয়ার এসকর্ট ব্যবসা। পাঁচ তারকা হোটেলে নারী ও মাদক ব্যবসাই তার আয়ের মূল উৎস। দেশের অভিজাত কিছু মানুষ ও বিদেশিরাই এর গ্রাহক। ইন্টারনেটে স্কট সার্ভিস খুলে বসে খদ্দেরদের কাছে তাদের চাহিদামতো সুন্দরী তরুণী পাঠাতেন। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষিত সুন্দরী তরুণীদের সংগ্রহ করতেন। একপর্যায়ে তাদেরকে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের শয্যাসঙ্গী হতে বাধ্য করতেন পাপিয়া। এরই মধ্যে পাপিয়ার কাছ থেকে গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত অনেক ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তির অন্তরঙ্গ দৃশ্যের ভিডিও ক্লিপ উদ্ধার করেছেন র‌্যাব কর্মকর্তারা। গোপন ক্যামেরায় মেয়েদের ছবি ধারণ করে তাদের নিয়মিতভাবে ব্ল্যাকমেইল করতেন তিনি। পাপিয়ার কাছ থেকে উদ্ধারকৃত একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়- পাপিয়া বসে আছেন বাইজিবাড়ির সর্দারনির মতো। তার হাতে মোটা একটি বেতের লাঠি। তার কব্জায় থাকা মেয়েরা কথা না শুনলে পেটাতেন। পাপিয়া একাধিক অভিজাত হোটেলের রুম ভাড়া নিতেন নামে-বেনামে। সর্বশেষ গতকাল পর্যন্ত একটি হোটেলের প্রেসিডেনশিয়াল স্যুটে তার নামে পাওয়া গেছে। এই পাঁচ তারকা হোটেলে বিভিন্ন মেয়েকে পাপিয়া নিজেই নিয়ে যেতেন। তাদেরকে দিয়ে করাতেন অবৈধ দেহব্যবসা। এরই মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদে সবকিছুই কবুল করেছেন পাপিয়া।

পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন চৌধুরী নরসিংদী এলাকায় ‘কিউ অ্যান্ড সি’ নামের একটি ক্যাডার বাহিনী পরিচালনা করতেন। যাদের মাধ্যমে তারা নরসিংদীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, মাসোহারা আদায়, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসাসহ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে আসছিলেন। তাদের এই ক্যাডার বাহিনীর অনেকের নাম ইতোমধ্যে জানা গেছে, যাদের গ্রেপ্তারে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে।

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল জানান, পাপিয়ার অবৈধ সম্পদের উৎস নিয়ে সিআইডি কাজ করবে। ইতোমধ্যে সিআইডির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। পাপিয়া ও তার স্বামী সুমনসহ গ্রেফতার চারজনের বিরুদ্ধে জাল মুদ্রা রাখা, অনুমোদন ছাড়া অর্থপাচার, অস্ত্র আইনে মামলা হচ্ছে। এছাড়া আয়ের সঙ্গতিবিহীন অর্থ উপার্জন ও ব্যয়ে মানি লন্ডারিং এবং মাদক আইনেও মামলা প্রক্রিয়াধীন। তাদের সঙ্গে যাদেরই জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ মিলবে তাদের বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শনিবার (ফেব্রুয়ারী ২২, ২০২০) সকালে স্বামী মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমন, সাবিক্ষর খন্দকার (২৯), শেখ তায়্যিবা (২২) সহ আরও দুজন বিদেশে যাওয়ার সময় বিমানবন্দর এলাকা থেকে তাকে আটক করে র‌্যাব।

সূত্র: কালের কন্ঠ
তারিখ: ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০২০

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ