কার আজ্ঞায়, কে বা রাখে নাম। নাম, কালকূট। অর্থ যার তীব্র বিষ। মনে করতে পারছি না, কেউ মুখে আঁচল চেপে হেসে বলেছিল কী না, ‘কী না নামের ছব্বা!’ ভেবেছিলাম আমিও। অমিয় অমৃত সুধা। কিছু এলো না মনে, এলো তো, একেবারে সংসার ছাড়া নাম, মহা হলাহল। আজ্ঞাটা যে কার, আমি নিজেও জানি না।
অন্তত এই একটি ক্ষেত্রে, লেখার কথা বলার আগে নামকরণের ভাবনাটাই আগে মনে আসে। এ কথা বিদিত সংসারে, জানেন সর্ব লোকে ছদ্মনামের প্রয়োজন হয়, নামের আড়াল থেকে নিজেকে ব্যক্ত করা! এমন না যে, সংসারেতে এসেছিলেম কিছু কথা বলবো বলে। বরং বলতে হয়, ‘আমি একদিনও না দেখিলাম তারে/আমার ঘরের কাছে আরশীনগর এক পড়শী বসত করে।’…গানখানি যে অর্থে লালন গেয়েছিলেন, বলতে গেলে একদিক থেকে আমারও সেই অর্থেই স্মরণ। আসলে তো আরশীনগরটি তাঁর আপন দেহ, পড়শী হলেন তাঁর সাধক সত্তা। যাকে তিনি সন্ধান করেছেন, দেখতে চেয়েছেন। কেন না, তাঁর সাধন ভজন যা কিছু, সবই যে দেহ ভাণ্ডে অবস্থিত।
কিন্তু আমি তো আর সাধক না। অতএব বলি, নামের আড়ালে থেকে নিজেকে ব্যক্ত করা কথাটা তেমন যুতসই লাগছে না। বরং আমার আরশী-নগর যদি হয় জগৎ ও জগৎজন, তাদের মধ্যে আমার পড়শী সত্তাটিকে সন্ধানই নামের আড়ালে ঘুরে ফেরা। ইংরেজীতে একে আইডেন্টিফিকেশন বলে নাকি? যা খুশি বলুক গিয়ে, ওতে আমি নেই। যা বলেছি তা-ই, আড়াল দিয়ে খুঁজে ফিরি বোধহয় নিজেকেই। তারই নাম কালকূট।
অনেক বিচিত্রের মধ্যে মানুষের চেয়ে বিচিত্র তো আর কিছু কোনো দিন দেখিনি। সে বিচিত্রের মাঝেই অপরূপের দর্শন ঘটেছে। ভেবেছিলাম, একদিন মানুষ ছাড়িয়ে, অন্য কোনোখানে আমার সেই অপরূপের দেখা পাব…
…কেন যেন মনে হয়, আমার সেই ক্লান্ত দিনটির জন্যই এখনো আমার শ্রেষ্ঠ লেখাটি অপেক্ষা করছে। সঠিক জবাব দিতে পারলাম না বলে মার্জনা করবেন, দৃষ্টি বড় ঝাপ্সা হয়ে উঠেছে…
সূত্র: সংগৃহিত।
তারিখ: অক্টোবর ১৮, ২০২০
রেটিং করুনঃ ,