Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

এটি কিন্তু একটি গল্প

Share on Facebook

লিখতে হবে মানসম্মত লেখা!
লেখার সাথে মন সংযুক্ত হলে ভালো হয়!
তিনি কাগজ-কলম নিয়ে বসে আছেন তো আছেনই!
বহুবার চেষ্টা করলেন মানসম্মত একটা লেখার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলার!
প্রাণপন চেষ্টা করলেন মন সংযুক্ত করার!
না, মন শুধু মাছরাঙা পাখির মতো অন্য ধ্যানে নিমগ্ন হয়!
লেখার ধারে কাছেও আসে না!

ধুত্তুরি! বলে তিনি শেষপর্যন্ত লিখলেন, বিচ্ছিন্ন দ্বীপটিতে জনপ্রাণী বলতে কিছুই নেই, বালি-কাঁকর মেশানো বিরান ভূমিতে একটা লাইটপোস্ট দাঁড়িয়ে আছে একা! সমুদ্র দেখছে! দেখছে কী অসীম সাহসে ছোট ছোট নৌকা নিয়ে মাছ ধরার অনবরত চেষ্টা করছে উদোম শরীরের অনন্যোপায় জেলেরা!
ব্যাস! এই পর্যন্ত লিখলেন তিনি।
কেমন হলো লেখার শুরুটা!
কারো পরামর্শ পেলে ভালো হয়।

ছুটির দিন আজ!
স্বনামধন্য লেখক বিষাদনীলিমা থাকেন তার বাসার কাছেই!
নতুন লেখার আনন্দে হিতাহিত জ্ঞানশূণ্য হয়ে তিনি ছুটলেন তাঁর বাড়ির দিকে!
নাগরিক জীবনের ন্যুনতম বোধবুদ্ধির মাথা খেয়ে তিনি তার দু’চরণ লেখা পড়ে দেখবার অনুরোধ করলেন বিষাদনীলিমাকে।
স্বভাবজাত শান্ত প্রকৃতিতে চরম বিরক্তি সুকৌশলে ঢেকে রেখে লেখার সূচনা বাক্যগুলো পড়লেন তিনি।
তারপর গভীর দার্শনিক বোধ থেকে বিষাদনীলিমা উচ্চারণ করলেন, …লেখার প্রথম পাঠক লেখক নিজে…
তারপর ফিরিয়ে দিলেন লেখাটি!
(ক্ষমাপ্রার্থণা বিষাদনীলিমা, এটা কিন্তু একটা গল্প)

প্রথম লেখার আনন্দ, নতুন লেখার তীব্র উত্তেজনা ম্লান হলো অনেকটাই!
তিনি ফিরে এলেন ধীরে ধীরে!
লেখাটি পাঠক হিসেবে পড়লেন বেশ কয়েকবার, ভাবলেন, জনপ্রাণীহীন বিরান ভূমিতে একটা লাইটপোস্ট দাঁড়িয়ে আছে একা একা!
না! পাঠক হিসেবে পড়তে গিয়ে একটু কেমন কেমন লাগছে যেন!
লাইটপোস্ট দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সমুদ্র দেখছে!
নাহ! আরো কারো সাথে আলাপ করতে পারলে বেশ হতো!
হয়তো প্রশান্ত হতো অশান্ত মন!

রব্বানী চৌধুরীর কথা মনে পড়লো তার!
লেখক হিসেবে সুপরিচিত এই মানুষটির কথা তিনি শুনেছেন অনেকের মুখে!
দেখা করবার উপলক্ষ্য তৈরি হয়নি কখনও!
কিন্তু আজ তো একটা উপলক্ষ্য আছে তার হাতে!
আজ তো লিখেছেন দু’চরণ!
হোক দু’চরণ, তবু তিনি একজন লেখক আজ!
একজন লেখকের সাথে আরেকজন লেখকের দেখা হওয়াটা অশোভন কিছু নয় সম্ভবত!
তিনি উত্তুঙ্গস্পর্শী স্পর্ধায় খুঁজে বের করলেন রব্বানী চৌধুরীর বাড়ি।
স্বাভাবিক সৌজন্যতা পর্বটি দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করেই তিনি তার লেখার সূচনা বাক্যগুলো তুলে দিলেন রব্বানী চৌধুরীর হাতে।
রব্বানী চৌধুরী মন দিয়ে পড়লেন, যেমন তিনি পড়েন অনেক লেখাই!
তারপর হৃদয়ের গভীরে লালন করা দীর্ঘ জীবনবোধ থেকে উচ্চারণ করলেন, …পাওয়া আসে শেষ থেকে, কল্পনা দিয়ে যাত্রা শুরু করে, সঠিক পরিকল্পনার পথ ধরে শেষে পৌঁছতে পারলেই আমাদের পাওয়া শুরু...
তারপর ফিরিয়ে দিলেন লেখাটি!
(ক্ষমাপ্রার্থণা রব্বানী চৌধুরী, এটি কিন্তু একটি গল্প)

অচঞ্চল হতবিহ্বলতায় নিমজ্জিত হলেন তিনি!
একটা গল্প লিখতে গিয়ে তিনি তো বিপদে পড়লেন! মহাবিপদে!
কল্পনা দিয়ে যাত্রা শুরু!
না, তার তো কল্পনা বলতে কিছুই নেই!
তিনি আটপৌরে বাস্তবঘনিষ্ঠ মানুষ!
প্রকৃত পরিস্থিতির চাপে পরিকল্পনা বলতেও কিছু থাকে না তার!
আমাদের পাওয়া শুরু!
কী পেয়েছেন তিনি জীবনে, যা থেকে শুরু করা যায়!
শেষে পৌঁছতে পারলেই…!
শেষে কীভাবে পৌঁছতে হবে সেটা জানলে কী জীবন নিয়ে এতো দৌড়ঝাঁপ করতে হয় দিনরাত!

না-না!
অতোশত ঝামেলায় কাজ নেই!
বাস্তব জীবনে যা দেখেছেন, তিনি তা-ই লিখবেন!

তিনি নতুন করে লিখলেন, সমুদ্রে জেগে উঠলো ছোট্ট একটা দ্বীপ। মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন অনেকটাই।
দ্বীপটির বিচ্ছিন্নতার অভিমান ভাঙাতে একদিন অনেক মানুষ এসে নামলো দ্বীপে। তারপর সেখানে মনোমুগ্ধকর একটা মঞ্চ বানালো তারা, রঙিন চাঁদোয়া টানিয়ে সৃষ্টি করলো শীতল ছায়া।
অনেক অনেক মানুষের জমায়েত। আকাশযানে জাতীয় পর্যায়ের একজন সুবিখ্যাত নেতা এলেন।
মঞ্চে উঠলেন।

ভোটের সময় তখন।
নেতা সগৌরবে ঘোষণা করলেন, মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপটিকে মনুষ্য-বাসোপযোগী করে দেবেন তিনি। বিরান এই ভূমিতে তৈরি হবে নতুন জনপদ… তিনি নির্বাচিত হলেই…
সমবেত মানুষের মনে সমুদ্রের জোয়ার প্রবেশ করলো চরমানন্দের রূপ নিয়ে।
না, এখানেই ইতি টানলেন না জনদরদী মানুষটি। তিনি জলদগম্ভীর কণ্ঠে বললেন, আমি কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। নতুন জনপদ তৈরির কাজ, উন্নয়নের প্রতিশ্রুত প্রক্রিয়া শুরু হবে আজ থেকেই…

একটা লাইটপোস্ট সাথে করে এনেছিলেন নেতার সফরসঙ্গীরা।
সমবেত স্বপ্নভূক মানুষের সহযোগিতায় লাইটপোস্টটি প্রোথিত করা হলো বিরান দ্বীপের বালি-কাঁকর মিশ্রিত ভূমিতে।
বৈদ্যুতিক সংযোগবিহীন লাইটপোস্ট মাথা উঁচু করে দাঁড়ালো প্রচণ্ড আবেগে।
…এই যে লাইটপোস্ট লাগানো হলো, এতে বিদ্যুত সংযোজিত হবে অচিরেই…
করতালি। তুমুল করতালি দিতে দিতে ফিরে গেলো মানুষগুলো মূল ভূখণ্ডে!

ভোট শেষ হলো।
অপেক্ষার অনন্ত প্রহর লাইটপোস্টের!
বিদ্যুতে শরীর শিহরিত হবার অপার প্রতীক্ষা!
আলোকিত মানুষের আগমনে নতুন জনপদ সৃষ্টি হবার সুনিবিড় অপেক্ষা!
দীর্ঘ এই প্রতিশ্রুত প্রক্রিয়ার যেন কোন শেষ নেই!
শূণ্যগর্ভের বেদনা নিয়ে একা একা লাইটপোস্টটি সমুদ্র দেখে; দেখে মাছ ধরার অনবরত চেষ্টায় উদোম শরীরের জেলেরা কী দুঃসাহসী…

সূত্র: সংগৃহিত- লেখক দীপংকর চন্দ
তারিখঃ অক্টোবর ১৯, ২০১৪

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ