Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ব্রিটেনের রাজতন্ত্র কি আর টিকে থাকতে পারবে (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:শোলা মোস-শোগবামিমু।

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে রাজকীয় শোভাযাত্রাসহকারে তাঁর শেষ যাত্রায় বাকিংহাম প্যালেস থেকে যখন কফিনে করে ওয়েস্টমিনস্টার হলে নেওয়া হচ্ছিল, তখন তাঁর কফিনের ওপর রাজমুকুট ইম্পিরিয়াল স্টেট ক্রাউন রেখে দেওয়া হয়েছিল।

এটি হিরে-জহরতে মোড়া এক বিশ্বখ্যাত মুকুট। এটি উপনিবেশগুলোয় ব্রিটিশরাজের পদ্ধতিগত লুণ্ঠন এবং ট্রান্স আটলান্টিক দাস ব্যবসা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের সম্পদ, ক্ষমতা ও প্রতিপত্তির প্রতীক।

এর সৌন্দর্য আমাকে মোটেও বিস্ময়াভিভূত করেনি। এটি আমাকে রানির উত্তরাধিকারের বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে উপলব্ধি করার একটা সুযোগ দিয়েছে। কারও কারও কাছে রানি তাঁদের প্রিয় সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তবে অন্য অনেকেই বিশ্বাস করে, রানির হাতে নিপীড়িত মানুষের রক্তের দাগ লেগে ছিল। তিনি ছিলেন শেষ ঔপনিবেশিক রানি, যাঁর নামে ঔপনিবেশিকতার আনুষ্ঠানিক অবসানের পরও বহু মানুষ নিগৃহীত হয়েছে।

রানির লিগ্যাসি বা উত্তরাধিকার এখন ঝেড়ে–মুছে আর চুনকাম করে এতটাই সাদা করে ফেলা হয়েছে এবং অতিরঞ্জিত এপিটাফ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে যে তাঁর মৃত্যুতে মানুষের শোক প্রকাশ করার অধিকারকে সম্মান করার সময় আমি তাঁর সম্পর্কিত সূক্ষ্ম সত্য বলতে গিয়ে যারপরনাই কুণ্ঠিত হতে বাধ্য হচ্ছি। এখানে আমাদের প্রশ্ন তোলা উচিত: রাজতন্ত্রের প্রাসঙ্গিকতা কী?

ব্রিটিশ রাজা বা রানি একজন অনির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান। এটি একুশ শতকের একটি প্রগতিশীল এবং উন্নত সমাজের সঙ্গে একেবারে বেমানান। সবচেয়ে খারাপ বিষয় হলো, ব্রিটিশ রাজতন্ত্র আক্ষরিক অর্থে দাসত্বের শৃঙ্খলে বন্দী করা আফ্রিকানদের পিঠে চড়ে বানানো সম্পদের ওপর নির্ভর করে দাঁড়িয়ে আছে। এই রাজপরিবার এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ লুট করেছে এবং দেশগুলোর প্রাকৃতিক সম্পদ লুটে নিয়েছে।

রাজতন্ত্রের বর্ণবাদ এবং কৃষ্ণাঙ্গ বিরোধিতাকে সম্মানসূচক অবস্থানে রাখার জন্য রানি ধারাবাহিকভাবে মারমুখী অবস্থানে থেকেছেন। রানির আরেকটি অকাট্য উত্তরাধিকার হলো সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেও সরকারের কর্মকাণ্ডের দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হওয়া। নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস গত সপ্তাহে বলেছিলেন, ‘ব্রিটেন আজকে তাঁর (রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ) জন্যই মহান দেশ।’

রানি তাঁর অধীনে থাকা সরকারগুলোর দ্বারা সংঘটিত নৃশংসতার দায় না নিয়ে, এমনকি সেসব কর্মকাণ্ডের জন্য একবার দুঃখ প্রকাশও না করে ব্রিটেনের মহত্ত্বের কারণ হতে পারেন না।

কেনিয়ার মাউ মাউ বিদ্রোহ নির্মমভাবে দমন করার সময় ব্রিটিশ সেনারা সেখানে গণহারে নির্যাতন চালিয়েছে, ধর্ষণ করেছে এবং ১৫ লাখ লোককে কারারুদ্ধ করেছিল। তার জন্য রানি ব্যক্তিগতভাবে একবারও ক্ষমা প্রার্থনা করেননি।

নাইজেরিয়ায় ব্রিটেন তার কৌশলগত স্বার্থ রক্ষার জন্য বায়াফ্রান যুদ্ধে যে ভূমিকা রেখেছিল, তাতে নাইজেরিয়ার প্রায় ১০ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল, সে জন্যও রানি কোনো দিন অনুশোচনা করেননি।

ব্রিটিশ উপনিবেশের শিকার হয়ে সাবেক উপনিবেশগুলো এখনো যে অন্যায়, দারিদ্র্য এবং অনুন্নয়নের শিকার হচ্ছে, তা নিয়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেননি। এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে চুরি করা গয়না এবং প্রত্নবস্তু বাকিংহাম প্রাসাদ এবং ব্রিটিশ মিউজিয়ামের দেয়ালে এখনো শোভা পায়; সে জন্যও তিনি কোনো দিন লজ্জাবোধ করেননি।

আমি জানি, সরকারের কাজের জন্য রানিকে দায়ী করায় রাজতন্ত্রের পক্ষে সাফাই দেওয়া লোকেরা আমাকে ‘ঐতিহাসিকভাবে অজ্ঞ’ বলে আখ্যায়িত করছেন। কিন্তু ইতিহাস বলছে, রানি এলিজাবেথ জানতেন, তিনিই এসবের জন্য চূড়ান্তভাবে দায়ী।

পূর্বসূরি রানি ভিক্টোরিয়ার আমলে নৃশংসতা চালানো এবং ভূমি চুরির জন্য ১৯৯৫ সালে নিউজিল্যান্ডের মাউরি সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চাওয়া চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিলেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। যখন রানি ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা চেয়েছিলেন, তখন নিউজিল্যান্ডের বিচারমন্ত্রী বলেছিলেন, রানি তাঁর সরকারের ইচ্ছায় কাজ করেন এবং ব্যক্তিগতভাবে কিছু করেন না।

আসলেই রানি সব সময় তাঁর সরকারের মাধ্যমে কাজ করেছিলেন। এখন প্রশ্ন হলো, তিনি পূর্বসূরির অধীন সেনাদের অপরাধের জন্য মাউরিদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনাপত্রে স্বাক্ষর করতে পেরেছিলেন। একইভাবে তিনি কেনিয়া, নাইজেরিয়া এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডে তার শাসনামলে সংঘটিত নৃশংসতার জন্য একই কাজ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি।

এখানেই আসল ঘটনা। যদিও রানি এলিজাবেথ তাঁর রাজকীয় আলখাল্লার আড়ালে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি ঢাকতে পেরেছেন, কিন্তু তাঁর উত্তরসূরিরা তা পারবেন না। কারণ, আমরা একটি ভিন্ন সময়ে বাস করছি এবং ব্রিটিশ জনগণ এমন অধিকার অর্জন করেছে যা একটি রাজতন্ত্রের অস্তিত্বের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ।

প্রকৃতপক্ষে, সমীক্ষাগুলো স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে, তরুণ ব্রিটিশরা রাজতন্ত্র আর জিইয়ে রাখতে চায় না। একটি নিপীড়নমূলক প্রতিষ্ঠান কখনোই টেকসই হতে পারে না।

সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ জীবনযাত্রার সংকটে পড়েছে মানুষ। খোদ ব্রিটেনে হাজারো মানুষ গৃহহীন। হাজার হাজার মানুষ ফুড ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। লাখ লাখ মানুষ বাড়তি জ্বালানি মূল্য পরিশোধ করছে।

আর এর মধ্যেও আমরা যারা ব্রিটিশ জনগণ, তাদের উপার্জনের একটি ক্ষুদ্র অংশ রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার খরচ বাবদ দিতে হচ্ছে।

ভেবে দেখুন, রানির ব্যক্তিগত সম্পদের মূল্য ৫০ কোটি ডলারের বেশি এবং রাজপরিবারের সম্পদের পরিমাণ ২ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। যেখানে আমরা আমাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ব্যয়ভার বহন করি, সেখানে রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ব্যয় কেন তাঁর সম্পত্তি থেকে পরিশোধ করতে পারে না?

প্রয়াত রানিকে দেখার জন্য মানুষের দীর্ঘ সারি এটিই দেখাতে চায়, ব্রিটেনের মানুষের মধ্যে এখনো রাজভক্তি ও রাজতন্ত্রের প্রতি আনুগত্য আছে। তবে একটি নতুন প্রজন্ম যারা রাজপরিবারের প্রতি তুলনামূলকভাবে উদাসীন হয়ে বেড়ে উঠেছে, তারা এখন জেগে উঠেছে। তারা এই রাজতন্ত্রের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে এবং রাজতন্ত্রের প্রতীকী ব্যবস্থাগত বৈষম্যের পরিবর্তনের দাবি করছে।

***** আল–জাজিরা থেকে নেওয়া, অনুবাদ: সারফুদ্দিন আহমেদ
শোলা মোস-শোগবামিমু ব্রিটিশ রাজনৈতিক ও নারী অধিকারকর্মী, আইনজীবী এবং দিস ইজ হোয়াই আই রেইসিস্ট–এর লেখক।

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ:সেপ্টম্বর ১৯, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ