ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে আজ মঙ্গলবার পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র গোষ্ঠী হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ২০ নিহতের শঙ্কার কথা বলেছে। আর বিবিসি বলেছে, হামলায় ২০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন বলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষগুলো তাদের জানিয়েছে।
ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরেও অন্তত ২০ জন নিহত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। হামলায় আরও অন্তত আটজন আহত হয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
পহেলগামের বৈসারন উপত্যকায় তিনজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা চালায়। তবে ভারত সরকার হামলাকারীদের সন্দেহভাজন জঙ্গি বলেছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক খবরে বলা হয়, এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘কাশ্মীর রেসিস্ট্যান্স’ নামের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গোষ্ঠীটি এই ঘোষণা দেয়। তবে বিষয়টি বার্তা সংস্থার পক্ষ থেকে স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।
সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার খবর পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তড়িঘড়ি শ্রীনগর রওনা হয়েছেন। এর আগে তিনি টেলিফোনে কথা বলেন সৌদি সফররত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। গোটা এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে ব্যবহার করা হচ্ছে হেলিকপ্টার।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, রিসোর্টটিতে পৌঁছাতে গেলে হয় হেঁটে যেতে হয়, নয়তো ঘোড়ায়। নিরিবিলি পরিবেশ হওয়ায় ওই রিসোর্ট পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।
জম্মু–কাশ্মীরে বেশ কয়েক বছর ধরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রধান লক্ষ্য ছিল নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী। বহুদিন ধরে সশস্ত্র গোষ্ঠী পর্যটকদের আক্রমণ করেনি। নিরাপত্তা বাহিনী ছাড়াও সশস্ত্র গোষ্ঠীদের আক্রমণে পরিযায়ী শ্রমিকদের কেউ কেউ নিহত হয়েছিলেন। তবে স্থানীয় মানুষজনের অর্থনীতির স্বার্থে পর্যটকদের ওপর কোনো হামলা হয়নি। ফলে এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল।
গত বছরের মে মাসে অবশ্য এই পহেলগামেই সশস্ত্র গোষ্ঠীর আক্রমণে আহত হয়েছিলেন দুজন পর্যটক। কিন্তু সরকার এই ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন মনে করেছিল। আজ মঙ্গলবারের ঘটনার পর মনে করা হচ্ছে, সশস্ত্র গোষ্ঠী সম্ভবত তাদের কৌশল বদল করেছে। এ ঘটনার পর জম্মু–কাশ্মীরে পর্যটন ব্যবসা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জম্মু–কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচনের পর এত দিন পরিস্থিতি শান্তই ছিল। কেন্দ্রীয় সরকারও তাদের সাফল্যের কাহিনি প্রচার করেছে। কিন্তু মঙ্গলবারের ঘটনা বুঝিয়ে দিল, উপদ্রুত উপত্যকায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর তৎপরতা শেষ হয়ে যায়নি।
ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গোয়েন্দা প্রধান তপন ডেকা, স্বরাষ্ট্রসচিব গোবিন্দ মোহন বৈঠকে বসেন। এতে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন সিআরপিএফ প্রধান জ্ঞানেন্দ্র প্রতাপ সিং, জম্মু–কাশ্মীর পুলিশের মহাপরিচালক নলিন প্রভাত এবং সেনাকর্তারা। অমিত শাহ বৈঠক থেকেই কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ ও উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহার সঙ্গে।
সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: এপ্রিল ২২, ২০২৫
রেটিং করুনঃ ,