Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

আফগানিস্তানকে বুঝতে পশ্চিমারা ফের ভুল করছে (২০২১)

Share on Facebook

লেখক: আহমেদ এম সিদ্দিকী।

আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার বিশৃঙ্খল প্রত্যাহারের ফলে সৃষ্ট ধোঁয়াশা থিতু হয়ে এসেছে। আফগান সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে ভুল অনুমান থেকেই এর সূত্রপাত হয়েছিল। গত এপ্রিল মাসে ধারণা দেওয়া হয়েছিল গনি সরকার তাদের উপদেষ্টাদের ছত্রচ্ছায়ায় আরও ১৮ মাস টিকে থাকবে। কিন্তু এর পরিসমাপ্তি হলো ড্রোন হামলার মধ্য দিয়ে। এতে বেশ কয়েকজন আফগান নিহত হয়। যাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি শিশু রয়েছে।

আমেরিকা ও ন্যাটো যুদ্ধের একজন পর্যবেক্ষক হিসেবে বিষয়গুলো আমার কাছে মোটেই বিস্ময়ের নয়। আফগানিস্তান নিয়ে রাশি রাশি তথ্যভান্ডার আছে। সমর বিশ্লেষক, ঠিকাদার কিংবা হরেক রকম বিশেষজ্ঞের লাভজনক পদ সেখানে সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু সব প্রচেষ্টা নিষ্ফল হয়েছে। চীনা সমরবিদ সান ঝুর ব্যাখ্যা থেকে বলা যায়, তারা তাদের শত্রু চিনতে ভুল করেছিল।

‘আল-কায়েদা ফিরে আসছে’

কাবুল পতনের দুই দিন আগে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেন্স ঘোষণা দেন, আফগানিস্তান একটা গৃহযুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে। আফগানিস্তানের ইতিহাস এবং ‘দল-উপদল’-এ বিভক্ত তালেবান আন্দোলনের ওপর ভিত্তি করে তিনি বলেন, সম্ভবত আল-কায়েদা আবার ফিরে আসছে। এ ধরনের ধারণা আফগানিস্তান এবং মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে পুরোনো বোঝাপড়ার ফল। ২০০১ সালের পর আল-কায়েদার বিচরণভূমি ছিল আফগানিস্তানের বাইরে। ইরাক, ইয়েমেন, লিবিয়ার মতো যেসব দেশে সরকারব্যবস্থা ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল এবং আমেরিকার বোমা হামলার ফলে জনমনে ব্যাপক অসন্তোষ ছিল, সেসব জায়গাতেই আল-কায়েদার উদ্ভব হয়েছিল। আমেরিকার সহিংসতা তাদের সংগঠিত হতে সহযোগিতা করেছিল। আইএসের মতো আরও উগ্রপন্থী সংগঠনের জন্ম হয়েছিল। গুরুত্ব ও সামর্থ্যের দিক থেকে আল-কায়েদা থেকে যারা ছিল অনেক বেশি শক্তিশালী। মার্কিন ভূমিতে হামলা চালাতে তারা উৎসাহী ছিল।

এর বিপরীতে তালেবান আফগানিস্তানের বাইরে হামলা চালায়নি। ক্ষমতায় আসার পর তাদের পদক্ষেপগুলোতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার আগ্রহ দেখা গেছে।

অনেকে আফগানিস্তানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ কিংবা সেখানে আবার সেনা অভিযানের পরামর্শ দিচ্ছেন। তাঁরা কি বলতে পারবেন এতে আফগান জনগণের কোন উপকারটা হবে? প্রকৃতপক্ষে তাঁরা নিজের মতো করে নিজেদের আহত অহংকার তৃপ্ত করার জন্য এগুলো বলছেন। গত ৪০ বছরে আফগানিস্তানে বিদেশি আগ্রাসনের বিয়োগান্ত ঘটনাবলি সেটাই স্পষ্ট করছে। আফগানিস্তানকে বুঝতে পশ্চিমারা আবার ভুল করছে।

‘তালেবান দল-উপদলে বিভক্ত’

তালেবান দল-উপদলে বিভক্ত—এ রকম দাবিও একটা অতি সাধারণ ভুল ধারণা। ১৯৮০-এর দশকে বহুধাবিভক্ত মুজাহিদিন বিদ্রোহীদের সঙ্গে মিলিয়ে বছরের পর বছর ধরে এই ভুল ধারণাটা প্রচলিত আছে। প্রেসিডেন্ট ওবামার আমলে তালেবানের সঙ্গে আলোচনা এড়াতে লক্ষণীয়ভাবে ভুল এই বিবৃতিটা দেওয়া হতো।

বাস্তবে বহু বছর ধরে তালেবান একটি সংযোগশীল আন্দোলন পরিচালনা করে আসছে। তাদের অনেকগুলো কেন্দ্র রয়েছে। তাদের নেতারা মূলত উপদেষ্টার ভূমিকা পালন করেন। এসব কেন্দ্রের মধ্যে অনেক সময় উত্তেজনা, এমনকি সংঘাতও হয়েছে। কিন্তু এসব উত্তেজনা ও সংঘাত তালেবান মীমাংসা করতে পেরেছে। তাদের আন্দোলন শেষ পর্যন্ত অটুট ছিল।

গত বছর আমেরিকার সঙ্গে শান্তিচুক্তির সময়ে তালেবান স্পষ্টত তাদের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলার নজির দেখায়। জনগণের প্রতি তাদের অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে আফগান সরকারের সঙ্গে তারা শান্তি আলোচনা করে। শান্তিচুক্তির পর একবারও তারা সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা করেনি।
‘আমেরিকার প্রত্যাহার অনেক আগেই হয়েছে’

কাবুলের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে আসার সঙ্গে সঙ্গে রিপাবলিকান নেতা, যুদ্ধ সমর্থক সংবাদমাধ্যম ও যুক্তরাজ্যের মতো মিত্ররা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কঠোর সমালোচনা শুরু করে। আমেরিকান সেনা ও মিত্রদের আত্মত্যাগের সঙ্গে বেইমানি করে বাইডেন প্রশাসন সৈন্য প্রত্যাহার করে নিয়েছে, এমন অভিযোগ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, সৈন্য প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে কোনো শর্ত দিতে পারেননি বাইডেন।

এসব সমালোচনা থেকে, সৈন্য প্রত্যাহারের উপযুক্ত সময় কখন কিংবা কোন কোন শর্তে সৈন্য প্রত্যাহার হতে পারত, তা নিয়ে কোনো সন্তোষজনক উত্তর নেই। প্রকৃতপক্ষে আফগানিস্তান থেকে ‘তড়িঘড়ি’ করে সেনা প্রত্যাহারের বাস্তবতা শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর বড় অংশটিকেই সে সময় আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

১০-১৫ হাজার সেনা দিয়ে কখনোই তালেবানের হাত থেকে আফগানিস্তানকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়। ২০১৪ সাল থেকে ন্যাটো সেনাদের একমাত্র কাজ দাঁড়ায় আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনীকে সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া। তাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে সহযোগিতা করা। গত সাত বছরে সে প্রচেষ্টা সফল হয়নি। সৈন্য প্রত্যাহারে বাইডেনের সিদ্ধান্ত সঠিক। কেননা, সৈন্য প্রত্যাহার বিলম্ব হলেও কিছুই অর্জন করা সম্ভব হতো না।
আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ এখন কী

আফগানিস্তানে ন্যাটো জোটের যুদ্ধে ২ লাখ ৪৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। তাদের বেশির ভাগই আফগান। সেই যুদ্ধ অবশেষে শেষ হলো। এখন অনেকে আফগানিস্তানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ কিংবা সেখানে আবার সেনা অভিযানের পরামর্শ দিচ্ছেন। তাঁরা কি বলতে পারবেন এতে আফগান জনগণের কোন উপকারটা হবে? প্রকৃতপক্ষে তাঁরা নিজের মতো করে নিজেদের আহত অহংকার তৃপ্ত করার জন্য এগুলো বলছেন। গত ৪০ বছরে আফগানিস্তানে বিদেশি আগ্রাসনের বিয়োগান্ত ঘটনাবলি সেটাই স্পষ্ট করছে। আফগানিস্তানকে বুঝতে পশ্চিমারা আবার ভুল করছে।

আল-জাজিরা থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিত

আহমেদ এম সিদ্দিকী ঔপন্যাসিক ও গবেষক

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ১৩, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ