Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ইউক্রেন যুদ্ধ: রাশিয়াকে যেভাবে ঋণী করছে ইরান (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:অ্যারন পিলকিংটন।

ইউক্রেন যুদ্ধ একটি দেশের পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করছে। কিন্তু সেই দেশ রাশিয়া কিংবা ইউক্রেন নয়, দেশটি হলো ইরান। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে সবচেয়ে সোচ্চার কণ্ঠ ইরান। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্য কোনো দেশ এই যুদ্ধ থেকে কী অর্জন করতে পারছে, সেটা বিবেচনায় নিলে দেখা যাবে যে ইউক্রেনের অর্জন খুব সামান্য, কিন্তু ইরান দীর্ঘমেয়াদি সব অর্জনই করতে পারছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ ছয় মাস পেরিয়েছে। এ যুদ্ধে রাশিয়ার সেনাদের প্রাণ ও সামরিক শক্তিক্ষয় অব্যাহত আছে। অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সংযোগ ও সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে জয়ের জন্য অনিচ্ছা সত্ত্বেও ইরানের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষার দাওয়াই নিচ্ছেন। সিরিয়ার জন্যও ইরানের সহযোগিতা নিতে হচ্ছে পুতিনকে। ২০১৫ সাল থেকে রাশিয়ার সেনারা বাশার আল আসাদের সরকারকে ক্ষমতায় রাখার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন।
পুতিনের এই পদক্ষেপ ইরানকে জাতীয় স্বার্থসিদ্ধিতে সহযোগিতা করছে।

সব ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা

১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই ইরানের নেতারা মনে করে আসছেন, সরকারকে উৎখাত করার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের নেতারা তাঁদের জাতীয় স্বার্থ, যেমন অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা, আন্তর্জাতিক বৈধতা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, প্রতিপত্তি ও প্রভাব অর্জনের পথে ওয়াশিংটনের নেতাদের সবচেয়ে বড় হুমকি ও বাধা বলে মনে করেন।

ইরানের নেতাদের এই ভয় অমূলক নয়। ইরান বিষয়ে নাকগলানোর দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। দুই দেশের মধ্যে প্রকাশ্য বৈরিতা অব্যাহত রয়েছে। দশকের পর দশক ধরে ঘরের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি ইরানের নেতাদের মধ্যে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে সেনা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। জাতীয় স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে ইরান ওই অঞ্চল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের হটানো ও সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রভাব কমাতে চেষ্টা করে আসছে। যদিও ইরানের আরও বড় উদ্দেশ্য রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যে পরিচালিত বৈশ্বিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা যাতে ধসে পড়ে, সেটা মনেপ্রাণে চান ইরানের নেতারা।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক প্রভাব কমাতে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈরিতা আছে, এমন রাষ্ট্র কিংবা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলে। অস্ত্র, প্রশিক্ষণ, অর্থ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্দেশনা দিয়ে এসব গোষ্ঠীকে পৃষ্ঠপোষকতা করে তেহরান।
ইরানের পৃষ্ঠপোষকতা পায়, এ ধরনের সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে আছে হিজবুল্লাহ, হামাস ও ফিলিস্তিনি ইসলামি জিহাদ, ইরাকের সশস্ত্র যোদ্ধা ও হুতি বিদ্রোহী হিসেবে পরিচিত ইয়েমেনের আনসার আল্লাহ। এসব সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং তাদের রাজনৈতিক শক্তিকে নিজস্ব প্রভাব বিস্তারে ব্যবহার করে ইরান। একই সঙ্গে লেবানন, সিরিয়া, ইরাক কিংবা ইয়েমেনে ইরানের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন সরকার গঠনে কাজ করে। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ও পশ্চিমাপন্থী দেশ, যেমন ইসরায়েল, জর্ডান, সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে এটি ব্যবহার করে ইরান।

জাতীয় স্তরে ইরান কোনো দেশের সঙ্গেই স্থায়ী যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি করে না। ইরানের ঘনিষ্ঠ কৌশলগত মিত্র হলো সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা, উত্তর কোরিয়া, চীন ও রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যবস্থার বিপরীত বিকল্প রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এ দেশগুলো একে অন্যকে সহযোগিতা করে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থকে খর্ব করতে এবং পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার চাপ থেকে বের হয়ে আসতে এই সহযোগিতা কাজে লাগানো হয়।
মস্কোকে যেভাবে উদ্ধার করছে তেহরান

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়া বিশ্বে হাতে গোনা কয়েকটি দেশের সমর্থন পেয়েছে। রাজনৈতিকভাবে পুতিনের একঘরে অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যে কাজে লাগানো সম্ভব, এমন উপলব্ধি গুটিকয় নেতার মধ্যে হয়েছে। এর মধ্যে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি অন্যতম। যদিও রাশিয়ার সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক সব সময়ই জটিল। সিরিয়ার দৃষ্টান্ত দেখা যাক। ইরান ও রাশিয়া দুই দেশই সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে সহায়তা করছে, যাতে তিনি বিরোধীদের পরাস্ত করতে পারেন। যদিও সিরিয়ার ক্ষেত্রে মস্কো ও তেহরানের উদ্দেশ্য ভিন্ন।

রাশিয়া মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের প্রধান শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য আসাদ সরকারকে সহায়তা করছে। আর ইরানের ক্ষেত্রে সিরিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব মানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলবিরোধী জোটকে শক্তিশালী করা। এ ছাড়া যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া পুনর্গঠন ও অবকাঠামো উন্নয়নের লাভজনক কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে প্রতিযোগিতাও রয়েছে। দুই দেশই তাদের পক্ষে যায়, এমন একটা পরিবেশ তৈরির প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউই সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রণের মতো প্রভাব তৈরি করতে পারেনি। ঘটনাদৃষ্টে মনে হয়, কখনো রাশিয়া আবার কখনো ইরান-সমর্থিতরা জয়ী হয়। আবার দুই পক্ষের মধ্যে প্রায়ই বিবাদ হয়।

ইউক্রেন যুদ্ধে ইরান দুইভাবে লাভবান হচ্ছে। প্রথমত, যুদ্ধের জন্য সিরিয়া থেকে সেনাদের সরিয়ে ইউক্রেন নিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের সেনারা সেই শূন্যস্থান পূরণ করে রাশিয়াকে সহযোগিতা করছে। দ্বিতীয়ত, ইরান থেকে রাশিয়া সস্তায় ও যুদ্ধে কার্যকর ড্রোন নিতে চায়। ইউক্রেনকে পশ্চিমারা অগ্রসর প্রযুক্তির ড্রোন দিচ্ছে। ইরানের ড্রোন পেলে নিজেদের যুদ্ধসামর্থ্য বাড়াতে পারবে রাশিয়া।

জুলাই মাসে ইরানে রাশিয়ার সেনা কর্মকর্তাদের শহীদ-১২৯ ও শহীদ-১৯১ ড্রোন পরিচালনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোয়েন্দা সূত্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়া এরই মধ্যে ইরানের ড্রোন ব্যবহার করতে শুরু করেছে।

ইরান-রাশিয়ার এই উষ্ণ সম্পর্ক ইউক্রেনকে পরাজিত করতে মস্কোকে খুব বেশি সহযোগিতা করবে না। কিন্তু ইরানের জাতীয় স্বার্থসিদ্ধিতে অনেকটাই সহায়তা করবে। প্রথমত, সিরিয়া থেকে রাশিয়া সেনা সরিয়ে নেওয়ায় দেশটিতে এখন ইরানের প্রভাব অনেক বাড়বে। আসাদবিরোধী বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ইরানি বাহিনী সিরিয়ার বড় একটা অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে। সে ক্ষেত্রে ইরান এমন একটা মুক্ত করিডর তৈরি করতে সক্ষম হবে, যেটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীর অভয়ারণ্য হতে পারে।

দ্বিতীয়ত, রাশিয়ার অস্ত্রের চাহিদা ইরানের অস্ত্রশিল্পের বড় ধরনের বিকাশ হবে। এখন পর্যন্ত বড় কোনো দেশে ইরান অস্ত্র বিক্রি করতে পারেনি। রাশিয়া তাদের জন্য অনেক বড় সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

রাশিয়া বিশ্বের দ্বিতীয় বড় অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশ। এখন ইরানের কাছ থেকে মস্কো অস্ত্র আমদানি করছে। এ ঘটনা অবশ্যই মস্কো যে গুরুতর সমস্যায় পড়েছে, সেটার চিহ্ন। তেহরান নিজেরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য অস্ত্র উৎপাদন করে আসছিল। মস্কো অস্ত্রে নেওয়ায় তেহরানের অস্ত্রশিল্প বৈশ্বিক বৈধতা পেল।

পরিশেষে, ইউক্রেন যুদ্ধ ইউরেশিয়া অঞ্চলে ইরানকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর অস্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করার একটা সরাসরি পথ খুলে দিল। ইরানের রকেটব্যবস্থা, ট্যাংকবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র কিংবা আত্মঘাতী ড্রোনের মতো অত্যাধুনিক অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেবে।

*****এশিয়া টাইমস থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনুবাদ মনোজ দে
অ্যারন পিলকিংটন মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী বিষয়ে বিশ্লেষক।

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: সেপ্টম্বর ০২, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ