Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ঋণপত্র খুলছে না ব্যাংক-ব্যাংকে ডলার–সংকট, বিপাকে ব্যবসায়ীরা (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:সানাউল্লাহ সাকিব।

ডলারের উচ্চ দাম ও সংকট চাপে ফেলেছে মাঝারি ও ছোট ব্যবসায়ীদের। এতে খরচ বাড়ায় অনেক ব্যবসায়ী তাঁদের ব্যবসা সংকুচিত করে ফেলছেন। আবার চাহিদামতো আমদানি ঋণপত্রও খুলতে পারছেন না। ডলার নেই বলে অপারগতার কথা জানিয়ে দিচ্ছে ব্যাংক। ঋণপত্র খুলতে না পেরে সংকটে পড়েছেন তাঁরা। আবার এই সংকটে তাঁদের দেখারও কেউ নেই, তাঁদের পক্ষে সক্রিয় নেই কোনো ব্যবসায়ী সংগঠন।

ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে কোনো অগ্রাধিকার তালিকা নেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের। ফলে শিল্পের মূলধনি যন্ত্র, কাঁচামাল, খাদ্যসহ অতিগুরুত্বপূর্ণ অনেক আমদানি কমে গেছে। শিল্পের মূলধনি যন্ত্র ও কাঁচামাল আমদানি কমে গেলে অর্থনীতির গতি কমে আসে। প্রভাব পড়ে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও রাজস্ব আদায়ে। খাদ্য আমদানি কমে গেলে দাম বেড়ে যায়। সবকিছুই এখন ঘটছে অর্থনীতিতে। গত জুলাই-অক্টোবর সময়েই গম, চাল ও ডাল আমদানি কমেছে ৯ লাখ টন।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত জুলাইয়ে কয়েকটি পণ্য আমদানিতে শতভাগ মার্জিন আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরও ব্যাংক ঋণপত্র খুলছিল। তবে অক্টোবরে এসে ঋণপত্র খোলা একেবারেই কমিয়ে দিয়েছে। শুধু যাঁদের রপ্তানি আয় আছে ও বড় ব্যবসায়ী, ব্যাংক শুধু তাঁদের ঋণপত্রই খুলছে।

গত বছরের নভেম্বরে দেশে ডলারের দাম ছিল ৮৫ টাকা ৭০ পয়সা। এখন আমদানিতে দাম বেড়ে হয়েছে গড়ে ১০৫ টাকা। এক বছরে প্রতি ডলারের দাম বেড়েছে প্রায় ২০ টাকা। এর ফলে সব ধরনের আমদানি পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। মানুষকে আগের চেয়ে অনেক বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে।

আমদানি দায় মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিত বৈদেশিক মুদ্রার মজুত থেকে ডলার বিক্রি করছে। তাতে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমে হয়েছে ৩ হাজার ৫৭৩ কোটি ডলার। গত বছরের আগস্টেও যা ৪ হাজার ৮০০ কোটি ছাড়িয়েছিল।

বেসরকারি খাতের মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশে অর্থনৈতিক সংকটের সময় কেউ না কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আমাদের এখানেও তাই হয়েছে। এখন ব্যাংকগুলো ছোট আমদানিকারকদের সহজে ঋণপত্র খুলতে দিতে চাইছে না। ডলারের আয় বুঝে ব্যাংক ঋণপত্র খুলছে, সে ক্ষেত্রে বড়রা বেশি সুবিধা পাচ্ছে।’

ঋণপত্র খুলতে পারছে না, এমন প্রতিষ্ঠানের একটি রেমেক্স করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটি মূলত পোশাক, ওষুধ, চামড়া, প্লাস্টিক খাতের রাসায়নিক ও খাদ্যের উপাদান আমদানি করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত আছেন প্রায় ২০ জন কর্মী। চাহিদামতো ঋণপত্র খুলতে পারছে না বলে তাঁদের ব্যবসা সংকুচিত হয়ে এসেছে।

রাজধানীর মহাখালীর কার্যালয়ে গেলে রেমেক্স করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার তাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি রাসায়নিক সরবরাহের আদেশ পেয়েছি। কিন্তু আমদানি করতে পারছি না। আগামী জানুয়ারির আগে ব্যাংক ঋণপত্র খুলবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। ফলে ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের এটিআর ট্রেডিং গতকাল বৃহস্পতিবার ১ লাখ ৫ হাজার ডলারের শর্ষের বীজ আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলতে চেয়েও পারেনি। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান নুরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যাংক আমাকে ডলারের ব্যবস্থা করতে বলছে, এরপর ঋণপত্র খুলবে। আগে চাল আমদানির চেষ্টা করেও ঋণপত্র খুলতে পারিনি। ফলে ব্যবসা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।’

১৯৯৩ সালে দেশে কৃষির যান্ত্রিকীকরণ শুরু হয়েছিল মেটাল গ্রুপের ট্যাফে ট্রাক্টরের মাধ্যমে। এখন জমি চাষ, ধান কাটা ও মাড়াইয়ে কম্বাইন হারভেস্টার বেশ জনপ্রিয়। ডলার–সংকটের কারণে এখন ট্রাক্টর ও কম্বাইন হারভেস্টার আনতে পারছে না গ্রুপটি। এমন সময়ে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যখন আমন ধান কাটার সময় আসছে।

মেটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিদ জামিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেটাল ট্রাক্টর ও ধান কাটার যন্ত্র আনতে প্রতি মাসে ছয়-সাত লাখ ডলারের ঋণপত্র খুলে থাকে। ডলার–সংকটের কারণে গত এক মাসে এক লাখ ডলারের বেশি ঋণপত্র খুলতে পারেনি। কোনো ব্যাংক জানুয়ারির আগে ঋণপত্র খুলতে রাজি হচ্ছে না। ফলে আমন ধানের মৌসুমে আমরা ধান কাটার যন্ত্র আনতে পারছি না। অথচ কৃষি অতিগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় এসব যন্ত্র আনতে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা।’

ভাই ভাই ফ্রুট এজেন্সি অন্যতম ফল আমদানিকারক। গাজর আমদানিতে শীর্ষে কোম্পানিটি। ফল আমদানিতে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা এই প্রতিষ্ঠান গত আগস্ট পর্যন্ত আমদানি করে কোনোমতে ব্যবসা চালু রাখলেও এরপর আর ঋণপত্র খুলতে পারেনি। এর কর্ণধার সৈয়দ জাফর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঋণপত্র খুলতে না পেরে আর ব্যবসা ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানের কর্মী কমিয়ে এনেছি। শিগগির বন্ধ করে দেব। এ ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।’

এদিকে ডলার–সংকটের কারণে অপরিশোধিত চিনি আমদানি কমে গেছে। ফলে চিনি পরিশোধন কারখানাগুলো অলস সময় কাটাচ্ছে। সংকটের কারণেই চিনির দাম তিন মাসে বেড়ে ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা হয়েছে।
সমাধান কিসে

বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংকে ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের পরে ডলারের সবচেয়ে বড় মজুত। এখন ব্যাংকটির কোনো শাখায় বড় অঙ্কের ঋণপত্র খুলতে এমডির অনুমোদন লাগছে। ব্যাংকটির অনেক গ্রাহক ঋণপত্র না খুলতে পারার কথা জানিয়েছেন।

কেন ইসলামী ব্যাংক এ সংকটে পড়ল, জানতে চাইলে ব্যাংকটির এমডি মোহাম্মদ মনিরুল মওলা প্রথম আলাকে বলেন, ‘করোনার পরে আমরা সরকারি সার ও জ্বালানি আমদানি শুরু করি। আর এখন রপ্তানিকারকদের আয়ও সময়মতো আসছে না। প্রবাসী আয়ও কমে গেছে। ফলে ডলারের আয় ও খরচের মধ্যে অসামঞ্জস্য দেখা দিয়েছে। তবে কাঁচামাল ও অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।’

ইসলামী ব্যাংকের মতো অন্য ব্যাংকগুলোও এখন ডলার–সংকটে ভুগছে। ডলার-সংকটের কারণে অনেক ব্যাংক আমদানি দায় পরিশোধ পিছিয়ে দিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে ব্যাংকগুলোই এখন ডলারের দাম নির্ধারণ করছে।

ডলারের দাম নির্ধারণের সঙ্গে যুক্ত একটি ব্যাংকের এমডি জানান, ডলারের দাম ধরে রাখা ঠিক হচ্ছে না। এতে প্রবাসী আয় সব হুন্ডিতে চলে যাচ্ছে। সামনে আরও খারাপ সময় আসছে। এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এগিয়ে আসতে হবে।

ডলার-সংকটের মধ্যে গত অক্টোবরে আরও কমেছে প্রবাসী আয়। অক্টোবরে প্রবাসীরা ১৫২ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন। এ আয় গত আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পণ্য আমদানি করতে না পারলে অর্থনীতিতে নতুন সমস্যা দেখা দেবে। অর্থনীতির গতি কমে আসবে। কর্মসংস্থান ও প্রবৃদ্ধি কমে যাবে।

এ জন্য ডলারের চার-পাঁচ ধরনের দাম না রেখে বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। এতে ডলারের সংকট কেটে যেতে পারে। তবে এতে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতি হতে পারে। এ জন্য শুল্ক সমন্বয়সহ অন্য ব্যবস্থার মাধ্যমে জনগণকে স্বস্তি দিতে হবে। বিষয়গুলোকে সামগ্রিকভাবে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:নভেম্বর ০৪, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ