Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্যিই কি কাজ করছে (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:খ্রিস্টোফার মাইকেলসেন।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও অন্যান্য দেশ বড় পরিসরে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ইউরোপীয় কাউন্সিল থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়া হয় এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে ভেটো প্রদানের ক্ষমতা তুলে নেওয়া হয়। কয়েকটি পশ্চিমা দেশ তাদের দেশ থেকে রাশিয়ার কূটনীতিকদের বহিষ্কারও করে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে রাশিয়ার কোনো রাজনীতিক ও অলিগার্ক যাতে প্রবেশ করতে না পারেন বা ট্রানজিটের জন্য অবস্থান করতে না পারেন, সে জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে বিভিন্ন দেশে রাশিয়ার সম্পদ বাজেয়াপ্তের পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনব্যবস্থা সুইফট থেকে রাশিয়ার ব্যাংকগুলোকে বাদ দেওয়া হয়। পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার বিদেশে মজুত সম্পদের অর্ধেকের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেয়। এর পরিমাণ কমবেশি ৩১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ ছাড়া রপ্তানির ক্ষেত্রেও কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হয়। দৃষ্টান্ত হিসেবে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলো রাশিয়ার কাছে ডুয়েল ইউজ ও অ্যাডভান্সড প্রযুক্তি রপ্তানির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ ছাড়া শিল্প খাতে ব্যবহৃত নানা পণ্য রপ্তানির ওপরও বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কাঠ, লোহা, ইস্পাত ও অন্যান্য ধাতব পণ্য এবং কাচ ও কাঠের তৈরি শিল্প ও বিদ্যুতের সরঞ্জাম রয়েছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর ছয় মাস পর এখনো পুরোদমে যুদ্ধ চলছে। যদিও ইউক্রেন দেশটির পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার দখল করা কিছু এলাকা পুনরুদ্ধার করেছে, কিন্তু এ যুদ্ধ খুব শিগগির শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। সুতরাং, এর মানে কি রাশিয়ার ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা ব্যর্থ হয়েছে? এ মাসের প্রথম দিকে ভ্লাদিভস্তকে একটি অর্থনৈতিক ফোরামে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেছেন, তাঁর দেশ পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক ‘আগ্রাসন’ খুব ভালোভাবেই মোকাবিলা করছে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, পশ্চিমাদের বাসনা ফলপ্রসূ হওয়ার পরিবর্তে, এই নিষেধাজ্ঞা বরং ইউরোপীয়দের জীবনযাপনের মান কমিয়ে দিয়েছে। গরিব দেশগুলো খাবারপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

ইইউর দৃষ্টিভঙ্গি অবশ্য ভিন্ন। ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন বলেছেন, রাশিয়ার ওপর ‘এমন কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, বিশ্ব যা আগে দেখেনি’। স্ট্রাসবুর্গে গত সপ্তাহে কমিশনের এক বৈঠকে তিনি দাবি করেন, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে এবং রাশিয়ার আর্থিক খাত লাইফ সাপোর্টে চলে গেছে।

দুই পক্ষের বক্তব্যেই কিছু সত্য আছে। বর্তমান পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা নিয়ে সঠিক কোনো ধারণা করা দুটি কারণে কঠিন। প্রথমত, সময়ের পরিসর; দ্বিতীয়ত, নির্ভরযোগ্য তথ্যের ঘাটতি। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফলাফল কী হচ্ছে, তা নির্ধারণের জন্য ছয় মাস মোটেই পর্যাপ্ত সময় নয়। অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, ২০২২ সাল শেষ হওয়ার আগে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রভাব বোঝা সম্ভব নয়। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জটি হচ্ছে, তথ্য বাছাই ও নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়ার নিশ্চয়তা।

একটি দেশে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব যাচাইয়ের উপায় হলো, জিডিপি বা মোট দেশজ উৎপাদন বিবেচনা করা। গত এপ্রিল মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পূর্বাভাস দিয়েছিল, এ বছর রাশিয়ার জিডিপি ৮ দশমিক ৫ শতাংশ কম হবে। আইএমএফ এখন তাদের সেই পূর্বাভাস বদল করে বলছে, রাশিয়ার জিডিপি কমবে ৬ শতাংশ।

মূল্যস্ফীতির হার কত, সেটাও নিষেধাজ্ঞার প্রভাব বোঝার আরেকটি উপায়। কিন্তু জিডিপির মতো মূল্যস্ফীতির প্রকৃত চিত্র পাওয়া কঠিন। রাশিয়ার প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী আন্দ্রে বেলুউসভের মতে, এ বছর রাশিয়ায় মূল্যস্ফীতি ১২-১৩ শতাংশে পৌঁছতে পারে। তবে প্রকৃত মূল্যস্ফীতি আরও বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক।

গাড়ি বিক্রি থেকেও নিষেধাজ্ঞার প্রভাব বোঝা যায়। উচ্চ মূল্যস্ফীতিকালে মানুষ সাধারণত প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য কেনার দিকেই মনোযোগী থাকে। রাশিয়াতে ২০২১ সালের মার্চ মাসের তুলনায় ২০২২ সালের মার্চ মাসে গাড়ি বিক্রি তিন গুণ কমেছে। এ বছরের সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়ায় গাড়ির উৎপাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় তিন গুণ কমে যাবে। রাশিয়ার বিমানশিল্পেও বড় প্রভাব পড়েছে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের অভাবে দেশটির বেশির ভাগ বিমান ফেলে রাখা হয়েছে। সেমিকন্ডাক্টর চিপস ফুরিয়ে যাওয়ায় রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে রেফ্রিজারেটর ও ডিশওয়াশার থেকে যন্ত্রাংশ নিতে হচ্ছে।

এসব তথ্য থেকে বোঝা যাচ্ছে যে রপ্তানির ওপর পশ্চিমাদের নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা কাজ করছে। এখন পর্যন্ত যে তথ্য জানা যাচ্ছে, তাতে এ বছরের এপ্রিল রাশিয়ার আমদানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭০-৮০ শতাংশ কমে গেছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, নিষেধাজ্ঞা সব সময় দুধারি তলোয়ারের মতো।

রাশিয়া এখন যেসব পাল্টা পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেগুলোর পরিণতি কী হতে পারে, তা নিয়ে অনেক পশ্চিমা নীতিনির্ধারক ভুল ধারণা পোষণ করেছেন। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো, জ্বালানির ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি। ইউরোপে ব্যবহৃত গ্যাসের ৪০ শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে। আসন্ন শীত মৌসুমে গ্যাসের আমদানি ও দাম ইউরোপের রাজনীতির প্রধান বিষয় হয়ে উঠবে। জার্মানি, ফ্রান্স ও ইতালির ট্যাবলয়েড পত্রিকায় শীতের সময় বরফে জমে যাওয়া বাড়িঘরের অবস্থা কেমন হবে, সেই চিত্র তুলে ধরছে। ইউরোপের প্রধান এ তিন দেশের সম্ভাব্য পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। জার্মানির অর্থনীতি নিয়ে সাম্প্রতিক এক হিসাবে দেখা যাচ্ছে, রাশিয়ার গ্যাস যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে দেশটির জিডিপি ৩ শতাংশ কমে যাবে।

এখন পর্যন্ত ইউরোপের ৭৮ শতাংশ মানুষ রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করছে। কিন্তু অনেকে এ কথাও বলছে যে এর ফলে তাদের মূল্য দিতে হচ্ছে। জার্মানিতে ৫১ শতাংশ মানুষ মনে করছে, নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে প্রকৃতপক্ষে রাশিয়ার চেয়ে জার্মানি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে সরে আসেননি। আবার রাশিয়ায় পুতিনের ক্ষমতা আরও সংহত হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, নিষেধাজ্ঞা আরোপের ছয় মাসে পশ্চিমারা এর প্রভাব যতটা পড়বে বলে মনে করেছিল, বাস্তবে তা হয়নি। তবে রাশিয়ার অর্থনৈতিক ওপর যে উল্লেখযোগ্য চাপ পড়ছে, তার প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এই চাপ তীব্র হতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত লেগে যাবে।

রাশিয়াকে আগ্রাসনের পথ থেকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সরাসরি সামরিক সংঘাতে জড়ানো ছাড়া খুব কম বিকল্পই পশ্চিমাদের আছে। কিন্তু বাস্তবে সেটা করা খুব বেশি সম্ভব নয়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, কূটনৈতিকভাবে ইউক্রেন সংকট সমাধান সম্ভব। সে ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অথবা সেটা তুলে নেওয়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দর-কষাকষির মূল ক্ষেত্র হতে পারে।

**** খ্রিস্টোফার মাইকেলসেন সিডনির ইউএনএসডব্লিউ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক।
এশিয়া টাইমস থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনুবাদ মনোজ দে।

সূত্র:প্রথম আলো
তারিখ:সেপ্টম্বর ২২,২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ