Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

পুতিন ঠিক রোগ ধরে ভুল চিকিৎসা দিচ্ছেন (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:আলেকজান্ডার ক্যাসেলা।

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিশ্বদৃষ্টিতে রাশিয়া বারবার অপমানিত হয়েছে। বাইরের শত্রুরা বারবার তাঁর দেশকে ঘেরাও করেছে এবং এর ধারাবাহিকতায় রাশিয়ার এখন আর পিছু হটার কোনো সুযোগ নেই। হয়তো তাঁর ধারণা ঠিক।

একসময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল রুশ সম্প্রসারণবাদের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ। কাগজে–কলমে এটি ছিল একটি ‘ইউনিয়ন’। বাস্তবে এটি ছিল একটি সাম্রাজ্য, যা মস্কো থেকে মূলত একটি রুশ রাজনৈতিক গোষ্ঠী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছিল। এই সাম্রাজ্যকে একীভূত রাখার মূল নিয়ামক ছিল সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির শেখানো রুশ জাতীয়তাবাদ। এটি সত্য যে লেনিন ‘মহান রুশ উগ্র জাতীয়তাবাদ’ সম্পর্কে রুশ রাজনীতিকদের সতর্ক করেছিলেন; কিন্তু তাঁর সেই উপদেশবাক্য বধির কানে পড়েছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রুশ সাম্রাজ্য পূর্ব ইউরোপে তার দখলকে প্রসারিত করতে শুরু করেছিল। এই সম্প্রসারণই পরে রুশ সাম্রাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমাদের মধ্যে একটি স্নায়ুযুদ্ধের সূচনা করেছিল।
শীতল যুদ্ধ ছিল বৈশ্বিক ক্ষমতার ভারসাম্যের একটি অনুশীলন পর্ব। এটি এমন একটি কাঠামো দিয়েছিল, যার কারণে বিবদমান পক্ষগুলো সীমা লঙ্ঘন করতে পারেনি। এটি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতার একটি মাত্রা এনেছিল।

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ব্যাপকভাবে সেই সীমাবদ্ধতাগুলোকে শিথিল করে এবং যুক্তরাষ্ট্র একচ্ছত্র ক্ষমতাধর হতে থাকে। একটা সময় ছিল, যখন উত্তর কোরিয়া, আফগানিস্তান বা ইরানে প্রতিরোধের কিছু জায়গা ছিল; কিন্তু শেষ পর্যন্ত একুশ শতকটি তাঁর সূচনালগ্নেই ‘আমেরিকান শতাব্দী’ হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে ধরা দিয়েছে।

বিশ্বায়ন থেকে শুরু করে ডলারের শক্তি, গুগল, জিপিএস, ইন্টারনেট, আইনের শাসন, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ইত্যাদি এটাই নিশ্চিত করেছে যে আজকের বিশ্ব হবে আমেরিকান বিশ্ব। ওয়াশিংটন সাদ্দাম হোসেনের ওপর তার সব ক্ষোভ ঝেড়েছে কিংবা সুইস ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোর গোপনীয়তাকে পর্যন্ত নতজানু করার ক্ষমতা দেখিয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তার বৈশ্বিক আধিপত্যের ছত্রচ্ছায়ায় বসবাসকারীদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বা দৈনন্দিন জীবনকে বাধাগ্রস্ত করেনি।

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ‘সমাজতন্ত্র’–এর দুই প্রধান প্রবক্তাশক্তি কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল, তা টিকে থাকার একটি পাঠ হতে পারে। এর মার্ক্সবাদী মডেলের পতনের মুখোমুখি হয়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছিল। যদিও এর আদি নামটি ধরে রাখা হয়েছে, কিন্তু এটি একটি শাসকশ্রেণির হাতে একটি একদলীয় সাম্রাজ্যবাদী প্রচেষ্টা হিসেবে পুনরায় আবির্ভূত হয়েছে। এর অপরিহার্য প্রেরণা ছিল ক্ষমতা ধরে রাখা এবং সেটি নিশ্চিত করার জন্য তারা উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।

বিপরীতভাবে, সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টি ‘কমিউনিস্ট পার্টি অব রাশিয়ান ফেডারেশন’ হিসেবে নিজেকে পুনরায় ব্র্যান্ডিং করার চেষ্টা করলেও বাস্তব কারণে এটি আদি নামে টিকে থাকতে পারেনি। পরিস্থিতি রাশিয়াকে বাস্তবিক অর্থেই হাঁটু মুড়তে বাধ্য করেছিল।

যদিও পুতিনকে রাশিয়া নামের রাষ্ট্রটিকে আবার নিজের পায়ে দাঁড়ানোর শক্তিতে ফিরিয়ে আনার কৃতিত্ব দেওয়া যেতে পারে, তবে বর্তমানে তাঁর শাসনাধীন দেশটি স্থবির হয়ে পড়েছে।

রাশিয়ার জনসংখ্যা হ্রাস পেয়ে ১৫ কোটিতে নেমে এসেছে। জ্বালানি ও শস্য রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল একটি দুর্বল উৎপাদনকাঠামো ও অর্থনীতি নিয়ে রাশিয়া এখন একটি মধ্যস্তরের শক্তি হিসেবে টিকে আছে।

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের সঙ্গে সঙ্গে মস্কোয় মার্কিন ফুড চেইন ম্যাকডোনাল্ডসের আউটলেট খোলা হয়েছিল এবং মস্কোবাসী এটিকে স্বাগত জানিয়েছে এবং হুড়মুড় করে ম্যাকডোনাল্ডসে গিয়ে মার্কিন খাবার খেয়েছে।

অন্যদিকে নিউইয়র্কে ম্যাকডোনাল্ডসের সমতুল্য কোনো রাশিয়ান কোম্পানি ঢুকতে পারেনি। এরপর দেখা গেল, একটি বিরাট ভোগবাদী গোষ্ঠী রাশিয়ার সমাজে দাঁড়িয়ে গেল। তখন দেখা গেল রাশিয়ার আদর্শিকভাবে আকৃষ্ট করার মতো কিছুই অবশিষ্ট নেই। গত ৩০ বছরে পশ্চিমা মূল্যবোধের দ্বারা রাশিয়ান আত্মার ক্ষয় যতটা না হয়েছে, তার চেয়ে বেশি হয়েছে রাশিয়ান সমাজের ভোগবাদী মানসিকতার কারণে। পুতিন বুঝতে পেরেছিলেন, তাঁর আসল শত্রু ন্যাটো ছিল না; আসল শত্রু ছিল ম্যাকডোনাল্ডস, ভুইটন, গুগল, মার্সিডিজ ইত্যাদি। এগুলো এমন এক শত্রু, যার থেকে পারমাণবিক অস্ত্রও সুরক্ষা দেয় না।

ইউক্রেনের যুদ্ধ হলো রাশিয়ার প্রতি পুতিনের দৃষ্টিভঙ্গির যৌক্তিক প্রতিক্রিয়া। অপমানের মুখোমুখি হওয়ার জন্য শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের পরিবর্তে নৃশংস শক্তি ব্যবহার করার পথ বেছে নিয়েছেন পুতিন। তিনি মনে করছেন, পশ্চিম রাশিয়াকে এত দিন যে অপমান করে এসেছে, তার মোক্ষম প্রতিশোধ তিনি নিতে চান। হয়তো ইউক্রেন যুদ্ধ তারই ফল। পুতিন ঠিকই ধরতে পেরেছিলেন, পশ্চিমা বাজারব্যবস্থা ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন রাশিয়ার প্রধান শত্রু। কিন্তু সেই শত্রুকে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে শেষ করতে চাওয়া যে বড় ধরনের ভুল, তা তিনি হয়তো এখন কিছুটা হলেও টের পাচ্ছেন।

****এশিয়া টাইমস থেকে নেওয়া
ইংরেজি থেকে অনূদিত
আলেকজান্ডার ক্যাসেলা দ্য টাইমস, নিউইয়র্ক টাইমসসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন।

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: জুন ২২, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ