Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

আধুনিক গণতন্ত্রে একজন রানি হয়ে উঠেছিলেন তিনি (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:গ্যাবি হিনস্লিফদ্য।

‘সব ঘড়ি বন্ধ করে দাও, সব টেলিফোনের তার কেটে দাও,’ ডব্লিউ এইচ অডেনের ‘ফিউনারেল ব্লুজ’ কবিতার শুরুর লাইনটা এ মুহূর্তের জন্য প্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে। আপনার পছন্দ হোক আর না হোক, তাঁর চলে যাওয়ার দিনটি শোকের। সেই শোকের কালো দিনটিতে জনজীবনের বেশির ভাগ অংশই থেমে যাবে; অনুষ্ঠান সম্প্রচারকারীরা তাদের সময়সূচি স্থগিত করে তাঁর রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া নিয়ে ব্যস্ত হবে।

ব্রিটিশ ইতিহাসে দীর্ঘতম রাজত্ব করা রানির মৃত্যু নিশ্চিতভাবেই জাতির জীবনে একটি উল্লেখযোগ্য এবং অস্থির মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হবে। বিশেষ করে একটি অর্থনৈতিক সংকট মাথাচাড়া দেওয়ার মুহূর্তে যখন একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নিলেন, সেই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার মধ্যে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের চলে যাওয়ার ঘটনা আরও গুরুত্ব বহন করছে।

৭০ বছর ধরে কোটি কোটি মানুষের জীবনের পটভূমিতে তিনি একটি ধ্রুবক, অবিচলিত উপস্থিতি, দুঃসময়ে আশ্বস্ত করা কণ্ঠস্বর হয়ে ছিলেন।

রানির ভেতরে নারী শক্তির একটি সুষমামণ্ডিত রূপ ছিল, যা তিনি এত দিন শৈল্পিকভাবে প্রয়োগ করে এসেছেন। সেই শক্তি ছিল প্রায় অদৃশ্য অথচ প্রায় নিশ্চিতভাবে কার্যকর। তাঁর হাতে থাকা সাংবিধানিক ক্ষমতাগুলোর প্রকৃতি ছিল ব্যাপক। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া বা সর্বসম্মতভাবে প্রণীত আইন স্থগিত করে দেওয়ার মতো গুরুতর ক্ষমতা তাঁর হাতে ছিল। একটি আধুনিক গণতন্ত্রে একজন রানির হাতে এ ধরনের ক্ষমতা থাকার বিষয়টি সবাই মেনে নিয়েছিল। কারণ, এসব ক্ষমতা তাঁর হাতে থাকার পরও সেগুলো তিনি কদাচিৎ ব্যবহার করেছেন।

টনি ব্লেয়ার তাঁর আত্মজীবনীতে একটি জি-৮ সম্মেলনে রানির সঙ্গে বিশ্বনেতাদের নৈশভোজের বর্ণনা দিয়েছেন, যেখানে কেউ কেউ সাধারণ ও স্বস্তিদায়ক পরিবেশ দেখে বিমোহিত হয়েছিলেন। একই সঙ্গে রানির কাছে ঘেঁষতে না পারার নির্দেশনায় হতবাক হয়েছিলেন। অভ্যাগত ব্যক্তিদের আগেভাগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ‘আপনি রানির সঙ্গে খাতির জমানোর চেষ্টা করতে পারবেন না। মাঝেমধ্যে তিনি আপনার সঙ্গে ভদ্রতাসূচক অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে পারেন, কিন্তু আপনি জবাবে ফিরতি সৌজন্যতাসূচক অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করবেন না।’

অভিনেত্রী অলিভিয়া কোলম্যান (যিনি নেটফ্লিক্স সিরিজ দ্য ক্রাউন-এ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন) একবার তাঁকে ‘চূড়ান্ত নারীবাদী’ বলে অভিহিত করেছিলেন। কিন্তু রানি কখনোই নিজেকে এমনটা দাবি করতেন না।

তবে ১৯৯৮ সালে যুক্তরাজ্যে সফররত সৌদি ক্রাউন প্রিন্স (পরবর্তী সময়ে যিনি সৌদি বাদশাহ হয়েছিলেন) আবদুল্লাহকে ব্যক্তিগত ল্যান্ড রোভার গাড়িতে উঠিয়ে বালমোরাল স্টেট ঘুরিয়ে দেখানোর সময় খুব সূক্ষ্মভাবে তাঁর লৈঙ্গিক সংবেদনশীলতাকে তুলে ধরেছিলেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে রানি তাঁর গাড়ির ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসেন এবং আবদুল্লাহকে পেছনের আসনে বসতে দেন। ওই সময় সৌদি আরবে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি ছিল না। সবাই তখন বুঝে নিয়েছিলেন, সৌদি নারীদের গাড়ি চালানোর অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অতি সূক্ষ্ম প্রতিবাদ হিসেবে রানি নিজেই সেদিন গাড়ি চালিয়েছিলেন। নারী অধিকারের প্রতি রানির সেই সংহতি সত্যিই বিরল ঘটনা ছিল।

রানি নারীবাদকে মূলত একটি রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন, রানি হিসেবে এ বিষয়ে মতনিরপেক্ষ ছিলেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পুত্রবধূ ক্যামিলাকে পারিবারিক নির্যাতন বা নারীর বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতা বন্ধের মতো বিষয়ে কথা বলার অনুমতি দিয়েছিলেন। তিনি নারীবাদী আইকন হননি, কিন্তু সম্ভবত চূড়ান্ত ‘মাতৃপতি’ হয়ে উঠেছিলেন।

রানির লৌহকঠিন দায়বদ্ধতা এবং ঐতিহ্যকে আবেগতাড়িত হয়ে ধারণ করার প্রবণতা পুরোনো প্রজন্মকে গভীরভাবে অনুরণিত করেছে। তবে নতুন প্রজন্ম রানি হওয়ার সুবাদে তাঁর স্বাভাবিক মানবিক অনুভূতির দমনকে অস্বাস্থ্যকর হিসেবে দেখে। পুত্রবধূ ডায়ানার মৃত্যুতে প্রকাশ্যে আবেগ প্রকাশে তাঁর স্পষ্ট অনিচ্ছা সেই আবেগ দমনের একটি বড় নজির হয়ে আছে।

রানি শেষের দিকে স্পষ্টতই দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। বিশেষ করে তাঁর প্রিয়তম স্বামী ডিউক অব এডিনবরার মৃত্যুর পর তিনি ভেতরে-ভেতরে ভেঙে পড়েছিলেন। তারপরও নৈতিক কর্তব্য থেকে তিনি সরে দাঁড়াননি। ২০২১ সালে কপ ২৬ শীর্ষক জলবায়ু সম্মেলনের আগে চিকিৎসকেরা তাঁকে সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পরিবর্তে বিশ্রাম নিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। সে কারণেই তিনি ওই সম্মেলনে একটি ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছিলেন। পাশে প্রয়াত স্বামীর ছবি রেখে ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা কেউই অনন্তকাল বেঁচে থাকব না।…কিন্তু আমরা এটি (জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা) নিজেদের জন্য নয়, আমাদের সন্তান এবং তাদের সন্তানদের জন্য করছি।’

****দ্য গার্ডিয়ান থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিত
● গ্যাবি হিনস্লিফদ্য গার্ডিয়ান–এর নিয়মিত কলাম লেখক।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ: সেপ্টম্বর ১০, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ