Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ঋত্বিক কুমার ঘটকের তিতাস একটি নদীর নাম

Share on Facebook

ঋত্বিক কুমার ঘটক (৪ঠা নভেম্বর,১৯২৫ – ৬ই ফেব্রুয়ারী,১৯৭৬) একজন বিখ্যাত বাঙালী চলচ্চিত্র পরিচালক। তাঁর জন্ম পূর্ববঙ্গের (বর্তমান বাংলাদেশের) ঢাকা শহরের ঋষিকেশ দাস লেনে। ১৯৪৭ এর ভারত বিভাগের পরে তাঁর পরিবার কলকাতায় চলে যায়। বাংলা চলচ্চিত্র পরিচালকদের মধ্যে তিনি সত্যজিৎ রায় এবং মৃণাল সেনের সাথে তুলনীয়। ভিন্নধর্মী চলচ্চিত্র নির্মাণের কারণে তিনি যেমন প্রশংসিত ছিলেন; ঠিক তেমনি বিতর্কিত ভূমিকাও রাখেন। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তাঁর নাম বহুল উচ্চারিত।

ঋত্বিক ঘটক পূর্ববঙ্গের (বর্তমান বাংলাদেশের) জিন্দাবাজার, ঢাকা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মায়ের নাম ইন্দুবালা দেবী এবং বাবা সুরেশ চন্দ্র ঘটক। তিনি বাবা-মায়ের ১১তম এবং কনিষ্ঠতম সন্তান। ১৯৪৩ এর দুর্ভিক্ষ এবং ১৯৪৭ এর ভারত বিভাগের পরে পূর্ববঙ্গের প্রচুর লোক কলকাতায় আশ্রয় নেয় এবং এরই ধারাবাহিকতায় তাঁর পরিবার কলকাতায় চলে যায়। শরণার্থীদের অস্তিত্বের সংকট তাঁকে গভীরভাবে আলোড়িত করে এবং পরবর্তী জীবনে তাঁর চলচ্চিত্রে এর স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।

১৯৪৬ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে আই.এ এবং ১৯৪৮ সালে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে বি.এ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে এম.এ কোর্স শেষ করেও পরীক্ষা না দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেন তিনি।

তাঁর বাবা সুরেশ চন্দ্র ঘটক একজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন এবং তিনি কবিতা ও নাটক লিখতেন। তাঁর বড় ভাই ঐ সময়ের খ্যাতিমান এবং ব্যতিক্রমী লেখক মনীশ ঘটক ছিলেন ইংরেজির অধ্যাপক এবং সমাজকর্মী। আইপিটিএ থিয়েটার মুভমেন্ট এবং তেভাগা আন্দোলনে মনীশ ঘটক জড়িত ছিলেন। মনীশ ঘটকের মেয়ে বিখ্যাত লেখিকা ও সমাজকর্মী মহাশ্বেতা দেবী। ঋত্বিক ঘটকের স্ত্রী সুরমা ঘটক ছিলেন স্কুল শিক্ষিকা।

ঋত্বিক ঘটক তাঁর প্রথম নাটক কালো সায়র লেখেন ১৯৪৮ সালে। একই বছর তিনি নবান্ন নামক পুণর্জাগরণমূলক নাটকে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৫১ সালে তিনি ভারতীয় গণনাট্য সংঘে (আইপিটিএ) যোগদান করেন। এসময় তিনি নাটক লেখেন, পরিচালনা করেন ও অভিনয় করেন এবং বের্টোল্ট ব্রেশ্ট ও নিকোলাই গোগোল-এর রচনাবলি বাংলায় অনুবাদ করেন। বিমল রায় জ্বালা নাটকটি তিনি লেখেন এবং পরিচালনা করেন ১৯৫৭ সালে; এটিই তাঁর পরিচালনায় শেষ নাটক। ঋত্বিক ঘটক চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন নিমাই ঘোষের ছিন্নমূল (১৯৫১) সিনেমার মধ্য দিয়ে; তিনি একই সাথে অভিনয় করেন এবং সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করেন। এর দু’বছর পর তাঁর একক পরিচালনায় মুক্তি পায় নাগরিক। দু’টি চলচ্চিত্রই ভারতীয় চলচ্চিত্রের গতানুগতিক ধারাকে জোর ঝাঁকুনি দিতে সমর্থ হয়েছিল।

তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে মেঘে ঢাকা তারা (১৯৬০), কোমল গান্ধার (১৯৬১) এবং সুবর্ণরেখা (১৯৬২) অন্যতম; এই তিনটি চলচ্চিত্রকে ট্রিলজি বা ত্রয়ী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়, যার মাধ্যমে কলকাতার তৎকালীন অবস্থা এবং উদ্বাস্তু জীবনের রুঢ় বাস্তবতা চিত্রিত হয়েছে। সমালোচনা এবং বিশেষ করে কোমল গান্ধার এবং সুবর্ণরেখা’র ব্যবসায়িক ব্যর্থতার কারণে এই দশকে আর কোন চলচ্চিত্র নির্মাণ তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি।

ঋত্বিক ঘটক ১৯৬৫ সালে স্বল্প সময়ের জন্য পুনেতে বসবাস করেন। এসময় তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে যোগদান করেন ও পরবর্তীকালে ভাইস-প্রিন্সিপাল হন। এফটিআইআই-এ অবস্থানকালে তিনি শিক্ষার্থীদের নির্মিত দুটি চলচ্চিত্রের (Fear and Rendezvous) সাথে জড়িত ছিলেন। ঋত্বিক ঘটকের চলচ্চিত্রের জগতে পুণরাবির্ভাব ঘটে সত্তরের দশকে যখন এক বাংলাদেশী প্রযোজক তিতাস একটি নদীর নাম (চলচ্চিত্র) নির্মাণে এগিয়ে আসেন। অদ্বৈত মল্লবর্মন রচিত একই নামের বাংলা সাহিত্যের একটি বিখ্যাত উপন্যাস ঋত্বিক ঘটকের পরিচালনায় চলচ্চিত্রে রূপদান সম্পন্ন হয়। তিতাস একটি নদীর নাম চলচ্চিত্র আকারে মুক্তি পায় ১৯৭৩ সালে। খারাপ স্বাস্থ্য এবং অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে নিয়মিত কাজ চালিয়ে যাওয়া তাঁর পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাঁর শেষ চলচ্চিত্র যুক্তি তক্কো আর গপ্পো (১৯৭৪) অনেকটা আত্মজীবনীমূলক এবং এটি তাঁর অন্যান্য চলচ্চিত্র থেকে ভিন্ন ধাঁচের।

সুবর্ণরেখা চলচ্চিত্র নির্মাণের পর প্রায় এক যুগ বিরতি নিয়ে অদ্বৈত মল্লবর্মণের তিতাস একটি নদীর নাম শীর্ষক উপন্যাসের কাহিনীকে উপজীব্য করে ঋত্বিক ঘটক ১৯৭৩ সালে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে আগমন করে তিতাস একটি নদীর নাম শিরোনামে চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন। মাঝখানে কোন পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্র তৈরী করেননি তিনি। এ চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহের কারণ হিসেবে তিনি বলেন:

“তিতাস পূর্ব বাংলার একটা খণ্ডজীবন, এটি একটি সৎ লেখা। ইদানীং সচরাচর বাংলাদেশে (দুই বাংলাতেই) এ রকম লেখার দেখা পাওয়া যায় না। এর মধ্যে আছে প্রচুর নাটকীয় উপাদান, আছে দর্শনধারী ঘটনাবলী, আছে শ্রোতব্য বহু প্রাচীন সঙ্গীতের টুকরো – সব মিলিয়ে একটা অনাবিল আনন্দ ও অভিজ্ঞতার সৃষ্টি করা যায়। ব্যাপারটা ছবিতে ধরা পড়ার জন্য জন্ম থেকেই কাঁদছিল। … অদ্বৈতবাবু অনেক অতিকথন করেন। কিন্তু লেখাটা একেবারে প্রাণ থেকে, ভেতর থেকে লেখা। আমি নিজেও বাবুর চোখ দিয়ে না দেখে ওইভাবে ভেতর থেকে দেখার চেষ্টা করেছি। অদ্বৈতবাবু যে সময়ে তিতাস নদী দেখেছেন, তখন তিতাস ও তার তীরবর্তী গ্রামীণ সভ্যতা মরতে বসেছে। বইয়ে তিতাস একটি নদীর নাম। তিনি এর পরের পুণর্জীবনটা দেখতে যাননি। আমি দেখাতে চাই যে, মৃত্যুর পরেও এই পুণর্জীবন হচ্ছে। তিতাস এখন আবার যৌবনবতী। আমার ছবিতে গ্রাম নায়ক, তিতাস নায়িকা।”

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের করা দর্শক, চলচ্চিত্র সমালোচকদের ভোটে এ চলচ্চিত্রটি সেরা বাংলাদেশী ছবির মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করে।

চলচ্চিত্রসমূহের তালিকা :

পরিচালনা :

নাগরিক (১৯৫২, মুক্তি ১৯৭৭)
অযান্ত্রিক (১৯৫৮)
বাড়ি থেকে পালিয়ে (১৯৫৮)
মেঘে ঢাকা তারা (১৯৬০)
কোমল গান্ধার (১৯৬১)
সুবর্ণরেখা (১৯৬২)
তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩)
যুক্তি তক্কো আর গপ্পো (১৯৭৭)

কাহিনী ও চিত্রনাট্য:

মুসাফির (১৯৫৭)
মধুমতী (১৯৫৮)
স্বরলিপি (১৯৬০)
কুমারী মন (১৯৬২)
দ্বীপের নাম টিয়ারং (১৯৬৩)
রাজকন্যা (১৯৬৫)
হীরের প্রজাপতি (১৯৬৮)

অভিনয় :

তথাপি (১৯৫০)
ছিন্নমূল (১৯৫১)
কুমারী মন (১৯৫২)
সুবর্ণরেখা (১৯৬২)
তিতাস একটি নদীর নাম
যুক্তি তক্কো আর গপ্পো (১৯৭৭)

শর্টফিল্ম ও তথ্যচিত্রের তালিকা :

দ্য লাইফ অফ দ্য আদিবাসিজ (১৯৯৫)
প্লেসেস অফ হিস্টোরিক ইন্টারেস্ট ইন বিহার (১৯৫৫)
সিজার্স (১৯৬২)
ওস্তাদ আলাউদ্দিন খান (১৯৬৩)
ফিয়ার (১৯৬৫)
রঁদেভু (১৯৬৫)
সিভিল ডিফেন্স (১৯৬৫)
সায়েন্টিস্টস অফ টুমরো (১৯৬৭)
ইয়ে কওন (হোয়াই / দ্য কোয়েশ্চন) (১৯৭০)
আমার লেলিন (১৯৭০)
পুরুলিয়ার ছৌ (দ্য ছৌ ড্যান্স অফ পুরুলিয়া) (১৯৭০)
দুর্বার গতি পদ্মা (দ্য টার্বুলেন্ট পদ্মা) (১৯৭১)

অসমাপ্ত ছবি ও তথ্যচিত্রের তালিকা :

বেদেনি (১৯৫১)
কত অজানারে (১৯৫৯)
বগলার বঙ্গদর্শন (১৯৬৪-৬৫)
রঙের গোলাপ (১৯৬৮)
রামকিঙ্কর (১৯৭৫)

সম্মাননা:

১৯৬৯ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৫ সালে যুক্তি তক্কো আর গপ্পো চলচ্চিত্রের শ্রেষ্ঠ কাহিনীর জন্য ভারতের জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন।
(সৌজন্যে: উইকিপিডিয়া)
সূত্র : সংগৃহিত

তারিখ: নভেম্বর ০৪, ২০২০

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ