Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

কনটেইনার পরিবহনে ইতিহাস ইউরোপের পথে যাত্রা সোঙ্গা চিতার (২০২২)

Share on Facebook

আজ বেলা তিনটা। চিমনি ছেড়ে আকাশে উড়ছে ধোঁয়া। ভোঁ ভোঁ শব্দে কর্ণফুলী নদীর বুকে চলতে শুরু করল এমভি সোঙ্গা চিতা। বন্দর জেটিতে দাঁড়িয়ে ক্যামেরা, মুঠোফোনে সেই দৃশ্য তুলে রাখতে শুরু করলেন সাংবাদিক ও বন্দর কর্মকর্তারা। সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনের ঐতিহাসিক দৃশ্যে নিজেদের সাক্ষী করতে ভুলেননি কেউ। আর ইতিহাস তৈরি করে ইউরোপের পথে এগিয়ে যেতে থাকল জাহাজটি।

১৯৭৭ সালে কনটেইনার পরিবহন শুরুর পর এটাই ইউরোপের পথে সরাসরি কোনো কনটেইনারবাহী জাহাজের প্রথম যাত্রা। সে হিসেবে কনটেইনার পরিবহন শুরুর ৪৫ বছর পর ইউরোপের কোনো বন্দরে সরাসরি যাচ্ছে এই জাহাজটি। ছেড়ে যাওয়ার আগে জাহাজটিতে বোঝাই করা হয় ৯৫২ একক কনটেইনার রপ্তানি পণ্য। বাংলাদেশে তৈরি এই পোশাক হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় ১২ হাজার ১৪৫ কিলোমিটার দূরের ইউরোপের দেশ ইতালির ক্রেতারা। সব ঠিক থাকলে ২৬ ফেব্রুয়ারি তাঁদের এ অপেক্ষার অবসান হতে পারে। তত দিনে জাহাজ নোঙর করতে পারে ইতালির বন্দরে।

সরাসরি জাহাজে ইউরোপে তৈরি পোশাক নেওয়ার ঘটনার সাক্ষী হতে ঢাকা থেকে ছুটে এসেছিলেন তৈরি পোশাকশিল্পমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান। গতকাল রোববার জাহাজে তৈরি পোশাকের কনটেইনার বোঝাই করার দৃশ্য মুগ্ধ করে তাঁকে। সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সেই মুগ্ধতার কথা জানান তিনি। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অ্যাম্বাসেডর চার্লস স্টুয়ার্ট হোয়াইটলি, ইতালির অ্যাম্বাসেডর এনরিকো নুনজিয়াতাও এসেছিলেন। বন্দর চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান জাহাজটি সাগরে আসার পরপরই জেটিতে ভেড়ানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। কয়েক দফা ছুটে এসেছেন জেটিতে। জাহাজটি ছেড়ে যাওয়ার সময় আজও ছিলেন জেটিতে। প্রথম আলোকে তিনি জানান, বাংলাদেশের সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনের ইতিহাসে এটি নতুন মাইলফলক। নতুন কেউ সরাসরি জাহাজ চালু করতে চাইলে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

জাহাজটি কর্ণফুলী ছেড়ে বঙ্গোপসাগর হয়ে শ্রীলঙ্কার হামবানটোটা বন্দরের সামনে দিয়ে যাবে। এরপর আরব সাগর, ভারত মহাসাগর, গালফ অব এডেন, লোহিত সাগর, সুয়েজ খাল ও ভূমধ্যসাগর হয়ে পৌঁছাবে ইতালির বন্দরে।

ছোট জাহাজে দীর্ঘ পথে কনটেইনার পণ্য পরিবহনের এই যাত্রা অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঝুঁকি নিয়েছে ইতালির পোশাক ক্রেতারা। তাঁদের সামনে সহজ পথ ছিল না। বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিতে হলে প্রথমে তাঁদের চট্টগ্রাম থেকে সিঙ্গাপুর বা কলম্বো বন্দরে নিতে হতো। করোনার পর বন্দর দুটিতে কয়েকদিন গড়াগড়ি খেয়েছে এসব কনটেইনার। এরপর আবার ইউরোপগামী বড় জাহাজে কখন কনটেইনার তোলা যাবে, তার নিশ্চয়তাও ছিল না। কারণ ভিয়েতনাম ও চীন থেকে ছেড়ে আসা জাহাজে কনটেইনার পরিবহনের ফাঁকা জায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না। ভাড়াও বেড়ে হয়েছে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে পাঁচ গুণের বেশি। চট্টগ্রাম থেকে নিজেদের খরচে যেহেতু তাঁরা পণ্য নিচ্ছেন, মাথাব্যথাও ছিল তাঁদের বেশি। প্রায় ছয় মাসের বেশি এমন দুর্ভোগের পর ইতালির পোশাক ক্রেতার আহ্বানে সামনে এগিয়ে আসে তাঁদেরই দেশের ফ্রেইট ফরওয়ার্ডিং কোম্পানি রিফ লাইন। এটির সহযোগী কোম্পানি ‘ক্যালিপসো কোম্পানিয়া ডি নেভিগেশন’ এ সেবা চালু করে।

রিফ লাইনের বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান রিফলাইন ওয়াল্ডওয়াইড লজিস্টিকস লিমিটেডের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, এই জাহাজটি ইতালির রেভেনা বন্দরে কনটেইনার নামিয়ে আবার রপ্তানি পণ্য নিতে বন্দরে আসবে। এরপর প্রতি ২২ দিন পর জাহাজ রপ্তানি পণ্য নিতে ভিড়বে এই বন্দরে।

এই উদ্যোগ বাংলাদেশে রপ্তানি পণ্যের নতুন সম্ভাবনার পথও খুলে দিতে পারে। কারণ ইতালির ক্রেতারা এখন ৩০ শতাংশ কম খরচে এবং এক-দুই সপ্তাহের কম সময়ে পণ্য হাতে পাবেন। এমন স্মরণীয় মুহূর্তেও ছোট্ট একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ছিল। সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেডের ডিপোতে পরিবহনশ্রমিকেরা ধর্মঘট ডাকায় কিছুসংখ্যক কনটেইনার পণ্য ইউরোপযাত্রার সঙ্গী হতে পারেনি। শেষ মুহূর্তে ডিপো থেকে বন্দরে আসা ২২ একক কনটেইনার জাহাজে তুলতে সক্ষম হয় টার্মিনাল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড। শুধু ৩১ কনটেইনার বন্দরে আনা যায়নি।

জাহাজটির বাংলাদেশের স্থানীয় প্রতিনিধি রিলায়েন্স শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিকস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাশেদ প্রথম আলোকে বলেন, এই জাহাজটি যাত্রার মাধ্যমে নতুন ইতিহাস তৈরি হলো।

প্রথমবার কনটেইনার পরিবহন করে ‘এসএস টেনাসিটি’ জাহাজের নাম উঠেছিল ইতিহাসের পাতায়। সেটি ৪৫ বছর আগের ঘটনা। এবার আরেকটি জাহাজের নাম লেখা হচ্ছে সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনের ইতিহাসের পাতায়। সেটি হচ্ছে, ‘এমভি সোঙ্গা চিতা’। শীর্ষস্থানীয় কোনো শিপিং কোম্পানির জাহাজ নয় এটি। ইতালির নতুন একটি শিপিং কোম্পানি বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য পরিবহনের ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ ফেব্রুয়ারী ০৭, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ