Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

গুজরাটের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় মোদিকে নিয়ে বিবিসির তথ্যচিত্র-ভারতের আপত্তি (২০২৩)

Share on Facebook

লেখক:শুভজিৎ বাগচী কলকাতা।

গুজরাটের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা নিয়ে করা ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (বিবিসি) একটি তথ্যচিত্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ভারতে।

বিবিসি২ নামে যুক্তরাজ্যের চ্যানেলটিতে ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোশ্চেন’ তথ্যচিত্রটি গত মঙ্গলবার রাতে ব্রিটেনে সম্প্রচারের পর এটি নিয়ে কার্যত ঝড় বয়ে যাচ্ছে ভারতে।

সামাজিক মাধ্যমে, বিশেষত টুইটারে বিষয়টি নিয়ে সারাক্ষণ বিতর্ক হচ্ছে। ভারতের এক সাবেক কূটনীতিক, যিনি ২০০২ সালে পররাষ্ট্রসচিব ছিলেন, তিনি বিবিসির সম্প্রচারের সিদ্ধান্তকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলেছেন।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে ছবিটি সম্প্রচারের নিন্দা করেছে।
তথ্যচিত্রটি অবশ্য সামাজিক মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে না, বিবিসিও এটি ভারতে সম্প্রচার করেনি। কেবল ভিপিএন (ভার্চ্যুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক) বা গোপন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ছবিটি ইন্টারনেটের কোনো পরিষেবা থেকে নামিয়ে মাঝেমধ্যে দেখা যাচ্ছে। এমনভাবেই এই প্রতিবেদক ছবিটি আজ শুক্রবার ভোরে দেখেছেন।
কী আছে তথ্যচিত্রটিতে

তথ্যচিত্রটিতে প্রধানত দেখানো হয়েছে, কীভাবে ২০০২ সালে গুজরাটের দাঙ্গাকে ব্যবহার করে ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেন। এমন অনেক কথাই ছবিটিতে বলা হয়েছে, যা নতুন নয়। কিন্তু যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত এক জায়গায় এনে বিবিসি একটি তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছে। তত্ত্বটি হলো, গুজরাট দাঙ্গা মোদিকে প্রধানমন্ত্রী হতে সাহায্য করেছে।

এই প্রক্রিয়ায় কীভাবে তাঁর দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ এবং হিন্দুত্ববাদী নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি ভারতের বিচারব্যবস্থা তাঁকে সাহায্য করেছে, তা দেখানো হয়েছে ছবিতে।

প্রায় এক ঘণ্টার তথ্যচিত্রটির সবচেয়ে বড় ‘এক্সক্লুসিভ’ বা অতীতে প্রকাশ্যে না আসা বিষয় হলো, গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একটি গোপন প্রতিবেদন। প্রতিবেদনটি তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত (অর্থাৎ দাঙ্গার সময়ে) থাকা ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাক স্ট্র। তথ্যচিত্রে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। ভারতের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের দীর্ঘদিনের গভীর সম্পর্কের কারণে তিনি উদ্বিগ্ন ছিলেন। সেই কারণে তিনি প্রতিবেদনটি তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে স্ট্র জানিয়েছেন। স্ট্র বলেন, ‘আমরা একটি দল গঠন করেছিলাম, যে দলটি গুজরাটে যাবে এবং দাঙ্গার তদন্ত স্বাধীনভাবে করবে। তারা একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল।’

বিবিসির প্রতিবেদনটির একটি অংশে যুক্তরাজ্যে সরকারের ওই কূটনৈতিক বার্তা তুলে ধরা হয়েছে। এটিকে ‘রেস্ট্রিকটেড’ বা নিয়ন্ত্রিত একটি বার্তা বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল।

তথ্যচিত্র থেকে এটা অবশ্য পরিষ্কার নয় যে এই গোপন প্রতিবেদনের কতটা বিবিসির হাতে এসেছে। কিন্তু অংশবিশেষ অবশ্যই এসেছে, যা থেকে উদ্ধৃত করে বিবিসি কতগুলো বাক্য বলেছে। যেমন ‘বিভিন্ন প্রতিবেদনে যেটুকু জানা গিয়েছিল তার থেকে হিংসার ব্যাপকতা অনেক বেশি ছিল।’ গোপন প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘ব্যাপকভাবে পরিকল্পনামাফিক মুসলিম নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছে।’

এই সহিংসতাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলেও চিহ্নিত করা হয়েছে। গোপন প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে তথ্যচিত্রে আরও বলা হয়েছে, ‘এই সহিংসতার উদ্দেশ্য ছিল হিন্দু অঞ্চলে বসবাসকারী মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করা এবং পরিকল্পনাভিত্তিক এই হিংসার মধ্যে এথনিক ক্লিনজিং-এর (জাতিগত হত্যা) সুস্পষ্ট চিহ্ন ছিল।’

তদন্তকারী দলের সদস্য যুক্তরাজ্যের এক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক তাঁর নাম বা ছবি প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তাঁর সেই সাক্ষাৎকার উদ্ধৃত করা হয়েছে তথ্যচিত্রে। গুজরাট দাঙ্গা সম্পর্কে তিনি বলেছেন, মুসলমান সমাজকে পরিকল্পনামাফিক আক্রমণ করা হয়েছিল। উগ্রপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এ কাজ করেছিল।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গোপন প্রতিবেদনে আরও দুটি জিনিস বলা হয়েছে। এক, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এককভাবে রাজ্য সরকারের সাহায্য ছাড়া এই দাঙ্গার নেতৃত্ব দিতে পারত না। দুই, ‘নরেন্দ্র মোদি সরাসরিভাবে এর জন্য দায়ী’—এমনটাই জানিয়েছে বিবিসির তথ্যচিত্র।

তথ্যচিত্রের অংশটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও অন্যান্য অংশেও পৃথকভাবে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচিত হয়েছে। যেমন বলা হয়েছে, গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করে নাগরিক সমাজের একটি গণশুনানিতে উপস্থিত হওয়ার পর রহস্যজনকভাবে খুন হতে হলো গুজরাটের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হরেন পান্ডিয়াকে। বিষয়টির আংশিক তদন্ত করা হয়েছে তথ্যচিত্রে।

নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপিবিরোধী অবস্থান নিয়েছিলেন যেসব জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা, তাদের কীভাবে জেলে যেতে হলো, তা-ও দেখানো হয়েছে তথ্যচিত্রে। তাঁদের একজন সঞ্জীব ভাট একটি ৩০ বছরের পুরোনো মামলায় আজীবনের জন্য কারাগারে গিয়েছেন। বিষয়টি তুলে ধরে তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে মন্তব্য করা হয়েছে তথ্যচিত্রটিতে। সবকিছুর সঙ্গেই শেষ পর্যন্ত জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম।
এ ছাড়া তথ্যচিত্রে এমন একাধিক ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, যাঁরা নিজেরা কোনোরকমে প্রাণে বেঁচেছেন বা যাঁদের পরিবারের একাধিক সদস্য মারা গিয়েছেন।

এসবের পরে বিচারব্যবস্থা সর্বোচ্চ পর্যায়ে কীভাবে নরেন্দ্র মোদিকে যাবতীয় অভিযোগমুক্ত করে বেকসুর খালাস দিল, তা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে তথ্যচিত্রে। তিন দিন ধরে চলা দাঙ্গার সময়ে নরেন্দ্র মোদি একেবারেই চুপচাপ ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রশাসনকে তিনি আরও আগে কেন কাজে লাগাননি, সেই প্রশ্ন বিভিন্ন সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।

বিবিসির তৎকালীন সাংবাদিক জিল ম্যাকগিভারিংকে বারবার তথ্যচিত্রে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। কারণ, তিনি দাঙ্গার সময়ে গুজরাটে গিয়েছিলেন। বিবিসির জন্য প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন। তথ্যচিত্রে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি দাঙ্গা সম্পর্কে তাঁর মতামত জানিয়েছেন। সেই সময় নরেন্দ্র মোদিকে করা তাঁর সাক্ষাৎকারটিও ছবিতে কিছুটা রাখা হয়েছে। সেই সাক্ষাৎকারে নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, ‘গণমাধ্যমকে বেশি জায়গা দিয়েছিলাম, সেটাই ছিল আমার একমাত্র ভুল।’

তথ্যচিত্রে একাধিক বিশ্লেষক, সমাজকর্মী, সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক নেতা এবং সাংবাদিকের পাশাপাশি রাখা হয়েছে বিজেপির বেশ কিছু নেতার সাক্ষাৎকার। বিজেপির স্থানীয় যেসব নেতা দাঙ্গার সময় গুজরাটে ছিলেন, তাঁদের কয়েকজন বলেছেন, তাঁরা কীভাবে মানুষকে হত্যা করেছিলেন, বা অন্যদের দিয়ে করিয়েছিলেন।
বিজেপির জাতীয় স্তরের নেতারা অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন।

বিজেপির সাবেক রাজ্যসভার সদস্য স্বপন দাশগুপ্তের দীর্ঘ সাক্ষাৎকার রয়েছে ছবিটিতে। রয়েছে আরেক বড় নেতা সুব্রামানিয়াম স্বামীর সাক্ষাৎকারও।
ভারত সরকারের প্রতিক্রিয়া

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি গতকাল ছবিটির কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি এটিকে একটি ‘প্রচারধর্মী ছবি’ বলে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, ‘তথ্যচিত্রটি বানানো হয়েছে একটি বাতিল হয়ে যাওয়া আখ্যানের ভিত্তিতে।’
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই ভারত ও যুক্তরাজ্যের কূটনৈতিক স্তরে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই বিতর্ক আরও বাড়বে বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে। কারণ, তথ্যচিত্রের দ্বিতীয় পর্ব দেখানো হবে আগামী মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারি।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:জানুয়ারী ২০, ২০২৩

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ