Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

জাতীয় পদক–পুরস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০২১)

Share on Facebook

লেখক:ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বেশ সক্রিয় বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। প্রায়ই দেশের ও বিদেশের অর্থনীতি নিয়ে নানা ধরনের পোস্ট দেন তিনি।গতকাল মঙ্গলবার অর্থনীতির চাহিদা-সরবরাহ তত্ত্বের কিছু ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে একটি পোস্ট দেন এই অর্থনীতিবিদ। সেই পোস্টে অর্থনীতির একটি তত্ত্ব উল্লেখ করে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, অর্থনীতির আচরণ যেমন ব্যক্তিস্বার্থ ও মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্য দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়, সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও তেমনি জনস্বার্থে নয় বরং রাজনীতিক ও আমলাদের ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থেই গৃহীত হতে পারে। তার ওই পোস্টে তিনি চাহিদা-সরবরাহ তত্ত্বের বেশ কিছু ঘটনা উল্লেখ করেন। ঘটনাগুলোর উদ্ধৃতি তিনি দিয়েছেন তাঁর ‘অর্থনীতি কেন পড়ি; উন্নয়নশীল দেশের প্রেক্ষিত’ বইতে। ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সেই পোস্ট এখানে তুলে ধরা হলো—

২০১১ সালে লুই ভুইতোঁ ব্র্যান্ডের নারীদের হাতব্যাগের বিজ্ঞাপনে হলিউডের বিখ্যাত চিত্রতারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলির একটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল। এই বিজ্ঞাপনটি নিয়ে প্রগতিশীল গণমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। ছবিটিতে তাঁকে ওই ব্র্যান্ডের একটি ব্যাগ কাঁধে কম্বোডিয়ার পাণ্ডববর্জিত একটি জলাভূমিতে একলা নৌকায় বসে থাকতে দেখা যায়। ফ্যাশন জগতে আবেদন সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তৈরি ওই বিজ্ঞাপনকে একটি গরিব দেশের দারিদ্র্যকে উপহাস করার শামিল বলে অভিযোগ করা হয়। বিলাতের দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম দিয়েছিল: ওয়াটস অ্যাঞ্জেলিনা জোলি ডুয়িং ইন এ সোয়াম্প উইথ এ সেভেন ৭০০০ ডলার ব্যাগ? (১৪ জুন ২০১১)। অবশ্য, অ্যাঞ্জেলিনা জোলির নিজের মতে, কম্বোডিয়ার ওই ভ্রমণ ছিল তাঁর জীবনের একটি বড় অভিজ্ঞতা, যা তাঁর জীবনবোধকে বদলে দিয়েছিল। এমনকি ওই বিজ্ঞাপন থেকে পাওয়া তাঁর অর্থের অর্ধেক তিনি চ্যারিটিতে দান করেছিলেন বলে শোনা যায়।

মূল্যবান ব্র্যান্ডের পণ্যের চাহিদা:

দেখা গেছে কিছু কিছু অতি দামি ব্র্যান্ডের পণ্যের দাম এত বেশি রাখা হয় বলেই ওই সব পণ্যের চাহিদা তৈরি হয়, যা অর্থনীতির চাহিদা তত্ত্বের (দাম বাড়লে চাহিদা কমে) ঠিক উল্টো। সুইজারল্যান্ডের প্যাটেক ফিলিপ ব্র্যান্ডের সবচেয়ে কম দামের হাতঘড়ির দামও সাড়ে ১২ হাজার মার্কিন ডলার, কিন্তু সে তুলনায় ১০০ ডলারের একটি জাপানি Citizen বা Casio ব্র্যান্ডের ঘড়ি তেমন কোনো খারাপ সময় দেবে না। সমাজের বিত্তবানদের নিজেদের আলাদা শ্রেণি হিসেবে জাহির করার প্রবণতা থেকেই এ ধরনের অতি দামি ব্র্যান্ডের পণ্যের চাহিদা তৈরি হয়। একই কারণেই Louis Vuitton ব্র্যান্ডের মহিলাদের একটি হাতব্যাগের দাম প্রায় ১ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে; আর তার থেকেও নামীদামি Hermes হাতব্যাগের দাম ১০ হাজার থেকে ১০০ হাজার ডলারের বেশি হতে পারে, যদিও অনেক কম দামের একটি সাধারণ ব্যাগের তুলনায় এদের গুণগত মানে এমন কোনো বেশি পার্থক্য আছে বলা যায় না।

অভিজাত ক্লাবের সদস্য পদের মূল্য নির্ধারণ:

দেখা যায় যে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী সামাজিক ক্লাব ‘ক্যালকাটা ক্লাব’ বা ঢাকার ‘ঢাকা ক্লাব’-এর সদস্য পদ পেতে হলে এককালীন ও নিয়মিত যে ফি দিতে হয় তা ওই সব ক্লাবের সদস্য হিসেবে পাওয়া সুযোগ-সুবিধার তুলনায় অনেক বেশি। তবে ক্লাবের পরিচালকেরা ইচ্ছা করলে তার থেকে অনেক বেশি ফি নির্ধারণ করলেও সদস্য পদ পেতে আগ্রহী মানুষের অভাব হবে না, অর্থাৎ বাজারদরের থেকে কম মূল্য তাঁরা ইচ্ছা করেই নির্ধারণ করছেন। কেন?

এ ধরনের ক্লাবে মোটাদাগে দুই শ্রেণির সদস্য থাকেন: এক, সমাজের নামীদামি প্রভাবশালী ব্যক্তি, যথেষ্ট সচ্ছল হলেও যাঁদের সহায়-সম্পত্তি অফুরন্ত নয়। দুই, খুবই বিত্তশালী হলেও সামাজিক মর্যাদায় পিছিয়ে আছেন, যাঁরা সামাজিক কৌলীন্য অর্জন এবং প্রথম শ্রেণির ব্যক্তিদের সঙ্গে সখ্য অর্জনের একটা উপায় হিসেবে সদস্য পদ লাভের জন্য অনেক বেশি ব্যয় করতে সক্ষম ও আগ্রহী। কিন্তু অত বেশি ফি নির্ধারণ করলে প্রথম শ্রেণির সদস্যদের আনুপাতিক সংখ্যা ক্রমে কমে যাবে, যার ফলে ক্লাবটির সদস্য পদের সামাজিক মর্যাদাও কমতে থাকবে। পরিণামে দ্বিতীয় শ্রেণির সদস্যরাও অত বেশি খরচ করে সদস্য পদ পেতে বা ধরে রাখতে আর আগ্রহী থাকবেন না।
জাতীয় পদক–পুরস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি:

সব দেশেই সমাজের নানা ক্ষেত্রে বড় অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে কিছু অগ্রগণ্য ব্যক্তিদের বিভিন্ন জাতীয় পর্যায়ের উপাধি ও পদক দিয়ে ভূষিত করা হয়। বলার অপেক্ষা রাখে না যে টাকার অঙ্কে ওই সব পদক ও সম্মানীয় মূল্য যা, অনেক আগ্রহী পদক প্রার্থীরা তার থেকে অনেক বেশি দাম দিয়ে সেগুলো কিনতে চাইতেন। তবে সামাজিক অবদানের একটা মাপকাঠির বিচারেই পদকগুলো দেওয়া হয়, আর সে জন্যই এগুলো মর্যাদার দিক থেকে মূল্যবান।

তবে যেকোনো সরকারের পদক প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ দুটি বিবেচনা মাথায় রাখে: এক, সত্যিকার উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাই করে পদকগুলোর মর্যাদা ধরে রাখা; দুই, ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতি সমর্থন বা আনুগত্যের জন্য পুরস্কৃত করা। এ দুটি বিবেচনার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা সহজ নয়। দ্বিতীয় বিবেচনা অতিরিক্ত প্রাধান্য পেলে পদকগুলোর মর্যাদাও কমতে থাকে এবং একসময় দেখা যেতে পারে যে পদকগুলোর এত অবমূল্যায়ন ঘটেছে যে সরকারের অনুগ্রহভাজনদেরও এগুলো পাওয়ার আগ্রহ কমে গেছে। অনেক উন্নয়নশীল দেশেই সে রকমটা হতে দেখা যায়, কারণ ব্যক্তি খাতের উদ্যোক্তারা আর্থিক লাভ-ক্ষতির হিসাব করতে যে রকম পারদর্শী, সরকারের প্রশাসনযন্ত্র রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতির হিসাবের বিষয়ে সে রকম পারদর্শিতা সাধারণত দেখাতে পারে না। ফলে এসব পদক-পুরস্কার প্রদানের পেছনে সরকারের যে দুটি উদ্দেশ্য থাকে, তার কোনোটিই হয়তো শেষ পর্যন্ত আর তেমন পূরণ হয় না।

এই শেষোক্ত উদাহরণটি অর্থনীতির ‘পাবলিক চয়েস’ তত্ত্বের আওতায় পড়ে, যে তত্ত্বের সূচনা করেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ জেমস বুকানান (James Buchanan)। এই তত্ত্ব অনুসারে অর্থনীতির আচরণ যেমন ব্যক্তিস্বার্থ ও মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্য দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়, সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও তেমনি জনস্বার্থে নয় বরং রাজনীতিক ও আমলাদের ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থেই গৃহীত হতে পারে।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ জুলাই ০৭, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ