Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

কৃষিতে এগিয়ে বাংলাদেশের নারীরা (২০২৩)

Share on Facebook

লেখক: ইফতেখার মাহমুদ।

বিশ্বের কৃষিপ্রধান দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ সবচেয়ে দ্রুত বাড়ছে। বৈশ্বিক গড় হারের চেয়ে এখন বেশি নারী দেশের কৃষি খাতে জড়িত। তবে মোবাইল ফোন সেবা, ইন্টারনেট প্রযুক্তি থেকে শুরু করে জমির মালিকানায় তাঁরা এখনো বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এর মধ্যেও সীমিত সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাঁরা কৃষিতে বিরাট অবদান রাখছেন।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) আন্তর্জাতিক কৃষিব্যবস্থায় নারীর ভূমিকা নিয়ে ‘স্ট্যাটাস অব উইমেন ইন অ্যাগ্রিকালচার সিস্টেম-২০২৩’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। গত মাসে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কৃষিতে ২০০৫ সালে নারীর ভূমিকা ছিল ৩৬ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১৯ সালে তা ৯ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশে দাঁড়ায়। কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির হারের দিক থেকে বিশ্বে এটিই সর্বোচ্চ। এরপর রয়েছে নেপাল। একই সময়ে সে দেশে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। আর তৃতীয় স্থানে থাকা মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদরে বেড়েছে ৮ দশমিক ১ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিকভাবে কৃষিতে নারীর ভূমিকা প্রায় ৪০ শতাংশ। বাংলাদেশে এই হার বৈশ্বিক গড় হারের চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি।

এফএওর প্রতিবেদনটি এবার দ্বিতীয়বারের মতো প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে ২০১১ সালে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। দুই প্রতিবেদনেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কৃষি খাত ও বৈশ্বিকভাবে সামগ্রিক কৃষি খাতে নারীর ভূমিকাকে আমলে নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের নারীরা যে কৃষিতে বিপুল অবদান রাখছেন, গবাদিপশু খাতে নজর দিলেই এর প্রমাণ মেলে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, এবার কোরবানিতে গবাদিপশুর বড় অংশ এসেছে প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিদের কাছ থেকে। দেশে এমন প্রায় ১০ লাখ খামার রয়েছে, যার প্রায় ৬০ শতাংশ চালান গ্রামীণ নারীরা। বাংলাদেশ তো বটেই, বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের ৯০ শতাংশ লালন-পালন করেন নারীরা।

এফএওর প্রতিবেদনটি এবার দ্বিতীয়বারের মতো প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে ২০১১ সালে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। দুই প্রতিবেদনেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কৃষি খাত ও বৈশ্বিকভাবে সামগ্রিক কৃষি খাতে নারীর ভূমিকাকে আমলে নেওয়া হয়েছে। এই খাতে নারীর ভূমিকা ও তাতে কতটুকু পরিবর্তন এসেছে, তা তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশের নারীরা ঐতিহাসিকভাবে কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। ফসল কাটার পর তা মাড়াই, রক্ষণাবেক্ষণসহ বেশির ভাগ কাজ তাঁরাই করে থাকেন। কিন্তু পরিবারের নেতৃত্ব এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাঁদের ভূমিকা থাকে কমই। গত কয়েক যুগে পরিবারে নারীর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ
নারীর অংশগ্রহণ কেন বাড়ছে

বাংলাদেশের কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ কেন বাড়ছে, কারণ-ই বা কী—এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর এফএওর ওই প্রতিবেদনে নেই। তাই কারণ অনুসন্ধানে প্রথম আলো দেশের শীর্ষ কয়েকজন কৃষিবিশেষজ্ঞ ও গবেষকের সঙ্গে কথা বলেছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশের নারীরা ঐতিহাসিকভাবে কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। ফসল কাটার পর তা মাড়াই, রক্ষণাবেক্ষণসহ বেশির ভাগ কাজ তাঁরাই করে থাকেন। কিন্তু পরিবারের নেতৃত্ব এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাঁদের ভূমিকা থাকে কমই। গত কয়েক যুগে পরিবারে নারীর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

বাংলাদেশে নারীদের ভূমিকায় যে পরিবর্তন এসেছে, চুয়াডাঙ্গার তরুণী মেরিনা জামান ও তাঁর বান্ধবীদের উদ্যোগ সেটাই বলে দিচ্ছে। মেরিনা ও তাঁর ৯ বান্ধবী মিলে গড়ে তুলেছেন বাণিজ্যিক কৃষি খামার। তাঁদের প্রতিষ্ঠানের নাম ফ্রেন্ডস অ্যাগ্রো প্লানেট। সেখানে ড্রাগন, আগর, কমলা, পেয়ারা, তরমুজ, মরিচ, গ্রীষ্ম ও শীতকালীন সবজি, বেগুন, পেঁপে, চিচিঙ্গা, আলুর চাষ হয়ে থাকে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গা জেলা কার্যালয় থেকে তৈরি তরুণ কৃষি উদ্যোক্তাদের তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে মেরিনার নাম।

মেরিনা বলেন, ‘পেশা হিসেবে কৃষি বেশ চ্যালেঞ্জিং। খামারে উৎপাদন, সংগ্রহ, প্যাকেজিং এবং বাজারে নিয়ে ও অনলাইনে বিক্রির পাশাপাশি নিজেরাও হোম ডেলিভারি করি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের খামারে অর্গানিক পদ্ধতিতে ফল ও ফসল উৎপাদন করা হয়। জৈব সার ও জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করা হয়।’
নানা ক্ষেত্রে বৈষম্য

এফএওর প্রতিবেদনে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে গ্রামীণ নারীদের প্রতি বৈষম্যের বিষয়টি উঠে এসেছে। এতে দেখা গেছে, বিশ্বে বাংলাদেশের গ্রামীণ নারীরা সবচেয়ে কম ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করেন। মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিচের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। দেশের মোট ৬৪ শতাংশ গ্রামীণ নারী মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। পুরুষের ক্ষেত্রে এই হার ৮১ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ১৪ শতাংশ নারী ও ৩০ শতাংশ পুরুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এ ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহারে নারী-পুরুষ বৈষম্য ৫৫ শতাংশ। পাকিস্তানে ১৫ শতাংশ নারী ও ভারতে ২৪ শতাংশ নারী ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন। দক্ষিণ এশিয়ার এই দুটি দেশের অবস্থান বাংলাদেশের চেয়ে কিছুটা ওপরে।

ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহারে বিশ্বে শীর্ষ অবস্থানে আছে মেক্সিকো। ওই দেশের ৬৩ শতাংশ নারী ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। সে দেশে এ ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ বৈষম্য মাত্র ১২ শতাংশ। মূলত ২০২১ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারের তথ্য প্রতিবেদনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে।

ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন ব্যবহারের পাশাপাশি বাংলাদেশের নারীরা বড় কৃষিযন্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। তবে তাঁরা যেখানেই সুযোগ পাচ্ছেন, সেখানেই দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছেন।

পেশা হিসেবে কৃষি বেশ চ্যালেঞ্জিং। খামারে উৎপাদন, সংগ্রহ, প্যাকেজিং এবং বাজারে নিয়ে ও অনলাইনে বিক্রির পাশাপাশি নিজেরাও হোম ডেলিভারি করি।

চুয়াডাঙ্গার মেরিনা জামান

প্রতিবেদনে বাংলাদেশের কৃষিপ্রধান পরিবারগুলো নিয়ে করা দুটি গবেষণার উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব কৃষি পরিবারে নারীরা প্রধান হয়ে উঠেছেন, সেখানে ভিন্ন ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে। সেসব পরিবারে মেয়েশিশুরা বেশি পরিমাণে পুষ্টি পাচ্ছে। নারীরা পরিবারের দায়িত্ব পেলে তাঁরা আয়ের একটি অংশ দিয়ে পরিবারের সবার জন্য পুষ্টিকর খাবার বাড়িয়ে দেন।

শুধু উৎপাদন নয়, কৃষিপণ্য বাজারে পৌঁছানো এবং বিক্রিসহ সব কাজে তাঁদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকে কৃষি খাতে নারী উদ্যোক্তা তৈরির জন্য প্রশিক্ষণ ও সহায়তা বাড়াতে হবে।

বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন

আরেকটি গবেষণায় দেখা যায়, পুরুষপ্রধান পরিবারে সবচেয়ে বেশি পুষ্টিকর খাবার পায় ছেলেশিশুরা।

বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, কৃষি খাতে নারীর কাজকে আর্থিকভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। অর্থাৎ তাঁরা পারিবারিক কৃষির অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেও বিনিময়ে কোনো পারিশ্রমিক পান না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কৃষিকাজে নারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া বাড়িয়েছেন। যে কারণে অন্যান্য খাতেও তাঁদের ভূমিকাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শুধু উৎপাদন নয়, কৃষিপণ্য বাজারে পৌঁছানো এবং বিক্রিসহ সব কাজে তাঁদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকে কৃষি খাতে নারী উদ্যোক্তা তৈরির জন্য প্রশিক্ষণ ও সহায়তা বাড়াতে হবে।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ: জুলাই ০৭, ২০২৩

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ