Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

জ্যামিতির সূত্র ভঙ্গ -২

Share on Facebook

মজিদ মিয়া ঢাকায় সরকারের একটি কমিশন দপ্তরের টাইপিষ্ট। বগুড়া -রংপুর মহা সড়কের পাশে গোবিন্দগঞ্জ পার হয়ে মজিদ মিয়ার বাড়ি। গত সাত মাস হল মজিদ মিয়া বিয়ে করেছেন। শ্বশুড় বাড়ি তার বাড়ির পাশেই, তবে একটু দূরে। রিক্সায় চলচল। তিন কিলোমিটার হবে।

মজিদ মিয়া ঢাকায় থাকেন বড় ভাই, ভাবী ও একমাত্র ভাতিজার সাথে।

মজিদ মিয়ার নতুন বউ প্রায় বাবার বাসায় থাকেন। এ পর্যন্ত মজিদ মিয়া সাত মাসে প্রায় বিশ বার গোবিন্দগঞ্জ গিয়েছেন কখনো উঠেছেন শ্বশুড় বাড়ি। আবার কখনো কখনো বউ আগে থেকেই মজিদ মিয়ার বাড়িতে এসে থাকেন।

মজিদ মিয়ার বউ এর নাম রেখা আকতার। মজিদ মিয়া যখন বাড়িতে আসেন তখন মজিদ মিয়া রেখা আকতারের মধ্যে অনেক কথা হয়। মজিদ মিয়ার ধারণা তার বউ রেখা আকতার সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে। এমন সুন্দরী মেয়ে সে তার জীবনে কখনো দেখেনি। বউ এর অজান্তে সে তার বউকে দেখেছে অপলক দৃষ্টিতে বহু সময় ধরে বিশেষ করে রেখা আকতার যখন একচিত্ত মনে রান্না বা ঘরের কাপড় ও জিনিস পত্র সাজাত। রেখা আকতারের কথাগুলি সব সময় আদুরে আদুরে মনে হয়েছে এই কয়েকটা মাসে।

রেখা আকতার তার লাগানো সজনা গাছ, লাউ গাছ, মাছ ধরার কথা, স্কুলের বান্ধবিদের কথা, পুকুরের গোছলের কথা নানান ভাবে বর্ণনা দিয়ে বলত, আর মজিদ মিয়ার মনে হত এক পরী যেন কথা বলছে তার সাথে। তাই কখনো সাহস হয় নি পরীর কথা থামিয়ে দিতে। পরীর কথা শুনতে পাচ্ছে এতে মজিদ মিয়ার কৌতহলের শেষ নাই। বার বার মজিদ মিয়ার মনে হয়েছে আরো আগে বিয়ে করা দরকার ছিল। বউকে বলে কেন যে তোমার দেখা আগে পাইলান না, মন বড়ই শান্তি পাইতো। কথা শুনে রেখা মৃদু হাসি মুখে বলে ঠিকই বলছো আগে বিয়া হওয়া দরকার ছিল, জীবনে যে কত কিছু বাকি !

মজিদ মিয়া তার বউকে ঢাকায় তার বড় অফিসের বর্ণনা দিয়েছে, কী কাজ সে করে। আর বুঝাতে চেয়েছে ভালো একটা দামি অফিসে কাজ না করলে তার মত পরীর মত বউ তার ঘরে আসত না। রেখা আকতারের বাবা বা তার স্বজনরা মজিদ মিয়ার ঘরে এই পরীকে পাঠাতো না।

বড় সাহেবদের লেখা সে টাইপ করে দেয় আর তা অনেক সরকারী অফিসে বিতরণ হয়। কখনো সংবাদ পত্রে তার টাইপ করা লেখা লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ পড়ে। কিন্তু মজিদ মিয়া তার পরীর মত ঘর আলো করা ফুলের সুবাস ভেসে আসা বউকে বলেছে যে ঐ সব টাইপ করা কাগজে তাঁর কোন স্বাক্ষর থাকে না। এবং বউকে বুঝিয়েছে যে স্বাক্ষরের অনেক অনেক মূল্য।

রেখা আকতার এবার তার প্রিয় স্বামীকে বলেছে আমি ঢাকায় থাকতে চাই তোমাকে নিয়া, কি ঢাকায় নিয়া যাবা না ! একা একা বাবার বাড়িতে আমার ভালো লাগে না, দুনিয়া খালি খালি মনে হয়, রাতে জানালা দিয়ে আকাশ দেখি। বাবার বাড়ির লোকজন নানান কথা বলে। এসব শুনতে আমার ভালো লাগে না, শুনা লাগবই বা কেন! আমি ঢাকা যাব এবার তোমার সাথে, এক কথা আমার। শুনো এখন বউ-জামাই আলাদা থাকে না এক লগে থাকে, অনেক শান্তি তাতে।
মনে মনে মজিদ মিয়া বলছে আমার পরী বউ কথা বলছে তার মনে কথা বলতেই পারে! মন খুইলা বলে যাক। কথা না থামিয়ে দিয়ে বরং মজিদ মিয়া অবাক হয়ে পরী বউ এর কথা শুনে যাচ্ছে।

রেখা আকতার বলছে ” শোন ঢাকায় গেলে আমি বসুন্ধরায় বেড়াব, ঘুড়ব, ওখানে খাব। একটা লাল রঙের শাড়ি কিনব ওখান থেকে। ”
মজিদ মিয়া জানতে চাইল ” তুমি কী ভাবে বসুন্ধরা চিন”
– টিভি নাটকে দেখছি। এখানে একটা সিনেমা হল আছে, খাওয়ার পর সিনেমাও দেখব”
একদিন নন্দন পার্কে বেড়াতে যাব।

এ ভাবে নানান কথা বলল রেখা আকতার, মজিদ মিয়া থামাতে চায় নি। মজিদ মিয়ার ভিতরের মন বলে- পরীর মত বউ প্রিয় স্বামীকে অনেক কথা বলতেই পারে তা ছাড়া তার মনের কথা আর বলবেই বা কাকে!! তার প্রিয় স্বামীকেই তো বলছে। ছয় বা সাত দিন পর পর স্বামীর সাথে দেথা হয় ঐসব দিনে মনে তো অনেক কথা জমা থাকারই কথা। আর সকলের উচিত মন খুলে কথা বলা।

মজিদ মিয়া মনে মনে ভাবে জিনিস পত্রের যে দাম সংসার খরচ যে একন অনেক বেড়ে গেছে এক কথা গুলি পরী বউকে বুঝালে, ঠিকই বুঝবে।

মজিদ মিয়া পরী বউ রেখা আকতারকে ঢাকায় নিয়ে আসলে কোথায় কোথায় বেড়াতে নিয়ে যেত তার একটা বিবরণী তৈরী করে রেখেছ।

প্রথমে রিক্সায় করে তার অফিসটা দেখাবে বাইর থেকে এবং নিয়ে যাবে বন্দের দিনে। ভাতিজা যে স্কুলে পড়ে, সে স্কুলে নিয়ে যাবে। যে মসজিদে নামাজ পড়ে। যে দোকান থেকে চাল কিনে, শাক-সব্জি, তেল সাবান। এই সব জায়জায়। আর বেশি যদি জেদ ধরে তা হলে চিড়িয়া খানা। আর বুঝিয়ে বলবে যে, আসলে ভাই এর বাসায় বেশি দিন থাকা হবে না, বেতন আর কিছুটা বাড়লে, নিজেরাই বাসা নিবে। ততদিন বাবার বাড়িতে আর মাঝে মাঝে মজিদ মিয়া বাড়িতে।

মজিদ মিয়া ও রেখা আকতার বা আমাদের ছোট হোক আর বড় হোক সব আশাগুলি কেমন জানি ত্রিভূজের মত, চতুর্ভূজের মত, পঞ্চ ভূজ, আষ্টম ভূজের মত। কোনটার সাথে কোনটা মিল নেই।

বসুন্ধরা সপিং মলের সাথে কি গলির পাশে শাক-সব্জি, তেল সাবানের দোকারে কোন মিল আছে!! জ্যামিতির নানান সূত্রে বাঁধা পড়া আমাদের জীবন তা অনেকেই ভেঙ্গে স্বপ্ন পূরণ করতে চাই অবশেষে জ্যামিতির নানান সূত্রে বাঁধা পড়া জীবনে বন্দী থাকতে হয়।

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ