Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

তালেবানের সামনে এখন মেধাশূন্য আফগানিস্তান (২০২১)

Share on Facebook

এএফপি অবলম্বনে লিপি রানী সাহা

তালেবান বাহিনী আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সেখান থেকে ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে বিভিন্ন দেশের সেনাসদস্যসহ আফগানিস্তানের অনেক সরকারি কর্মী, আইনজীবী, ব্যাংকার, সমাজকর্মী, সাংবাদিকসহ নানা পেশার দক্ষ কর্মীরা রয়েছেন।

মূলত তাঁরাই ছিলেন সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আফগান সরকার এবং সমাজের চালিকা শক্তি। কিন্তু তালেবানের চোখে তাঁরা দুর্নীতিগ্রস্ত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মেধাবী জনগোষ্ঠীকে হারানোর কারণে বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র এই দেশটি পরিচালনা ও গঠনে তালেবানকে বেশ বেগ পেতে হবে।

রাচিদ নামে কাবুলের এক সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ফ্রান্সে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমি কখনো আমার দেশ ছাড়তে চাইনি। কিন্তু এখন আমি স্ত্রী–সন্তানসহ ফ্রান্সে আশ্রয় নিতে চাচ্ছি।’

ইউরোপের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে পড়াশোনা করা ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আফগানিস্তানে আমার সব ছিল। কাজ নিয়েও আমি সন্তুষ্ট ছিলাম। আমার অধীনে ৫০ জন কাজ করতেন। আমার সামাজিক মর্যাদা ছিল। সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আমি আফগানিস্তানের জনগণের জন্য এত দিন যা করলাম, তার সবই বৃথা গেল।’

নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে ওই ব্যক্তি তাঁর পুরো নাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য না প্রকাশের অনুরোধ জানিয়েছেন। কারণ, কখনো যদি তাঁর পরিবার দেশে ফিরতে পারে তাহলে হয়তো নৃসংসতার শিকার হতে হবে বলে আশঙ্কা তাঁর।

রাচিদ বলেন, ‘আমার সঙ্গে যে ৩০ বা ৪০ জন পড়াশোনা করছেন, তাঁরা সবাই দেশ ছেড়েছেন। এটি দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’

বছরের পর বছর ধরে যারা আত্মঘাতী বোমা হামলা ও বেছে বেছে লোকজনকে হত্যা করেছে, এখন সেই তালেবানের হাতে দেশ। তাই এই বাহিনীর শাসনকালে নিরাপদে ও স্বাধীনভাবে কাজ করা অসম্ভব বলে মনে করেন রাচিদের মতো অনেকে।

ইউরোপের দেশ লুক্সেমবার্গ ইনস্টিটিউট অব সোশিও-ইকোনমিক রিসার্চের অভিবাসীবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ফ্রেডেরিক ডকোইয়ার আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সিরিয়ার উদাহরণ টানেন। তিনি বলেন, ২০১৫ সালে সিরিয়া ছেড়ে আসা দেশটির দক্ষ কর্মীর মধ্যে শিক্ষিতদের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল।

আফগান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আসলেই জানি না দেশ ছেড়ে যাওয়া আফগানদের মধ্য কত ধরনের পেশার মানুষ রয়েছে। কিন্তু যখন দেশটিতে একটি সংকট তৈরি হয়…দেখা যায় আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে শিক্ষিত লোকজনের সংখ্যাই থাকে অনেক বেশি।’

আফগানিস্তান বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মাইকেল ব্যারি কাবুলে আমেরিকান ইউনিভার্সিটির শিক্ষক। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত তারা (তালেবান যোদ্ধা) দেশকে ধ্বংস ও প্রশাসনকে পতন ঘটানোকে প্রধান দায়িত্ব মনে করেছে। আর এ জন্য তারা পাকিস্তান থেকে আর্থিক সহায়তা পেয়েছে।

আর বর্তমান পরিস্থিতিতে তালেবানের দক্ষতা প্রসঙ্গে তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, প্রশাসনের চাকাকে সর্বদা চালু রাখতে তাদের (তালেবান) ন্যূনতম প্রযুক্তিগত দক্ষ লোকজন লাগবে, উচ্চশিক্ষিত লোকজন লাগবে। এ জন্য তাদের আন্তর্জাতিক সহায়তাও লাগবে।

তালেবান হয়তো এ অবস্থা ইতিমধ্যে বুঝতে শুরু করেছে। কারণ গত ২৪ আগস্ট তালেবান বাহিনীর এক মুখপাত্র অভিযোগ করে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘আফগান বিশেষজ্ঞদের’ সরিয়ে নিচ্ছে।

কাবুলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছিলেন, ‘আমরা তাদের এটি করতে নিষেধ করেছি। দেশটির নিজেদের বিশেষজ্ঞ জনবলকে দরকার। তাদের অন্য দেশে নিয়ে যাওয়া উচিত নয়।’

এত কিছু জানার পরও তালেবান কেন তাদের স্বঘোষিত শত্রু যুক্তরাষ্ট্রকে আফগানিস্তান থেকে অনেক দক্ষ জনবলকে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যারি বলেন, তারা এটি করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নিজেদের উদার হিসেবে উপস্থাপন করেছে এবং একই সঙ্গে তারা সম্ভাব্য বিরোধিতা থেকেও রেহাই পাচ্ছে।

ব্যারি বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী শ্রেণি মানেই তাঁরা মুক্তচিন্তার মানুষ হবেন, তাঁরা বিভিন্ন বিষয়ে সমালোচনা করবেন। যে সমাজে ব্যাপক দমন–পীড়ন হয়, সেখানে এই বুদ্ধজীবীরা হয়ে ওঠেন বিরোধী শক্তি। আপনি যখন তাঁদের দেশ ছাড়ার সুযোগ দেবেন, তার মানে এর মধ্য দিয়ে বিরোধিতার আশঙ্কা আপনি দূর করলেন।’

নির্বাসনে থেকেও অনেকে দেশের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখে। শিল্প-বাণিজ্য খাতে উন্নয়নে সহায়তা করে, পাশাপাশি বিনিয়োগ করে। কিন্তু তালেবান যদি তাদের পশ্চিমাবিরোধী প্রচারণাসহ আগের মতোই কট্টর নীতিমালা অব্যাহত রাখে, তাহলে এখন যাঁরা নির্বাসনে আছেন, তাঁরা নিজে দেশে ফিরতে দীর্ঘ সময় নেবেন।

সোমালিয়ার আলী এইচ ওয়ারসেম নামের এক নাগরিক বর্তমানে কেনিয়ার নাইরোবির ইস্ট আফ্রিকা ইউনিভার্সিটির শিক্ষক। তিনিও একই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, ‘৩০ বছর আগে আমি আমার দেশে একই অবস্থা দেখতে পেয়েছিলাম। এর সঙ্গে আফিগানিস্তান পরিস্থিতির অনেক মিল আছে। গৃহযুদ্ধ, একটি আদিবাসী সমাজ…। আমি ১৯৯০ সালে দেশ ছেড়েছিলাম। সেই বছরই আমি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করি। এরপর নিজ দেশে ফিরতে আমার ২০ বছর লেগেছে।’

এএফপি অবলম্বনে লিপি রানী সাহা

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ০৭, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ