Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

দুই নৌকায় পা রাখা নীতিতে আর কত দিন চলতে পারবে ভারত ! (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:লাখবিন্দর সিং ও দলবীর আহলিয়াত।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বকে মেরুকরণের দিকে ঠেলে দিয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলো কঠিন এক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে—তারা এখন পশ্চিমা উদার গণতান্ত্রিক শিবিরে যাবে নাকি রাশিয়া–চীনের এককেন্দ্রিক–কর্তৃত্ববাদী শিবিরে যাবে। উন্নয়নশীল দেশগুলো এখন তাদের নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে ভূরাজনৈতিক কৌশলের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য স্বার্থগুলোও বিবেচনা করছে। এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই যে, উন্নয়নশীল দেশগুলো কোন শিবিরে যাচ্ছে, তা নিয়ে তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনা আছে। কিন্তু ভারতের মতো যে দেশগুলো বড় শক্তি হওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে, সেই দেশগুলো ইন্দো–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ভূরাজনীতিতে কীভাবে সাড়া দেবে, তা নিয়ে উভয়সংকটে পড়েছে।

সাম্প্রতিক কালে ইন্দো–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলটি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার ক্ষমতা দ্বন্দ্বের ভারকেন্দ্র হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন তাঁর সিঙ্গাপুর সফরে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে কিছু উদ্যোগ চালু করেছেন। চীনের একক কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে যাতে আঞ্চলিক স্থিতিবস্থা নিশ্চিত করা যায়, সে লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ। যুক্তরাষ্ট্রের এসব উদ্যোগ নিজেদের স্বার্থের অনুকূলে থাকলেও ওই অঞ্চলের দেশগুলো খুশিমনে যুক্তরাষ্ট্রের পেছনে হাঁটতে পারছে না। এর কারণ হলো, দেশগুলো বেইজিংয়ের সঙ্গে শক্তভাবেই বাণিজ্য সম্পর্কে যুক্ত। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ঘোষিত উদ্যোগগুলো বিকল্প বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কম কার্যকর বলে প্রমাণিত হচ্ছে। সামরিক ও অর্থনৈতিক—দুই ক্ষেত্রেই চীনের আঞ্চলিক প্রভাবকে খর্ব করার ক্ষেত্রে এ উদ্যোগগুলো তেমন কাজে আসবে না।

ইন্দো–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বাড়ানোর প্রথম প্রচেষ্টা শুরু হয় বারাক ওবামার আমলে। কিন্তু জোট ও মিত্রদেশগুলোর জন্য বাস্তব কোনো উদ্যোগ না থাকায় চীনকে ধরার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগগুলো বারবার অকার্যকর হয়েছে। এতে আঞ্চলিক দেশগুলো নিরাপত্তার বিষয়টিতে একটা উভয়সংকটে পড়েছে। দৃষ্টান্ত হিসেবে ট্রান্সপ্যাসিফিক পার্টনারশিপের (টিপিপি) কথা বলা যায়। এটি দাঁড় করাতে ব্যর্থ হওয়ায় চীনের অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের বিপরীতে জাপান বাধ্য হয়েছে কম্প্রিহেনসিভ অ্যান্ড প্রগেসিভ আগ্রিমেন্ট ফর ট্রান্সপ্যাসিফিক পার্টনারশিপ (সিপিটিপিপি) গড়ে তুলতে।

একইভাবে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের নৌবাহিনীর বিস্তার ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও জাপানকে বাধ্য হতে হয়েছে নিজেদের সমুদ্র অঞ্চলের নিরাপত্তা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে। আঞ্চলিক অন্য দেশগুলোও এখন মনে করতে শুরু করেছে যে চীনের নৌশক্তি বিস্তারের বিপরীতে পাল্টা কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সক্ষম নয় যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন হাব অ্যান্ড স্পোক (সাইকেলের চাকার মতো একটা নিরাপত্তাবলয়। যেখানে কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্র। অন্য দেশগুলো একেকটা স্পোকের মতো) পদ্ধতির নিরাপত্তাব্যবস্থা এখন দিশাহারা অবস্থায় পৌঁছেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ইন্দো–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শক্তিশালী দেশগুলোর ওই অঞ্চলের নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার এবং আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করার সময় এসেছে।
উভয়সংকটে ভারত

ভারতের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে প্রধান চ্যালেঞ্জটা হলো চীনের উত্থান। ম্যাকমোহন লাইন নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যকার বিরোধ টগবগিয়ে ফুটছে। দুই দেশের সেনারা সীমান্তে পরস্পরের চোখে চোখ রেখে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ডোকলাম এবং প্যানগং লেকের সংঘাতের ঘটনা থেকে এটা স্পষ্ট যে দুই পক্ষের উত্তেজনা যেকোনো সময় বড় সংঘাতে রূপ নিতে পারে। এ ছাড়া ভারত মহাসাগরে নৌশক্তির বিস্তার এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতেও বাণিজ্য ও সহযোগিতা বাড়িয়েছে চীন। নয়াদিল্লির জন্য এসব পদক্ষেপ ভীষণ উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। কেননা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ঐতিহ্যগতভাবে ভারতের প্রভাববলয়ের দেশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বেইজিং ভারতের চিরশত্রু পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়িয়েছে। ভারতের কাছে এর অর্থ হচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের আধিপত্য খর্ব করে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য চীন শক্তি প্রদর্শন করছে।

ভারত আবার চীনের নেতৃত্বে পরিচালিত বেশ কয়েকটি উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা), এসসিও (সাংহাই কো–অপারেশন অর্গানাইজেশন), আরআইসি (রাশিয়া–ভারত–চীন), এআইআইবি (এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক)। চীনের সঙ্গে উত্তেজনা ক্রমাগতভাবে বাড়ার পরও ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পুরোপুরি যুক্ত হতে পারবে না; এর পেছনে অনেক বাস্তব কারণ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে আগে বিবেচ্য বিষয়টি হলো, ২০২০ সালে গালওয়ান উপত্যকায় আগ্রাসনের ঘটনায় আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনকে দোষারোপ না করে দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্ততা করার প্রস্তাব করেছিলেন। নিজেদের দাবি করা ভূখণ্ড থেকে সরিয়ে নিতে চীনকে চাপ দিতে শেষে রাশিয়ার শরণাপন্ন হতে হয়েছিল নয়াদিল্লিকে।

চীনের সঙ্গে ভারতের জটিল এই সম্পর্ক এবং রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বিরোধের কারণে নয়াদিল্লি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুতর উভয়সংকটে পড়েছে। এই কিংকর্তব্যবিমূঢ় পরিস্থিতির কারণে নিরাপত্তানীতিতে কোনো স্পষ্ট অবস্থান নিতে পারছে না দিল্লি। বর্তমানে একই সঙ্গে চীনের নেতৃত্বাধীন এসসিও জোট এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন কোয়াড জোটে রয়েছে ভারত। অন্য কথায় দিল্লি এখন পরস্পর বিপরীত দিকে চলা দুটি নৌকায় পা দিয়ে চলছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এই কৌশলগত সার্বভৌম অবস্থান খুব ভালোভাবেই কাজ করছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই নীতিতে কত দিন আর চলতে পারবে ভারত?

ইউক্রেন যুদ্ধ চীন ও রাশিয়াকে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। এই কেন্দ্রীকরণ ভারতের জন্য নিরাপত্তা ও কৌশলগত উভয়সংকট তৈরি করেছে। এর ফলে ভারত আর খুব বেশি দিন নিজেদের এই কৌশলগত সার্বভৌম অবস্থান বজায় রাখতে পারবে না। ভারতের পক্ষে খুব বেশি দিন আর রাশিয়ার সঙ্গে ঐতিহাসিক এবং চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে রাশিয়াকে এক ঘরে করা ও চীনকে ধরার পশ্চিমা নীতির পক্ষে থাকা সম্ভব হবে না।

ভারতের সামনে দুটি বিকল্প রয়েছে। প্রথমটি হচ্ছে, দুই শিবিরের মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নেওয়া। সে ক্ষেত্রে ভারতের নিরাপত্তা ও অর্থনীতিতে গুরুতর প্রভাব পড়বে। দ্বিতীয় বিকল্প হচ্ছে, পুরোনো জোটনিরপেক্ষ নীতিতে ফিরে যাওয়া। সেটা ভারতকে চলমান বৈশ্বিক ক্ষমতার রাজনীতি থেকে দূরে রাখবে। যদিও বর্তমান আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ব্যবস্থা থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখা ভারতের পক্ষে সম্ভব নয়। জটিল এ পরিস্থিতিতে ভারতের সামনে কি তৃতীয় কোনো বিকল্প আছে?

কোনো শিবিরে সরাসরি যুক্ত হওয়া কিংবা কোনো শিবির থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার বদলে ভারত এখন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বহুপক্ষীয় নীতি গ্রহণ করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে নিরাপত্তা চাকার একটি স্পোক না হয়ে ভারতের এখন উচিত অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুরের মতো সমমনা দেশগুলোর সঙ্গে একটি নতুন আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক জোট করা। এতে আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। ভারতের সক্রিয় ভূমিকা পালনের সময় এসেছে।

****লাখবিন্দর সিং সিউলে অবস্থিত এশিয়া ইনস্টিটিউটের পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের পরিচালক
দলবীর আহলিয়াত অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা অধ্যয়ন অ্যান্ড অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক

এশিয়া টাইমস থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনুবাদ মনোজ দে

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: জুন ১৭, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ