Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

পশ্চিমাদের প্রতি পুতিন ও সি চিন পিংয়ের এত ক্ষোভ কেন (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:অরভিল স্কেল।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর খবর আমার কম্পিউটার স্ক্রিনে আছড়ে পড়ার সময়েই আমি একটি ই-মেইল পেলাম। পুরোনো বিশ্বব্যবস্থা যে ভেঙে পড়ছে, সেটার আরেকটি যুগান্তকারী চিহ্ন হিসেবে বিবেচিত হতে পারে ই-মেইলটি। নিউইয়র্কের কার্নেগি হলে ভিয়েনা ফেলহারমোনিক কনসার্টে অংশগ্রহণের জন্য টিকিট-সম্পর্কিত একটি গ্রাহকসেবা বার্তা। সেখানে বলা হয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বন্ধু ও বিশিষ্ট সমর্থক’ ভ্যালেরি গের্গিয়েভ আর অর্কেস্ট্রা পরিচালনা করছেন না।

রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর আগপর্যন্ত, চীন ও রাশিয়া থেকে পশ্চিমারা যে তাদের সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে নিয়ে আসতে পারবে, সেটা অসম্ভব ও নির্বোধের সিদ্ধান্ত বলে ভাবা হতো। ইউক্রেন আগ্রাসনের বিরোধিতা করায় গের্গিয়েভকে যে অপসারণ করা হলো, সেটা চীন-রাশিয়া অক্ষশক্তির প্রতীক। সংস্কৃতি থেকে বাণিজ্য—সবখানেই একটা ফাটল তৈরিতে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করছে এই সম্পর্ক। সর্বোপরি, আগ্রাসন শুরুর আগপর্যন্ত অনেকের সন্দেহ থেকেই গিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (বিশেষত জার্মানি) রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস হাতছাড়া করবে কি না। একইভাবে অনেকের সন্দেহ ছিল, যুক্তরাষ্ট্র কি চীনের তৈরি কম খরচের পণ্যের আসক্তি কাটাতে পারবে?

বিশ্বায়নের শান্তিপূর্ণ দিনগুলোতে যখন ‘ডাভোস ম্যান’ পৃথিবী শাসন করতেন, তখন দুই পক্ষেরই জয়ের একটা সুবাতাস বয়ে যেত। বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় সবার জন্য মুনাফার সুযোগ সৃষ্টির বাধ্যবাধকতা ছিল। প্রশ্ন হচ্ছে, দূরের কোনো দেশ যদি সস্তায় পণ্য তৈরি করে এবং সেই পণ্য যদি দ্রুত পৌঁছানো যায়, তাহলে সেটা নিতে বাধা কোথায়? মুক্ত বাজার আরও মুক্ত সমাজের জন্য ওকালতি করে। তবে কোনো দেশের রাজনৈতিক ও মতাদর্শিক অবস্থান বিবেচনা না করেই আমরা আন্তরাষ্ট্রীয় বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছি। পশ্চিম ও বাকি বিশ্ব এটা করে এখন রাশিয়ার ওপর গ্যাসের জন্য এবং চীনের ওপর খনিজ ও রাসায়নিক দ্রব্য, পলি সিলিকন, প্রসাধনী এবং ভোগ্যপণ্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

এই অপ্রত্যাশিত ও বিনাশী পথে বিশ্বকে কে নিয়ে এল? কেন পুতিন রাশিয়ার জাতীয় স্বার্থকে ছুড়ে ফেলে একসময়কার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ইউক্রেনে হামলা চালাল? কেন সি চিন পিং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তার দেশের জনগণের যে জাদুকরী অর্জন সেটাকে ছুড়ে ফেলে এমন একটা দ্বীপ করায়ত্ত করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন যেখানে এক শ বছরের বেশি সময় চীনের শাসন নেই। বিশ্ব যখন পারস্পরিকভাবে আরও বেশি নির্ভরশীল হয়ে উঠছিল, সে সময়েই কেন এই দুই কর্তৃত্ববাদী শাসকের এ ধরনের ধ্বংসাত্মক নীতি গ্রহণ করতে হলো?

প্রথমত, স্বৈরশাসকেরা সাধারণত অসংযমী পথে হাঁটতে অনেক বেশি স্বাধীন। কেননা রাজনৈতিকভাবে ভারসাম্য রক্ষার খুব একটা চর্চা তাদের করতে হয় না। একজন শীর্ষ নেতা তার চরিত্রের ধরন অনুযায়ী, কারও কোনো চ্যালেঞ্জ ছাড়াই নীতি নির্ধারণ করেন। পুতিন ও সি চিন পিং ভিন্ন প্রেক্ষাপট ও ব্যক্তিত্বের অধিকারী হলেও তাঁদের দুজনের মধ্যে কিছু মূল বৈশিষ্ট্যে মিল রয়েছে। তাঁরা দুজনেই গভীরভাবে অনিরাপদ বোধকারী ও ভ্রমগ্রস্ত ব্যক্তি। পশ্চিমের ‘বড় শক্তি’র বিরুদ্ধে ক্ষোভই তাঁদের ঐতিহাসিক বয়ান। তাঁদের এই বয়ানের উৎস হচ্ছে বিদেশি শাসন ও শোষণসম্পর্কিত লেনিনবাদী ভাবনা। তাঁরা পশ্চিমা গণতন্ত্রকে ভণ্ডামি বলে মনে করেন (লেনিনের সাম্রাজ্যবাদ তত্ত্ব)। তাঁরা পশ্চিমাদের প্রতি অহংকারী ও অপমানজনক মনোভাব পোষণ করেন।

সবকিছুর পরও, পুতিন ও সি চিন পিং সম্মান চান। তাঁরা সেটা চাইলেও বেশির ভাগ পশ্চিমা নেতা তাঁদের কর্তৃত্ববাদী শাসন পছন্দ করেন না। উচ্চগতির রেললাইন, আধুনিক নগর নির্মাণ কিংবা অলিম্পিক আয়োজনে চীন ও রাশিয়া কতটা সফল, সেটার বিবেচনা পশ্চিমা নেতারা করেন না। এই সম্মান না পাওয়ার বঞ্চনা থেকেই চীন ও রাশিয়ার ‘বিরক্তি ও ক্ষোভের সাম্রাজ্য’-এর জন্ম। পুতিন ও সি চিন ভালো করেই জানেন, পররাষ্ট্র, প্রযুক্তি ও মহাকাশনীতিতে তারা কতটা সফল, কিংবা বিশ্বের কাছে কতটা তেল ও গ্যাস তারা বিক্রি করল, তা দিয়ে পশ্চিমাদের কাছে নিজেদের সম্মান অর্জন করতে পারবেন না।

পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে চীন ও রাশিয়ার যৌথ এ ক্ষোভ সাবেক দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে এতটাই কাছে নিয়ে এসেছে যে গত মাসে বেইজিংয়ে পুতিন ও সি চিন পিং এক যৌথ বিবৃতিতে দুই দেশের অংশীদারত্বের কোনো ‘সীমা’ নেই বলে ঘোষণা করেছেন। দুই নেতাই তাঁদের দেশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হবে কি না, সেটা জনগণের সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন। পুতিন ও সি চিন দাবি করেন, তাঁরা নতুন একধরনের গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছেন। যদিও পুতিন নিজেকে জারের সঙ্গে কিংবা সি চিন পিং নিজের দেশের শাসনব্যবস্থাকে, ‘সর্বহারার গণতান্ত্রিক একনায়কতন্ত্র’ ভাবতেই পছন্দ করেন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পুতিনের যুদ্ধ ঘোষণার পরও রাশিয়া ও চীন কি তাদের সুবিধাবাদী এই চুক্তি বজায় রাখতে পারবে? আগ্রাসন শুরুর ঠিক আগে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে বলেন, সব দেশের ‘সার্বভৌমত্ব’ ও ‘সীমানাগত অখণ্ডতা’ অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। ইউক্রেনও এর বাইরে নয়। পরবর্তীকালে সি চিন পিং পুতিনের কাছে এর ব্যাখ্যা দেন। রাশিয়ার নিরাপত্তাজনিত যে শঙ্কা, তা তিনি বুঝতে পারছেন বলে জানান। তিনি বলেন, জাতিরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রাশিয়া সম্মান করে এবং এ বিষয়ে জাতিসংঘ সনদের যে নীতি, তা ঊর্ধ্বে তুলে ধরার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। সর্বোপরি চীনের কমিউনিস্ট পার্টি কখনোই চায় না বিদেশি শক্তি রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাক।

এই দুটি অবস্থানের মধ্যে শেষে কোনটা জিতবে? চীন ও রাশিয়া—দুটি দেশই উনিশ শতকের উদারনৈতিক গণতন্ত্রের এমন একটি ধারার চর্চা করে যেখানে মনে করা হয় জাতীয় সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। দোষারোপের এই মনস্বত্ব দুই দেশের জাতীয়তাবাদে জ্বালানি জোগায়।

**** অরভিল স্কেল এশিয়া সোসাইটির ইউএস-চায়না রিলেশনস কেন্দ্রের পরিচালক
স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট, ইংরেজি থেকে অনূদিত

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ মার্চ ০৪, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ