Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

পাশে কোনো বন্ধু নেই, যুদ্ধটা পুতিন একা করছেন (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:ম্যাক্সিমিলিয়ান হেস।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আবেগঘন ভাষায় জাতির উদ্দেশে বক্তব্য দিয়েছেন। ফ্যাসিবাদী দার্শনিক ইভান ইয়িনকে উদ্ধৃত করে পুতিন নিজেকে পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক লড়াইয়ে একজন বীর হিসেবে চিত্রিত করেছেন। তাঁর এ বক্তব্য নতুন যুগ সৃষ্টির লড়াইয়ের কোনো প্রতীক নয়, বরং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট যে বাস্তবে একা হয়ে পড়েছেন, তারই প্রতিচ্ছবি।

পুতিন এ বক্তব্য দিয়েছেন ইউক্রেনে তাঁর পরিচালিত ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’-এর ‘সফলতা’ ঘোষণা করতে গিয়ে। পুতিনের কাছে সেই সাফল্য হলো দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন—ইউক্রেনের এই চার অঞ্চলকে রাশিয়ার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া। যদিও বাস্তবে এর একটি অঞ্চলেও রাশিয়ার সেনারা পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। যুদ্ধের ভয়াবহতা মোটেই হাস্যকর কোনো বিষয় নয়। কিন্তু পুতিন লড়াইয়ের বাস্তবতা সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ।

এর প্রমাণ মিলল তাঁর বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তব্যের মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। রাশিয়ার সেনাদের হটিয়ে দোনেৎস্কের লেম্যান শহরে পুনরায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন ইউক্রেনের সেনারা। রেলওয়ে জংশন, প্রতীকী তাৎপর্যসহ নানা কারণেই শহরটির কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে।

এ ঘটনার এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই রাশিয়ার মূল ভূমির সঙ্গে অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সংযোগকারী কার্চ সেতুতে বিস্ফোরণ ঘটে। তর্কাতীতভাবে সেতুটিকে ক্রেমলিন তাদের প্রোপাগান্ডার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। ক্রেমলিনপন্থী সংবাদমাধ্যমে কার্চ সেতুকে দুর্ভেদ্য হিসেবে চিত্রায়িত করে এসেছে।

দীর্ঘদিন ধরেই পুতিন তথাকথিত ‘শাসনভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থা’ ও বিদেশের মাটিতে সেনা অভিযান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভণ্ডামিপূর্ণ অবস্থানের সমালোচনা করে আসছেন। ২০০৭ সালে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে পুতিন প্রথম এই সমালোচনা করেন। সর্বশেষ বক্তব্যে পুতিন দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য গুঁড়িয়ে দেওয়ার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে রাশিয়া। বাকি বিশ্ব এ লড়াইয়ে মস্কোর সঙ্গে রয়েছে। পুতিনের এ বক্তব্য চূড়ান্ত বাস্তবতাবিবর্জিত। যুক্তরাষ্ট্রের চাপে নতি স্বীকার করেনি, এমন কিছু দেশকে নিজের জোটসঙ্গী ভাবছেন পুতিন। কিন্তু বাস্তবতা হলো ক্রেমলিনের নেতৃত্বে জোট গড়তে তারা সম্ভবত ততটা আগ্রহী নয়।

ইরানের দৃষ্টান্তটা ধরা যাক। দেশটিতে এখন বড় ধরনের সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। কট্টরপন্থী হলেও তেহরানের বর্তমান শাসকেরা পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্কের সেতু পুরোপুরি বন্ধ করে দেননি। প্রকৃতপক্ষে ইরানের নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য পশ্চিমের সঙ্গে দেনদরবার করছেন।

চীন এমন এক বিশ্বশক্তি, যেটি পুতিনের সমর্থক বলে পরিচিত। ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরুর পর চীন মস্কোর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলছে। মার্কিন ডলারের আধিপত্যে নিয়ন্ত্রিত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অবসান ঘটানোর পুতিনের প্রচেষ্টায় যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা বেইজিংয়ের নেই। কেননা, এ ব্যবস্থার সঙ্গে চীন খুব ভালোভাবেই খাপ খাইয়ে নিয়েছে। চীন চায়, বিশ্বব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য খর্ব হোক, অন্যদিকে পুতিন চান, সেই আধিপত্য যাতে পুরোপুরি ধসে পড়ে। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং যুক্তরাষ্ট্রের ভূরাজনৈতিক ক্ষমতার একজন ঘোরতর সমালোচক। তা সত্ত্বেও তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতকে সতর্ক দৃষ্টিতে দেখছেন। ইউক্রেনের ভূখণ্ড অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়ার পুতিনের অবস্থান সমর্থন করেননি।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান নানা কারণেই পশ্চিমাবিরোধী অবস্থানে রয়েছেন। ২০১৬ সালের অভ্যুত্থানচেষ্টার জন্য তিনি পশ্চিমাদের দায়ী করেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে তিনি পশ্চিমাদের নেতৃত্বে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিরোধিতা করেছিলেন। পুতিনের সাম্প্রতিক বক্তব্যের এক দিন আগে তুরস্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রাশিয়ার নিজস্ব লেনদেনব্যবস্থা এমআরআইয়ের মাধ্যমে লেনদেন না করার কথা জানিয়েছে। আঙ্কারা খুব স্পষ্টভাবে ইউক্রেনের ভূখণ্ড অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়ার ঘটনার বিরোধিতা করেছে। তুরস্ক জানিয়েছে, এ ঘটনা গভীরভাবে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

ভারতের ক্ষেত্রেও একই অবস্থান লক্ষ করা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারত রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য পণ্যের আমদানি বাড়িয়েছে। কিন্তু ভারত মস্কোকে আরও বেশি সমর্থন দেবে, পুতিনের এমন দাবির প্রতি দিল্লি যে নাখোশ, কাজকর্মে তার প্রমাণ দিয়ে চলেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি উজবেকিস্তানে অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন সম্মেলনে পুতিনের যুদ্ধের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘আজকের যুগ যুদ্ধের যুগ নয়।’

পুতিন, তাঁর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ জোটসঙ্গী আর্মেনিয়াকে হারানোর ঝুঁকির মুখে পড়েছেন। আজারবাইজানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতে রাশিয়া আর্মেনিয়াকে জোরালো সমর্থন দেয়নি। আর্মেনিয়ার কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রাশিয়ার জোট ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম জোমার্ট তোকায়েভও সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন। গত জানুয়ারি মাসেই দেশটিতে রুশ সেনারা গিয়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমন করেছিলেন।

কাজাখস্তান থেকে রাশিয়ায় শ্রমিক নেওয়া হতে পারে, এমন আশঙ্কায় গত দুই সপ্তাহে দেশটি থেকে প্রায় দুই লাখ রুশ নাগরিক পালিয়ে গেছেন। মধ্য এশিয়ার অন্যান্য দেশও এ বিষয়ে রাশিয়াকে সতর্ক করে দিয়েছে। সামরিক স্বৈরতন্ত্র ও আর্থিক অব্যবস্থাপনার কারণে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের শাসকদের মধ্যে পুতিনের অনেক বন্ধু রয়েছেন। কিন্তু তাঁরাও সংঘাতে জড়ানো থেকে বিরত রয়েছেন।

অনেক বন্ধু আছেন, এমন আশা করলেও এখন একা যুদ্ধ করতে হচ্ছে পুতিনকে। সম্ভবত এই বন্ধুহীন বাস্তবতা তাঁকে আরও বেশি বিপজ্জনক করে তুলবে। অন্যভাবে ভাবলে, এটা পুতিনকে আরও বিচ্ছিন্ন করে দেবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নতুন যুগ সৃষ্টির যুদ্ধ নয়। একজন মানুষের বাতিকগ্রস্ত আকাঙ্ক্ষা ছাড়া আর কিছু নয়।

*****আল-জাজিরা থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিত
ম্যাক্সিমিলিয়ান হেস লন্ডনভিত্তিক ফরেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ফেলো

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ: অক্টোবর ১১, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ