Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

পুতিনের যুদ্ধে কার কতটুকু জয়, কতটুকু পরাজয় (২০২২)

Share on Facebook

লেখক: রিচার্ড এন হাস।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যুদ্ধের এক মাস পেরিয়ে গেছে। প্রকৃতপক্ষে সেখানে দুটি যুদ্ধ চলছে। একটি হলো ইউক্রেনের শহর এবং বেসামরিক লোকজনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ এবং আরেকটি হলো ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে রুশ সেনাদের যুদ্ধ। প্রথমোক্ত লড়াইয়ে রাশিয়ার জয় হচ্ছে। শেষোক্ত লড়াইয়ে ইউক্রেন জিতছে।

আদর্শগতভাবে দেখলে বলা যায়, সুষ্ঠু আলোচনা হলে একপর্যায়ে একটি যুদ্ধবিরতি হবে এবং তা একটি দীর্ঘস্থায়ী নিষ্পত্তির দিকে যাবে। কিন্তু পুতিন যদি মনে করে থাকেন তাঁর বাহিনীর দুর্বলতা কমিয়ে দেখাতে দীর্ঘ মেয়াদে লড়াই চালানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেবেন এবং ইউক্রেনের সব শর্ত প্রত্যাখ্যান করবেন, তাহলে আশার পথ বন্ধ। এ অবস্থা তৈরি হলে আদতে এ যুদ্ধে কে জিতবে? কারই–বা পরাজয় হবে?

সবচেয়ে সহজে সবচেয়ে বড় পরাজিত পক্ষের দিকে ইঙ্গিত করা যায়—সেটি হলো রাশিয়া। এটা এখন স্পষ্ট যে পুতিন যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যগুলো এ যুদ্ধ থেকে অর্জন করতে চেয়েছিলেন, এখন তা আর সম্ভব হবে না। পুতিন ভেবেছিলেন, তিনি সেনা দল নিয়ে ইউক্রেনে ঢুকবেন এবং অনায়াসে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে সরিয়ে সেখানে ক্রেমলিনের অনুগত একটি পুতুল সরকার বসিয়ে আসবেন।

পুতিনের পছন্দের যুদ্ধ হয়তো ইউক্রেনের অনেক অংশকে অবকাঠামোগতভাবে ধ্বংস করেছে, কিন্তু তাঁর এ সিদ্ধান্ত রাশিয়ার ওপর অভূতপূর্ব নিষেধাজ্ঞা নামিয়েছে। রাশিয়াকে অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতায় ফেলেছে। এটি রাশিয়াকে দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংস করছে। রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করা হয়েছে (রুশ বাহিনী এক মাসে প্রায় ১৫ হাজার সেনা হারিয়েছে) এবং এ বাহিনীকে এমন অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যা পুনর্গঠন করতে কয়েক বছর সময় লেগে যাবে।

ইউক্রেনের ক্ষেত্রে হিসাবটি আরও জটিল। এ যুদ্ধে দেশটির নেতৃত্ব, সমাজ এবং সশস্ত্র বাহিনী যে সংহতি দেখিয়েছে, তা বিস্ময়কর। রাশিয়ার এ হানার কারণে সেখানকার মানুষের জাতীয় পরিচয় আগের চেয়ে আরও মজবুত হয়েছে। ইউক্রেনের প্রবল প্রতিরোধ দেশটির নবীন গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করেছে। তবে দেশটির প্রায় এক–চতুর্থাংশ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত বা উদ্বাস্তু হয়েছে। অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। যে অবকাঠামো ইতিমধ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে, তা পুনর্নির্মাণে অনেক সময় এবং প্রচুর অর্থ লাগবে। এ লড়াইয়ে আরও যার জয় হয়েছে, সে হলো ন্যাটো। রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে এটি আরও ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী হয়েছে। এটি রাশিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর দুর্বল পারফরম্যান্স থেকেও উপকৃত হয়েছে। এ লড়াইয়ে মনে হচ্ছে, রুশ বাহিনী আদতেই পশ্চিমা জোটের সঙ্গে মোকাবিলা করার মতো ক্ষমতা রাখে না।

পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তারকে ধীর করার জন্য বিশ্বব্যাপী যে প্রচেষ্টা চলছে, তাকে খর্ব করছে এ যুদ্ধ। ইউক্রেন ২৮ বছর আগে তার আঞ্চলিক অখণ্ডতার নিশ্চয়তা পেয়েছিল জাতিসংঘ ও রাশিয়ার কাছ থেকে। সেই আশ্বাসের বিনিময়ে দেশটি তার পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে তারা দুবার আক্রমণের শিকার হয়েছে। এতে জাতিসংঘের নিশ্চয়তাদানের গ্রহণযোগ্যতা কমেছে। সব মিলিয়ে এ লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় পরাজয় হয়েছে যার, সে হলো বিশ্ব।

জার্মানি, তার নতুন সরকার ও চ্যান্সেলর এ যুদ্ধের বড় বিজয়ী পক্ষ। চ্যান্সেলর শলৎজের মধ্যে পূর্বসূরি আঙ্গেলা ম্যার্কেলের উত্তরাধিকার থেকে বেরিয়ে আসার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। ম্যার্কেল জার্মানিকে রাশিয়ান জ্বালানির ওপর অতি নির্ভরশীল করে ফেলেছিলেন। ওলাফ শলৎজ গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প বাতিল করেছেন, প্রতিরক্ষা ব্যয় দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শলৎজের জার্মানি রাশিয়ার গ্যাস ছাড়া চলবে বলে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা কার্যকর হতে কয়েক বছর লাগলেও সেটি রাশিয়াকে দুর্বল করবে। এ যুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও লাভবান হয়েছেন। তিনি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি কৌশলে ইউক্রেনকে সমর্থন করার নীতি পরিচালনা করেছেন, রাশিয়াকে শাস্তি দিয়েছেন এবং তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি এড়াতে রাশিয়ায় সরাসরি কোনো সেনা পাঠাননি এবং রাশিয়ার জন্য নো ফ্লাই জোন প্রতিষ্ঠার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন।

আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের কারণে মার্কিন নাগরিকদের মধ্যে যে বিভক্তি তৈরি হয়েছিল, তা কাটিয়ে বাইডেন আমেরিকার মিত্রদেরও একত্র করতে পেরেছেন। তিনি পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী আখ্যা দিয়ে এবং রাশিয়ার শাসন পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে মার্কিন নাগরিকদের মনে নতুন করে জায়গা করে নিয়েছেন।

চীন ও দেশটির প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং কৌশলগতভাবে এক মাস আগের চেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছেন। পুতিনের সঙ্গে এত ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে সি চিন পিং নিজেকে একটি ত্রুটিপূর্ণ সিদ্ধান্ত দেওয়ার দায়ে সমালোচিত হচ্ছেন। এটি চীনের সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং দেশটির জন্য ঝুঁকি বাড়িয়েছে। এ অবস্থানের কারণে চীনের ওপর সম্পূরক নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

তবে সব মিলিয়ে এ যুদ্ধে লাভবান হওয়া পক্ষের চেয়ে লোকসান হওয়া পক্ষের সংখ্যাই বেশি। এ যুদ্ধে জাতিসংঘ এবং বিশেষ করে নিরাপত্তা পরিষদ নির্বিকার।

পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তারকে ধীর করার জন্য বিশ্বব্যাপী যে প্রচেষ্টা চলছে, তাকে খর্ব করছে এ যুদ্ধ। ইউক্রেন ২৮ বছর আগে তার আঞ্চলিক অখণ্ডতার নিশ্চয়তা পেয়েছিল জাতিসংঘ ও রাশিয়ার কাছ থেকে। সেই আশ্বাসের বিনিময়ে দেশটি তার পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে তারা দুবার আক্রমণের শিকার হয়েছে। এতে জাতিসংঘের নিশ্চয়তাদানের গ্রহণযোগ্যতা কমেছে। সব মিলিয়ে এ লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় পরাজয় হয়েছে যার, সে হলো বিশ্ব।

ইংরেজি থেকে অনূদিত, স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট

● রিচার্ড এন হাস কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের প্রেসিডেন্ট

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: এপ্রিল ০২, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ