Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

পুনঃ ঐক্যের ৩১ বছর ও জার্মানির গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা (২০২১)

Share on Facebook

লেখক:সরাফ আহমেদ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর জার্মান জাতি বিভক্ত হয়েছিল, নাকি বিভক্ত করা হয়েছিল, ইতিহাসে সেই আলোচনা এখনো সরব। তবে যুদ্ধাপরাধের দায় মেনে নিয়ে, ১৯৪৯ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বিভক্ত হয়ে ছিল, সেটিই ঐতিহাসিক সত্য। ৪১ বছর বিভক্ত থাকার পর ১৯৯০ সালের ৩ অক্টোবর জার্মান জাতি আবার ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল।

নির্বাচনে ক্ষমতাসীন জোট সরকারের বড় দল, আঙ্গেলা ম্যার্কেলের ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন কম ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে, আর জোট শরিক জার্মান সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি প্রথম স্থানে রয়েছে। জার্মানির বড় এই দুই দলই এখন নির্বাচনে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে থাকা, পরিবেশবাদী গ্রিন পার্টি ও ফ্রি ডেমোক্রেটিক পার্টির সঙ্গে পরবর্তী চার বছরের জন্য সরকার গঠনের আলোচনা চালাচ্ছে। তবে নতুন সরকার গঠনের বিষয়ে সবকিছুই নির্ভর করছে, জোটবদ্ধ হতে ইচ্ছুক দলগুলোর রাজনৈতিক মতাদর্শিক ঐক্যর ওপর।

তবে শিগগির জার্মানিতে জোট সরকার গঠিত হবে না। জোট গঠনে ইচ্ছুক দলগুলো পরস্পরের সঙ্গে খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা করে একটি রূপরেখা তৈরির পর সরকার গঠিত হবে। সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান ও সম্ভাব্য চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ এ সপ্তাহে জানিয়েছেন, সরকার গঠন করতে আগামী ডিসেম্বরের বড়দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। নতুন সরকার গঠিত হওয়ার আগপর্যন্ত বর্তমান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ক্ষমতায় বহাল থাকবেন।

জার্মানির আইনসভা বা বুন্ডেশটাগে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার কারণে ঐতিহ্য অনুযায়ী এবারও জোট সরকার গঠিত হবে। তবে চ্যান্সেলর হওয়ার দাবিদার তারই বেশি, যে দল সর্বোচ্চ আসন পেয়েছে। সে হিসাবে ওলাফ শলৎজ আগামী দিনের সম্ভাব্য জার্মান চ্যান্সেলর। জার্মানির রাজনীতিকদের মধ্যে এই জোটবদ্ধ হয়ে গণতান্ত্রিক সরকার চালানোর প্রবণতা এসেছে, অতীত ইতিহাসের শিক্ষা থেকে।

১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির পর জার্মান জাতি ইউরোপ তথা বিশ্বে একঘরে হয়ে পড়ে। ১৯৩৯ সালে বীভৎস আর বিধ্বংসী এই যুদ্ধের শুরু করেছিল জার্মানি, নেতৃত্বে ছিলেন অ্যাডলফ হিটলার।

১৯৩৩ সালে এই নাৎসি হিটলারের ক্ষমতায়ন হয়েছিল, সে সময়ের রাজনীতিকদের অনৈক্যের কারণে। পৃথিবীর আর সব দেশে বাম ঐক্যের ব্যর্থতার মতো বাম রাজনীতির জন্মভূমি জার্মানিতেও সে সময় ভ্রাতৃযুদ্ধ বাদ যায়নি। জার্মান ইতিহাসবিদদের একটা বিরাট অংশ এখনো মনে করে, মধ্য ও বামপন্থীদের মধ্যে আপস না হওয়াই ফ্যাসিবাদ বা হিটলারের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়ার পথ খুলে দিয়েছিল। বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী জার্মান রাজনীতিকদের মধ্যে সুশৃঙ্খল হওয়ার প্রবণতা তথা যুক্ত ইউরোপ গড়ার আন্তরিক প্রচেষ্টা একসময়ের নাৎসি ও যুদ্ধবাজ জার্মান জাতি সম্পর্কে পুরোনো ভাবনা পাল্টে দিতে অনেকটা সহায়ক হয়েছে।

যুদ্ধপরবর্তী ১৯৪৯ সাল থেকে পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির বিভেদের প্রতীক বার্লিন প্রাচীর পতনের পর ১৯৯০ সালের ৩ অক্টোবর জার্মান জাতির পুনরেকত্রীকরণ ঘটে। সম্প্রতি একটি নির্বাচনী প্রচারে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছেন, ‘জার্মানির পূর্ব ও পশ্চিম, উভয় অংশের জনগণের মধ্যে কিছু ক্ষোভ ও বঞ্চনা রয়েছে। তবু আমাদের আরও প্রত্যয়ী ও সাহসী হয়ে একত্রে কাজ করতে হবে। পূর্ব এবং পশ্চিমের মধ্যে বিদ্যমান পার্থক্যগুলো কাটিয়ে উঠতে আমাদের উভয় অংশের সমাজের আরও সংহতির প্রয়োজন।’

উল্লেখ্য, অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে জার্মানি এগিয়ে গেলেও একটি অভ্যন্তরীণ বিতর্ক ৩১ বছরেও জার্মানির রাজনীতির পিছু ছাড়েনি। আর তা হলো, জার্মানির পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলের মধ্য মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব। ৩১ বছর আগে পূর্ব জার্মানির জনসাধারণ সমাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পতন ঘটিয়ে অধিক গণতন্ত্রের দাবিতে দেশটির পশ্চিমাঞ্চল বা পশ্চিম জার্মানির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ছিল। তবে এখন সেখানকার জনগণের কিছু অংশের নানান অগণতান্ত্রিক আচরণ, পশ্চিমাঞ্চলের জনগণের মধ্যে সংশয় তৈরি করেছে।

বিগত কয়েক বছর সাবেক পূর্ব জার্মানির জনগণের একটি অংশ সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির আক্ষেপ ও দৈন্য এবং অভিবাসী ইস্যুকে পুঁজি করে রাজনীতি করছে। এই রাজনীতির ধারক কট্টরবাদী অলটারনেটিভ ফর ডয়চেল্যান্ড (এএফডি) দলটি। দলটি ২৬ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে ১০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে। জার্মান আইনসভায় তাদের আসনসংখ্যা ৮৩।

৩১ বছর আগে পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্য পুনরেকত্রীকরণ ঘটলেও দুই অঞ্চলের মধ্য কিছু বিভেদ রয়েছে। সাবেক পশ্চিম জার্মানি বা জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে সেই ১৯৪৯ সাল থেকেই একধরনের সামাজিক অর্থনৈতিক বাজারকাঠামো ছিল, যা এখনো বজায় রয়েছে।

সমাজতান্ত্রিক দেশ না হয়েও মানুষের মৌলিক চাহিদা যেমন আবাসন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি—এসব সেবার ক্ষেত্রে নিশ্চয়তা বজায় ছিল। এখনো রয়েছে। আর সাবেক পূর্ব জার্মানি বা পূর্বাঞ্চল ছিল সমাজতান্ত্রিক ও সাম্যবাদী কাঠামোর রাষ্ট্র। গত ৩১ বছরে পূর্বাঞ্চলের অর্থনীতি-আইন, প্রশাসন, রাস্তাঘাট, শিল্পপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষাব্যবস্থা, সবকিছুর আমূল পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। আর এসব করতে পশ্চিমের নাগরিকদের দীর্ঘ ৩১ বছর সংহতি ভ্যাট প্রদান করতে হচ্ছে। আদতে ১৬০ লাখ মানুষ-অধ্যুষিত পূর্ব জার্মানিকে নতুন ধাঁচে গড়ে তোলার বিষয়টি খুব সহজ ছিল না।

জার্মান জাতির পুনঃ ঐক্যের ৩১ বছর পূর্তির প্রাক্কালে অর্থনৈতিক বিষয়ক নানা পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, দুই অঞ্চলে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। তবু দশ বছরের বেশি সময় ধরে জার্মানির অর্থনীতি ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। সাবেক পূর্ব জার্মানির পুনর্বাসন ও উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে এই অর্জন বিস্ময়কর।

এ বছর জার্মান পুনরেকত্রীকরণ উৎসব পালিত হচ্ছে, পূর্বাঞ্চলের সালে নদীর তীরে অবস্থিত বিখ্যাত হালে শহরে। জার্মান ঐক্যের ৩১ বছর পূর্তিতে ‘ঐক্যবদ্ধ ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। নানান প্রতিকূলতা থাকলেও ঐক্যবদ্ধ জার্মানির ৩১ বছর পূর্তিতে এ কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়, জার্মান জাতি অতীত ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

এই পুনঃ ঐক্যের ৩১ বছর পূর্তির ঠিক এক সপ্তাহ আগে জার্মানিতে ২০তম জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।

সরাফ আহমেদ প্রথম আলোর হ্যানোভার, জার্মানির প্রতিনিধি।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ অক্টোবর ০৩, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ