Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

পোশাকশিল্পে মৌলিক নকশা ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে-প্রসেনজিৎ টিটো চৌধুরী (২০২১)

Share on Facebook

লেখা: মুনির হাসান

পোশাকশিল্পে মৌলিক নকশা ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে

পোশাক খাতে বাড়ছে প্রযুক্তির ব্যবহার। ফলে ভবিষ্যতে খাতটি শ্রমঘন না–ও থাকতে পারে। পোশাক খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে কথা বলেছেন ফ্যাশন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ প্রসেনজিৎ টিটো চৌধুরী। তিনি আমেরিকার পোর্টল্যান্ডের ফ্যাশননেক্সটের (FashioNXT) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। প্রতিষ্ঠানটি পোশাকশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রযুক্তি, নকশা পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও নেটওয়ার্কিং সুবিধা দিয়ে থাকে। ২০১২ সালে ফ্যাশননেক্সট প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভিডিও কনফারেন্সে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মুনির হাসান।

প্রথম আলো: বুয়েটে তড়িৎ কৌশলে স্নাতক করেছেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার প্রকৌশলে স্নাতকোত্তর। আর কাজ করছেন ফ্যাশন নিয়ে, কেন?

প্রসেনজিৎ টিটো চৌধুরী: স্নাতকোত্তর শেষে পোর্টল্যান্ডে ইন্টেলের মাইক্রোপ্রসেসর নিয়ে কয়েক বছর কাজ করি আমি। ওই সময় সেখানকার আর্ট মিউজিয়ামের বোর্ড সদস্য হয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে শুরু করি। সংস্কৃতির সঙ্গে সৃজনশীল প্রযুক্তির সম্পর্ক রয়েছে। বোর্ডের সদস্য হিসেবে আমার একটা কাজ ছিল এ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রকল্পের তহবিলের প্রস্তাব তৈরি করা। এ সময় আমি স্বতন্ত্র ফ্যাশন ডিজাইনারদের চ্যালেঞ্জের সঙ্গে পরিচিত হতে শুরু করি। তাদের দুর্বল দিকগুলো বোঝার চেষ্টা করতাম। তখন মনে হয়েছে, আগামী দিনগুলোতে ফ্যাশনের সঙ্গে প্রযুক্তির যে সম্পর্ক তৈরি হতে যাচ্ছে, সেটার সঙ্গে আমি নিজেও যুক্ত হতে পারি। শুরু করি ফ্যাশন শোর মাধ্যমে। ২০১২ সালে ফ্যাশননেক্সট প্রতিষ্ঠার পরের বছর ইন্টেলের চাকরি ছেড়ে প্রতিষ্ঠানটিতে যোগ দিই।

প্রথম আলো: গত বছর ভিয়েতনাম পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে গেছে। হারানো অবস্থান ফিরে পেতে বাংলাদেশের কী করা উচিত বলে মনে করেন?

টিটো চৌধুরী: কাজটা সহজ নয়। এ জন্য অনেক কিছুই করতে হবে। বিশ্বজুড়ে এখন কৃত্রিম তন্তুর (ম্যান মেড ফাইবার) পোশাকের চাহিদা বেশি, প্রায় ৮০ শতাংশের মতো। বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানির মধ্যে কৃত্রিম তন্তুর পোশাক ২৬ শতাংশ। কৃত্রিম তন্তুর পোশাক উৎপাদনে পিছিয়ে থাকায় দ্রুত উন্নতি করা সম্ভব নয়। সময় লাগবে। এ ছাড়া অনেক দিন ধরে বাংলাদেশ টি–শার্ট, ট্রাউজার, শার্ট, সোয়েটার ও জ্যাকেটের মতো বেসিক পোশাকে আটকে আছে। পাশাপাশি ‘কম দামে বেশি পণ্য’ (লো ভ্যালু, লার্জ কোয়ানটিটি) রপ্তানি আমাদের মাথায় ঢুকে গেছে। সেখান থেকেও বের হতে হবে। তবে সবকিছুর আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা এটা চাই কি না? তা না হলে প্রতিযোগিতায় উন্নতি করতে পারব না।

প্রথম আলো: কিন্তু উচ্চ মূল্যের পণ্য সরবরাহকারী হিসেবে কেউ তো বাংলাদেশকে বিবেচনাও করে না।

টিটো চৌধুরী: এটা রাতারাতি হবে না। কিন্তু শুরু করতে হবে। পোশাকের মৌলিক নকশা যেন দেশেই তৈরি করা যায়। নকশা নকল করা যাবে না। কারণ নকল পণ্য কখনো বৈশ্বিক ব্র্যান্ড হতে পারে না। আসলে একটি পণ্য অনেক পরিশ্রম ও শিক্ষার পর তৈরি হয়। এ ক্ষেত্রে কোটি কোটি ডলার খরচ করে চীন। দেশটির সরকার তহবিল দিয়ে সহায়তা করে। ব্যক্তি উদ্যোগেও অনেকে এগিয়ে আসেন। বাংলাদেশের অনেক ফ্যাশন ডিজাইনারের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তাঁরা দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন। কাজ করে মার্চেন্ডাইজারের। তাঁরা আমেরিকার ক্রেতাদের কাছ থেকে নকশা এনে কম মূল্যের কাপড় তৈরি করে কম দামে তা বিক্রি করেন। কিন্তু ক্রেতারা উৎপাদন চক্রের মধ্যে নকশায় মূল বিনিয়োগ করে। বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলো সেই নকশা নিয়ে শুধু সেটি বানিয়ে দেয়। ফলে বাংলাদেশ নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরিতে পিছিয়ে আছে।

প্রথম আলো: এ ধারা থেকে আমাদের বের হওয়ার পথ কী?

টিটো চৌধুরী: প্রথমত, কর্মীদের পেছনে প্রচুর বিনিয়োগ করতে হবে। কিন্তু কারখানার মালিকেরা হয়তো তা করতে চাইবেন না। তাই কাজটি সরকার বা বিজিএমইএর মতো ব্যবসায়িক সংগঠনের উদ্যোগে করতে হবে। এটাই হচ্ছে মৌলিক চিন্তার পরিবর্তন। বাংলাদেশে দু-একটি প্রতিষ্ঠান আছে, যেখানে ফ্যাশন টেকনোলজি নিয়ে পড়াশোনা হয়। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অনেক বাড়াতে হবে। প্রশিক্ষণ কিংবা বিভিন্ন কর্মশালার মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে। আমি দেখেছি কিছু ব্র্যান্ড সৃজনশীল নকশা তৈরি করে, কিন্তু সেটা বিকশিত হচ্ছে না। বাংলাদেশে ডিজাইনার তৈরি করতে প্রচুর বিনিয়োগ করতে হবে।

প্রথম আলো: আমরা আমাদের কারখানার অবকাঠামো উন্নয়নে প্রচুর কাজ করেছি।

টিটো চৌধুরী: রানা প্লাজার মতো ঘটনার পরও কিন্তু পোশাক খাত ভালো করছে। আমি যুক্তরাষ্ট্র থেকে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিয়ে বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। তিনি কারখানা দেখে অভিভূত। বললেন, তাঁর দেখামতে কারখানাগুলো চীনের চেয়েও উন্নত। তবে শিশু যত্ন কেন্দ্র, স্বাস্থ্যসেবার মতো বিষয়গুলোতেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। বাংলাদেশে ক্রেতারা যায় মূলত সস্তায় জামাকাপড় কেনার জন্য। পোশাকের মান নিয়ে তারা খুব বেশি চিন্তিত না। তাই দাম বাড়ালে তারা চীন কিংবা ভিয়েতনামের দিকে ঝুঁকে পড়ে। চীনা কোম্পানিগুলো এ ক্ষেত্রে একটা কৌশল নেয়। তারা তাদের দেশ থেকে কারখানা গুটিয়ে ইতালির মতো দেশে গিয়ে কাপড় উৎপাদন করে। আর মানুষ যখন দেখে এটা মেড ইন ইতালি, তখন বলে, এটির দাম তো একটু বেশি হবেই। অথচ মানের কোনো হেরফের নেই। এটা একটা মানসিক ধারণা। আমাদের ব্যবসায়িক কৌশলও চীনাদের মতো বহুমুখী হওয়া দরকার।

প্রথম আলো: পোশাকে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আপনার কী মত?

টিটো চৌধুরী: প্রযুক্তি ব্যবহারে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। চীনাদের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করলে আমরা আরও অনেক কম খরচে বিভিন্ন ধরনের কাপড় তৈরি করতে পারব। এ রকম প্রযুক্তির কারখানা বানানোর ক্ষেত্রে সরকারের সহায়তা লাগবে। এখানে সরকার বিনিয়োগ ও আমদানিনীতি পরিবর্তন করলে কৃত্রিম তন্তুর কাপড়ের জন্য অন্যদের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে। এ ছাড়া তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপক বাড়াতে হবে। এখনো অনেক কারখানা তথ্যপ্রযুক্তি বলতে এক্সেলে আটকে আছে।

প্রথম আলো: সম্প্রতি ভারতীয় ডিজাইনার সব্যসাচী মুখার্জিকে এইচঅ্যান্ডএমের সঙ্গে মিলে তাঁর ডিজাইনের পোশাক বিশ্ববাজারে উন্মুক্ত করতে দেখলাম আমরা।

টিটো চৌধুরী: সব্যসাচী মুখার্জির ঘটনা থেকে বাংলাদেশের অনেক কিছু শেখার আছে। কারণ, এ ঘটনাতে প্রমাণিত হয়েছে বাঙালি নকশাবিদের প্রতি বিশ্ববাসীর যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। তবে মনে রাখতে হবে, এইচঅ্যান্ডএমের সঙ্গে মৌলিক নকশার পোশাক নিয়ে কাজ করতে সব্যসাচীর দুই দশক সময় লেগেছে। পথটা জানা হয়েছে বলে আমাদের হয়তো সময় কম লাগতে পারে। কম মূল্যের পোশাক বানানোর পাশাপাশি নিজেদের ব্র্যান্ড তৈরিতেও ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। যেহেতু পথটা দূরের, তাই যত তাড়াতাড়ি শুরু করা যায়, ততই ভালো।

প্রথম আলো: ব্র্যান্ড তৈরির জন্য কোন পর্যায় থেকে বাংলাদেশের শুরু করা প্রয়োজন?

টিটো চৌধুরী: সরকার, বিজিএমইএ ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত উদ্যোগে কিংবা ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এটা শুরু করতে পারে। পশ্চিমে প্রতিষ্ঠিত নকশাবিদদের যুক্ত করে নিজস্ব নকশাবিদ তৈরি করতে হবে পশ্চিমা বাজারের জন্য উপযোগী ও দক্ষ করে। মোদ্দা কথা, পোশাকের মান উন্নত করতে হবে। একই সঙ্গে দেশে ফ্যাশন বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুলের প্রসার ঘটাতে হবে। এটিই প্রথম ও কঠিন চ্যালেঞ্জ। এই ক্ষেত্রটা ঠিক করতে পারলে পরের ধাপগুলোতে যাওয়া সহজ হবে। পাশাপাশি পশ্চিমা বিশ্বে বাংলাদেশের ‘কম দামি’ পোশাকের যে ইমেজ তৈরি হয়েছে, সেটি ভাঙার জন্যও কাজ করতে হবে।

প্রথম আলো: উচ্চ মূল্যের পোশাক তৈরি করতে গিয়ে আমরা কি সস্তা পোশাকের বাজারটি ছেড়ে দেব? তাহলে আমাদের কৌশল কী হওয়া উচিত?

টিটো চৌধুরী: না। তা কেন হবে। দুটিই একে অপরের পরিপূরক। উচ্চ মূল্যের পোশাক শিল্পে বৈচিত্র্য আনবে। এ জন্য আলাদা ব্যবসা পরিকল্পনা করতে হবে। বাংলাদেশ আসলে ক্রেতাদের সুযোগ দিয়েছে, যেন তারা আমাদের চেপে ধরতে পারে। ক্রেতারা এটি সহজে করতে পারে, কারণ আমাদের পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের কাছে কম মূল্যের বেশি পণ্যের বাজারের বিকল্প নেই। এ কারণে ক্রেতারা আমাদের পেয়ে বসেছে। কম মূল্যে বেশি পণ্যের পাশাপাশি উচ্চ মূল্যের পোশাক, কৃত্রিম তন্তুর পোশাক ও নিজস্ব নকশার বৈশ্বিক ব্র্যান্ড আমাদের পরবর্তী গন্তব্য হওয়া উচিত। তাহলেই আমাদের দর-কষাকষির সুযোগ বাড়বে।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ২৭, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ