Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

বিশ্ব অর্থনীতি-এবার শুরু হয়েছে সুদহার বৃদ্ধির হিড়িক (২০২২)

Share on Facebook

মহামারি শুরুর পর বিশ্ব অর্থনীতি উচ্চ মূল্যস্ফীতির সংকটে পড়েছে। করোনাজনিত সমস্যা থেকে অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে যে বিপুল আর্থিক প্রণোদনা দিয়েছিল উন্নত দেশগুলো, এর ফলে তৈরি হয়েছে বিপুল চাহিদা। কিন্তু তা হয়েছে সরবরাহব্যবস্থা মসৃণ হওয়ার আগেই। ফলে সরবরাহের অভাবেই মূলত মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, একটি সাধারণ পেনসিলের জোগানব্যবস্থাও জটিল-তার কাঠ আসে ব্রাজিল থেকে, ভারত থেকে আসে গ্রাফাইট। ফলে ব্রাজিলে কোভিড মাথাচাড়া দিলে পেনসিলের জোগানও কমবে।

একদিকে মহামারির কারণে অনেক ক্ষেত্রেই উৎপাদন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে, অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ জলবায়ু পরিবর্তনের বিভিন্ন প্রভাব, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেল, চিনি ও খাদ্যশস্যের মূল্যবৃদ্ধি, আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের নীতি বদলের মতো নানাবিধ কারণে এ সমস্যা আরও জটিল হয়েছে।

সাধারণত এ পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রা সরবরাহ কমিয়ে মূল্যস্ফীতির রাশ টানার চেষ্টা করে। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ঠিক সে রকম নয়। নীতি সুদহার বৃদ্ধি করা হলে বাজারে চাহিদায় টান পড়বে, তাতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু দেশে দেশে মূল্যস্ফীতি রেকর্ড উচ্চতায় ওঠার পর উন্নয়নশীল দেশগুলো ইতিমধ্যে সুদহার বাড়াতে শুরু করেছে। ব্রাজিলের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ মাসেই সুদহার ১ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে। এ নিয়ে টানা তৃতীয়বার তারা সুদহার বৃদ্ধি করল। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড মহামারির মধ্যে দ্বিতীয়বার সুদহার বৃদ্ধি করতে যাচ্ছে। আর পৃথিবীর সবচেয়ে প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ইতিমধ্যে বলেছে, মার্চ মাসে তারা সুদহার বৃদ্ধি করবে। বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছেন, এ বছর প্রত্যেক প্রান্তিকেই ফেড দশমিক ২৫ শতাংশ হার সুদহার বৃদ্ধি করবে। সব মিলিয়ে ২০২২ সালে ফেড ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সুদ বৃদ্ধি করতে পারে। দ্য ইকোনমিস্ট ধারণা করছে, ৫৮টি দেশে আগামী তিন বছরে সুদহার বাড়বে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদহার ইতিমধ্যে ১ শতাংশ বেড়েছে।

এ পরিস্থিতিতে দীর্ঘ মেয়াদে কী হবে, সেটাই এখন প্রশ্ন। মানুষ তো দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ নিতে চায়-এটাই অর্থনীতির প্রাণ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তো মানুষের এই প্রবণতায় বাদ সাধতে পারে না।

কিন্তু গত এক দশকে নিম্ন সুদহারের নীতি অবলম্বন করার কারণে এখন সুদহার বৃদ্ধি করা সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে কঠিন। জি-৭ বা উন্নত দেশগুলোতে গত এক দশকে সুদহার ২ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি ছিল না। অথচ ১৯৯০-এর দশকে সুদহার ছিল ৫ শতাংশের ওপরে। ফলে নিম্ন সুদহার উন্নত দেশগুলোর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে এসব দেশ এত দিন দরাজ হাতে ঋণ নিয়েছে এবং তাতে বাজেট ঘাটতি অনেকটাই বেড়েছে। সম্পদমূল্য আকাশ ছুঁয়েছে। আর তাতে নীতিপ্রণেতারা নানা ধরনের পন্থা অবলম্বন করেছেন-বন্ড কেনা, প্রণোদনার চেক দেওয়া ইত্যাদি।

তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেছে আর অর্থনীতিতে মন্দাভাব তৈরি হয়নি, এমন নজির কম। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশ থেকে নামাতে গিয়ে চাহিদায় টান পড়েনি, সর্বশেষ তেমন ঘটনা দেখা গেছে ৭০ বছর আগে। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে অর্থনীতি গতি হারিয়ে ফেলবে। এ বাস্তবতায় নীতি সুদহার আবার কমে আসবে-সে রকম দিনের কথা কেবল আশাই করা যায়।

নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিগলিৎস প্রজেক্ট সিন্ডিকেটের এক নিবন্ধে লিখেছেন, এখন বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো গণহারে সুদহার বাড়ালে ব্যাপারটা ওভারডোজের মতো হবে। চাহিদা হ্রাস করে বা বেকারত্বের হার বাড়তে দিয়ে সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটানোর মানে হয় না। এই নীতি কিছুদিন চললে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে ঠিক, কিন্তু তাতে মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হবে, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের।

সে জন্য তাঁর মত, সরবরাহ ব্যবস্থার কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সুনির্দিষ্ট কাঠামোগত ও রাজস্ব নীতি গ্রহণ করা। গরিবদের খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি জ্বালানিতে ভর্তুকি দেওয়া এবং মূল্যস্ফীতি সমন্বয় করে কর হ্রাস করা। আর যেসব খাত মহামারিতে বড় দাও মেরেছে, তাদের কর বাড়িয়ে এই ভর্তুকির অর্থায়ন করা।

ঋণের বোঝা
মহামারি মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশের সরকার দরাজ হাতে ঋণ নিয়েছে। তাতে ঋণের বোঝা চেপেছে বিশ্ব অর্থনীতির মাথায়-২০০০ সালে যেখানে বৈশ্বিক মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৮৩ লাখ কোটি ডলার-২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯৫ লাখ কোটি ডলার। অর্থাৎ এই সময়ে বৈশ্বিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির দ্বিগুণ হারে বেড়েছে ঋণ। মূলত কোভিড মহামারি মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশের সরকার গত দুই বছরে যে ঋণ নিয়েছে, তার কারণে ঋণের বোঝা এতটা বেড়েছে।

২০০০ সালে বৈশ্বিক জিডিপির ২৩০ শতাংশ ছিল ঋণ। মহামারির আগে তা পৌঁছায় ৩২০ শতাংশে। মহামারি মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলো হাত খুলে ঋণ নিয়েছে। তাতে ২০২১ সালে বৈশ্বিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে জিডিপির ৩৫৫ শতাংশ।

ঋণের এই বাড়বাড়ন্তের অন্যতম কারণ হলো, গত দুই দশকে ঋণের সুদহার অনেকটাই কম ছিল। ২০০০-এর প্রথম দশকে যুক্তরাষ্ট্রে ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদহার ছিল ৬ দশমিক ৫ শতাংশ, এখন তা নেমে এসেছে ১ দশমিক ৮ শতাংশে। ফেডারেল রিজার্ভের কার্যকর নীতি সুদহার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ০৮ শতাংশ। ইউরো অঞ্চল ও জাপানের নীতি সুদহার শূন্যের নিচে। দেশে দেশে সরকারি বন্ডের সুদহার কমে যাওয়ার কারণে ব্যাংকগুলো ব্যক্তি ঋণে বেশি জোর দিয়েছে।
এর সঙ্গে পরে যোগ হয়েছে মহামারিজনিত ঋণ। আর তাতেই বেড়েছে মূল্যস্ফীতি, যা নিয়ে এখন সবার মাথাব্যথা।

বাংলাদেশ পরিস্থিতি

মহামারির মধ্যে বাংলাদেশ সামষ্টিক অর্থনীতি মোকাবিলায় ভালো করেছে বলেই অর্থনীতিবিদেরা বলছেন। মহামারির শুরুতেই সরকার প্রণোদনা দিয়েছে। এরপর কয়েক ধাপে তার আওতা বাড়ানো হয়। সব মিলিয়ে জিডিপির ৪ শতাংশের ওপরে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। রপ্তানিমুখী শিল্প তেমন একটা বন্ধ থাকেনি। শুরুতে ক্ষতির মুখে পড়লেও পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে রপ্তানি আয় ও প্রবাসী আয় বৃদ্ধির কারণে মানুষের হাতে অর্থের প্রবাহ এক রকম ছিল, যদিও দীর্ঘ সময় বিধিনিষেধ থাকার কারণে অনেক মানুষের আয় কমেছে। বিধিনিষেধ উঠে গেলে অর্থনীতি আবার স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষ চাপে পড়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ উদ্যোগ চোখে পড়েনি। আবার মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির পেছনে প্রণোদনার অর্থের প্রভাব আছে বলে অভিযোগ উঠলেও সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। প্রণোদনার অর্থ নয়ছয় হচ্ছে বলেও অভিযোগ আছে।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ ফেব্রুয়ারী ০৮, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ