Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

বোমা নয়, অবরোধে ‘বর্জন–কৌশল’ পশ্চিমাদের- নিউইয়র্ক টাইমস (২০২২)

Share on Facebook

লেখা: এলা কোয়েজ।

গত মাসের শেষের দিকে (২৪ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে নিজেদের পুরোনো কৌশল বেছে নিয়েছে পশ্চিমা শক্তি। সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত কৌশলটি হলো বিস্তৃত পরিসরে অবরোধ আরোপ। দ্রুত এর প্রভাবও পড়েছে রাশিয়ার অর্থনীতি, আর্থিক ব্যবস্থাসহ দেশটির নাগরিকদের ওপর। এই অবরোধ আরোপের প্রভাবের মাত্রাও ব্যাপক।

গ্লোবাল স্যাংকশনস ডেটাবেইসের তথ্য বলছে, সবচেয়ে বেশি (৪২ শতাংশ) অবরোধ আরোপ করা দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি ১৯৫০ সাল থেকে অবরোধ আরোপ করে আসছে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), তাদের অবরোধের পরিমাণ ১২ শতাংশ। ৭ শতাংশ নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে জাতিসংঘ।

কোনো দেশ, প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে শায়েস্তা করতে অবরোধের ব্যবহার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাপক হারে বেড়েছে বলে জানাচ্ছে গ্লোবাল স্যাংকশনস ডেটাবেইস নামের একটি তথ্যভান্ডার। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার ড্রেক্সেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন এই প্রকল্প অবরোধের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে থাকে।

তথ্যভান্ডারে ১ হাজার ১০০-এর বেশি অবরোধ আরোপের ঘটনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যেগুলো তাৎক্ষণিকভাবে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে কোনো এক বা একাধিক দেশ অন্য কোনো দেশ বা সংস্থার ওপর আরোপ করেছে। এর মধ্যে কিছু অবরোধ বা নিষেধাজ্ঞা কয়েক দশক ধরে বলবৎ আছে। যেমন কিউবার ওপর কয়েক দশক ধরে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে পশ্চিমারা।

বর্ণবাদের যুগে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অবরোধের কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে। সামরিক আগ্রাসন মোকাবিলা ছাড়াও মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অন্যান্য অধিকার লঙ্ঘনের জন্যও অবরোধের ব্যবহার রয়েছে। পশ্চিমাদের একের পর এক অবরোধের লক্ষ্য হয়েছিল ইরান। পরমাণু চুক্তি সই করার পর দেশটির ওপর থেকে সেগুলোর কিছু প্রত্যাহার করা হয়।

এ ব্যাপারে আমাদের মনে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই যে অবরোধ আর্থিকভাবে খুবই ভোগান্তির।’ তবে তিনি এ-ও বলেন, ‘কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে অবরোধের মাধ্যমে চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে

গ্লোবাল স্যাংকশনস ডেটাবেইসের গবেষক ইয়োতো ইয়োতোভ

রাশিয়া আগেও শাস্তির মুখে পড়েছে। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের পর দেশটির ওপর বেশ কিছু অবরোধ আরোপ করা হয়, যেগুলোর বেশির ভাগ এখনো বহাল আছে।

সামরিক সংঘাত এড়াতে অবরোধের ব্যবহার

সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি এড়ানো যায় বলে অবরোধের জনপ্রিয়তা বাড়ছে—এমনটা মনে করেন গ্লোবাল স্যাংকশনস ডেটাবেইসের দুই গবেষক কনস্ট্যান্টিনস সিরোপুলস ও ইয়োতো ইয়োতোভ। এই দুই অর্থনীতিবিদের পর্যবেক্ষণ হলো, যুক্তরাষ্ট্র বহু দিন ধরেই অবরোধকে তার পররাষ্ট্রনীতির ‘অঙ্গ’ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। কিন্তু দুই দশক ধরে এর ব্যবহার বেড়েছে। কারণ, ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধ মার্কিন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। প্রচুর অর্থকড়ি খরচ করা এ দুই যুদ্ধের কারণে সামরিক অভিযান বা যুদ্ধের প্রতি সমর্থনে ভাটা পড়েছে।

ইউক্রেন প্রশ্নে রাশিয়া তার অবস্থান বদলাতে রাজি না হওয়ায় দেশটির তেল ও গ্যাস বিক্রি ঠেকানোসহ ব্যাপক কৌশলী পদক্ষেপ নিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। ম্যাকডোনাল্ডসের মতো ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এবং ক্রেডিট কার্ড কোম্পানিগুলোও দেশটিতে তাদের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দিয়েছে। দেশটির বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক প্রতিক্রিয়া আরও বেশি প্রবল।

গ্লোবাল স্যাংকশনস ডেটাবেইসের তথ্য বলছে, সবচেয়ে বেশি (৪২ শতাংশ) অবরোধ আরোপ করা দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি ১৯৫০ সাল থেকে অবরোধ আরোপ করে আসছে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), তাদের অবরোধের পরিমাণ ১২ শতাংশ। ৭ শতাংশ নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে জাতিসংঘ।

অবরোধের ক্ষেত্রগুলো দিন দিন সুনির্দিষ্টও হয়ে উঠছে। দায়ী পক্ষকে প্রায়ই সরাসরি নিশানায় রেখে অবরোধ দেওয়া হয়, যাতে সংশ্লিষ্ট দেশের জনগণের অনিষ্ট না হয়, দেশটির অর্থনীতিতে ধস না নামে অথবা মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে থাকা গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সম্পর্কে চিড় না ধরে।

অবরোধের ব্যবহার বাড়তে থাকায় আরেকটি প্রশ্ন সামনে এসেছে। অবরোধ কী কাজ করছে? আর্থিকভাবে অবরোধের প্রভাব খুবই পীড়াদায়ক বলে মনে করেন গ্লোবাল স্যাংকশনস ডেটাবেইসের গবেষক ইয়োতো ইয়োতোভ। তাঁর ভাষায়, ‘এ ব্যাপারে আমাদের মনে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই যে অবরোধ আর্থিকভাবে খুবই ভোগান্তির।’ তবে তিনি এ-ও বলেন, ‘কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে অবরোধের মাধ্যমে চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে।’

অবরোধ কতটা সফল হচ্ছে, তার একটা মূল্যায়ন করা হয়েছে গ্লোবাল স্যাংকশনস ডেটাবেইসে। এ জন্য প্রতিটি অবরোধ দেওয়ার পেছনের কারণ, অবরোধের মাধ্যমে কতটা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো গেল—এ দুইয়ের তুলনা করেছেন গবেষকেরা। তাঁরা দেখতে পেয়েছেন, প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে অবরোধের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের আংশিক পূরণ হয়েছে। আর প্রায় ৩৫ শতাংশ ক্ষেত্রে শতভাগ সফল হয়েছে অবরোধ। তবে এই সফলতা-বিফলতার চিত্রকে একবারে ‘নির্ভুল’ বলা যাবে না বলে জানাচ্ছেন দুই গবেষক। তাঁদের ভাষ্য, লক্ষ্য পূরণের বিষয়টি শতকরা হিসাবে তুলে ধরা বা অবরোধের প্রভাবের সফলতার বিষয়টি কে কীভাবে দেখছে, কীভাবে মূল্যায়ন করছে, তার ওপর নির্ভর করে।

তবে কখনো কখনো অবরোধের হুমকির মাধ্যমেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়েছে। অন্য একটি ডেটাবেইসের তথ্য বলছে, যেসব ক্ষেত্রে শাস্তির হুমকি দেওয়া হয়েছে এবং যেসব ক্ষেত্রে অবরোধ আরোপ করা হয়েছে, এ দুই ক্ষেত্রের মধ্যে অবরোধের হুমকিতে তুলনামূলক বেশি সফলতা পাওয়া গেছে। ২০০৫ সাল থেকে বিভিন্ন অবরোধ আরোপের হুমকির তাৎক্ষণিক প্রভাব এবং কার্যকর করার বিষয়টি বিশ্লেষণ করা হয়েছে এই ডেটাবেইসে।
ইউক্রেন ছেড়ে মলদোভার শরণার্থীশিবিরে পৌঁছেছেন হাজারো মানুষ

টেক্সাসের রাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও গ্লোবাল স্যাংকশনস ডেটাবেইসের প্রধান গবেষক টি ক্লিফটন মর্গানের মতে, এমনকি যখন লক্ষ্য অর্জিত হয় না, তখন অবরোধ কার্যকর করার বিষয়টি ভবিষ্যৎ অবরোধের হুমকি তৈরিতে বেশি বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে।

রাশিয়ার ওপর অবরোধ

বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতিতে অবরোধের হুমকি দিয়ে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানো থেকে রাশিয়াকে নিবৃত্ত করা যায়নি এবং এ কথা বলার সময়ও এখনো আসেনি যে কেবল অবরোধ আরোপ এই যুদ্ধে ইতি টানার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে। অবরোধের সফলতা নির্ধারণের বিষয়টি অনেক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ওপর অবরোধ কীভাবে প্রভাব ফেলছে, (সামরিক অভিযানের) অন্তর্নিহিত কারণ কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটিও বিবেচ্য। যেমন চলমান সংকটে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের লক্ষ্য ইউক্রেনে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা।

তবে অবরোধের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হোক বা না হোক, এর মাধ্যমে নিশানায় থাকা দেশ চরম আর্থিক দুর্দশায় পড়ে এবং দেশটির জনগণের জীবনমানে ব্যাপক অবনতি ঘটে। যেমন রাশিয়া এখন তেমন দুরবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ২০১৪ সালের পর (ক্রিমিয়া দখলের পর) দেশটিকে অপেক্ষাকৃত কিছুটা কম ভোগান্তি পোহাত হয়েছে। তখন রাশিয়ার ওপর অবরোধ আরোপের পর বিশ্ববাজারে তেলের দাম পড়ে যায়। দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) হ্রাস পায় প্রায় ২ শতাংশ।

বর্তমান সংকটে রাশিয়ার ওপর আরোপ করা প্রথম ধাপের অবরোধগুলোর বেশির ভাগই আর্থিক। বিভিন্ন দেশে থাকা রাশিয়ার অভিজাত গোষ্ঠী ও পুতিনের ঘনিষ্ঠভাজন ব্যক্তিদের সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। তাদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগব্যবস্থা থেকে রাশিয়ার ব্যাংকগুলোকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এসব পদক্ষেপ বিস্তৃত একটি কৌশলের অংশ, যার উদ্দেশ্য পুতিনের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অর্থের জোগানে টান ফেলা।

ইউক্রেন প্রশ্নে রাশিয়া তার অবস্থান বদলাতে রাজি না হওয়ায় দেশটির তেল ও গ্যাস বিক্রি ঠেকানোসহ ব্যাপক কৌশলী পদক্ষেপ নিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। ম্যাকডোনাল্ডসের মতো ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এবং ক্রেডিট কার্ড কোম্পানিগুলোও দেশটিতে তাদের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দিয়েছে। দেশটির বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক প্রতিক্রিয়া আরও বেশি প্রবল।

ব্যাপক মাত্রায় এসব শাস্তিমূলক পদক্ষেপের কারণে রাশিয়ার অর্থনীতি দুর্দশায় পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সামনের দিনগুলোতে আরও নাজুক হবে দেশটির অর্থনীতি। এ অবস্থা বিশ্বব্যাপী তেলসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়ারও ইঙ্গিত দিচ্ছে।
জনগণের ভোগান্তির কথাও ভাবতে হবে

অবরোধের প্রতিক্রিয়া কে কীভাবে মোকাবিলা করবে, তা সব সময় অনুমান করা যায় না। পশ্চিমা নেতাদের ধারণা, যদি বাকি বিশ্ব থেকে রাশিয়াকে আরও আলাদা করে দেওয়া হয়, তাহলে হয়তো চীনের সঙ্গে আরও সখ্য বাড়ানোর পথে হাঁটবে দেশটি। গত সপ্তাহের একটি ঘটনায় এর ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ভিসা ও মাস্টারকার্ড কাজ না করলে কিছু দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠান চীনের ক্রেডিট কার্ড ব্যবস্থায় সম্পৃক্ত হতে পারে।

টেনেসির মেমফিস বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ডুরসান পেকসেনের মতে, কখনো কখনো অবরোধের বিরূপ প্রভাবে কর্তৃত্ববাদী সরকার আরও বেশি ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার দিকে ঝোঁকে। তিনি তাঁর গবেষণায় দেখতে পেয়েছেন, যখন কোনো দেশ একা হয়ে পড়ে, তখন দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যবহার আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এলিট শ্রেণি শাসকের আরও ঘনিষ্ঠ হয়। বিরোধীদের ওপর দমনপীড়ন বেড়ে যায়। অবরোধ প্রায়ই মানবাধিকার, গণতন্ত্র, লৈঙ্গিক সমতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং জনস্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতি বয়ে আনে। পেকসেনের গবেষণা অনুযায়ী, ইরান বা কিউবার মতো দেশে এমনটাই হয়েছে।

পেকসেন বলেন, (অবরোধের কারণে) রাশিয়া আরও কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠবে, আরও একঘরে হয়ে পড়বে এবং এ জন্য সবচেয়ে বেশি মূল্য দিতে হবে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের। এ কারণে অবরোধ আরোপ করার সময় ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যসাধন ও জনগণের ভোগান্তির মধ্যে ভারসাম্য আনা’ দরকার বলে মত দেন তিনি।

**** [নিবন্ধটি নিউইয়র্ক টাইমসের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে ১১ মার্চ]
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: হাসান ইমাম

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ মার্চ ১৭, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ