Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

মধ্যবিত্তের টিকে থাকার নতুন লড়াই শুরু (২০২২)

Share on Facebook

মধ্যবিত্তের নতুন লড়াই শুরু হলো। অকটেন, পেট্রল, ডিজেল, কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধিতে বড় ধরনের দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দেশের গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষেরা। মধ্যবিত্তের কপালেও দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। জ্বালানি তেলে ইতিহাসের সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণায় অনেকটা হতভম্ব সবাই। আরেক দফা মূল্যস্ফীতি বাড়ছে—এটা প্রায় অবধারিত। চাল, ডাল, তেল, লবণের পাশাপাশি যাতায়াত, পোশাক, খাতা-কলমসহ নানা ধরনের খাদ্যবহির্ভূত পণ্য ও সেবার দাম বাড়বে। আয় না বাড়লে খাবারদাবারসহ ভোগ কমিয়ে সংসারের বাজেট মেলাতে হবে।

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি জীবনযাত্রার পদে পদে খরচ বাড়াবে। আয়ের সঙ্গে সংগতিহীন, লাগামহীন খরচে দারিদ্র্যসীমার কিছুটা ওপরে থাকা লাখ লাখ পরিবারকে আবারও গরিব হওয়ার ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জ্বালানি তেলের কারণে জিনিসপত্রের দাম বাড়লে তা বড়লোকের জন্য শুধু বিরক্তির ব্যাপার। কিন্তু গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষের কাছে তা জীবিকার সংকট তৈরি করে। এবারের জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের বেশি কষ্ট হবে। কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্য—সব খাতেই খরচ বাড়বে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, মূল্যস্ফীতির তথ্যে এর প্রভাব আসবে কি না, জানি না। তবে মানুষ বাজারে গিয়ে ঠিকই টের পাবে। কারণ, বাজারের জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির তথ্য লুকিয়ে রাখা যাবে না।

মধ্যবিত্তের টিকে থাকার লড়াই শুরু

কবির হোসেন ওয়ান ব্যাংকের দোহার শাখায় কর্মরত। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাস করেন মোহাম্মদপুরে। প্রতিদিন বাসা থেকে মোটরসাইকেলে অফিসে যাতায়াত করেন। প্রতিদিন ৭০ কিলোমিটারের মতো আসা-যাওয়া করতে হয়। এই পথ চলতে দুই লিটার অকটেন লাগে, খরচ হয় ১৮০ টাকা। কাল (রোববার) থেকে এই পথ যেতে খরচ বাড়বে ৯২ টাকা।

গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে কবির হোসেন তাঁর ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন। জ্বালানি তেলের খরচ বৃদ্ধিতে পোষাতে না পেরে দোহার আসা-যাওয়ার পথে রাইড শেয়ার করতে চান। যোগাযোগের জন্য তিনি নিজের মুঠোফোন নম্বর দেন।

কবির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ১০ বছরে কোনো বেতন–ভাতা বাড়েনি। প্রতিবছর ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট হয়েছে। এই অল্প আয় বৃদ্ধিতে খাবারদাবার, সন্তানের পড়াশোনা, যাতায়াতসহ সংসার খরচে আর পোষানো যাচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে যাতায়াতের পাশাপাশি নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে। বাড়বে সংসারের যাবতীয় খরচ। কীভাবে সামাল দেব, বুঝতে পারছি না।’

কবির হোসেনের মতো এই সীমিত আয় ও মধ্যবিত্তের কষ্ট-ভোগান্তি বাড়বে। দারিদ্র্য নিয়ে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিনিসপত্রের দাম বাড়লে আবার গরিব হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে প্রায় ৫৫ শতাংশ মানুষ। অর্থনীতিতে আকস্মিক চাপ বা নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে এই দারিদ্র্যসীমার একটু ওপরে থাকা পরিবারগুলো আবার গরিব হয়ে যেতে পারে। বিবিএসের জনশুমারি অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ। সেই হিসাবে, ৯ কোটির বেশি মানুষ এমন ঝুঁকির মধ্যে যেকোনো সময় পড়তে পারে।
প্রথম ধাক্কা পরিবহন খরচে

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়ে পরিবহন খাতে। যাতায়াত ভাড়া বেড়ে যায়। বাড়ে পণ্য পরিবহন খরচ। এরই মধ্যে পরিবহন ভাড়া সর্বোচ্চ ২২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম বন্দর এবং চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকা ও আশপাশের এলাকা পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রাক ও ট্রেলারভাড়া ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। বর্তমানে এই পথে পাঁচ টনের একটি ট্রাকভাড়া ১৭-১৮ হাজার টাকা। এটি বেড়ে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আবার ৩০ ফুট ও ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের ট্রেলারভাড়া এখন যথাক্রমে ৩০-৩১ হাজার টাকা এবং ৩৬-৩৭ হাজার টাকা। একইভাবে ট্রেলারভাড়া বাড়বে। এতে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকের খরচ বাড়বে।

এদিকে বগুড়া, নওগাঁ ও পাবনা অঞ্চল থেকে চাল, শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য রাজধানী ও আশপাশে আসে। সেখানেও ভাড়া বাড়বে। এখন ওই অঞ্চল থেকে ১৮-১৯ হাজার টাকায় ট্রাকভাড়া করা যেত। এখন বেড়ে ২৪-২৫ হাজার টাকা হবে বলে জানিয়েছেন পাবনার সবজি ব্যবসায়ী আদম আলী।

দাম বাড়বে ভোগ্যপণ্যে

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে চাল, ডাল, শাকসবজিসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে বাজারে এসব পণ্যের দামও বাড়বে। বাজার থেকে বেশি দামে নিত্যপণ্য কিনতে হবে। এখন আমনের মৌসুম চলছে। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে ডিজেল ব্যবহার করে জেনারেটরের মাধ্যমে পাম্প চালাতে হচ্ছে। এমনিতে ডিজেল ব্যবহার বেড়েছে। এখন লিটারপ্রতি ৩৪ টাকা বাড়তি দামে ডিজেল কিনতে হবে। ফলে কৃষকের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। শিগগিরই বাজারে এর প্রভাব পড়বে। এ ছাড়া ওই চালের চালান যখন দেশের বিভিন্ন স্থানে যাবে, তখন বাড়তি ট্রাকভাড়াও গুনতে হবে। চালের মতো শাকসবজি, আলু, পেঁয়াজসহ অন্যান্য নিত্য ভোগ্যপণ্যের দামও একই হারে বাড়বে।
পোশাক, তেল-সাবানেও প্রভাব পড়বে

কয়েক মাস ধরেই পোশাক-আশাক, তেল-সাবান, শ্যাম্পু, টুথপেস্ট, খাতা-কলম ইত্যাদি খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের দাম বাড়তির দিকে আছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এসব পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিকে আরও উসকে দেবে। প্রথমেই পরিবহন খরচ বাড়বে। এ ছাড়া পোশাক কারখানাসহ ছোট-বড় শিল্পকারখানায় ডিজেলচালিত জেনারেটর চলে। লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ায় জেনারেটরের ব্যবহার বাড়বে। এখন ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচও বাড়বে। এ ছাড়া বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামালে উৎপাদন ও পরিবহন খরচ বেড়ে দাম বাড়াবে প্রস্তুত পণ্যের।

মূল্যস্ফীতি কোথায় গিয়ে ঠেকবে

কয়েক মাস ধরেই মূল্যস্ফীতি ধারাবাহিকভাবে বেড়ে গত জুন মাসে তা ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ হয়েছে, যা গত ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। অবশ্য জুলাই মাসে তা কমে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ হয়েছে। গত নভেম্বর মাসে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধিই ছিল এর অন্যতম কারণ।

দুই-তিন মাস ধরেই অর্থনীতিতে একধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে। তৈরি হয়েছে লেনদেনের ভারসাম্যে বড় ঘাটতি। এই ঘাটতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণসহায়তা চেয়েছে সরকার। ৪৫০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ পাওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে। তবে আইএমএফ সব সময় জ্বালানি খাতে ভর্তুকি না দিয়ে দাম সমন্বয় করার তাগিদ দিয়ে আসছে।

এর আগে এক দশক আগে বর্ধিত ঋণ সহায়তার (ইসিএফ) আওতায় ১০০ কোটি ডলার নিয়েছিল বাংলাদেশ। আইএমএফের শর্ত হিসেবে একাধিকবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়। তখন মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছায়।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি ৮-৯ শতাংশে পৌঁছালেই ঝুঁকিতে থাকা মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নামতে শুরু করে। করোনার কারণে এমনিতেই মানুষের আয় তেমন বাড়েনি, বরং কারও আয় কমেছে। এমন অবস্থায় জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি মূল্যস্ফীতির বড় উল্লম্ফন হবে। আমার হিসাবে, শুধু কেরোসিনের দাম বাড়ার ফলে গ্রামের মূল্যস্ফীতি দশমিক ৮ শতাংশ বাড়বে।’

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: আগষ্ট ০৭, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ