Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

মায়িশা গ্রুপে আটকে গেছে ব্যাংকের ২৬শ কোটি টাকা (২০২১)

Share on Facebook

লেখক: ওবায়দুল্লাহ রনি।

ঢাকা-১৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রয়াত এমপি আসলামুল হক ছিলেন মায়িশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এ শিল্পগোষ্ঠীর কাছে বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের (এনবিএল) পাওনা প্রায় ২৬শ কোটি টাকা আটকে গেছে। আসলামুল হক বেঁচে থাকতে ঋণ আদায় নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। গত এপ্রিল মাসে তার মৃত্যুর পর তা আরও গভীর হয়েছে। ঋণ আদায়ের সম্ভাবনা কমে গেছে। এ গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অবৈধ জায়গায় গড়ে ওঠায় তা আদালতের রায়ের মাধ্যমে উচ্ছেদ প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। ঋণ আটকে যাওয়ার পেছনে ব্যাংকের নিজস্ব দায়ও রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ঋণ বিতরণে নিয়ম-নীতি মানা হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক পরিদর্শনে বিভিন্ন অনিয়ম উঠে এসেছে।

মায়িশা গ্রুপের চার কোম্পানির কাছে এনবিএল এখন পাবে ২ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। সম্প্রতি দুই কোম্পানির কাছে পাওনা ৯০১ কোটি টাকা খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করেছে ব্যাংক। এমন এক সময়ে খেলাপি করা হলো যখন ব্যাংকটিতে সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত জয়নুল হক সিকদার পরিবারের একক নিয়ন্ত্রণ ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন পদক্ষেপ চলমান রয়েছে। জানা গেছে, এনবিএলের জেড. এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ শাখার গ্রাহক মায়িশা প্রপার্টির ৬৬৩ কোটি টাকা এবং মায়িশা রিয়েল এস্টেটের ২৩৮ কোটি টাকার ঋণ সম্প্রতি খেলাপি করা হয়েছে। নদীর জায়গা দখল করে গড়ে তোলা সিএলসি পাওয়ার কোম্পানি ও ঢাকা ওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানির এক হাজার ৬৮৮ কোটি টাকার ঋণও খেলাপি করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। বেশ আগ থেকে অর্থ ফেরত না এলেও অনেক আগে থেকেই প্রতিষ্ঠানটির সব ঋণ নিয়মিত দেখিয়ে আসছে ব্যাংক। এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক পরিদর্শনে এসব ঋণে নানা অনিয়ম ধরা পড়ার পর কয়েকবার খেলাপি করতে বলা হয়েছিল। প্রতিবারই তা আটকে যায়। খেলাপি না করে নতুন ঋণ পেয়েছেন বারবার। এমনকি করোনার সময়ে সরকারের ভর্তুকি সুদেও মায়িশা গ্রুপকে ২৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিকদার পরিবারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পর ব্যাংকটিতে ঋণের জন্য আসে মায়িশা গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। শুরুটা ছিল ২০১০ সালের নভেম্বরে। ওই বছরের ২৫ নভেম্বর মায়িশা প্রোপার্টিজ ডেভেলপমেন্টের নামে জেডএইচ সিকদার মেডিকেল শাখা থেকে ৩০ কোটি টাকার একটি ঋণ প্রস্তাব পাঠানো হয় প্রধান কার্যালয়ে। আগে কোনো লেনদেন না থাকার পরও প্রতিষ্ঠানটির সক্ষমতা যাচাই ছাড়াই ওই দিনই ঋণ অনুমোদন করে পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী কমিটি। ঋণের কোনো কিস্তি পরিশোধ না করলেও ২০১২ সালে ২৪ আগস্ট মাহিম রিয়েল এস্টেটের নামে ৮৩ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে ব্যাংক। এক্ষেত্রেও জেডএইচ সিকদার মেডিকেল শাখার প্রস্তাব প্রধান কার্যালয়ে পাঠানোর দিনই কোনো ধরনের পর্যালোচনা না করে ওই দিনই তা অনুমোদন করা হয়। এসব ছাপিয়ে ২০১৩ সালের ৬ মার্চ সিএলসি পাওয়ারের নামে ৪৪২ কোটি ২৭ লাখ টাকার ঋণ দেয় ন্যাশনাল ব্যাংক। মায়িশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান মাহিম রিয়েল এস্টেট ২০১২ সালের নভেম্বরে ন্যাশনাল ব্যাংকের ২০ একর জমি কেনার পরই বড় অঙ্কের এ ঋণ প্রস্তাব আসে। ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৭ ধারা লঙ্ঘন করে সাভারের পানিশাইলে ওই জমি কেনে ন্যাশনাল ব্যাংক। কোনো ধরনের টেন্ডার ছাড়াই আসলামুল হকের রিয়েল এস্টেট কোম্পানির কাছে তা বিক্রি করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মায়িশা গ্রুপের ঋণ অনিয়মের বিষয়ে বিভিন্ন সময় সতর্ক করেও কোনো কাজ হয়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখনই খেলাপি করার বা অন্য কোনো ব্যবস্থা নিতে গেছে কোনো না কোনোভাবে তা আটকে দেওয়া হয়েছে। পরিদর্শনে গেলেও আসলামুল হক এমনকি এনবিএলের পর্ষদ থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে চাপ তৈরি করা হয়।

ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ সৈয়দ আব্দুল বারী গত বৃহস্পতিবার সমকালকে বলেন, মায়িশা গ্রুপের সঙ্গে ব্যাংক নিয়মিতভাবে যোগাযোগ রাখছে। ঋণ আদায় কীভাবে হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। এখনই বলা যাবে না যে, পুরোটাই ব্যাংকের ক্ষতি হয়ে গেছে। আশা করা যায়, একটা সমাধান বের হয়ে আসবে।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, মায়িশা গ্রুপের চার প্রতিষ্ঠানের কাছে ফান্ডেড ২ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা এবং ১১৫ কোটি টাকা নন-ফান্ডেড ঋণ রয়েছে। মায়িশা প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট ও মায়িশা রিয়েল এস্টেট, সিএলসি পাওয়ার লিমিটেড ও ঢাকা ওয়েস্ট পাওয়ার লিমিটেডের নামে এ ঋণ দেওয়া হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ রয়েছে সিএলসি পাওয়ার কোম্পানি ও ঢাকা ওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানিতে। নদীর জায়গা দখল করে গড়ে তোলায় এ দুটি কোম্পানির অবকাঠামো উচ্ছেদের অপেক্ষায় রয়েছে।

নদী রক্ষা কমিশনের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে, আসলামুল হক শুধু ঢাকার তুরাগ ও বুড়িগঙ্গা নদীর ৫৪ একর জায়গা দখল করেন। ঢাকার কেরানীগঞ্জে বছিলা ব্রিজ-সংলগ্ন দখল করা জায়গায় সিএলসি পাওয়ার কোম্পানি, ঢাকা ওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি ও ঢাকা নর্থ পাওয়ার ইউটিলিটি কোম্পানি এবং আরিশা ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হয়। বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে গত বছরের ৪ মার্চ একটি অংশ উচ্ছেদ করেন বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা। তবে আসলামুল হক দলবল নিয়ে তাতে বাধা দেন। পরবর্তী সময়ে ৮ সংস্থার যৌথ জরিপের ভিত্তিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অন্যান্য স্থাপনা সরিয়ে এসব জমি আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনার সুপারিশ করে গত নভেম্বরে আবার প্রতিবেদন দেয় জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে আসলামুল হক রিট করেন। শুনানি শেষে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর রিট আবেদন খারিজ করে রায় দেন আদালত।

বিদ্যমান নিয়মে একক গ্রাহককে ফান্ডেড, নন-ফান্ডেড মিলে কোনো ব্যাংক মোট মূলধনের সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ ঋণ দিতে পারে। এর মধ্যে সাধারণভাবে ব্যাংকের মূলধনের সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ ফান্ডেড ঋণ দেওয়া যায়। তবে বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানিসহ বিশেষ ক্ষেত্র মূলধনের ২৫ শতাংশ ফান্ডেড ঋণ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। গত জুনে ন্যাশনাল ব্যাংকের মোট মূলধন ছিল ৫ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা। এর মানে একক গ্রুপকে সর্বোচ্চ এক হাজার ৪১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা ফান্ডেড ঋণ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ব্যাংকটি দিয়েছে মূলধনের ৪৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

আসলামুল হক মারা যাওয়ার পর ব্যবসা দেখভাল করছেন তার স্ত্রী মাকসুদা হক। ঋণ ফেরত দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি সমকালকে বলেন, তিনি এখনও পুরোপুরি ব্যাংকের বিষয়টা জানেন না। তিনি এই মুহূর্তে এ নিয়ে কিছু বলতে চান না।

ন্যাশনাল ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, যে কোনো প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলে সাধারণভাবে প্রতিষ্ঠানের বন্ধকি সম্পত্তি বিক্রি করে অর্থ আদায়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে মায়িশা গ্রুপের বন্ধকি সম্পত্তির বড় অংশ এখন রাষ্ট্রের দখলে চলে যাবে। ঝামেলাযুক্ত জমির বিপরীতে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যাংকের নীতিনির্ধারকদের ইশারায় এসব ঋণ দেওয়া হয়। শাখা কর্মকর্তাদের কিছু করার ছিল না।

মায়িশা গ্রুপের ঋণে বিভিন্ন জালিয়াতি উঠে আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক প্রতিবেদনেও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শাখায় হিসাব খোলার আগেই প্রধান কার্যালয় থেকে মায়িশা গ্রুপের ঋণ অনুমোদন হয়। ঋণের বিপরীতে জামানতি সম্পত্তির বেশিরভাগই রেজিস্টার্ড মর্টগেজ নেই। আবার যেসব জমির রেজিস্টার্ড মর্টগেজ রয়েছে তার মিউটেশন পর্চা ব্যাংক শাখা দেখাতে পারেনি। মায়িশা প্রোপার্টির জমি নিয়ম-বহির্ভূতভাবে সিএলসি পাওয়ারের ঋণের বিপরীতে বন্ধক দেখানো হয়েছে। এভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে দেওয়া ঋণ পরিশোধ না করলেও তা খেলাপি করা হয়নি। ঋণ নিয়মিত দেখিয়ে ব্যাংকের আয় বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে, জমি উন্নয়নের জন্য মাহিম রিয়েল এস্টেটের নামে নেওয়া ঋণের টাকা তুলে অপর প্রতিষ্ঠান ঢাকা ওয়েস্ট পাওয়ারের ব্যাংক গ্যারান্টি মার্জিন হিসেবে ব্যয় করা হয়। এরকম নানা অসংগতির পরিপ্রেক্ষিতে এসব ঋণ খেলাপি করতে বলা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৬ সালের ডিসেম্বরভিত্তিক ওই পরিদর্শন পরিচালনা করে। তখন ব্যাংকের মোট পাওনা ছিল এক হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরে ঋণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা।

ন্যাশনাল ব্যাংকে সিকদার পরিবারের অনিয়ম ঠেকাতে ব্যাপক সক্রিয় হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকটির দীর্ঘদিনের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদার গত ১০ ফেব্রুয়ারি মারা যাওয়ার পর দৃশ্যমান বিভিন্ন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া আপাতত ব্যাংকটির নতুন ঋণ বিতরণ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক ছাড়াই ১৪৬ কোম্পানিকে ৮৮৭ কোটি টাকা ঋণ দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে ব্যাংকটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত এমডি এএসএম বুলবুলকে সরিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া এবি ব্যাংকে ঋণখেলাপি থাকার কারণে গত ২৭ জুন পরিচালক পদ হারিয়েছেন রিক হক সিকদার।

সূত্রঃ সমকাল।
তারিখঃ অক্টোবর ০৩, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ