Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

মোদির জন্য বিশ্বগুরু হ‌ওয়া এখন অনেক দূরের পথ (২০২১)

Share on Facebook

লেখক: সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় নয়াদিল্লি।

প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রথম শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদি যাঁদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, তাঁরা ছিলেন সার্ক সদস্যদেশের নেতা। সেই দাওয়াতের অন্তর্নিহিত বার্তাটি ছিল তাঁর পররাষ্ট্রনীতির নির্যাস, ‘নেইবারস ফার্স্ট’। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার সেই বার্তা পরবর্তী সময়ে বহুলাংশে ঝাপসা হয়েছে। নওয়াজ শরিফের সঙ্গে দহরম-মহরমের ফল সবার জানা। ইমরান খানের পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের বাক্যালাপ ও মুখ-দেখাদেখি এখনো বন্ধ। যে নেপাল ছিল পরম সুহৃদ, আজ সে কোল পেতে দিয়েছে চীনকে। বেইজিং যত কাছে এসেছে, কাঠমান্ডুর সঙ্গে দিল্লির দূরত্ব তত বেড়েছে। আফগানিস্তানেও ভারতের প্রভাব কমেছে। পালাবদলের পর শ্রীলঙ্কা আরও একবার কাছে টানতে শুরু করেছে চীনকে। মালদ্বীপ দুলে চলেছে পেন্ডুলামের মতো। ভুটান এখনো নৈকট্য হারায়নি কিন্তু সীমান্তবর্তী ডোকলাম বিবাদের পর চীনের প্রভাবও অস্বীকার করতে পারছে না।

বাকি রইল বাংলাদেশ, এখনো ভারতের চোখে যে দেশ তাদের প্রকৃত বিশ্বস্ত বন্ধু ও পরম সুহৃদ।

মোদির আগ্রহ ও বৈশ্বিক নেতৃত্ব

শুরু থেকেই মোদি আগ্রহী ছিলেন বৈশ্বিক নেতা হতে। বিশ্বগুরু। সেই কারণে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম ৫ বছরে তিনি মোট ৫৯টি দেশে ১০৯ বার সফর করেছেন। কাটিয়েছেন ১৮৬ দিন। সবচেয়ে বেশি গেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ছয়বার। চীন, ফ্রান্স ও রাশিয়ায় গেছেন পাঁচবার করে। চারবার গেছেন জার্মানি, জাপান, সিঙ্গাপুর ও নেপালে। শ্রীলঙ্কা ও আমিরাতে তিনবার। বাংলাদেশ, ভুটান, আফগানিস্তান, ব্রাজিলসহ ১৬টি দেশে গেছেন দুবার করে এবং একবার করে গেছেন ৩৪টি দেশে। অতীতে ভারতের আর কোনো প্রধানমন্ত্রীর পায়ের তলায় এই রকম শর্ষে ছিল না। মনমোহন সিং তাঁর ১০ বছরে বিদেশ গেছেন ৭৩ বার। কাটিয়েছেন ৩০৫ দিন। কোভিডের কারণে ২০২০ সালের পুরোটাই মোদি ঘরবন্দী। নইলে মনমোহনকে হয়তো টপকে যেতেন। চলতি বছরে গেছেন শুধু বাংলাদেশে। পাঁচ বছরে তাঁর বিদেশ সফরে খরচ হয়েছে ২ হাজার ২১ কোটি রুপি (সূত্র: প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় এবং সংসদে দাখিল করা তথ্য)।

বিশ্বগুরু হওয়ার তাড়নায় মোদি সমকালীন নেতাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সখ্য গড়ে তুলেছেন। বারাক ওবামা ও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নাম ধরে ‘মাই ফ্রেন্ড’ বলেছেন। ওবামাকে দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে নিজের হাতে চা করে খাইয়েছেন। চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে আমেদাবাদের সবরমতির কিনারে দোলনায় দুলেছেন। তামিলনাড়ুর মামাল্লাপুরম মন্দির ভ্রমণের সময় গাইডের ভূমিকা নিয়েছেন। টেক্সাসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বঘোষিত ‘নির্বাচনী এজেন্ট’ হিসেবে ‘আব কি বার ট্রাম্প সরকার’ স্লোগান দিয়েছেন। আমেদাবাদে ‘নমস্তে ট্রাম্প’ অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্টের পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন। বিদেশি রাষ্ট্রনায়কদের বুকে জড়িয়ে ধরার মধ্য দিয়ে পারস্পরিক নৈকট্য প্রমাণে সচেষ্ট হয়েছেন। তাতে তৈরি হয়েছে ‘ব্র্যান্ড মোদি’ ভাবমূর্তি। অভ্যন্তরীণ রাজনীতির স্বার্থে যা ‘গুড অপটিকস’। তাঁর বৈদেশিক নীতির সাফল্য-ব্যর্থতার খতিয়ান প্রথম পাঁচ বছরে মিশ্রই বলা যায়।
মোদির সাফল্য ও ব্যর্থতা

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পর্যবেক্ষক এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘কারনেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস’-এর সিনিয়র ফেলো অ্যাশলে জে টেলিসের চোখে প্রথম পাঁচ বছরে মোদির সাফল্য তিনটি। প্রথম সাফল্য সৌদি আরব ও আমিরাতের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে পাকিস্তানের প্রভাব খর্ব করা। দ্বিতীয় সাফল্য ভারত-জাপান বন্ধুত্ব, যা শুরু করেছিলেন মনমোহন সিং, মোদি তাতে গতি আনেন। শিনজো আবের সঙ্গে মোদির ব্যক্তিগত রসায়ন এ ক্ষেত্রে খুব কাজে দিয়েছে। চীনকে নিয়ে দুই দেশের উদ্বেগ সেই রসায়নের একটা কারণ। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে স্বাধীন ও উন্মুক্ত রাখতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারত ও জাপানের গুরুত্ব মোদি-আবে জুটি বাড়িয়ে তুলতে পেরেছেন। চীনকে সামাল দিতে ভারত হয়ে উঠেছে প্রবল প্রতিপক্ষ, পরবর্তীকালে যা জন্ম দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ভারতসহ চারটি দেশের কৌশলগত অনানুষ্ঠানিক নিরাপত্তা সংলাপ ‘কোয়াড’-এর। অন্য দুই সদস্য হলো জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। মোদির তৃতীয় সাফল্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে উত্তরোত্তর উন্নত করা। ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি সত্ত্বেও সেই সম্পর্ক ঢিলে হয়নি। বাইডেন জমানায় তা কী রূপ নেবে, তা আপাতত অজানা। জানা তথ্য, চীন দুই দেশের কাছেই সমান ‘বিপজ্জনক’।

প্রথম পাঁচ বছরে মোদির কূটনীতি সেই অর্থে বহুমাত্রিক। ‘বিশ্বগুরু’ হিসেবে ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর প্রতিষ্ঠা তাঁর তাগিদ ছিল। তবে কূটনীতিকে তিনি সচেতনভাবে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও কাজে লাগাতে চেয়েছেন। তাঁর আত্মমগ্নতা বা ‘নার্সিসিজম’ বৈশ্বিক নেতাদের চোখে অধরা থাকেনি। কোভিডের সম্প্রসারণকালে সি চিন পিংয়ের চীন তা পূর্ণমাত্রায় ব্যবহার করেছে পূর্ব লাদাখে। মোদির ভারত এই সামরিক আঘাতের জন্য প্রস্তুত ছিল না। চীনের আগ্রাসী নীতি, সি চিন পিংয়ের আমলে যা ‘উল্ফ-ওয়ারিয়র কূটনীতি’ নামে পরিচিত, তার কোনো আঁচই মোদির ভারত পায়নি। অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব পড়ুক না পড়ুক, প্রথমে ডোকলাম, পরে পূর্ব লাদাখের ঘটনাবলি মোদি সরকারের কূটনৈতিক বিপর্যয় হিসেবেই চিহ্নিত থাকবে। ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব শিবশঙ্কর মেনন তাই বলেছেন, ‘অনেক কম শক্তিশালী ভারত ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ কিংবা ২০০৮ সালে নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার গ্রুপের অনুমোদন পেতে যে কূটনৈতিক দক্ষতা ও বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছিল, মোদির ভারত তা দেখাতে পারেনি।’ কোভিড পরিস্থিতির মূল্যায়ন ও টিকা কূটনীতির ব্যর্থতার মাশুল মোদিকে কীভাবে গুনতে হবে, ভবিষ্যৎ তা জানাবে। কিন্তু ঘটনা হলো, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও বিজ্ঞানকে অস্বীকার করে নিজের সাফল্য প্রচারের প্রবণতা তাঁকে হাস্যাস্পদ ও সমালোচনার পাত্র করে তুলেছে। কোভিড নিয়ন্ত্রণে পাহাড়প্রমাণ ব্যর্থতা দেশের রাজনীতিতেও তাঁর আসন টলমলে করে দিয়েছে, গত ছয় বছরে যা দেখা যায়নি।

মোদির ভারত ও বাংলাদেশ

সুসম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে সাফল্যের সবচেয়ে বড় উদাহরণ অবশ্যই বাংলাদেশ। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা দিয়ে যে সম্পর্কের সূত্রপাত, স্থলসীমান্ত চুক্তি তাতে গতির ডানা জোড়ে। গত এক দশকে সুসম্পর্কের পরিধি যেভাবে বিস্তার লাভ করেছে, তা সুপ্রতিবেশীর নতুন সংজ্ঞা। সর্বস্তরীয় সংযোগ দুই দেশকে সমৃদ্ধ করছে। বাণিজ্যিক বহর বৃদ্ধি উপকৃত করেছে পারস্পরিক অর্থনীতিকে। অর্থনীতির উন্নতির অর্থ মানুষজনের আরও একটু বেশি ভালো থাকা। বাংলাদেশ ও ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্ব তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাড়িয়ে তুলেছে পারস্পরিক ভরসা ও আস্থা। বাংলাদেশের সাহচর্যেই উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে ‘মেন ল্যান্ড ইন্ডিয়ার’ দূরত্ব কমেছে। ১৯৬৫ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া যোগাযোগগুলো নতুনভাবে খুলতে শুরু করেছে। রেল, সড়ক, নদীপথ, উপকূল ও সমুদ্রপথ ক্রমেই উন্মুক্ত হচ্ছে। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে বেড়েছে পারস্পরিক বাণিজ্য। শুধু ভারতই নয়, নেপাল ও ভুটানও হতে চলেছে আঞ্চলিক উন্নয়নের অংশীদার।

ভারতের এই ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির সার্থক রূপায়ণ সম্ভব হতো না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্ব ছাড়া। সেই নিরিখে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিরতা ভারতের জন্য তো বটেই, আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতেও সহায়ক। দুই দেশের প্রগতিশীল নেতৃত্ব উপলব্ধি করেছে, সহযোগিতাই প্রবৃদ্ধির মূল বাহক। প্রবৃদ্ধির হার ঊর্ধ্বমুখী থাকার অর্থ মানুষের ভালো থাকা। নেতৃত্বের এই দূরদৃষ্টি ও এগিয়ে চলার তাগিদ বাংলাদেশ ও ভারতকে একে অন্যের পরিপূরক হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে। বেড়েছে নির্ভরতা। দ্বিপক্ষীয় এই সম্পর্কের নতুন বিশেষণ তাই ‘সোনালি অধ্যায়’।
সোনালি অধ্যায়ের উষ্ণতা ও শীতলতা

উষ্ণতার চার ধারে শীতলতাও কিছু থাকে। বাংলাদেশ-ভারতের উষ্ণ সম্পর্কের মধ্যে সেই শীতলতার কারণও ভারতীয় নেতৃত্ব, নরেন্দ্র মোদির সপ্তম বর্ষপূর্তির আগে থেকেই যা প্রকট।

সুসম্পর্কের প্রধান ও পুরোনো কাঁটা অবশ্যই তিস্তা, মোদি জমানার সাত বছরে যা এখনো নিষ্ফলা! তিস্তার সঙ্গে জুড়ে ছিল ফেনী নদীর জল ভাগাভাগি। ‘মানবিক’ শেখ হাসিনা ত্রিপুরার সাবরুম জেলার মানুষকে তৃষ্ণার্ত না রেখে একতরফাভাবে তা মঞ্জুর করেছেন। তিস্তা যদিও তথৈবচ। বাংলাদেশিদের কাছে সীমান্ত হত্যাও স্পর্শকাতর, যা এখনো শূন্যে নামেনি। বাংলাদেশের চোখে এ ক্ষেত্রেও ‘ভিলেন’ ভারতের বিএসএফ। রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশের চাহিদা একটু বেশিই। ভারতের ‘প্রো-অ্যাক্টিভ হতে না পারা’ সাধারণ বাংলাদেশিদের কাছে বড় অভিমানের। সে দেশের ভারতবিরোধী শক্তি ইদানীং নতুনভাবে আড়মোড়া ভাঙতে শুরু করেছে। কখনো ‘কানেকটিভিটি ফি’, কখনো পেঁয়াজ রপ্তানি, কখনোবা টিকার অপ্রাপ্তিবোধ নিয়ে তারা সরব। ২০১৯ সালে ভারত আচমকা পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ভবিষ্যতে এমন কিছু করার আগে যেন একটু জানানো হয়, যাতে তাঁরা বিকল্প ব্যবস্থা করতে পারেন। এই ধরনের ঘটনা, আপাতদৃষ্টে ভারতের কাছে ছোট মনে হলেও অভিঘাতে বড়। ইডেনে প্রথম দিনরাতের টেস্ট ক্রিকেট দেখতে যাওয়া শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানাতে কেন্দ্রীয় তরফে কেউ কেন উপস্থিত ছিলেন না, সেই অভিমান তাদের ক্রোধ হয়ে ঝরে পড়েছে। ক্ষুব্ধ ও অপমানিত বোধ করে বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেন লিখেছিলেন, ‘মোদি সাহেব যশোরে গেলেও আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ে অভ্যর্থনা জানাব।’ সম্পর্ক নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘বাংলাদেশিদের জীবন-মরণ সমস্যার সুরাহা না হলে প্রশ্ন উঠবেই।’

দুই বছর ধরে এমন প্রশ্নই উঠে চলেছে অথচ ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্ব নির্বিকার। এনআরসি-সিএএ নিয়ে বাংলাদেশের আপত্তি শুরু থেকেই। শেখ হাসিনাও এ বিষয়ে তাঁর বিস্ময় চেপে রাখেননি। অথচ ভারত অনড়ই শুধু নয়, অবাঞ্ছিত মন্তব্যও চলছে বিরামহীন। সিএএর নতুন নিয়মবিধি চালু না হলেও ১২ বছর আগে ২০০৯ সালে তৈরি পুরোনো নিয়মবিধি কার্যকর করে তিন প্রতিবেশী দেশের অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া আচমকাই শুরু করতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। কেন ও কোন যুক্তিতে এই সিদ্ধান্ত, তা নিয়ে জল্পনা অসীম। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি আরও একবার হিন্দুত্বের আশ্রয়ে গিয়ে হারানো সমর্থন ফিরে পেতে মোদির সরকার মরিয়া? বিশেষ করে উত্তর প্রদেশের নির্বাচনের আগে? তাগিদ যা-ই হোক, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে শঙ্কিত রাখবে। বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার দেব মুখোপাধ্যায় সংগত কারণেই বলেছেন, ‘ভারতের অভ্যন্তরীণ বিভাজনের রাজনীতি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে খারাপ করছে। ভারতের বোঝা দরকার, বাংলাদেশের সরকারকে তাদের দেশের জনমতকে গুরুত্ব দিতে হবে। সেই জনমত যে ভারতীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে, প্রধানমন্ত্রী মোদির সাম্প্রতিক সফর তার প্রমাণ। শুধু দক্ষিণপন্থী ইসলামি শক্তিই নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তিও মোদিবিরোধী বিক্ষোভে শামিল হয়েছে, ভবিষ্যতের জন্য যা চিন্তাজনক।’ নেতাদের বোঝা উচিত, ভারতের দক্ষিণপন্থী কট্টরবাদ পড়শি দেশের দক্ষিণপন্থী উগ্রবাদীদের হাতই শক্ত করবে। সুসম্পর্কের খাতিরে কারও পক্ষেই তা সুখকর হতে পারে না।
টিকা কূটনীতি ও চীন নির্ভরতা

সম্পর্ক-শৈত্যের শেষ কারণও ভারত। হুট করে টিকা রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত এযাবৎ অর্জিত সব সুনাম ও সম্মান ভাসিয়ে দিয়েছে। সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে ব্যর্থ বাংলাদেশ অবশেষে চীনের দিকে ঝুঁকেছে। আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতে এই অবিমৃশ্যকারিতার রেশ শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে, তা অনুমানসাপেক্ষ। সুযোগের সদ্ব্যবহারে চীন দেরি করেনি। কোয়াড নিয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং ঢাক ঢাক গুড় গুড় না করে যে বার্তা দিয়েছেন, তার লক্ষ্য যতটা বাংলাদেশ, ঠিক ততটাই ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যরা। ওই বার্তায় চীনের ‘উল্ফ-ওয়ারিয়র কূটনীতি’র স্বাক্ষরই জ্বলজ্বল করছে। যে প্রচ্ছন্ন হুমকি তারা গোটা দক্ষিণ এশিয়াকে দিতে চেয়েছে, তার মর্মার্থ, ‘গণ্ডির বাইরে না যাওয়াই মঙ্গলের’।

সোনালি অধ্যায় অমলিন রাখতে অষ্টম বছরে পা দেওয়া নরেন্দ্র মোদির ভারতকে বাড়তি পথ হাঁটতে হবে। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী ফল প্রকাশের পর বাংলাদেশের ‘আমজনতার’ স্বস্তিবোধ ও চাপা উল্লাস তারই ইঙ্গিতবাহী।

লেখক: সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় নয়াদিল্লি
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: জুন ০১, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ